Ajker Patrika

সেঞ্চুরিতে তামিমের জবাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ২৩: ২১
সেঞ্চুরিতে তামিমের জবাব

বলটা বাউন্ডারির পথ ধরতেই মুষ্টিবদ্ধ হাতে তামিম ইকবাল ঘুষি মারলেন আকাশে। এই বাউন্ডারিতেই যে বাঁহাতি ওপেনার পৌঁছে গেলেন তিন অংকে। শুধু কি তাই? বহু আরাধ্য এই সেঞ্চুরিতে যে হয়ে গেল বহু কিছুর জবাবও। সেজন্যই তো তামিমের এমন বুনো উদ্‌যাপন!

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দর্শক প্রবেশের অনুমতি থাকলে হয়তো আজ একটা ব্যানার-ফেস্টুন উড়ত গ্যালারিতে-‘প্লিজ টি-টোয়েন্টিতে ফিরে আসুন তামিম ইকবাল।’ স্ট্রাইক রেট নিয়ে চলতে থাকা সমালোচনা। এই বিপিএলের প্রথম দুই ম্যাচে ফিফটি তুলে নিয়েও ‘টি-টোয়েন্টিতে চলে না’ কথা উড়াউড়ি করা। কত কিছুই তো শুনতে হলো বাঁহাতি ওপেনারকে। ঘরের উঠোনে তামিম যেন সব কিছুর জবাবই দিলেন সেই ব্যাটে, দুর্দান্ত এক শতরানের সোনায় মোড়ানো ইনিংসে। তামিমের সেঞ্চুরিতেই তো সিলেটের ১৭৬ রানের চূড়া খুব সহজে ছুঁয়ে জয়ের ধারায় ফিরল ঢাকা। আর তাতে মুছে গেল লিন্ডল সিমন্সের অনবদ্য শতরানের ইনিংসটা।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠা তামিমকে গত কয়েক বছর ধরে সমালোচনায় পড়তে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টি সংস্করণে তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরণ নিয়ে। এসব থেকেই তো একদিন আগে বাঁহাতি ওপেনার বলে দিয়েছেন-আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আর ফিরতে চান না। আর তার পরদিনই কিনা খেললেন একেবারে স্বভাববিরুদ্ধে এক ইনিংস। ঠাণ্ডা মাথায় উইকেটের চারপাশ দিয়ে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন এই তামিমকে দেখে কে বলবে-তিনি টি-টোয়েন্টি খেলতে জানেন না! এই তামিম তো ২০০৭ সালের তামিম!

বিপিএলের ঢাকা পর্বে রানের হাপিত্যেশ ছিল প্রতি ম্যাচেই। ব্যাটাররা তাই পাখির চোখ করে রেখেছিলেন জহুর আহমেদের বাইশ গজকে। এই উইকেট চিরকালই যে তাদের ব্যাটে হাসি ফুটিয়ে গেছে। জহুর আহমেদের উইকেটকে আরও একবার রানপ্রসবা বানিয়ে সিমন্স তুলে নিয়েছেন এই বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি। তাতে সিলেটও পায় ১৭৫ রান। তামিম ঝড়ে পরে সেই লক্ষ্যই কি না হয়ে গেল মামুলি।
 রাতের জহুর আহমেদে শিশির পড়বে-সেই ভাবনাতেই হয়তো টস জিতে বোলিং নিলেন ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সিলেটকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার সিমন্স ও এনামুল হক বিজয়। মাশরাফি বিন মুর্তজা-আন্দ্রে রাসেলদেরও ওপর ঝড় বইয়ে দিয়ে দুজনেই ৩৪ বলে তুলে নেন ৫০ রান। বিজয় ফেরার পর স্কোরবোর্ডে আর ১৫ রান যোগ হতেই সাজঘরে ফিরেন মোহাম্মদ মিথুন ও কলিন ইনগ্রামও। এরপরও যে সিলেটের এগিয়ে যাওয়ার পথটা দুর্গম হয়নি তার পেছনে ওই একজনই-সিমন্স। সেঞ্চুরির পথে ঢাকার প্রায় সব বোলারকেই ‘পিটুনি’ দিয়েছেন সিমন্স। তবে ‘ঘরের ছেলে’ রাসেলের ওপর দিয়েই স্টিম রোলারটা বেশি চালিয়েছেন সিমন্স। অবশ্য শেষমেশ ১৯ তম ওভারের চতুর্থ বলে ফিরেছেন ওই রাসেলেরে বলেই। তার আগেই সিমন্সের নামের পাশে ঝলঝল করছে ৬৫ বলে ১১৬।

জহুর আহমেদে ১৭৫ রান যে নিরাপদ নয় তা অতীতে অনেকবারেই দেখা গেছে। আর তামিম যদি জেগে উঠেন তাহলে তো আরও কম। শাহজাদকে দর্শক বানিয়ে চার-ছক্কার প্রদর্শনীতে ২৮ বলেই তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৪৩তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি। পরে সেটিকে সেঞ্চুরি বানিয়ে ৬৪ বলে ১১১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে যখন মাঠ ছাড়ছেন, তাতে নিশ্চিত হয়ে গেছে দলের জয়ও।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত