মাসুমা হক প্রিয়াংকা
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, যার অর্থনীতির মূল ভিত্তি নদীগুলোর ওপর নির্ভরশীল। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই নদীগুলো আমাদের জীবনযাত্রা, কৃষি, যোগাযোগ, শিল্প এবং পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে ক্রমাগত দখল, দূষণ ও অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের নদীগুলো আজ অস্তিত্ব-সংকটে। নদী রক্ষা করা শুধু পরিবেশগত নয়, বরং অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে টিকে থাকার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নদীপথ দেশের পরিবহন খাতের একটি বড় অংশ। এই পথের প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ নদীপথের মধ্যে বন্যার মৌসুমে ৫ হাজার ৯৬৮ কিলোমিটার এবং শুষ্ক মৌসুমে ৩ হাজার ৮৬৫ কিলোমিটার নৌ চলাচলের উপযোগী। দেশের পণ্য পরিবহনের ৩৫-৪০ শতাংশ নৌপথের মাধ্যমে হয়। প্রতিদিন গড়ে ৩৫ লাখ যাত্রী নৌপথ ব্যবহার করে। নদীগুলো দেশের কৃষিব্যবস্থার জন্য পানি সরবরাহ করে। সেচের জন্য প্রায় ৬৫ শতাংশ পানি নদী থেকে আসে। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রধান মৎস্য উৎপাদনকারী দেশ। দেশে মাছ উৎপাদনের প্রায় ৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ জলাশয় ও নদীগুলো থেকে আসে। এই খাত জিডিপিতে প্রায় ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ অবদান রাখে এবং ১.৮ কোটি মানুষের জীবিকা সরবরাহ করে। নদী-তীরবর্তী এলাকায় প্রধান বাণিজ্যিক শহরগুলো (যেমন চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা) গড়ে উঠেছে। নদীপথে পণ্য পরিবহন সস্তা হওয়ায় শিল্পপণ্যের পরিবহনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নদী থেকে হাইড্রোইলেকট্রিসিটি বা জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বছরে ২৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।
বাংলাদেশে ৭০০টির বেশি নদী ছিল, এর অনেকগুলোই আজ মৃত। যমুনা, পদ্মা, মেঘনা, বুড়িগঙ্গার মতো প্রধান নদীগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। শুকনো মৌসুমে প্রায় ৩০ শতাংশ নদী পানিশূন্য হয়ে যায়। নদীর তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, চাষাবাদ এবং ব্যবসার জন্য নদীর জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। কলকারখানার বর্জ্য, নগরীর গৃহস্থালির ময়লা এবং প্লাস্টিকের আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও কর্ণফুলীর পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাংকের ‘ক্লিনিং আপ বাংলাদেশ’স রিভারস’ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে দেশের ৩৫টির বেশি প্রধান নদী দূষণের হুমকির মুখে রয়েছে। বাঁধ নির্মাণ, অপরিকল্পিত ড্রেজিং এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার কারণে নদীগুলো প্রাণ হারাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নদীর পানিপ্রবাহ ও মৌসুমি বৈশিষ্ট্য বদলে যাচ্ছে, যা নদীর প্রাকৃতিক ইকোসিস্টেমে বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ) ২০২০ সালের একটি সমীক্ষায় জানিয়েছে, ৮০ শতাংশ নদীদূষণ সরাসরি শিল্প ও নগরকেন্দ্রিক কার্যক্রমের ফল।
নদী শুধু আমাদের অর্থনীতির অংশ নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে জড়িত। নদীপ্রধান অঞ্চলে মাছসহ অসংখ্য প্রাণী বসবাস করে। নদীর মৃত্যু মানে এদের বিলুপ্তি। দেশের প্রধান সেচব্যবস্থা নদীর ওপর নির্ভরশীল। নদী শুকিয়ে গেলে কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পানির চাহিদার একটি বড় অংশ আসে নদী থেকে। নদী শীতল পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ভূমিধস, খরা ও বন্যার প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে।
নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। জনগণকে বোঝাতে হবে যে নদী দখল আমাদের দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতি করছে। কলকারখানার তরল বর্জ্য পরিশোধনাগারের (ইটিপি) মাধ্যমে নিঃসরণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্লাস্টিকদূষণ কমাতে পলিথিন নিষিদ্ধ করা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নদীর উৎস থেকে স্রোতপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বাঁধ এবং বাধাগুলো পুনঃ পর্যালোচনা করতে হবে। নদীর নাব্যতা বজায় রাখতে বিজ্ঞানসম্মত এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে ড্রেজিং করতে হবে। নদী কমিশনের কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে প্রশাসনিক এবং আর্থিক স্বাধীনতা দিতে হবে। স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের নদীগুলোর অবস্থা, পরিবর্তন এবং প্রভাব নিয়ে গবেষণা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নদী রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে পাঠ্যপুস্তকে নদী-সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
নদী রক্ষা শুধু পরিবেশ বা জলবায়ু নয়, বরং আমাদের জীবন ও অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য। এটি একটি সামগ্রিক দায়িত্ব, যেখানে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতে হলে নদী বাঁচাতেই হবে। সময় এখনই। অন্যথায় নদীগুলোর সঙ্গে সঙ্গে আমরা হারিয়ে ফেলব আমাদের ভবিষ্যৎও।
লেখক: মাসুমা হক প্রিয়াংকা
সমাজকর্মী ও শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, যার অর্থনীতির মূল ভিত্তি নদীগুলোর ওপর নির্ভরশীল। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই নদীগুলো আমাদের জীবনযাত্রা, কৃষি, যোগাযোগ, শিল্প এবং পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে ক্রমাগত দখল, দূষণ ও অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের নদীগুলো আজ অস্তিত্ব-সংকটে। নদী রক্ষা করা শুধু পরিবেশগত নয়, বরং অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে টিকে থাকার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নদীপথ দেশের পরিবহন খাতের একটি বড় অংশ। এই পথের প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ নদীপথের মধ্যে বন্যার মৌসুমে ৫ হাজার ৯৬৮ কিলোমিটার এবং শুষ্ক মৌসুমে ৩ হাজার ৮৬৫ কিলোমিটার নৌ চলাচলের উপযোগী। দেশের পণ্য পরিবহনের ৩৫-৪০ শতাংশ নৌপথের মাধ্যমে হয়। প্রতিদিন গড়ে ৩৫ লাখ যাত্রী নৌপথ ব্যবহার করে। নদীগুলো দেশের কৃষিব্যবস্থার জন্য পানি সরবরাহ করে। সেচের জন্য প্রায় ৬৫ শতাংশ পানি নদী থেকে আসে। বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম প্রধান মৎস্য উৎপাদনকারী দেশ। দেশে মাছ উৎপাদনের প্রায় ৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ জলাশয় ও নদীগুলো থেকে আসে। এই খাত জিডিপিতে প্রায় ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ অবদান রাখে এবং ১.৮ কোটি মানুষের জীবিকা সরবরাহ করে। নদী-তীরবর্তী এলাকায় প্রধান বাণিজ্যিক শহরগুলো (যেমন চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা) গড়ে উঠেছে। নদীপথে পণ্য পরিবহন সস্তা হওয়ায় শিল্পপণ্যের পরিবহনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নদী থেকে হাইড্রোইলেকট্রিসিটি বা জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বছরে ২৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়।
বাংলাদেশে ৭০০টির বেশি নদী ছিল, এর অনেকগুলোই আজ মৃত। যমুনা, পদ্মা, মেঘনা, বুড়িগঙ্গার মতো প্রধান নদীগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। শুকনো মৌসুমে প্রায় ৩০ শতাংশ নদী পানিশূন্য হয়ে যায়। নদীর তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, চাষাবাদ এবং ব্যবসার জন্য নদীর জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। কলকারখানার বর্জ্য, নগরীর গৃহস্থালির ময়লা এবং প্লাস্টিকের আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও কর্ণফুলীর পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাংকের ‘ক্লিনিং আপ বাংলাদেশ’স রিভারস’ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে দেশের ৩৫টির বেশি প্রধান নদী দূষণের হুমকির মুখে রয়েছে। বাঁধ নির্মাণ, অপরিকল্পিত ড্রেজিং এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার কারণে নদীগুলো প্রাণ হারাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নদীর পানিপ্রবাহ ও মৌসুমি বৈশিষ্ট্য বদলে যাচ্ছে, যা নদীর প্রাকৃতিক ইকোসিস্টেমে বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ) ২০২০ সালের একটি সমীক্ষায় জানিয়েছে, ৮০ শতাংশ নদীদূষণ সরাসরি শিল্প ও নগরকেন্দ্রিক কার্যক্রমের ফল।
নদী শুধু আমাদের অর্থনীতির অংশ নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে জড়িত। নদীপ্রধান অঞ্চলে মাছসহ অসংখ্য প্রাণী বসবাস করে। নদীর মৃত্যু মানে এদের বিলুপ্তি। দেশের প্রধান সেচব্যবস্থা নদীর ওপর নির্ভরশীল। নদী শুকিয়ে গেলে কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পানির চাহিদার একটি বড় অংশ আসে নদী থেকে। নদী শীতল পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ভূমিধস, খরা ও বন্যার প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে।
নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ করে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। জনগণকে বোঝাতে হবে যে নদী দখল আমাদের দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতি করছে। কলকারখানার তরল বর্জ্য পরিশোধনাগারের (ইটিপি) মাধ্যমে নিঃসরণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্লাস্টিকদূষণ কমাতে পলিথিন নিষিদ্ধ করা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নদীর উৎস থেকে স্রোতপ্রবাহ নিশ্চিত করতে বাঁধ এবং বাধাগুলো পুনঃ পর্যালোচনা করতে হবে। নদীর নাব্যতা বজায় রাখতে বিজ্ঞানসম্মত এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে ড্রেজিং করতে হবে। নদী কমিশনের কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে প্রশাসনিক এবং আর্থিক স্বাধীনতা দিতে হবে। স্থানীয় জনগণ ও প্রশাসনের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের নদীগুলোর অবস্থা, পরিবর্তন এবং প্রভাব নিয়ে গবেষণা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নদী রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে পাঠ্যপুস্তকে নদী-সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
নদী রক্ষা শুধু পরিবেশ বা জলবায়ু নয়, বরং আমাদের জীবন ও অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য। এটি একটি সামগ্রিক দায়িত্ব, যেখানে সরকার, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতে হলে নদী বাঁচাতেই হবে। সময় এখনই। অন্যথায় নদীগুলোর সঙ্গে সঙ্গে আমরা হারিয়ে ফেলব আমাদের ভবিষ্যৎও।
লেখক: মাসুমা হক প্রিয়াংকা
সমাজকর্মী ও শিক্ষার্থী
রুমিন ফারহানা বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও রাজনীতি বিশ্লেষক। তিনি সংরক্ষিত নারী আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২ ঘণ্টা আগেদেশে প্রতিবছর বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। বাস্তবায়নের সময় মাঝে মাঝে সংবাদ চোখে পড়ে যে প্রকল্পের ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে গাছ কাটা পড়ছে, বনভূমি উজাড় হচ্ছে, খাল ও জলাভূমি ভরাট হচ্ছে, নির্মাণস্থলে নির্মাণকাজের ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এমনকি কোনো কোনো প্রকল্প গ্রহণের ফলে পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব...
৩ ঘণ্টা আগেপাহাড় রক্ষা করা যখন খুবই জরুরি, তখন সে পাহাড় কেটে গোটা অঞ্চলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে একদল দুর্বৃত্ত। খাগড়াছড়ির পানছড়ি এলাকায় অবাধে পাহাড় কাটা হচ্ছে, অথচ সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছেন।
৩ ঘণ্টা আগে১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন শেখ মুজিবুর রহমান জেলে ছিলেন, তাঁকে করা হয়েছিল দলের যুগ্ম সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে শামসুল হক অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
১ দিন আগে