» ৯ কোম্পানি মুনাফার বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা।
» নিট মুনাফা ৮,১৬৭ কোটি ১১ লাখ টাকা।
» লভ্যাংশ ঘোষণা ৯,৭৯৪ কোটি ৫ লাখ টাকা।
» মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ ১,৬২৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বহুজাতিক কোম্পানি গত অর্থবছরের মুনাফার তুলনায় বেশি পরিমাণ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এতে প্রশ্ন উঠছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো কি বাংলাদেশে তাদের পুনর্বিনিয়োগের আগ্রহ হারাচ্ছে? পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি সরাসরি একটি ‘বিনিয়োগ প্রত্যাহার’-এর কৌশল, যা দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য বলছে, তালিকাভুক্ত ১৩টি বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে ৯টিই নিট মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সামগ্রিকভাবে তাদের নিট মুনাফা ছিল ৮ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা, কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৯ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বেশি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মুনাফার এই অতিরিক্ত অংশ নগদ আকারে মূল কোম্পানির দেশে পাঠানো হচ্ছে, যা বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়ার লক্ষণ। বিশেষ করে ডলার-সংকটের প্রেক্ষাপটে বিগত বছরগুলোতে যেসব লভ্যাংশ বিদেশে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি, এখন তা একবারে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
ডলারের অবমূল্যায়ন, সুযোগের সদ্ব্যবহার
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ডলার-সংকটের কারণে বিদেশি কোম্পানিগুলো আগের বছরগুলোতে লভ্যাংশ নিয়ে যেতে পারেনি। এখন সংকট কিছুটা কাটায় সেই অর্থ একসঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে তারা।’ তিনি আরও বলেন, ‘টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। তাই অনেকেই ভাবছে, ভবিষ্যতে আরও অবমূল্যায়ন হলে তাদের লভ্যাংশের প্রকৃত মূল্য কমে যেতে পারে।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘পুনর্বিনিয়োগের পরিবর্তে তারা লভ্যাংশ তুলে নিচ্ছে। এটা দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে তাদের আগ্রহ কমারই ইঙ্গিত দেয়।’
পুনর্বিনিয়োগে অনাগ্রহ, অথচ সুযোগ আছে
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বাংলাদেশের বাজারে এখনো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য ভালো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তারা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন বিনিয়োগ তাদের বৈশ্বিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে এটা আমাদের ব্যর্থতা যে আমরা সেই বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারছি না।’
লভ্যাংশ ইল্ডে পোষায় না
এসএআর সিকিউরিটিজের এমডি শরীফ আতাউর রহমান বলেন, ‘তারা বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও ইল্ড (নির্দিষ্ট সময়ে একটি বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের হার) হিসাব করলে তা পোষায় না। উদাহরণস্বরূপ, ৩০০ টাকার শেয়ারে ৫০ শতাংশ লভ্যাংশে প্রকৃত লাভ কম। এটা শুধু নগদ ফেরত নেওয়ার কৌশল।’
কে কত বেশি তুলল
সর্বোচ্চ লভ্যাংশ তুলেছে গ্রামীণফোন—৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার মুনাফার বিপরীতে ৪ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকার লভ্যাংশ। ম্যারিকো বাংলাদেশ ৬১৯ কোটি টাকা, লাফার্জহোলসিম ১১৩ কোটি টাকা এবং রবি, রেকিট বেনকিজার, সিঙ্গার, আরকে সিরামিকস, লিন্ডে বিডি, ইউনিলিভারও ঘোষণা করেছে মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ। বিপরীতে বিএটিবিসি, বার্জার পেইন্টস, বাটা শু ও হাইডেলবার্গ সিমেন্ট কিছুটা কম লভ্যাংশ দিয়েছে, তবে প্রবণতা মোটামুটি একই।
সব ‘নীতিমালার মধ্যে’– কোম্পানিগুলোর ব্যাখ্যা
ম্যারিকো বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব শাহিনুল ইসলাম দাবি করেন, ‘আমাদের লভ্যাংশ নীতির সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রিটেইন্ড আর্নিংস ও তারল্য যথেষ্ট রয়েছে।’
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, বাংলাদেশে যদি প্রবৃদ্ধির সুযোগ থাকে, তাহলে বিনিয়োগ বাড়ছে না কেন? পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বলছে, কোম্পানির লভ্যাংশ বা বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ নেই। সংস্থার পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, কোম্পানি পুনর্বিনিয়োগ করবে কি না, ব্যবসা বাড়াবে কি না, সেটা কোম্পানির সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঠিক করতে পারে না।
তবে স্পষ্টতই প্রশ্ন উঠছে, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছে বাংলাদেশ শুধুই লাভ তুলে নেওয়ার ক্ষেত্র হয়ে উঠছে কি না?
আরও খবর পড়ুন:
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বহুজাতিক কোম্পানি গত অর্থবছরের মুনাফার তুলনায় বেশি পরিমাণ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এতে প্রশ্ন উঠছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো কি বাংলাদেশে তাদের পুনর্বিনিয়োগের আগ্রহ হারাচ্ছে? পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি সরাসরি একটি ‘বিনিয়োগ প্রত্যাহার’-এর কৌশল, যা দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য বলছে, তালিকাভুক্ত ১৩টি বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে ৯টিই নিট মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সামগ্রিকভাবে তাদের নিট মুনাফা ছিল ৮ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা, কিন্তু লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ৯ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বেশি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মুনাফার এই অতিরিক্ত অংশ নগদ আকারে মূল কোম্পানির দেশে পাঠানো হচ্ছে, যা বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়ার লক্ষণ। বিশেষ করে ডলার-সংকটের প্রেক্ষাপটে বিগত বছরগুলোতে যেসব লভ্যাংশ বিদেশে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি, এখন তা একবারে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
ডলারের অবমূল্যায়ন, সুযোগের সদ্ব্যবহার
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ডলার-সংকটের কারণে বিদেশি কোম্পানিগুলো আগের বছরগুলোতে লভ্যাংশ নিয়ে যেতে পারেনি। এখন সংকট কিছুটা কাটায় সেই অর্থ একসঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে তারা।’ তিনি আরও বলেন, ‘টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। তাই অনেকেই ভাবছে, ভবিষ্যতে আরও অবমূল্যায়ন হলে তাদের লভ্যাংশের প্রকৃত মূল্য কমে যেতে পারে।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকা'কে বলেন, ‘পুনর্বিনিয়োগের পরিবর্তে তারা লভ্যাংশ তুলে নিচ্ছে। এটা দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশে তাদের আগ্রহ কমারই ইঙ্গিত দেয়।’
পুনর্বিনিয়োগে অনাগ্রহ, অথচ সুযোগ আছে
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, বাংলাদেশের বাজারে এখনো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য ভালো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তারা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আইসিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন বিনিয়োগ তাদের বৈশ্বিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে এটা আমাদের ব্যর্থতা যে আমরা সেই বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারছি না।’
লভ্যাংশ ইল্ডে পোষায় না
এসএআর সিকিউরিটিজের এমডি শরীফ আতাউর রহমান বলেন, ‘তারা বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও ইল্ড (নির্দিষ্ট সময়ে একটি বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের হার) হিসাব করলে তা পোষায় না। উদাহরণস্বরূপ, ৩০০ টাকার শেয়ারে ৫০ শতাংশ লভ্যাংশে প্রকৃত লাভ কম। এটা শুধু নগদ ফেরত নেওয়ার কৌশল।’
কে কত বেশি তুলল
সর্বোচ্চ লভ্যাংশ তুলেছে গ্রামীণফোন—৩ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার মুনাফার বিপরীতে ৪ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকার লভ্যাংশ। ম্যারিকো বাংলাদেশ ৬১৯ কোটি টাকা, লাফার্জহোলসিম ১১৩ কোটি টাকা এবং রবি, রেকিট বেনকিজার, সিঙ্গার, আরকে সিরামিকস, লিন্ডে বিডি, ইউনিলিভারও ঘোষণা করেছে মুনাফার চেয়ে বেশি লভ্যাংশ। বিপরীতে বিএটিবিসি, বার্জার পেইন্টস, বাটা শু ও হাইডেলবার্গ সিমেন্ট কিছুটা কম লভ্যাংশ দিয়েছে, তবে প্রবণতা মোটামুটি একই।
সব ‘নীতিমালার মধ্যে’– কোম্পানিগুলোর ব্যাখ্যা
ম্যারিকো বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব শাহিনুল ইসলাম দাবি করেন, ‘আমাদের লভ্যাংশ নীতির সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রিটেইন্ড আর্নিংস ও তারল্য যথেষ্ট রয়েছে।’
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, বাংলাদেশে যদি প্রবৃদ্ধির সুযোগ থাকে, তাহলে বিনিয়োগ বাড়ছে না কেন? পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বলছে, কোম্পানির লভ্যাংশ বা বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ নেই। সংস্থার পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, কোম্পানি পুনর্বিনিয়োগ করবে কি না, ব্যবসা বাড়াবে কি না, সেটা কোম্পানির সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঠিক করতে পারে না।
তবে স্পষ্টতই প্রশ্ন উঠছে, বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছে বাংলাদেশ শুধুই লাভ তুলে নেওয়ার ক্ষেত্র হয়ে উঠছে কি না?
আরও খবর পড়ুন:
ব্যাংক খাতে অস্থিরতা, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় আমানতে নতুন করে সাড়া মিলেছে। চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে মাত্র তিন মাসে ব্যাংকে জমা বেড়েছে ৭৩ হাজার কোটি টাকা, যা প্রবৃদ্ধির হারে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
২ ঘণ্টা আগেকরপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচির অংশ হিসেবে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি কুমিল্লার মুরাদনগরের হতদরিদ্র কৃষক ও রিকশাচালক মো. মেহেদী হাসানকে স্ত্রী ও সন্তানের চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
১০ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) ও স্পেনভিত্তিক ল্যাটিন ট্রাভেল মানি ট্রান্সফার এস.এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বোর্ডরুমে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
১০ ঘণ্টা আগেইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১১ ঘণ্টা আগে