ইশতিয়াক হাসান
দক্ষিণ-পশ্চিম বলিভিয়ায়, আন্দিজ পর্বতমালার ধারেই সালার দে উয়ুনির অবস্থান। দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর একটি হিসেবে একে বিবেচনা করেন অনেকেই। বিশেষ করে আলোকচিত্রীদের ভিড় লেগে থাকে এখানে বারো মাস। কিন্তু কী আছে এই জায়গায় যে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকেরা?
১০ হাজার ৫৮২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই অঞ্চল আসলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সল্ট ফ্ল্যাট বা লবণের তৈরি সমতল ভূমি। ধারণা করা হয়, এখানে ১ হাজার কোটি টন লবণ সঞ্চিত আছে। শুকনো মৌসুমে যত দূর চোখ যায় কেবল শুকনো লবণই দেখবেন। তবে বর্ষায় পরিস্থিতি বদলে যায়। পাশের পোপু হ্রদের পানি উপচে পড়ে। আর এই পানি চলে আসে সালার দে কয়পাসা ও সালার দে উয়ুনির ওপর। লবণরাজ্যের ওপরে জমা হওয়া পানির পাতলা একটা আবরণ বিশাল খোলা আকাশের নিচে অদ্ভুত সুন্দর এক চেহারা দেয়। মূলত লবণরাজ্যের ওপরের পানিতে নীল আকাশ, গাড়ি, পর্যটকসহ সবকিছুর প্রতিফলনেই এই সৌন্দর্যের জন্ম।
আবার সালার দে উয়ুনির লবণের তৈরি হোটেলগুলোও টানে পর্যটকদের। এখানে একটা কি দুটো রাত কাটানোর লোভ সামলাতে পারেন না তাঁরা।
কিন্তু এত লবণ এখানে এলো কীভাবে? ৩০ থেকে ৪০ হাজার বছর আগে লেক মিনচিন নামের বিশাল এক হ্রদের অংশ ছিল জায়গাটি। পরের হাজার হাজার বছরে হ্রদটির বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। একপর্যায়ে বিশাল ওই হ্রদের অনেকটাই শুকিয়ে যায়, আর এর থেকে জন্ম হয় নতুন দুই হ্রদ পোপু ও উরু উরু, সেই সঙ্গে লবণের দুটি মরুভূমি বা সমতল ভূমির। এ দুটি লবণের সমতলভূমির নাম সালার দে কয়পাসা ও সালার দে উয়ুনি। এদের মধ্যে আবার সালার দে উয়ুনি আকারে অনেকটা বড় আর বেশি বিখ্যাত। তাই লবণের দুটি সমতল থাকলেও এর নামেই পরিচিতি পেয়েছে বেশি।
সালার দে উয়ুনির সমতলের নিচে আছে ২ থেকে ২০ মিটার গভীর লবণের এক হ্রদ। এটি আবার ঢাকা থাকে ১০ সেন্টিমিটার থেকে কয়েক মিটার পর্যন্ত পুরু কঠিন লবণের আবরণ দিয়ে। সালার দে কয়পাসা ও সালার দে উয়ুনির মাঝখানে আছে কিছু দ্বীপের মতো। মিনচিন হ্রদের জমানায় প্রাচীন যেসব আগ্নেয়গিরি তলিয়ে যায়, সেগুলোর চূড়া এই দ্বীপগুলো।
এই লবণরাজ্যের আরেক আশ্চর্য ব্যাপার হলো এখানকার লবণের হোটেল। দেয়াল, মেঝে, ছাদ, আসবাব এমনকি ভেতরের ভাস্কর্য—সবই তৈরি লবণ দিয়ে। মজার ব্যাপার হলো, লবণের চাঁই থেকে তৈরি হওয়ায় প্রতি ১০-১৫ বছরে এগুলো নতুন করে তৈরি করতে হয়। কারণ বৃষ্টিতে এই লবণের হোটেলের বেশ ক্ষতি হয়।
হোটেল পেলাসিও দে সাল হলো এই হোটেলগুলোর একটি। এটি পৃথিবীর প্রথম লবণের হোটেল। এক ডজনের মতো কামরা আছে এতে। লম্বা হলওয়ে ধরে কামরাগুলোর দিকে যাওয়ার সময় রেস্তোরাঁ, উপহারের দোকানসহ লবণের অনেক ভাস্কর্যের দেখা পাবেন।
এমন আরেকটি লবণের হোটেল হলো হোটেল দে সাল লুনা সালাদা। উয়ুনির লবণরাজ্যের ঠিক বাইরেই এর অবস্থান। লবণরাজ্যের দিকে মুখ করা কামরাগুলো থেকে চারপাশের অসাধারণ সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ মিলবে।
কীভাবে যাবেন
অবস্থান বলিভিয়ায় হলেও চিলি আর আর্জেন্টিনা সীমান্ত থেকে খুব দূরে নয় জায়গাটি। বেশির ভাগ পর্যটক বলিভিয়ার লা পাজ থেকে উয়ুনি যান আগে। সেখান থেকে দিনে দিনেও ঘুরে আসা যায় লবণরাজ্যে। আবার আর্জেন্টিনা হয়ে আসা পর্যটকেরা সাধারণত আগে যান বলিভিয়ার টুপিজায়। সেখান থেকে অন্য গন্তব্যের পাশাপাশি ঘুরে আসেন লবণরাজ্যেও।
কখন যাবেন
বর্ষার সময়, মানে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলে পর্যটকেরা আসেন বেশি। কারণ এ সময় এখানকার সেই বিখ্যাত মিরর ইফেক্ট বা পানিতে আশ্চর্য প্রতিফলন দেখার ও ছবি তোলার সুযোগ মেলে। তবে ডিসেম্বর-জানুয়ারির দিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে কখনো কখনো ট্যুর বাতিলের ঘটনাও ঘটে। এদিকে শুকনো মৌসুমে অর্থাৎ মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকে তুলনামূলক শীতল, জমি থাকে শক্ত। পর্যটকেরা লবণের সমতলের ওপর গাড়ি চালিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন। সবকিছু মিলিয়ে এখন আপনার সিদ্ধান্ত কোন সময় যাবেন। তবে যখনই যান না কেন, সালার দে উয়ুনি যে আপনাকে মুগ্ধ করবে, এ নিয়ে বাজি ধরা যায় অনায়াসে।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, গ্লোবাল গাইড, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
দক্ষিণ-পশ্চিম বলিভিয়ায়, আন্দিজ পর্বতমালার ধারেই সালার দে উয়ুনির অবস্থান। দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে সুন্দর জায়গাগুলোর একটি হিসেবে একে বিবেচনা করেন অনেকেই। বিশেষ করে আলোকচিত্রীদের ভিড় লেগে থাকে এখানে বারো মাস। কিন্তু কী আছে এই জায়গায় যে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকেরা?
১০ হাজার ৫৮২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই অঞ্চল আসলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সল্ট ফ্ল্যাট বা লবণের তৈরি সমতল ভূমি। ধারণা করা হয়, এখানে ১ হাজার কোটি টন লবণ সঞ্চিত আছে। শুকনো মৌসুমে যত দূর চোখ যায় কেবল শুকনো লবণই দেখবেন। তবে বর্ষায় পরিস্থিতি বদলে যায়। পাশের পোপু হ্রদের পানি উপচে পড়ে। আর এই পানি চলে আসে সালার দে কয়পাসা ও সালার দে উয়ুনির ওপর। লবণরাজ্যের ওপরে জমা হওয়া পানির পাতলা একটা আবরণ বিশাল খোলা আকাশের নিচে অদ্ভুত সুন্দর এক চেহারা দেয়। মূলত লবণরাজ্যের ওপরের পানিতে নীল আকাশ, গাড়ি, পর্যটকসহ সবকিছুর প্রতিফলনেই এই সৌন্দর্যের জন্ম।
আবার সালার দে উয়ুনির লবণের তৈরি হোটেলগুলোও টানে পর্যটকদের। এখানে একটা কি দুটো রাত কাটানোর লোভ সামলাতে পারেন না তাঁরা।
কিন্তু এত লবণ এখানে এলো কীভাবে? ৩০ থেকে ৪০ হাজার বছর আগে লেক মিনচিন নামের বিশাল এক হ্রদের অংশ ছিল জায়গাটি। পরের হাজার হাজার বছরে হ্রদটির বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। একপর্যায়ে বিশাল ওই হ্রদের অনেকটাই শুকিয়ে যায়, আর এর থেকে জন্ম হয় নতুন দুই হ্রদ পোপু ও উরু উরু, সেই সঙ্গে লবণের দুটি মরুভূমি বা সমতল ভূমির। এ দুটি লবণের সমতলভূমির নাম সালার দে কয়পাসা ও সালার দে উয়ুনি। এদের মধ্যে আবার সালার দে উয়ুনি আকারে অনেকটা বড় আর বেশি বিখ্যাত। তাই লবণের দুটি সমতল থাকলেও এর নামেই পরিচিতি পেয়েছে বেশি।
সালার দে উয়ুনির সমতলের নিচে আছে ২ থেকে ২০ মিটার গভীর লবণের এক হ্রদ। এটি আবার ঢাকা থাকে ১০ সেন্টিমিটার থেকে কয়েক মিটার পর্যন্ত পুরু কঠিন লবণের আবরণ দিয়ে। সালার দে কয়পাসা ও সালার দে উয়ুনির মাঝখানে আছে কিছু দ্বীপের মতো। মিনচিন হ্রদের জমানায় প্রাচীন যেসব আগ্নেয়গিরি তলিয়ে যায়, সেগুলোর চূড়া এই দ্বীপগুলো।
এই লবণরাজ্যের আরেক আশ্চর্য ব্যাপার হলো এখানকার লবণের হোটেল। দেয়াল, মেঝে, ছাদ, আসবাব এমনকি ভেতরের ভাস্কর্য—সবই তৈরি লবণ দিয়ে। মজার ব্যাপার হলো, লবণের চাঁই থেকে তৈরি হওয়ায় প্রতি ১০-১৫ বছরে এগুলো নতুন করে তৈরি করতে হয়। কারণ বৃষ্টিতে এই লবণের হোটেলের বেশ ক্ষতি হয়।
হোটেল পেলাসিও দে সাল হলো এই হোটেলগুলোর একটি। এটি পৃথিবীর প্রথম লবণের হোটেল। এক ডজনের মতো কামরা আছে এতে। লম্বা হলওয়ে ধরে কামরাগুলোর দিকে যাওয়ার সময় রেস্তোরাঁ, উপহারের দোকানসহ লবণের অনেক ভাস্কর্যের দেখা পাবেন।
এমন আরেকটি লবণের হোটেল হলো হোটেল দে সাল লুনা সালাদা। উয়ুনির লবণরাজ্যের ঠিক বাইরেই এর অবস্থান। লবণরাজ্যের দিকে মুখ করা কামরাগুলো থেকে চারপাশের অসাধারণ সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ মিলবে।
কীভাবে যাবেন
অবস্থান বলিভিয়ায় হলেও চিলি আর আর্জেন্টিনা সীমান্ত থেকে খুব দূরে নয় জায়গাটি। বেশির ভাগ পর্যটক বলিভিয়ার লা পাজ থেকে উয়ুনি যান আগে। সেখান থেকে দিনে দিনেও ঘুরে আসা যায় লবণরাজ্যে। আবার আর্জেন্টিনা হয়ে আসা পর্যটকেরা সাধারণত আগে যান বলিভিয়ার টুপিজায়। সেখান থেকে অন্য গন্তব্যের পাশাপাশি ঘুরে আসেন লবণরাজ্যেও।
কখন যাবেন
বর্ষার সময়, মানে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলে পর্যটকেরা আসেন বেশি। কারণ এ সময় এখানকার সেই বিখ্যাত মিরর ইফেক্ট বা পানিতে আশ্চর্য প্রতিফলন দেখার ও ছবি তোলার সুযোগ মেলে। তবে ডিসেম্বর-জানুয়ারির দিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে কখনো কখনো ট্যুর বাতিলের ঘটনাও ঘটে। এদিকে শুকনো মৌসুমে অর্থাৎ মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকে তুলনামূলক শীতল, জমি থাকে শক্ত। পর্যটকেরা লবণের সমতলের ওপর গাড়ি চালিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন। সবকিছু মিলিয়ে এখন আপনার সিদ্ধান্ত কোন সময় যাবেন। তবে যখনই যান না কেন, সালার দে উয়ুনি যে আপনাকে মুগ্ধ করবে, এ নিয়ে বাজি ধরা যায় অনায়াসে।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, গ্লোবাল গাইড, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক
হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলার শিল্লাই গ্রামের ট্রান্স-গিরি অঞ্চলে প্রাচীন রীতিনীতির অনুসরণে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক ব্যতিক্রমী বিবাহ অনুষ্ঠান—এক নারী বিয়ে করেছেন দুই ভাইকে। হাট্টি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পলিয়ান্ড্রি বিয়েতে শত শত অতিথি অংশ নেন।
২ দিন আগেশিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্রেডিট তথা পরীক্ষার খাতায় বেশি নম্বর দেওয়ার বিনিময়ে রক্ত দান করতে বাধ্য করেছেন এক ফুটবল কোচ। তাইওয়ানের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ফুটবল কোচ এমনই অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে...
৩ দিন আগেআজকের ডিজিটাল দুনিয়ায় আমাদের দৈনন্দিন যোগাযোগের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে ইমোজি। ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমরা মনের ভাব প্রকাশে ইমোজি ব্যবহার করি। ভাষার সীমা পেরিয়ে এই ছোট ছোট ডিজিটাল চিহ্নগুলো আবেগ প্রকাশের কার্যকর মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আনন্দ থেকে শুরু করে দুঃখ—সব অনুভূতিই এখন বোঝ
৬ দিন আগেপরিত্যক্ত একটি নকিয়া ফোনের সূত্র ধরে পরিচয় পাওয়া গেছে ১০ বছর আগে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির। ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আমির খান নামের ওই ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার হয়। মরদেহের পাশে থাকা ফোনটির সূত্র ধরেই তাঁর পরিচয় উদ্ধার করা হয়। খবর এনডিটিভির।
৭ দিন আগে