মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা
জীবনবিমা গ্রাহকদের দাবির টাকা বছরের পর বছর আটকে রাখছে বেশির ভাগ কোম্পানি। সব মিলিয়ে দাবির অঙ্ক ৪ হাজার ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। আর এর প্রায় ৯১ শতাংশই আটকে আছে মাত্র সাতটি কোম্পানির হাতে। এই চিত্র স্পষ্ট করে দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সর্বশেষ প্রতিবেদন।
সবচেয়ে বেশি টাকা আটকে রেখেছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রতিষ্ঠানটির হাতে আছে প্রায় ২ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। কোম্পানিটির স্বত্বাধিকারীদের তালিকায় রয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট এস আলম গ্রুপ এবং সালমান এফ রহমান। তাদের পরেই আছে সানফ্লাওয়ার লাইফ, বায়রা লাইফ, পদ্মা ইসলামী, গোল্ডেন লাইফ, হোমল্যান্ড ও প্রগ্রেসিভ ইনস্যুরেন্স। এই সাত প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা রয়েছে প্রায় ১২ লাখ গ্রাহকের।
সানফ্লাওয়ার লাইফ ইনস্যুরেন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। বিকল্পধারার সাবেক নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের মালিকানাধীন কোম্পানিটি গ্রাহকের ১৭৬ কোটি টাকার দাবির মধ্যে ৯৯.২৮ শতাংশই পরিশোধ করেনি। একইভাবে সাবেক যুবলীগ নেতা আবুল বাসারের বায়রা লাইফ, যাদের কাছে গ্রাহকের আটকা ৭৭ কোটি টাকার বেশি। প্রতিষ্ঠানটির দাবি পরিশোধ হার মাত্র ০.৭৩ শতাংশ। দাবি পূরণে ‘ডিসেম্বরের মধ্যে’ আশ্বাস দিলেও কোম্পানির জমি বিক্রির কথায় সংকটের গভীরতা স্পষ্ট।
এস আলম গ্রুপের পদ্মা ইসলামী লাইফ ২৪০ কোটি টাকা দাবির বিপরীতে পরিশোধ করেছে মাত্র ১.৬৮ শতাংশ। গোল্ডেন লাইফ, হোমল্যান্ড ও প্রগ্রেসিভ লাইফেরও পরিশোধের হার ২ শতাংশের নিচে। এ ছাড়া সানলাইফ, ডায়মন্ড, প্রাইম ইসলামী, আকিজ তাকাফুল, যমুনা লাইফ ও ন্যাশনাল লাইফসহ আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানও ২৫ থেকে ৭০ শতাংশ দাবি অনিষ্পন্ন রেখেছে।
আইডিআরএর হিসাব বলছে, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩৬টি জীবনবিমা কোম্পানিতে মোট অনিষ্পন্ন দাবির পরিমাণ ৬ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার কোটির বেশি এখনো ঝুলে আছে। অথচ আইনের ভাষ্য বলছে, পলিসির মেয়াদ শেষে সব কাগজপত্র জমা দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক।
আইডিআরএর চেয়ারম্যান আসলাম আলম এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে ব্যবসা করা ১৫টি জীবনবিমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা নিয়ম মানছে না, দাবি সময়মতো দিচ্ছে না, ফলে পুরো খাতে চরম আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে।’
ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ভারপ্রাপ্ত সিইও শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকার কাছে স্বীকার করেছেন, গত এক দশকে কোম্পানির ৩২০০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। তিনি জানান, কোম্পানির গুলশান ও ফেনীর সম্পদ বিক্রি করে টাকা পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, ‘দাবির টাকা সময়মতো না দিলে মানুষ বিমার প্রতি আগ্রহ হারায়। এই আস্থাহীনতা জাতীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
একসময় জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ছিল প্রায় ১ শতাংশ। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ০.৪৫ শতাংশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইনস্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসিনা শেখ মনে করেন, ‘আইডিআরএ চাইলে অনিয়মকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করতে পারে। কঠোর নজরদারিই একমাত্র উপায়।’
তবে সব কোম্পানির চিত্র এমন নয়। আলফা ইসলামী, এলআইসি, মার্কেন্টাইল ও সান্তা লাইফ ইনস্যুরেন্স শতভাগ দাবি পরিশোধ করেছে। রূপালী, ট্রাস্ট ও সোনালী লাইফ দাবি করেছে ৯৯ শতাংশ পরিশোধের। গার্ডিয়ান, মেটলাইফ, স্বদেশ, মেঘনা, প্রগতি, সন্ধানী, বেস্ট লাইফসহ আরও অন্তত ১২টি কোম্পানি ৮০ থেকে ৯৮ শতাংশ দাবি পূরণ করেছে।
তবু সার্বিকভাবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। যেখানে গ্রাহকের জীবনের সঞ্চয়, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা এবং আস্থার প্রশ্ন জড়িত—সেই খাতেই চলছে গড়িমসি, লুটপাট আর দায় এড়ানোর সংস্কৃতি। আইডিআরএর সতর্কবার্তা আর অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ, উভয়ই বলছে—এভাবে চলতে থাকলে বিমা খাত শুধু ধুঁকবেই না, একসময় পতনের দিকেই গড়াবে।
জীবনবিমা গ্রাহকদের দাবির টাকা বছরের পর বছর আটকে রাখছে বেশির ভাগ কোম্পানি। সব মিলিয়ে দাবির অঙ্ক ৪ হাজার ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ছাড়িয়েছে। আর এর প্রায় ৯১ শতাংশই আটকে আছে মাত্র সাতটি কোম্পানির হাতে। এই চিত্র স্পষ্ট করে দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সর্বশেষ প্রতিবেদন।
সবচেয়ে বেশি টাকা আটকে রেখেছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স, প্রতিষ্ঠানটির হাতে আছে প্রায় ২ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। কোম্পানিটির স্বত্বাধিকারীদের তালিকায় রয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট এস আলম গ্রুপ এবং সালমান এফ রহমান। তাদের পরেই আছে সানফ্লাওয়ার লাইফ, বায়রা লাইফ, পদ্মা ইসলামী, গোল্ডেন লাইফ, হোমল্যান্ড ও প্রগ্রেসিভ ইনস্যুরেন্স। এই সাত প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা রয়েছে প্রায় ১২ লাখ গ্রাহকের।
সানফ্লাওয়ার লাইফ ইনস্যুরেন্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। বিকল্পধারার সাবেক নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের মালিকানাধীন কোম্পানিটি গ্রাহকের ১৭৬ কোটি টাকার দাবির মধ্যে ৯৯.২৮ শতাংশই পরিশোধ করেনি। একইভাবে সাবেক যুবলীগ নেতা আবুল বাসারের বায়রা লাইফ, যাদের কাছে গ্রাহকের আটকা ৭৭ কোটি টাকার বেশি। প্রতিষ্ঠানটির দাবি পরিশোধ হার মাত্র ০.৭৩ শতাংশ। দাবি পূরণে ‘ডিসেম্বরের মধ্যে’ আশ্বাস দিলেও কোম্পানির জমি বিক্রির কথায় সংকটের গভীরতা স্পষ্ট।
এস আলম গ্রুপের পদ্মা ইসলামী লাইফ ২৪০ কোটি টাকা দাবির বিপরীতে পরিশোধ করেছে মাত্র ১.৬৮ শতাংশ। গোল্ডেন লাইফ, হোমল্যান্ড ও প্রগ্রেসিভ লাইফেরও পরিশোধের হার ২ শতাংশের নিচে। এ ছাড়া সানলাইফ, ডায়মন্ড, প্রাইম ইসলামী, আকিজ তাকাফুল, যমুনা লাইফ ও ন্যাশনাল লাইফসহ আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানও ২৫ থেকে ৭০ শতাংশ দাবি অনিষ্পন্ন রেখেছে।
আইডিআরএর হিসাব বলছে, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩৬টি জীবনবিমা কোম্পানিতে মোট অনিষ্পন্ন দাবির পরিমাণ ৬ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার কোটির বেশি এখনো ঝুলে আছে। অথচ আইনের ভাষ্য বলছে, পলিসির মেয়াদ শেষে সব কাগজপত্র জমা দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক।
আইডিআরএর চেয়ারম্যান আসলাম আলম এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে ব্যবসা করা ১৫টি জীবনবিমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা নিয়ম মানছে না, দাবি সময়মতো দিচ্ছে না, ফলে পুরো খাতে চরম আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে।’
ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ভারপ্রাপ্ত সিইও শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকার কাছে স্বীকার করেছেন, গত এক দশকে কোম্পানির ৩২০০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। তিনি জানান, কোম্পানির গুলশান ও ফেনীর সম্পদ বিক্রি করে টাকা পরিশোধের পরিকল্পনা রয়েছে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম মনে করেন, ‘দাবির টাকা সময়মতো না দিলে মানুষ বিমার প্রতি আগ্রহ হারায়। এই আস্থাহীনতা জাতীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
একসময় জিডিপিতে বিমা খাতের অবদান ছিল প্রায় ১ শতাংশ। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ০.৪৫ শতাংশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইনস্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাসিনা শেখ মনে করেন, ‘আইডিআরএ চাইলে অনিয়মকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করতে পারে। কঠোর নজরদারিই একমাত্র উপায়।’
তবে সব কোম্পানির চিত্র এমন নয়। আলফা ইসলামী, এলআইসি, মার্কেন্টাইল ও সান্তা লাইফ ইনস্যুরেন্স শতভাগ দাবি পরিশোধ করেছে। রূপালী, ট্রাস্ট ও সোনালী লাইফ দাবি করেছে ৯৯ শতাংশ পরিশোধের। গার্ডিয়ান, মেটলাইফ, স্বদেশ, মেঘনা, প্রগতি, সন্ধানী, বেস্ট লাইফসহ আরও অন্তত ১২টি কোম্পানি ৮০ থেকে ৯৮ শতাংশ দাবি পূরণ করেছে।
তবু সার্বিকভাবে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। যেখানে গ্রাহকের জীবনের সঞ্চয়, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা এবং আস্থার প্রশ্ন জড়িত—সেই খাতেই চলছে গড়িমসি, লুটপাট আর দায় এড়ানোর সংস্কৃতি। আইডিআরএর সতর্কবার্তা আর অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ, উভয়ই বলছে—এভাবে চলতে থাকলে বিমা খাত শুধু ধুঁকবেই না, একসময় পতনের দিকেই গড়াবে।
কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে ওএমএসের মাধ্যমে আলু বিক্রির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আজ সোমবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।
১৭ ঘণ্টা আগেসরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে মোট ৯ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের এই পরিকল্পনায় আশায় বুক বাঁধছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে ভারতীয় রপ্তানি...
১৯ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তবে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থেকে এখনো বঞ্চিত কোটি কোটি মানুষ। আধুনিক ব্যাংকিং ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সুবিধা নিতে না পারার কারণে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী রয়েছে অর্থনৈতিক লেনদেনের আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থার বাইরে।
১ দিন আগেপুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল বা ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডকে (সিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় লভ্যাংশ বিতরণকারী সংস্থা বা ‘ডিভিডেন্ড হাব’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটির আইনগত ভিত্তি জোরদার করা এবং কার্যপরিধি বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।
১ দিন আগে