Ajker Patrika

সিন্ডিকেটে চড়া চালের বাজার

  • সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের চাল কেজিতে বেড়েছে ৫-৬ টাকা।
  • এমন পরিস্থিতির জন্য সিন্ডিকেটকে দুষছেন সাধারণ ক্রেতারা।
  • কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় দাম বেড়েছে: বিক্রেতা
  • টাস্কফোর্সের মাধ্যমে দ্রুত অভিযান চালানো হবে: কর্মকর্তা
মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)মো. তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ 
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের অস্থায়ী চালের বাজারে বেচাকেনা। গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের অস্থায়ী চালের বাজারে বেচাকেনা। গতকাল তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আমন ধান কাটা ও মাড়াই শেষের দিকে। ইতিমধ্যে বাজারে এসেছে নতুন চাল। তবে দামে স্বস্তি আসেনি। সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের চাল কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। একই অবস্থা পুরোনো চালেরও। ভরা মৌসুমে এমন পরিস্থিতির জন্য সিন্ডিকেটকে দুষছেন সাধারণ ক্রেতারা। তাঁদের দাবি, সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রশাসনের নজরদারির অভাবে সুযোগ নিচ্ছেন আড়তদার ও মিলমালিকেরা। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, বড় বড় আড়তদার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। এতে খুচরা বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ভবিষ্যতে দাম আরও বাড়বে।

শস্যভান্ডারখ্যাত দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, বাজারে ১০০ কেজির স্বর্ণা-৫ জাতের চালের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪ হাজার ৮০০ টাকা। গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৯০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৬০০ টাকা। বাবু কাটারি বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৮০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া এশিয়ান কাটারি (মিনিকেট) পুরোনো চাল বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৬০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার টাকা। ২৮ জাতের (পুরোনো) চাল বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ টাকা। ২৯ জাতের (পুরোনো) চাল বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৮০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার টাকা।

ফুলবাড়ী পৌর শহরে চাল কিনতে আসা শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘সারা বছরই চাল কিনে খেতে হয়। নতুন ধান ওঠায় মনে করেছিলাম দাম হয়তো কিছুটা কমবে। বাজারে এসে শুনি কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমরা সাধারণ মানুষ কী করে চলব?’

পৌর শহরের চাল ব্যবসায়ী যুগল কুমার সাহা, শাহিনুর কবির ও খাদেমুল ইসলাম বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি থাকার কারণে চালের দাম বেশি। বর্তমানে চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। চালের দাম প্রকারভেদে প্রতি বস্তায় ৫০০-৬০০ টাকা বেড়েছে। সামনে হয়তো আরও বাড়তে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ব্রি-৩৪ জাতের (জিরা কাটারিভোগ) ধান চাষ হয়েছে। তা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য ধারা হয়েছে ৩৯ হাজার ৯০০ টন। এতে শুধু জিরা কাটারিভোগ বা ব্রি-৩৪ জাতের চিকন ধান চাষ হয়েছে শতকরা ৪৯ ভাগ। বাকি ৫১ ভাগ জমিতে চাষ করা হয়েছে মোটা এবং মাঝারি স্বর্ণা-৫, গুটি স্বর্ণা, ব্রি-৭৫, ৮৭, ৯০, ৯৩, ৯৪ ও ৯৫ জাতের ধান, যা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯০ হাজার ৬০ টন।

মিলমালিক আফতার আলী বলেন, ‘এ বছর কৃষকেরা বেশি লাভের আশায় উপজেলার ৮০ শতাংশ জমিতে জিরা কাটারি জাতের সুগন্ধি চিকন ধান আবাদ করেছেন। বাকি ২০ শতাংশ জমিতে মোটা ধান আবাদ করেছেন। সে কারণে মোটা ধানের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতি আমন মৌসুমে ১০-১২ হাজার টন ধান কিনি। কিন্তু এবার মাত্র ৩ হাজার টন ধান কিনতে পেরেছি। ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে চালের বাজার চড়া।’

একই চিত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায়। সেখানে তিন মৌসুমে ইরি, বোরো ও আমন ধান চাষ হয়। বর্তমানে বাজারে উঠছে নতুন আমন ধান। এরপরও হঠাৎ বৃদ্ধি পাচ্ছে সব ধরনের চালের দাম। সপ্তাহখানেক আগেও স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছিল ৫০ টাকায়, সে চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা; ২৮ চাল বিক্রি হতো ৬৭ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকার ওপরে। জিরা চাল ৭৭ টাকায় বিক্রি হলেও দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫ টাকা, কাটারি চালের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকার ওপরে। এ ছাড়া বাসমতী চালও একইভাবে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে।

নিয়ামত আলী নামের এক চাল ক্রেতা বলেন, ‘গত সপ্তাহে স্বর্ণা চাল কিনেছেন ৫০ টাকায়, সে চাল আজ (মঙ্গলবার) বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। এখন চালের ভরা মৌসুম। দাম বাড়ানোর সুযোগ দেখছি না। নিশ্চয়ই দাম বাড়ানোর পেছনে বড় কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে। তাদের প্রতিরোধ করা দরকার।’

খুচরা বিক্রেতা মোবারক হোসেন বলেন, সয়াবিন তেলের মতো চালের দাম বাড়াতে সিন্ডিকেট করে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন মিলমালিক ও আড়তদারেরা। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই নিয়ন্ত্রণ হবে চালের বাজার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, সিন্ডিকেট করে বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে দ্রুত অভিযান চালানো হবে। কোনো মিলমালিক বা আড়তদার যদি মজুত করে চালের দাম বাড়ান, ছাড় দেওয়া হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কর্মীদের সাফল্য উদ্‌যাপনে আবুল খায়ের স্টিলের ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইস্পাত উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের স্টিল (একেএস) ৬ ডিসেম্বর তাদের সব কর্মীকে নিয়ে ‘একেএস-একসাথে আগামীর পথে’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। দিনব্যাপী এই উৎসবমুখর ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের প্রতিটি স্থান থেকে আবুল খায়ের স্টিলের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। নামাজ ও খাবারের বিরতির পর একেএসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবার উদ্দেশে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন। বক্তব্যে কোম্পানির সাম্প্রতিক অর্জন ও মাইলফলকগুলো তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রড একেএস টিএমটি বি৭০০ সি-আরের সফল উৎপাদন। বিশ্বের দ্রুততম রোলিং মিল স্থাপন। একেএস এবং কাউ ব্র্যান্ড কালার কোটেড স্টিলের মর্যাদাপূর্ণ সুপারব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন।

এই আলোচনায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং কর্মীদের সম্মিলিত সাফল্যের প্রতিচ্ছবিও উঠে আসে।

সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‍্যাফেল ড্র পর্বটি উদ্‌যাপনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কিংবদন্তি শিল্পী জেমসের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ও লেজার শো উপস্থিত সবাইকে মাতিয়ে রাখে।

সমাপনী ভাষণে একেএস পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান হয়। এরপর নৈশভোজ ও ডিজে সেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ ডসিম্বের) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কাউন্সলিরে সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কোম্পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যাংকের নিট মুনাফা ছাড়া উৎসাহ বোনাস বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

কর ও সঞ্চিতি সংরক্ষণের পর নিট মুনাফা অর্জন না করলে কোনো ব্যাংকই আর উৎসাহ বোনাস দিতে পারবে না। পাশাপাশি মূলধন সংরক্ষণ ঘাটতি, প্রভিশন ঘাটতি বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকেই বোনাস দেওয়ার পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে সব ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আনরিয়েলাইজড বা নগদায়ন না করা আয়ের ভিত্তিতে বোনাস দেওয়া আর্থিক শৃঙ্খলা ও সুশাসনের পরিপন্থী। তাই এখন থেকে শুধু নির্ধারিত নিট মুনাফা অর্জন করতে পারলেই উৎসাহ বোনাস দেওয়ার অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো।

আরও বলা হয়, পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো ধরনের উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না। রেগুলেটরি মূলধন বা প্রভিশনের ঘাটতি থাকলে বোনাস দেওয়া নিষিদ্ধ। প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় পাওয়া ব্যাংকগুলোও সেই সময়কাল মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে দেখাতে পারবে না। বোনাস প্রদানে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন কর্মসূচির উন্নতি ও খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারে দৃশ্যমান সাফল্য বিবেচনায় নিতে হবে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান নির্দেশিকা কার্যকর থাকবে, যেখানে নিট মুনাফা ছাড়া বোনাস না দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। তবে কোনো ব্যাংক নির্দিষ্ট সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে বিশেষ বোনাসের জন্য আবেদন করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০৩
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভ্যাটব্যবস্থাকে পুরোপুরি ডিজিটাল ও সহজ করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক নতুন পর্যায়ে এগোচ্ছে। মাত্র একটি ক্লিকেই ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এটি ব্যবহারও শুরু করেছে।

এনবিআর জানিয়েছে, শিগগির এ পদ্ধতি সারা দেশে চালু করা হবে, যাতে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাটের আওতায় আসে এবং নিবন্ধন ছাড়া আর কেউ ব্যবসা চালাতে না পারে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

মো. আবদুর রহমান বলেন, দেশের বড় একটি অংশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে রয়েছে। আগামী বছর এমন একটি মেকানিজম চালু করা হবে, যার মাধ্যমে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসার সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে নিবন্ধিত ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠান ৬ লাখ ৪৪ হাজার; লক্ষ্য আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে তা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা। শুধু চলতি মাসেই ১ লাখ নতুন প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’—ধরে আগামীকাল বুধবার সারা দেশে ভ্যাট দিবস পালিত হবে। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর চলবে ভ্যাট সপ্তাহ। তবে নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়ায় এ বছরও স্থগিত থাকছে ভ্যাট পুরস্কার।

রিটার্ন জমাদানেও বড় পরিবর্তন আসছে বলে জানান মো. আবদুর রহমান খান। গত অর্থবছরে ১৭ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়লেও চলতি অর্থবছরে তা ৪০ লাখে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে ২২ লাখ রিটার্ন। ভ্যাট আদায়েও গতি এসেছে—গত অর্থবছরে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ এসেছে ভ্যাট থেকে আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেই ভ্যাট আদায় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২২ শতাংশ।

করদাতাদের ঝামেলা কমাতে ই-রিটার্নে ব্যবহৃত ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান আবদুর রহমান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করদাতারা মনে করেন, রাজস্ব কর্মকর্তারা এসব তথ্য দেখতে পারবেন—এটি ভুল ধারণা।

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৫৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে কেন—এ প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বাস্তব প্রয়োজন থেকেই এ লক্ষ্য নির্ধারণ। তবে কারও ওপর হয়রানি বা অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করা হবে না; মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই কঠোরতা বাড়ানো হবে।

আমদানি করা মোবাইল ফোনে কর কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত; এককভাবে এনবিআর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত