এম আর রহমান
একেই বোধ হয় বলে কপাল। ছিলেন জিরো, হয়ে গেলেন হিরো। বলছি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কথা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের আগে জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ছিল মাত্র ২৮ শতাংশ এবং তাঁর দলের জনপ্রিয়তা ছিল ১১ শতাংশ। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর তিনি ব্যাপক জনসমর্থন পান এবং তাঁর জনপ্রিয়তা সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যায়। তবে গত দুই বছরে এটি ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। এপ্রিল ২০২৪-এ তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল ৫৪ শতাংশ, যা জানুয়ারি ২০২৫-এ নেমে আসে ৪৯ শতাংশে। যদিও এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির মতো অতটা কম নয়, তবে ২০২২ সালের মে মাসের ৯০ শতাংশ জনপ্রিয়তা থেকে অনেক দূরে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইউক্রেনে জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র ৪ শতাংশে নেমে এসেছে এবং তিনি দেশটিতে নির্বাচন না দিয়ে স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন।
জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা কমার পেছনে অবশ্য একাধিক কারণ রয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে তাঁর প্রশাসনের দুর্নীতি। এ ছাড়া রয়েছে চলমান যুদ্ধ নিয়ে ক্লান্তি।
তবে পরিস্থিতি ঘুরে গেছে সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পর। গত শুক্রবার ওভাল অফিসে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তি করতে বসেছিলেন ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকা এত দিন যত সহায়তা দিয়েছে, তার বিনিময়ে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদগুলোর ৫০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের দিয়ে দেওয়া উচিত। যা-ই হোক। এ বৈঠকে ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স চরম অপমান করে বসলেন জেলেনস্কিকে। আর এটাই তাঁর জন্য হয়ে যায় শাপেবর।
ওভাল অফিসের ওই বৈঠকে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং পুতিনের সঙ্গে আপস করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে বেজায় খেপে যান ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেন যে জেলেনস্কির কর্মকাণ্ড তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আসলে ট্রাম্প ও ভ্যান্স উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি সমর্থনের জন্য জেলেনস্কির কাছ থেকে আরও স্পষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশের আশা করেছিলেন। তাঁদের মতে, জেলেনস্কি যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করেননি, যা তাঁদের অসন্তোষের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বৈঠকের উত্তেজনার কারণে পূর্বনির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন এবং মধ্যাহ্নভোজন বাতিল করা হয়। জেলেনস্কি ও তাঁর প্রতিনিধিদের হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিতে হয়। বৈঠক শেষে অবশ্য জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থন ও সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, যা ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জেলেনস্কি উল্লেখ করেন যে এই সহায়তা ইউক্রেনের জনগণের মনোবল বৃদ্ধি করেছে এবং তাদের রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
একটা কথা প্রচলিত আছে, ‘বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে’। জেলেনস্কি সেই বড় হওয়ার জন্যই যেন ছোট হলেন।
জেলেনস্কিকে অপমান করার পর যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ জন ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্পকে দোষী করে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ইউরোপীয় দেশগুলো প্রকাশ্যে জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট করেছেন যে তাঁরা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ইউক্রেনকে সমর্থন করা কেবল নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি ইউরোপীয় নিরাপত্তারও প্রশ্ন।
এ ছাড়া, ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনের প্রতি তাঁর সংস্থার অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘ইউক্রেনকে দুর্বল করে কোনো কূটনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়।’
ট্রাম্পের এই আচরণের পর ইউরোপীয় দেশগুলো কিয়েভকে আরও সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে নতুন করে প্রতিরক্ষা সহায়তা প্যাকেজের ঘোষণা এসেছে, যা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করবে।
এই আন্তর্জাতিক সমর্থনের ফলে নিজ দেশেও জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউক্রেনীয় জনগণের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন যে জেলেনস্কি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপীয় সমর্থন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর মনোভাবের বিপরীতে জেলেনস্কির অবস্থান জনগণের মধ্যে সহানুভূতি ও সমর্থন সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধ চলাকালে একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রদর্শন করার কারণে তিনি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন।
তবে সর্বশেষ খবর হলো, জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি খনিজ চুক্তি সইয়ের জন্য
প্রস্তুত ইউক্রেন। গত রোববার ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে লন্ডনে এক সম্মেলনের পর এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ওই সম্মেলনে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করার বিকল্প উপায় খুঁজেছে। ইউরোপীয় নেতাদের এ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। সেখানে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উপস্থাপনের জন্য একটি ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করতে সম্মত হয়েছেন।
লন্ডন স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জেলেনস্কি বলেছেন, ‘এই চুক্তি এগিয়ে নিতে কিয়েভ প্রস্তুত আছে। অতীতে যা-ই ঘটুক না কেন আমাদের নীতি হলো সামনে অগ্রসর হওয়া। আমরা চুক্তি সই করতে প্রস্তুত এবং সত্যি বলতে, আমি বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্রও প্রস্তুত।’
এ ছাড়া তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করা যাবে।’
অনেক গণমাধ্যম জেলেনস্কির এসব বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতিস্বীকারের নামান্তর বলে অভিহত করলেও মনে হচ্ছে বড় হওয়ার জন্যই ফের তাঁর এই ছোট হওয়া।
লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক
একেই বোধ হয় বলে কপাল। ছিলেন জিরো, হয়ে গেলেন হিরো। বলছি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কথা। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের আগে জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ছিল মাত্র ২৮ শতাংশ এবং তাঁর দলের জনপ্রিয়তা ছিল ১১ শতাংশ। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর তিনি ব্যাপক জনসমর্থন পান এবং তাঁর জনপ্রিয়তা সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যায়। তবে গত দুই বছরে এটি ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। এপ্রিল ২০২৪-এ তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল ৫৪ শতাংশ, যা জানুয়ারি ২০২৫-এ নেমে আসে ৪৯ শতাংশে। যদিও এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির মতো অতটা কম নয়, তবে ২০২২ সালের মে মাসের ৯০ শতাংশ জনপ্রিয়তা থেকে অনেক দূরে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইউক্রেনে জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র ৪ শতাংশে নেমে এসেছে এবং তিনি দেশটিতে নির্বাচন না দিয়ে স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন।
জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা কমার পেছনে অবশ্য একাধিক কারণ রয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে তাঁর প্রশাসনের দুর্নীতি। এ ছাড়া রয়েছে চলমান যুদ্ধ নিয়ে ক্লান্তি।
তবে পরিস্থিতি ঘুরে গেছে সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পর। গত শুক্রবার ওভাল অফিসে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তি করতে বসেছিলেন ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকা এত দিন যত সহায়তা দিয়েছে, তার বিনিময়ে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদগুলোর ৫০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের দিয়ে দেওয়া উচিত। যা-ই হোক। এ বৈঠকে ট্রাম্প ও তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স চরম অপমান করে বসলেন জেলেনস্কিকে। আর এটাই তাঁর জন্য হয়ে যায় শাপেবর।
ওভাল অফিসের ওই বৈঠকে ট্রাম্প জেলেনস্কিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং পুতিনের সঙ্গে আপস করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে বেজায় খেপে যান ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেন যে জেলেনস্কির কর্মকাণ্ড তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আসলে ট্রাম্প ও ভ্যান্স উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি সমর্থনের জন্য জেলেনস্কির কাছ থেকে আরও স্পষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশের আশা করেছিলেন। তাঁদের মতে, জেলেনস্কি যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করেননি, যা তাঁদের অসন্তোষের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বৈঠকের উত্তেজনার কারণে পূর্বনির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন এবং মধ্যাহ্নভোজন বাতিল করা হয়। জেলেনস্কি ও তাঁর প্রতিনিধিদের হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিতে হয়। বৈঠক শেষে অবশ্য জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থন ও সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, যা ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জেলেনস্কি উল্লেখ করেন যে এই সহায়তা ইউক্রেনের জনগণের মনোবল বৃদ্ধি করেছে এবং তাদের রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
একটা কথা প্রচলিত আছে, ‘বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে’। জেলেনস্কি সেই বড় হওয়ার জন্যই যেন ছোট হলেন।
জেলেনস্কিকে অপমান করার পর যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ জন ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্পকে দোষী করে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ইউরোপীয় দেশগুলো প্রকাশ্যে জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট করেছেন যে তাঁরা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ইউক্রেনকে সমর্থন করা কেবল নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি ইউরোপীয় নিরাপত্তারও প্রশ্ন।
এ ছাড়া, ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনের প্রতি তাঁর সংস্থার অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘ইউক্রেনকে দুর্বল করে কোনো কূটনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়।’
ট্রাম্পের এই আচরণের পর ইউরোপীয় দেশগুলো কিয়েভকে আরও সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে নতুন করে প্রতিরক্ষা সহায়তা প্যাকেজের ঘোষণা এসেছে, যা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করবে।
এই আন্তর্জাতিক সমর্থনের ফলে নিজ দেশেও জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউক্রেনীয় জনগণের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন যে জেলেনস্কি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপীয় সমর্থন এবং ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর মনোভাবের বিপরীতে জেলেনস্কির অবস্থান জনগণের মধ্যে সহানুভূতি ও সমর্থন সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধ চলাকালে একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রদর্শন করার কারণে তিনি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন।
তবে সর্বশেষ খবর হলো, জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি খনিজ চুক্তি সইয়ের জন্য
প্রস্তুত ইউক্রেন। গত রোববার ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে লন্ডনে এক সম্মেলনের পর এমন মন্তব্য করেন তিনি।
ওই সম্মেলনে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করার বিকল্প উপায় খুঁজেছে। ইউরোপীয় নেতাদের এ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। সেখানে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে উপস্থাপনের জন্য একটি ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করতে সম্মত হয়েছেন।
লন্ডন স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জেলেনস্কি বলেছেন, ‘এই চুক্তি এগিয়ে নিতে কিয়েভ প্রস্তুত আছে। অতীতে যা-ই ঘটুক না কেন আমাদের নীতি হলো সামনে অগ্রসর হওয়া। আমরা চুক্তি সই করতে প্রস্তুত এবং সত্যি বলতে, আমি বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্রও প্রস্তুত।’
এ ছাড়া তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করা যাবে।’
অনেক গণমাধ্যম জেলেনস্কির এসব বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতিস্বীকারের নামান্তর বলে অভিহত করলেও মনে হচ্ছে বড় হওয়ার জন্যই ফের তাঁর এই ছোট হওয়া।
লেখক: সাংবাদিক ও কলাম লেখক
নেপাল ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক কেবল ভৌগোলিক নয়, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক বন্ধনে আবদ্ধ দুই দেশ। উন্মুক্ত সীমান্ত, অভিন্ন হিন্দু ঐতিহ্য এবং ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, নেপালে ভারত-বিরোধী মনোভাব একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং জটিল বাস্তবতা।
২১ মিনিট আগেআগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-সংশয় যা-ই বলি, এত দিন সে বিষয়টির পরিসর সীমিত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য এবং সাধারণত নির্বাক থাকা দেশের আমজনতার মনোজগতে। কিন্তু এখন যখন সরকারপ্রধান নিজেই সেই শঙ্কার কথা ব্যক্ত করছেন, তখন বিষয়টি যে মোটেই অমূলক নয়, তা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না
১৩ ঘণ্টা আগেআজ থেকে খুব বেশি দিন না, এই ধরেন, বারো-সাড়ে বারো শ বছর আগের কথা। হীরকরাজ্যে তখনো জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিদ্যা-শিক্ষার চর্চা হতো। রীতিমতো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ৩০০ বছর ধরে শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার), শ্যামদেশ (থাইল্যান্ড), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়াসহ
১৩ ঘণ্টা আগে৭ সেপ্টেম্বর বদরুদ্দীন উমরের জীবনের প্রস্থান হয়েছে। তাঁর এই প্রস্থানের মধ্য দিয়ে তিন পুরুষের রাজনৈতিক ধারারও সমাপ্তি ঘটেছে। তাঁর দাদা আবুল কাসেম ছিলেন তৎকালীন জাতীয় কংগ্রেসের পার্লামেন্টারিয়ান বোর্ডের সদস্য। বাবা আবুল হাশিম ছিলেন মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আর তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট ধারার নেতা।
১৩ ঘণ্টা আগে