সম্পাদকীয়
‘এজিদের মতো থালায় বায়েজীদের মতো’ খানা খাওয়া সমঝদার মানুষ ছিলেন একজনই। তিনি মির্জা গালিব (১৭৯৭–১৮৬৯)। উর্দু ও ফারসি কবিতা, উত্তম মদিরা, তাজা ফুল, সুপক্ব ও মুর্শিদাবাদের সুস্বাদু আম আর কাবাব—এসব না বুঝলে মির্জা গালিবকে বোঝাই হয় না। এই যে চলছে আমের মৌসুম, হরেক রকম আমের গন্ধে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার যখন ম ম করছে, তখন বাংলা সাহিত্য থেকে কোট করতে গেলে সেই ‘আমসত্ত্ব দুধে ফেলি’তেই আপনাকে থামতে হবে। একটু অগ্রসর হলে অবশ্য রবীন্দ্রনাথের জাপান ভ্রমণে আম সঙ্গে নেওয়ার গল্পটা আসবে। আর? তেমন কিছু খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অথচ আমের মৌসুমে আপনি চোখ বন্ধ করে মির্জা গালিবকে স্মরণ করতে পারেন। গালিব বলেছিলেন, আমের দুটো গুণ থাকতে হবে: ১. হতে হবে প্রচুর মিষ্টি, ২. থাকতে হবে অসংখ্য। আমপ্রেমী বাঙালি, কোনো সন্দেহ আছে?
আমাদের আম খাওয়া ছিল গালিবের সূত্র মেনে। সামনে ছিল পাড়ার সব গাছের অসংখ্য আম। তা থেকে বাছাই হতো সবচেয়ে মিষ্টি আমের গাছ। তারপর চলত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। পকেটে থাকত ঝিনুক কিংবা বাঁশের ধারাল চটা। আমরা জানতাম, একেক গাছের আমের একেক স্বাদ। তার কোনোটা ঝিনুকে, কোনোটা বাঁশের চটায় কেটে খাওয়া হবে। তাতে স্বাদ অক্ষুণ্ণ থাকবে। কিন্তু লোহার কাটারিতে কাটা যাবে না। বড় হয়ে সে বিদ্যাটা হারিয়ে গেছে, ছোটবেলার মতোই। আর ঘোষণা দিয়ে এ মৌসুমে প্রতিদিন সকালবেলা যে যুদ্ধ হতো, তাতে থাকত সুপক্ব আম, বাড়ির ভাজা মচমচে তাজা মুড়ি আর কালো গাইয়ের দুধ। মানে গাইটা কালো না হলেও চলত, তবে দুধ থাকতেই হতো। আর কিছু নয়।
সে যাক, গালিবের কথা যখন এসেই পড়েছে আর আমের মৌসুম যখন চলছেই, গালিব এবং আম নিয়ে তাই একখানা গল্প নিবেদন করা যাক।
একদিন গালিব তাঁর প্রিয় বন্ধু হাকিম রাজিউদ্দিন খানের সঙ্গে নিজের বাড়ির বারান্দায় বসে ছিলেন। হাকিম সাহেব আম পছন্দ করতেন না। রাস্তা দিয়ে একটি গাধা টানা গাড়ি যাচ্ছিল। রাস্তায় একরাশ আমের খোসা পড়েছিল। গাধাটা আমের খোসার গন্ধ শুঁকে নিজের মুখ ফিরিয়ে নিল। এ ঘটনা দেখে হাকিম সাহেব গালিবকে বললেন, ‘দেখেছ, গাধারাও আম পছন্দ করে না।’ গালিব একটু হেসে বললেন, ‘সত্যি, গাধারাই আম পছন্দ করে না!’
আষাঢ় এসেছে। আম পাকছে। শহুরে বাড়ির ছাদবাগানে বড় বড় টবে দু-একটা গাছে ঝুলতে দেখা যাচ্ছে বিচিত্র নামের আম। সে আমের ডালে শালিক-দোয়েল-চড়ুইয়ের বসার অধিকার নেই। ঢিল মেরে আম খাওয়ার অধিকারও নেই মানুষের। এদিকে আমের বাজারে চাহিদা আর জোগানের হিসাব। এই অধিকারহীনতার যুগে আমজনতা তাই আম নিয়ে স্মৃতিকাতর হবে—সেটাই স্বাভাবিক।
‘এজিদের মতো থালায় বায়েজীদের মতো’ খানা খাওয়া সমঝদার মানুষ ছিলেন একজনই। তিনি মির্জা গালিব (১৭৯৭–১৮৬৯)। উর্দু ও ফারসি কবিতা, উত্তম মদিরা, তাজা ফুল, সুপক্ব ও মুর্শিদাবাদের সুস্বাদু আম আর কাবাব—এসব না বুঝলে মির্জা গালিবকে বোঝাই হয় না। এই যে চলছে আমের মৌসুম, হরেক রকম আমের গন্ধে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার যখন ম ম করছে, তখন বাংলা সাহিত্য থেকে কোট করতে গেলে সেই ‘আমসত্ত্ব দুধে ফেলি’তেই আপনাকে থামতে হবে। একটু অগ্রসর হলে অবশ্য রবীন্দ্রনাথের জাপান ভ্রমণে আম সঙ্গে নেওয়ার গল্পটা আসবে। আর? তেমন কিছু খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অথচ আমের মৌসুমে আপনি চোখ বন্ধ করে মির্জা গালিবকে স্মরণ করতে পারেন। গালিব বলেছিলেন, আমের দুটো গুণ থাকতে হবে: ১. হতে হবে প্রচুর মিষ্টি, ২. থাকতে হবে অসংখ্য। আমপ্রেমী বাঙালি, কোনো সন্দেহ আছে?
আমাদের আম খাওয়া ছিল গালিবের সূত্র মেনে। সামনে ছিল পাড়ার সব গাছের অসংখ্য আম। তা থেকে বাছাই হতো সবচেয়ে মিষ্টি আমের গাছ। তারপর চলত সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। পকেটে থাকত ঝিনুক কিংবা বাঁশের ধারাল চটা। আমরা জানতাম, একেক গাছের আমের একেক স্বাদ। তার কোনোটা ঝিনুকে, কোনোটা বাঁশের চটায় কেটে খাওয়া হবে। তাতে স্বাদ অক্ষুণ্ণ থাকবে। কিন্তু লোহার কাটারিতে কাটা যাবে না। বড় হয়ে সে বিদ্যাটা হারিয়ে গেছে, ছোটবেলার মতোই। আর ঘোষণা দিয়ে এ মৌসুমে প্রতিদিন সকালবেলা যে যুদ্ধ হতো, তাতে থাকত সুপক্ব আম, বাড়ির ভাজা মচমচে তাজা মুড়ি আর কালো গাইয়ের দুধ। মানে গাইটা কালো না হলেও চলত, তবে দুধ থাকতেই হতো। আর কিছু নয়।
সে যাক, গালিবের কথা যখন এসেই পড়েছে আর আমের মৌসুম যখন চলছেই, গালিব এবং আম নিয়ে তাই একখানা গল্প নিবেদন করা যাক।
একদিন গালিব তাঁর প্রিয় বন্ধু হাকিম রাজিউদ্দিন খানের সঙ্গে নিজের বাড়ির বারান্দায় বসে ছিলেন। হাকিম সাহেব আম পছন্দ করতেন না। রাস্তা দিয়ে একটি গাধা টানা গাড়ি যাচ্ছিল। রাস্তায় একরাশ আমের খোসা পড়েছিল। গাধাটা আমের খোসার গন্ধ শুঁকে নিজের মুখ ফিরিয়ে নিল। এ ঘটনা দেখে হাকিম সাহেব গালিবকে বললেন, ‘দেখেছ, গাধারাও আম পছন্দ করে না।’ গালিব একটু হেসে বললেন, ‘সত্যি, গাধারাই আম পছন্দ করে না!’
আষাঢ় এসেছে। আম পাকছে। শহুরে বাড়ির ছাদবাগানে বড় বড় টবে দু-একটা গাছে ঝুলতে দেখা যাচ্ছে বিচিত্র নামের আম। সে আমের ডালে শালিক-দোয়েল-চড়ুইয়ের বসার অধিকার নেই। ঢিল মেরে আম খাওয়ার অধিকারও নেই মানুষের। এদিকে আমের বাজারে চাহিদা আর জোগানের হিসাব। এই অধিকারহীনতার যুগে আমজনতা তাই আম নিয়ে স্মৃতিকাতর হবে—সেটাই স্বাভাবিক।
গত সংখ্যায় লিখেছিলাম, এখন আর ছাত্র খুঁজে পাওয়া যায় না, চারদিকে পরীক্ষার্থী। কিন্তু দ্রুতই দেখা যাচ্ছে, ছাত্র এবং পরীক্ষার্থী কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছাত্রদের একটা বৃহদাংশ রাজনীতিবিদে পরিণত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের অঙ্গুলি হেলনে বড় বড় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও হয়ে যাচ্ছে। ভেবেছিলাম প্রাথমিক শিক্ষা
১৪ ঘণ্টা আগেবিজ্ঞানীরা বিংশ শতাব্দীজুড়ে বহির্জাগতিক প্রাণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চালিয়েছেন। খুঁজেছেন কার্বনভিত্তিক, সিলিকনভিত্তিক বা অ্যামোনিয়া যৌগনির্ভর প্রাণ। এটা আমাদের জানা জরুরি যে প্রাণের প্রকৃতি, আর অন্য জায়গায় প্রাণ আছে কি না, তা আসলে একই প্রশ্নের দুটো দিক। তা হলো, ‘কেন আমরা এখানে?’ বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে,
১৪ ঘণ্টা আগেপরিবার হলো মূলত রক্ত-সম্পর্কিত ব্যক্তিদের সংগঠন, যেখানে সব সদস্যের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং বিনোদনের আয়োজন হয়ে থাকে। পরিবার কখন কী কারণে গড়ে উঠেছে, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। বেশির ভাগের মত হলো, মানুষ সমতলে বসবাস করার সময় কৃষিকাজ শিখে ফেলে। কৃষিজাত পণ্য সংরক্ষণের জন্য গোলাঘর
১৪ ঘণ্টা আগেনিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি, এ কথা নতুন নয়। এবং এ ব্যাপারে প্রমাণের অভাব নেই। একটা কিছু নিষিদ্ধ করলেই যে তা ব্যবহার করা বন্ধ হয়ে যাবে, এমন ভাবাটাই ভুল। ধরুন, একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে সেই দলটি যে ছদ্মবেশে বা তলে তলে রাজনীতি করবে না, সেই গ্যারান্টি কে দিতে পারে? তেমনি কেউ
১৪ ঘণ্টা আগে