Ajker Patrika

নির্বাচন অবিলম্বে, না বিলম্বে?

সম্পাদকীয়
নির্বাচন অবিলম্বে, না বিলম্বে?

নির্বাচন হওয়া এবং না-হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা আছে, সংশয়ও আছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন হবে বলে আশা করা হলেও এটা নিশ্চিত নয়। এখানে ‘যদি’,‘কিন্তু’ আছে। নির্বাচন নিয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ-উৎসাহ বিএনপির। কিন্তু বিএনপি নেতাদের সর্বশেষ বক্তব্যে একধরনের হতাশার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে আদৌ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব কি না—এ প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ১৯ জুলাই তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো একটি অংশের সহায়তায় কেউ কেউ দেশে উদ্দেশ্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে কি না—এ বিষয়ে জনমনে জিজ্ঞাসা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সংঘটিত কিছু নৃশংস ঘটনা জনমনে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

অন্যদিকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একই দিন বলেছেন, ‘যত দিন যাচ্ছে, পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, জনগণের অগ্রযাত্রায় বিশ্বাস করে না, তারা আবার সক্রিয় হচ্ছে। এই অবস্থায় অনতিবিলম্বে নির্বাচন দিয়ে পরিস্থিতি ঠিক করার দায়িত্ব এখন অন্তর্বর্তী সরকারের, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের।’ সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অযথা বিলম্ব না করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অবিলম্বে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘আপনারা নিশ্চিত থাকুন, চিফ অ্যাডভাইজার (প্রধান উপদেষ্টা) যেদিন নির্বাচনের কথা বলেছেন, সেদিনই নির্বাচন হবে। এক দিনও পেছানো হবে না।’ প্রেস সচিবের বক্তব্য কাউকে স্বস্তি দিচ্ছে না এ কারণে যে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ বলেননি।

দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার ছেলেখেলা করেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে নির্বাচনকে তামাশায় পরিণত করে অবশেষে প্রবল ছাত্র-গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন। এখন ক্ষমতায় আছে একটি অনির্বাচিত ও অরাজনৈতিক সরকার। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব একটি নির্বাচন আয়োজন করা এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা। প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা, মিডিয়া ও নাগরিক সমাজের স্বাধীনতা, বিরোধী দলের সভা-সমাবেশের নিশ্চয়তা এবং নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধির সুষ্ঠু প্রয়োগ—এ সবই বিশ্বাসযোগ্যতার পূর্বশর্ত। নির্বাচন শুধুই একটি দিন নয়, এটি একটি প্রক্রিয়া, যা শুরু হয় প্রস্তুতি থেকে, শেষ হয় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে।

নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য দূর হওয়ার লক্ষণ এখনো স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর স্মরণ রাখা দরকার—আস্থা অর্জন করতে সময় লাগে, হারাতে লাগে এক মুহূর্ত। অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনীতির সব অংশীজনের দায়িত্ব হচ্ছে সব মতভেদ দূরে রেখে অবিলম্বে সব ধরনের বিতর্কমুক্ত একটি নির্বাচনের আয়োজন করা। দেশ শাসনের দায়িত্ব নিক জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়া একটি সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা চবির হল শাখা শিবিরের সভাপতি

মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় অবিবাহিত মেয়ে, টাকা যায় মেম্বারের জামাতার মোবাইলে

পানছড়ি বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করলেন ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা

গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের ময়নাতদন্ত কেন হয়নি, ব্যাখ্যা দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত