Ajker Patrika

পিএইচডির ছাত্র

সম্পাদকীয়
পিএইচডির ছাত্র

ডা. এম আর খান ভাবলেন, উচ্চশিক্ষা লাভের বয়সটা বসে থাকে না। তাই সুযোগ এলেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ গ্রহণ করা উচিত। সেটা তাঁর ডাক্তারি জীবনের শুরুর দিকের কথা।

একদিন গ্রেট ব্রিটেনের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কোর্স করার সুযোগ পেয়ে গেলেন তিনি। সেটা ১৯৫৬ সাল। প্রথম বিমানে চড়বেন, হাতে নেই ডলার, আছে ট্রাভেলার্স চেক। সে এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। প্লেন থামল হিথ্রো বিমানবন্দরে। কেএলএম বিমানের গাড়িই পৌঁছে দিল তাদের সিটি অফিসে। ছোট ভাই এসে তাঁকে নিয়ে যাবেন এডিনবার্গে। কিন্তু তিনি তো আসেননি।

ক্লান্ত, তৃষ্ণার্ত, ক্ষুধার্ত ডা. খান খুব অসহায়বোধ করতে লাগলেন। ট্রাভেলার্স চেক ভাঙিয়ে পাউন্ড পেলেন কিছু। এডিনবার্গের ট্রেনের টিকিট কেনার জন্য গেলেন কিংস ক্রস স্টেশনে, একাই। সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা হলো এক কৃষ্ণাঙ্গ ভদ্রলোকের। তিনি ডা. খানকে দেখেই বুঝলেন তিনি বিপদে পড়েছেন। আপনজনের মতো তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সমস্যাটি কী!

কথা প্রসঙ্গেই জানা হয়ে গেল, বারবাডোজে মাস্টার্স করে তিনি ব্রিটেনে এসেছেন কৃষিবিজ্ঞানে পিএইচডি করতে। লেখাপড়ার খরচ জোগানোর জন্য এই রেলস্টেশনে এসে তিনি পোর্টারের কাজ করেন। যাত্রীদের মালসামান এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দেন। এতটুকু অহমিকা নেই তাঁর! কোন কাজ করছেন, তা নিয়ে লজ্জা নেই। অথচ আমাদের দেশের এসএসসি পাস কেউ হয়তো স্টেশনে কুলিগিরি করার কথা ভাবতেই পারবে না।

ভদ্রলোক ডা. খানকে বললেন, ‘তোমার স্যুটকেস আমি দেখে রাখছি। তুমি টয়লেটে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো। ক্যানটিনে গিয়ে খেয়ে নাও।’ এরপর তিনি এডিনবার্গগামী ট্রেনের টিকিটও কেটে দিলেন। একজন পিএইচডির ছাত্র ডা. খানের বোঝা টানছেন! এই কথাটি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ডা. খান মনে রেখেছিলেন। ডা. এম আর খান ১৯২৮ সালের এই দিনে জন্মেছিলেন।

সূত্র: ডা. এম আর খান, জীবনের জলছবি, 
পৃষ্ঠা: ৪৭-৫২

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত