Ajker Patrika

ভারতীয় উড়োজাহাজে সহযাত্রীর চড়, নিখোঁজ হোসেনকে পাওয়া গেল রেলস্টেশনে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ০৫
হোসেনকে চপেটাঘাত করেন এক সহযাত্রী। এর পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত
হোসেনকে চপেটাঘাত করেন এক সহযাত্রী। এর পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে ফ্লাইট ৬ ই-২৩৮৭-তে করে আসামের শিলচরে যাচ্ছিলেন হোসেন আহমেদ মজুমদার। হঠাৎ প্লেনের মধ্যে আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বিমানের দুই ক্রু সদস্য তাঁকে বিমান থেকে নামতে সাহায্য করছিলেন। সে সময় পাশের সিটের এক যাত্রী আকস্মিক তাঁকে চড় মেরে বসেন। এ ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন হোসেন আহমেদ। গত চার দিন ধরে ব্যাপক খোঁজাখুঁজির অবশেষে গতকাল শনিবার তাঁর সন্ধান মিলেছে। কলকাতা থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে আসামের বরপেটা রেলস্টেশন থেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও অত্যন্ত ক্লান্ত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গেছে তাকে।

নিখোঁজ ব্যক্তি হোসেন আহমেদ মজুমদার (৩২), আসামের কাছাড় জেলার বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন হোটেলকর্মী। মুম্বাইয়ে কাজ করেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার তিনি মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে ফ্লাইট ৬ ই-২৩৮৭-এ মুম্বাই থেকে শিলচরের উদ্দেশে রওনা হন। যাত্রাপথে ট্রানজিট ছিল কলকাতা। কলকাতা বিমানবন্দরে রাত কাটিয়ে পরদিন তাঁর শিলচরগামী ফ্লাইটে ওঠার কথা ছিল।

কিন্তু বিমানে ওঠার পরই ঘটে অপ্রত্যাশিত ঘটনা। উড়োজাহাজে প্যানিক অ্যাটাক হয় তাঁর। প্লেনের ক্রুরা তাঁকে কেবিনের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় হাফিজুল রহমান নামের এক সহযাত্রী সামনে এসে তাঁকে সবার সামনে চড় মেরে বসেন। বিমানের ভেতরেই এর ভিডিও ধারণ করেন অপর এক যাত্রী। ভিডিওতে দেখা যায়, আতঙ্কিত অবস্থায় কাঁপতে থাকা হোসেনের ওপর বিরক্ত হয়ে সপাটে থাপ্পড় মেরে বসেন ওই ব্যক্তি। তার অভিযোগ—হোসেন বাকিদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে।

বিমান কলকাতায় নামার পর হাফিজুল রহমানকে বিমানবন্দরে আটক করা হয় এবং পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যদিও পরে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন তিনি।

শিলচর বিমানবন্দর থেকে হোসেনকে নিতে গিয়েছিলেন তার পরিবার। তারা প্রথমে এ ঘটনার কিছুই জানতেন না। পরদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি দেখার সঙ্গে সঙ্গেই হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা তারা। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই হোসেনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এরপর কাছাড় জেলার শিলচর থানায় একটি জিডি করে তার পরিবার। জিডি করার পর তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে দেখা যায়, কলকাতা থেকে আর কোনো ফ্লাইট ধরেননি তিনি। এমনকি বিমানবন্দর চত্বরেও তিনি ছিলেন না। এরপর শনিবার বিকেলে খবর আসে—বারপেটা রেলস্টেশনে একজন যুবক অস্বাভাবিক অবস্থায় বসে আছেন, পরিচয় দিতে পারছেন না। পুলিশ গিয়ে নিশ্চিত হয় তিনিই হোসেন আহমেদ মজুমদার।

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ‘উনি শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন। নিজের অবস্থান সম্পর্কে কিছুই পরিষ্কার বলতে পারছিলেন না। চিকিৎসা চলছে, পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।’

ঘটনার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। হাফিজুল রহমানের আচরণকে ‘অমানবিক’ বলে অভিহিত করেন অনেকে। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ। ওই ব্যক্তিকে ইন্ডিগোর ফ্লাইটে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ‘আমাদের যাত্রী ও কর্মীদের নিরাপত্তা ও মানসিক শান্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বিমানে এমন দুর্ব্যবহার একেবারেই বরদাশত করা হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শতকোটি টাকার পাওনা বকেয়া রেখেই ‘দেশ ছাড়লেন’ ফ্লাইট এক্সপার্টের মালিকেরা

‘অনিয়ম হয়নি’ বলায় এলজিইডি কর্মচারীকে পিটুনি

দলীয় প্রধান আসবেন, তাই পুলিশ এনে খোলা হলো কার্যালয়ের তালা

৪ দাবি নিয়ে মার্কিন চাপ, বাংলাদেশের সায় ৩ শর্তে

যেভাবে চীনা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভারতের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত