Ajker Patrika

অভিনব কায়দায় ফিক্সিং অনুসন্ধান করছেন বিসিবির কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ৪৪
মিরপুরে সন্দেহজনক আউট নিয়ে আজ ছায়া তদন্ত হয়েছে মিরপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিরপুরে সন্দেহজনক আউট নিয়ে আজ ছায়া তদন্ত হয়েছে মিরপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ফের আলোচনায় এসেছে ম্যাচ ফিক্সিং প্রসঙ্গ। মিরপুরে গতকাল গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের দুই ব্যাটার রহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরের স্ট্যাম্পড হওয়ার ধরন দেখে অনেকেই বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। মুহূর্তেই সেই আউটের ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এমন পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু)। আজ দুপুরে মিরপুরের একাডেমি মাঠে আকসুর প্রধান মেজর (অব.) মো. রায়ান আজাদ উপস্থিত থেকে অভিনব কায়দায় শুরু করেন মাঠ পর্যায়ের তদন্ত। শাইনপুকুরের দুই বিতর্কিত ক্রিকেটার রহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদীন সাব্বিরকে ডেকে আনা হয় মাঝ উইকেটে।

সেখানে একটি ব্যতিক্রমী দৃশ্য দেখা যায়— একপ্রকার অভিনয়ের মাধ্যমে পুনঃমঞ্চায়ন করা হয় গতকালের বিতর্কিত আউট দুটি। আকসু কর্মকর্তারা ব্যাটারদের একইভাবে অবস্থান নিতে বলেন। এরপর বল থ্রো করেন এবং বিশ্লেষণ করেন গতকালের পুরো ঘটনাটি। তদন্ত কর্মকর্তারা এই অনুশীলনের ভিডিও ধারণ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলে এই ছায়া তদন্ত। এরপর দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে পৃথক আলাপ শেষে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় বিসিবি কার্যালয়ে। প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে আকসু।

মিরপুরে গতকাল শাইনপুকুরের দুই ব্যাটারের আউটের ধরন ছিল ব্যাখ্যাতীত। বল পিচ করার আগেই ব্যাটারদের উইকেটের বাইরে দাঁড়ানো এবং এরপর স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হওয়াকে ‘অস্বাভাবিক’ বলে মনে করেছেন অনেকেই। এমন আউটকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় প্রবল আলোচনা ও সমালোচনা। ম্যাচটিতে ‘ফেয়ার প্লে’র চেতনা লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অনেকে সন্দেহ করেছেন। এমনকি ম্যাচ ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে।

বিসিবি এই ঘটনাকে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছে না। এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ ২০২৪–২৫-এর উল্লিখিত ম্যাচটি নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগ সম্পর্কে তারা অবগত এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। বোর্ড বলেছে, ‘ক্রিকেটে ন্যায্যতা ও নৈতিকতার প্রশ্নে বোর্ড আপসহীন। যেকোনো ধরনের দুর্নীতি বা খেলার নৈতিকতা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে। আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে আমাদের আওতাধীন সব ক্রিকেট কার্যক্রমে নিয়ম ও শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। যেকোনো অভিযোগের প্রেক্ষিতে যথাযথ তদন্ত এবং প্রমাণ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের পাশাপাশি লিগের কারিগরি কমিটিও ম্যাচটি ঘিরে অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তবে মাঠে নেমে এভাবে ভিডিও পুনর্গঠনের মাধ্যমে কাজ চালানো বিসিবির ইতিহাসে হয়তো এবারই প্রথম। এই ঘটনার তদন্ত কী মোড় নেয়, শাস্তির মুখে পড়েন কি না সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার বা দল-সেটা সময়ই বলে দেবে।

বিসিবির বিভিন্ন পর্যায়ের কোচ, কর্মকর্তা এবং সাবেক ক্রিকেটাররাও সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীসও প্রকাশ্যে নিজের হতাশা জানান। ইমরুল কায়েস নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ক্ষোভ প্রকাশ করে গত রাতে লিখেছেন, ‘ক্রিকেট এত তুচ্ছভাবে যেন কেউ না দেখে, এত নিচে যেন না নামায়।’

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গলাধাক্কার পর ছোট্ট মেয়েটিকে লাঠি দিয়ে পেটালেন কফিশপের কর্মচারী

বিশ্বব্যাংকে সিরিয়ার ঋণ পরিশোধ করে দিচ্ছে সৌদি আরব

মাত্র তিনজনের জন্য লাখ লাখ মানুষ মরছে, কাদের কথা বললেন ট্রাম্প

‘চরিত্র হননের চেষ্টা’: গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর দুদককে পাল্টা আক্রমণ টিউলিপের

জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচার: আলোচিত টিকটকার জান্নাতের স্বামী তোহা কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত