আজকের পত্রিকা ডেস্ক
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আজ সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়।
বিমানটি আছড়ে পড়েছে উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে। ওই সময় ভবনটিতে ১০০ থেকে ১৫০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। এরই মধ্যে দগ্ধ অন্তত ২৫ জনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য হাসপাতালেও অনেক আহত ব্যক্তিকে নেওয়া হয়েছে। বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। দগ্ধদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী।
বিধ্বস্ত এফ-৭ বিজিআই বিমানটি মূলত চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের একটি যুদ্ধবিমান। প্রস্তুতকারক চেংদু এয়ারক্রাফট করপোরেশন। জানা যায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে এই সিরিজের সবচেয়ে আধুনিক মডেলের যুদ্ধবিমান সরবরাহের পর চীন এই সিরিজের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
বাংলাদেশে এই মডেলের বিমানের তৃতীয় দুর্ঘটনা এটি। এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রসুলপুরে ফায়ারিং রেঞ্জে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দিপু নিহত হন। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ এমবি। এতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ নিহত হন।
এফ-৭ বিজিআই (যেখানে আই বলতে ইমপ্রুভড বা আগের ভার্সনের চেয়ে উন্নত বোঝানো হয়) যুদ্ধবিমানটি মূলত এফ-৭ বিজি-এর উন্নত রূপ, যার মূল ভার্সন জে-৭ জি। এই এফ-৭ বিজিআই মূলত বাংলাদেশের জন্যই আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছিল।
এফ-৭ বিজির তুলনায় এফ-৭ বিজিআইয়ের বেশ কিছু চোখে পড়ার মতো আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন এফ-৭ বিজিআইয়ে তিনটি মাল্টি ফাংশনাল ডিসপ্লে এবং আরও শক্তিশালী ফায়ার কন্ট্রোল রাডার রয়েছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ২০১১ সালে ১৬টি যুদ্ধবিমান সরবরাহের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৩ সাল নাগাদ এই যুদ্ধবিমানগুলোর ডেলিভারি সম্পন্ন হয়।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মোট ৩৬টি এফ-৭ যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই এফ-৭ বিজিআই ভ্যারিয়েন্ট। তবে এফ-৭ এমবি ও এফটি-৭ ভ্যারিয়েন্টও রয়েছে। তবে মোট ফাইটার ভ্যারিয়েন্ট ৩৬টি।
লাইটওয়েট মাল্টিরোল ফাইটার ধরনের এই যুদ্ধবিমানগুলোর গতি সাধারণত মাক ২ দশমিক ২ বা শব্দের গতির অন্তত ২ দশমিক ২ গুণ। এগুলোতে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড বোমা, জিপিএস গাইডেড বোমা এবং বাড়তি জ্বালানি ট্যাংক ও অস্ত্র বহনের জন্য পাঁচটি হার্ড পয়েন্ট রয়েছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো ১ হাজার ৫০০ কেজির মতো ভার বহন করতে পারে।
এ ধরনের যুদ্ধবিমানের ককপিটে একজনমাত্র পাইলট বসতে পারেন। ককপিট সম্পূর্ণ কাচের। এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করা হয়েছে কেএলজে-৬ এফ রাডার। এই যুদ্ধবিমান ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ৫০০ মিটার বা ৫৭ হাজার ৪২০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, বেশির ভাগ রাশিয়ার বিগ-২১ ও অন্যান্য সমসাময়িক অনেক যুদ্ধবিমানের চেয়ে এটি বেশি দ্রুত ম্যানুভার বা দিক পরিবর্তনে সক্ষম। এর পাল্লা কমবেশি ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার।
তথ্যসূত্র:
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (মিলিটারি ব্যালেন্স-২০২৩ সংস্করণ)
ফ্লাইট গ্লোবাল প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড এয়ার ফোর্স-২০২৩’ প্রতিবেদন
জাপান ডিফেন্স উইকলি
চেংদু এয়ারক্রাফট করপোরেশনের ডেটাশিট
আরও খবর পড়ুন:
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আজ সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়।
বিমানটি আছড়ে পড়েছে উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে। ওই সময় ভবনটিতে ১০০ থেকে ১৫০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছিল। এরই মধ্যে দগ্ধ অন্তত ২৫ জনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য হাসপাতালেও অনেক আহত ব্যক্তিকে নেওয়া হয়েছে। বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। দগ্ধদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী।
বিধ্বস্ত এফ-৭ বিজিআই বিমানটি মূলত চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের একটি যুদ্ধবিমান। প্রস্তুতকারক চেংদু এয়ারক্রাফট করপোরেশন। জানা যায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে এই সিরিজের সবচেয়ে আধুনিক মডেলের যুদ্ধবিমান সরবরাহের পর চীন এই সিরিজের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
বাংলাদেশে এই মডেলের বিমানের তৃতীয় দুর্ঘটনা এটি। এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রসুলপুরে ফায়ারিং রেঞ্জে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দিপু নিহত হন। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় এফ-৭ এমবি। এতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ নিহত হন।
এফ-৭ বিজিআই (যেখানে আই বলতে ইমপ্রুভড বা আগের ভার্সনের চেয়ে উন্নত বোঝানো হয়) যুদ্ধবিমানটি মূলত এফ-৭ বিজি-এর উন্নত রূপ, যার মূল ভার্সন জে-৭ জি। এই এফ-৭ বিজিআই মূলত বাংলাদেশের জন্যই আলাদাভাবে তৈরি করা হয়েছিল।
এফ-৭ বিজির তুলনায় এফ-৭ বিজিআইয়ের বেশ কিছু চোখে পড়ার মতো আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন এফ-৭ বিজিআইয়ে তিনটি মাল্টি ফাংশনাল ডিসপ্লে এবং আরও শক্তিশালী ফায়ার কন্ট্রোল রাডার রয়েছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ২০১১ সালে ১৬টি যুদ্ধবিমান সরবরাহের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ২০১৩ সাল নাগাদ এই যুদ্ধবিমানগুলোর ডেলিভারি সম্পন্ন হয়।
বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মোট ৩৬টি এফ-৭ যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই এফ-৭ বিজিআই ভ্যারিয়েন্ট। তবে এফ-৭ এমবি ও এফটি-৭ ভ্যারিয়েন্টও রয়েছে। তবে মোট ফাইটার ভ্যারিয়েন্ট ৩৬টি।
লাইটওয়েট মাল্টিরোল ফাইটার ধরনের এই যুদ্ধবিমানগুলোর গতি সাধারণত মাক ২ দশমিক ২ বা শব্দের গতির অন্তত ২ দশমিক ২ গুণ। এগুলোতে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড বোমা, জিপিএস গাইডেড বোমা এবং বাড়তি জ্বালানি ট্যাংক ও অস্ত্র বহনের জন্য পাঁচটি হার্ড পয়েন্ট রয়েছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো ১ হাজার ৫০০ কেজির মতো ভার বহন করতে পারে।
এ ধরনের যুদ্ধবিমানের ককপিটে একজনমাত্র পাইলট বসতে পারেন। ককপিট সম্পূর্ণ কাচের। এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমানে ব্যবহার করা হয়েছে কেএলজে-৬ এফ রাডার। এই যুদ্ধবিমান ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ৫০০ মিটার বা ৫৭ হাজার ৪২০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, বেশির ভাগ রাশিয়ার বিগ-২১ ও অন্যান্য সমসাময়িক অনেক যুদ্ধবিমানের চেয়ে এটি বেশি দ্রুত ম্যানুভার বা দিক পরিবর্তনে সক্ষম। এর পাল্লা কমবেশি ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার।
তথ্যসূত্র:
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (মিলিটারি ব্যালেন্স-২০২৩ সংস্করণ)
ফ্লাইট গ্লোবাল প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড এয়ার ফোর্স-২০২৩’ প্রতিবেদন
জাপান ডিফেন্স উইকলি
চেংদু এয়ারক্রাফট করপোরেশনের ডেটাশিট
আরও খবর পড়ুন:
বিশেষ আদেশে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গণভোটের বিষয়ের মধ্যে পুরো জুলাই সনদ না দিয়ে সংবিধান-সম্পর্কিত বিষয় থাকতে পারে। এ ছাড়া জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে।
৮ ঘণ্টা আগেঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গতকাল শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে কার্গো ভিলেজের আমদানি কমপ্লেক্সের পুরোটাই পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সব উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকে।
১০ ঘণ্টা আগেমাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অসদাচরণের অভিযোগে ১৮ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে।
১১ ঘণ্টা আগেশফিকুর রহমান বলেন, ‘গত এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের দুই স্থানে—রাজধানীর মিরপুরে এবং চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায়—ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আকস্মিক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, এ ব্যাপারে আমরা সকলে উদ্বিগ্ন।’
১২ ঘণ্টা আগে