গোলাম ওয়াদুদ, ঢাকা
বাজার অর্থনীতির যুগে বৈশ্বিক কোনো খেলাই আর স্রেফ খেলা থাকেনি। আন্তর্জাতিক আয়োজনগুলো বড় বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। তারকা খেলোয়াড়দের জীবনযাপনেই তা স্পষ্ট। ফলে এর মধ্যেও ঢুকে পড়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি। কিন্তু পেশাদারত্বের সঙ্গে তো সমঝোতা চলে না। বাংলাদেশে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটে সম্ভবত সেটিরই সংকট চলছে।
এক সময় বাংলাদেশে দর্শকেরা মন দিয়েছিলেন ফুটবলে। কিন্তু সেখানেও খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বোর্ড কর্তাদের অপেশাদারি আচরণের কারণে দর্শকের আস্থা তলানিতে ঠেকেছে। সম্প্রতি মেয়েদের ফুটবল নিয়ে বড় সম্ভাবনা দেখতে শুরু করেছিলেন দর্শকেরা। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আচরণে সবাই চরমভাবে হতাশ হয়েছেন। ক্ষুব্ধ একাধিক খেলোয়াড় অবসর অথবা দেশ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফুটবলের সোনালী অতীত এখন শুধুই হতাশার মেঘে ঢাকা। এ নিয়ে আর কারও আলাপ করার প্রবৃত্তি নেই। আলোচনায় এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট। বিশেষ করে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে নানা নাটকীয়তা এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
খেলার খবরে আগ্রহী যারা গণমাধ্যমে নিয়মিত রাখেন তাঁরা নিশ্চয়ই দেখেছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে খুবই অস্থির সময় যাচ্ছে। বোর্ড কর্তাদের নানা কথাবার্তা, খেলোয়াড়দের কর্মকাণ্ড এবং মাঠের পারফরমেন্স—সেই অস্থিরতারই প্রতিফলন।
এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হলো? এ নিয়ে নানা তত্ত্ব ও তথ্য রয়েছে। অভিজ্ঞরা ধারাবাহিক ফর্মে না থাকা, খেলোয়াড়দের ভেতরের দ্বন্দ্ব, লিগের মান খারাপের কারণে নতুন খেলোয়াড় উঠে না আসা—ইত্যাদি কারণ হিসেবে দেখেন অনেকে।
সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা পেশাদারত্ব নিয়েই বরং কথা বলি। একবার ভাবুনতো, ফুলটাইম রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, করপোরেটের বড় কর্তা, সংসদ সদস্য—এমন লোকজন চালান ক্রিকেট বোর্ড। বিশ্বে এমনটি বিরল।
আবার খেলোয়াড়দের কথা বললে—ফর্মের তুঙ্গে থাকা জাতীয় দলের খেলোয়াড় করেন রাজনীতি, সংসদ সদস্য হয়ে নেতৃত্ব দেন দলে, জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় আছেন কেউ, আছেন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারীও। এগুলো কতখানি খেলোয়াড়সুলভ আচরণ সেটি নিয়ে তো প্রশ্ন উঠছেই।
অনেকে মনে করেন, খেলায় রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রবেশের কারণেই ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ থেকেই মাঝেমধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়। বোর্ডের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব, খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বন্দ্ব, খেলোয়াড়–কোচ দ্বন্দ্ব—এমন অনেক অশুভ চর্চার কথা শোনা যায়। সর্বশেষ তামিম ইকবালের ঘটনায় সেসবেরই ইঙ্গিত মিলছে। দেখা যাচ্ছে, কেউই পেশাদারসুলভ কথা বলছেন না। কেউ পরিষ্কার করে কিছু না বললেও, সাকিব–তামিম দ্বন্দ্বের কথাই বারবার সামনে আসছে। ক্ষোভ থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়া তামিমকে প্রধানমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় দলে ফেরানো হয়েছিল। বিশ্বকাপ স্কোয়াড গঠনের সময় সেই তামিমকে নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে আর কেউ অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলছেন না।
আমরা দেখেছি, হুট করে অনেক খেলোয়াড় সিরিজের মাঝপথে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কাজে দলের বাইরে চলে আসছেন। তাঁকে বা তাঁদের আটকান না বা আটকাতে পারেন না কোনো কর্তা। এসব ঘটনায় সমালোচনার জবাবে, কর্মকর্তা বা কোচ যে যুক্তি দেখান তা হাস্যকর।
ঘরোয়া লিগের মান কমে গেছে, এর দায় বোর্ড কর্তারা এড়াতে পারেন না। অভিযোগ আছে, লিগে কিছু দল প্রভাবশালী পরিচালকেরা চালান। তাঁরা নিজের দলকে জেতাতে যা প্রয়োজন তা–ই করেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। অভিযোগ আছে, অনিয়ম করে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দেওয়া হয়। আম্পায়ারদের পক্ষপাতিত্ব করার নির্দেশ দেওয়া হয়। খেলোয়াড়কে একটা নির্দিষ্ট রান বেঁধে দেওয়া হয়।
আরও নিম্ন পর্যায়ের ক্রিকেটে চলে বাণিজ্য। টাকা দিয়ে একজন খেলোয়াড়কে ম্যাচ খেলতে হয়। যেখানে খেলোয়াড়েরই উল্টো টাকা পাওয়ার কথা। জাতীয় লিগে যদি সুযোগ হয় সেই আশায় নজরে পড়তে কর্তাদের টাকা দিয়ে খেলার সুযোগ করে নেন তাঁরা।
একটু পেছনে তাকালেই আমাদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে উঠবে কেনিয়ার অবস্থা। ক্রিকেটে উদীয়মান একটি দল ছিল কেনিয়া। কিন্তু পরবর্তীতে রাজনীতি, দুর্নীতি, অনিয়ম আর স্বজনপ্রীতির কারণে ধংস হয়ে গেছে।
অপেশাদার প্রশাসন, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ব্যবস্থা, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে জোর না দেওয়ার কারণে কেনিয়ার ক্রিকেট ধ্বংস হয়ে গেছো। একই পথে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট। অবশ্য ইদানীং সেখান থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছে জিম্বাবুয়ে। আমার বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও এমন ভবিষ্যৎ দেখতে চাই না। আমরা বোর্ডে চাই উৎসাহী ও উদ্যমী কর্মকর্তা, মাঠে চাই পেশাদার খেলোয়াড়।
লেখক- সহ সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
বাজার অর্থনীতির যুগে বৈশ্বিক কোনো খেলাই আর স্রেফ খেলা থাকেনি। আন্তর্জাতিক আয়োজনগুলো বড় বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। তারকা খেলোয়াড়দের জীবনযাপনেই তা স্পষ্ট। ফলে এর মধ্যেও ঢুকে পড়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি। কিন্তু পেশাদারত্বের সঙ্গে তো সমঝোতা চলে না। বাংলাদেশে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটে সম্ভবত সেটিরই সংকট চলছে।
এক সময় বাংলাদেশে দর্শকেরা মন দিয়েছিলেন ফুটবলে। কিন্তু সেখানেও খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বোর্ড কর্তাদের অপেশাদারি আচরণের কারণে দর্শকের আস্থা তলানিতে ঠেকেছে। সম্প্রতি মেয়েদের ফুটবল নিয়ে বড় সম্ভাবনা দেখতে শুরু করেছিলেন দর্শকেরা। কিন্তু বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আচরণে সবাই চরমভাবে হতাশ হয়েছেন। ক্ষুব্ধ একাধিক খেলোয়াড় অবসর অথবা দেশ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ফুটবলের সোনালী অতীত এখন শুধুই হতাশার মেঘে ঢাকা। এ নিয়ে আর কারও আলাপ করার প্রবৃত্তি নেই। আলোচনায় এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট। বিশেষ করে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে নানা নাটকীয়তা এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
খেলার খবরে আগ্রহী যারা গণমাধ্যমে নিয়মিত রাখেন তাঁরা নিশ্চয়ই দেখেছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে খুবই অস্থির সময় যাচ্ছে। বোর্ড কর্তাদের নানা কথাবার্তা, খেলোয়াড়দের কর্মকাণ্ড এবং মাঠের পারফরমেন্স—সেই অস্থিরতারই প্রতিফলন।
এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হলো? এ নিয়ে নানা তত্ত্ব ও তথ্য রয়েছে। অভিজ্ঞরা ধারাবাহিক ফর্মে না থাকা, খেলোয়াড়দের ভেতরের দ্বন্দ্ব, লিগের মান খারাপের কারণে নতুন খেলোয়াড় উঠে না আসা—ইত্যাদি কারণ হিসেবে দেখেন অনেকে।
সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা পেশাদারত্ব নিয়েই বরং কথা বলি। একবার ভাবুনতো, ফুলটাইম রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, করপোরেটের বড় কর্তা, সংসদ সদস্য—এমন লোকজন চালান ক্রিকেট বোর্ড। বিশ্বে এমনটি বিরল।
আবার খেলোয়াড়দের কথা বললে—ফর্মের তুঙ্গে থাকা জাতীয় দলের খেলোয়াড় করেন রাজনীতি, সংসদ সদস্য হয়ে নেতৃত্ব দেন দলে, জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় আছেন কেউ, আছেন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারীও। এগুলো কতখানি খেলোয়াড়সুলভ আচরণ সেটি নিয়ে তো প্রশ্ন উঠছেই।
অনেকে মনে করেন, খেলায় রাজনীতি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রবেশের কারণেই ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ থেকেই মাঝেমধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়। বোর্ডের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব, খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বন্দ্ব, খেলোয়াড়–কোচ দ্বন্দ্ব—এমন অনেক অশুভ চর্চার কথা শোনা যায়। সর্বশেষ তামিম ইকবালের ঘটনায় সেসবেরই ইঙ্গিত মিলছে। দেখা যাচ্ছে, কেউই পেশাদারসুলভ কথা বলছেন না। কেউ পরিষ্কার করে কিছু না বললেও, সাকিব–তামিম দ্বন্দ্বের কথাই বারবার সামনে আসছে। ক্ষোভ থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়া তামিমকে প্রধানমন্ত্রীর মধ্যস্থতায় দলে ফেরানো হয়েছিল। বিশ্বকাপ স্কোয়াড গঠনের সময় সেই তামিমকে নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে আর কেউ অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গ তুলছেন না।
আমরা দেখেছি, হুট করে অনেক খেলোয়াড় সিরিজের মাঝপথে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কাজে দলের বাইরে চলে আসছেন। তাঁকে বা তাঁদের আটকান না বা আটকাতে পারেন না কোনো কর্তা। এসব ঘটনায় সমালোচনার জবাবে, কর্মকর্তা বা কোচ যে যুক্তি দেখান তা হাস্যকর।
ঘরোয়া লিগের মান কমে গেছে, এর দায় বোর্ড কর্তারা এড়াতে পারেন না। অভিযোগ আছে, লিগে কিছু দল প্রভাবশালী পরিচালকেরা চালান। তাঁরা নিজের দলকে জেতাতে যা প্রয়োজন তা–ই করেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। অভিযোগ আছে, অনিয়ম করে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দেওয়া হয়। আম্পায়ারদের পক্ষপাতিত্ব করার নির্দেশ দেওয়া হয়। খেলোয়াড়কে একটা নির্দিষ্ট রান বেঁধে দেওয়া হয়।
আরও নিম্ন পর্যায়ের ক্রিকেটে চলে বাণিজ্য। টাকা দিয়ে একজন খেলোয়াড়কে ম্যাচ খেলতে হয়। যেখানে খেলোয়াড়েরই উল্টো টাকা পাওয়ার কথা। জাতীয় লিগে যদি সুযোগ হয় সেই আশায় নজরে পড়তে কর্তাদের টাকা দিয়ে খেলার সুযোগ করে নেন তাঁরা।
একটু পেছনে তাকালেই আমাদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে উঠবে কেনিয়ার অবস্থা। ক্রিকেটে উদীয়মান একটি দল ছিল কেনিয়া। কিন্তু পরবর্তীতে রাজনীতি, দুর্নীতি, অনিয়ম আর স্বজনপ্রীতির কারণে ধংস হয়ে গেছে।
অপেশাদার প্রশাসন, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ব্যবস্থা, সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে জোর না দেওয়ার কারণে কেনিয়ার ক্রিকেট ধ্বংস হয়ে গেছো। একই পথে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট। অবশ্য ইদানীং সেখান থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছে জিম্বাবুয়ে। আমার বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও এমন ভবিষ্যৎ দেখতে চাই না। আমরা বোর্ডে চাই উৎসাহী ও উদ্যমী কর্মকর্তা, মাঠে চাই পেশাদার খেলোয়াড়।
লেখক- সহ সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
দুটো ঘটনা ঘটল পরপর। গোপালগঞ্জ আর চকরিয়ায়। প্রথম ঘটনায় দুঃখজনকভাবে ঝরে পড়েছে পাঁচটি প্রাণ। এই প্রাণহানি এড়ানো যেত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দ্বিতীয় ঘটনাটিতে দেখা যাচ্ছে, কক্সবাজারে এনসিপির একজন নেতার বক্তৃতার সূত্র ধরে বিএনপি মহলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
১৬ ঘণ্টা আগে২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার অধিকাংশ দেশ, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কিছু বড় অর্থনীতির দেশ এবং আফ্রিকার কিছু দেশের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন আধিপত্য বিস্তার করেছিল ইউরোপের প্রায় পুরো অঞ্চল, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিস্তৃত অংশ এবং দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশের সঙ্গে।
১৬ ঘণ্টা আগেনির্বাচন হওয়া এবং না-হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আছে, সংশয়ও আছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন হবে বলে আশা করা হলেও এটা নিশ্চিত নয়। এখানে ‘যদি’,‘কিন্তু’ আছে। নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ-উৎসাহ বিএনপির।
১৬ ঘণ্টা আগেমনজিল মোরসেদ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী। তিনি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট। জনস্বার্থে এ পর্যন্ত তিনি ২২৫টির বেশি মামলা করে মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
২ দিন আগে