সন্ধ্যা নেমেছে। ফুটপাত দিয়ে হাঁটছি আমরা তিন সহকর্মী। মনের অজান্তে একটা মোটরবাইককে জায়গা দিয়ে দিলাম, পাশ কেটে চলে গেল ফুটপাতের ওপর দিয়ে। হঠাৎ খেয়াল হলে তিনজনই আলোচনা করতে থাকলাম বিষয়টা নিয়ে। ফুটপাত নিশ্চয় যানবাহন চলাচলের পথ না, হাঁটার পথ।
এই আলোচনা করতে করতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমাদের সামনে উঠে এল আরও একটা মোটরবাইক। আরোহী সংখ্যা দুই। পথ আটকে দাঁড়ালাম আমরা। আমার এক সহকর্মী বললেন, ‘এই ভাই এই, এটা তো ফুটপাত, হাঁটার রাস্তা। আপনি বাইক উঠিয়েছেন কেন?’
চালক উত্তর দিলেন, ‘জি ভাই
জি। নামছি।’
আমি নামার জায়গা দিয়ে বললাম, ‘জি ভাই জি ভাই না করে নামেন।’
চোখ গোল গোল করে রাঙিয়ে চালকের জবাব এল, ‘নামমু না!’
এ কথা বলে আমাদের পাশ কাটিয়ে ফুটপাতের ওপর দিয়েই চলে গেল সেই মোটরবাইক। আমার অন্য সহকর্মী রেগে গিয়ে শুধু বললেন, ‘অসভ্য।’ তারা শুনতে পেয়েছে কি না, জানি না।
এরপর আরও কয়েকটি সাইকেল ও মোটরবাইক আমাদের পাশ কাটিয়ে ফুটপাতের ওপর দিয়ে সাঁই সাঁই করে চলে গেল। আমরা কাউকে আর কিছু বলতে পারলাম না। ব্যর্থ হয়ে নিজেদের বোঝালাম, এদের কিছু বলে লাভ নেই। ওহ, সেই যানবাহনের চালকদের অসংখ্য ধন্যবাদ। তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করেনি। আমরা প্রাণে বেঁচে গেছি! আহত হওয়া তো
দূরের কথা।
কিন্তু নাঈমের মতো ছেলেরা ময়লার গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মরে যায়। সে এক বিরাট ব্যাপার। সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মরলে শহীদ হওয়া যায়। কেন যে ঠুনকো মোটরবাইক আর সাইকেলচালকদের চাকার সঙ্গে ধাক্কা খাই আমরা!
বেশ কয়েকবার চোখে পড়েছে, ফুটপাতে মোটরবাইক উঠিয়ে দিলে পথচারীরা বাইকারদের সঙ্গে ঝগড়া বাধিয়ে দেয়। ঘটনা শেষে হাতাহাতিতে গিয়ে গড়ায়। আর মোড়ে মোড়ে ‘অসহায়’ ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত থাকে। রাস্তার মাঝ বরাবর ফুটপাতে কী হয়, কী না হয়, তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা থাকে না। থাকার কথাও না। যেকোনো যানচালকের ন্যূনতম আইনের ধারণা থাকার কথা, বিবেক থাকার কথা। তবে কেউ আইন অমান্য করলে যে পুলিশের একটা দায়িত্ব থাকে, সেটা আশা করি বারবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মনে করিয়ে দিতে হবে না।
‘ফুট’ মানে পা আর ‘পাথ’ মানে পথ—শব্দ ধরে অর্থ না জানলেও একজন পড়ালেখা না জানা মানুষও বলতে পারবেন ফুটপাত হচ্ছে পায়ে হাঁটার পথ। হেঁটেই মানুষ ফুটপাতের ওপর দিয়ে চলাচল করে, দ্বিচক্রযান নিয়ে নয়। এ কথা বলে প্রতিবাদ করতে গেলে অন্যায়কারী ‘চোরের মায়ের বড় গলা’ প্রবাদটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রয়োগ করেন। ব্যাপারটা হয়ে যায় এ রকম, দুই পক্ষ একে অপরকে ‘বেয়াদপ’, ‘অসভ্য’ আখ্যা দিয়ে তর্কযুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। দুই পক্ষই যার যার কারণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যস্ত থাকে। চলে একে অপরকে অসম্মান করার প্রতিযোগিতা। দেখুন তো, ঘটনা কোথা থেকে কোথায় গিয়ে গড়ায়!
এ প্রসঙ্গে আরেকটা ঘটনা মনে পড়ল। একবার গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠেছি। ট্রাফিক জ্যাম ঠেলে ঠেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে অটোরিকশা। এর মধ্যে বাঁ পাশ থেকে একটা ব্যক্তিগত গাড়ি বরাবর এসে গতি ধীর করে। গাড়ি আর অটোরিকশাচালকেরা জড়িয়ে যান তর্কে। কেন গাড়িটিকে অটোরিকশা জায়গা দিল না ডান পাশে যাওয়ার জন্য, তা নিয়ে ঝগড়া। তর্কে তর্কে অটোরিকশাচালক জানালেন, তাঁর বয়স ৫০ আর গাড়িচালক বললেন, তাঁর বয়স ৩০। যান চালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে চলল আরেক দফা বাগ্বিতণ্ডা। জায়গা পেলে গাড়িচালক বিড়বিড় করতে করতে সামনে এগিয়ে যান। আমার বেশি বয়সী অটোরিকশাচালক বললেন, ‘দুনিয়াডা বেদ্দপের, বুঝলেন?’
সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন
সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
সন্ধ্যা নেমেছে। ফুটপাত দিয়ে হাঁটছি আমরা তিন সহকর্মী। মনের অজান্তে একটা মোটরবাইককে জায়গা দিয়ে দিলাম, পাশ কেটে চলে গেল ফুটপাতের ওপর দিয়ে। হঠাৎ খেয়াল হলে তিনজনই আলোচনা করতে থাকলাম বিষয়টা নিয়ে। ফুটপাত নিশ্চয় যানবাহন চলাচলের পথ না, হাঁটার পথ।
এই আলোচনা করতে করতে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমাদের সামনে উঠে এল আরও একটা মোটরবাইক। আরোহী সংখ্যা দুই। পথ আটকে দাঁড়ালাম আমরা। আমার এক সহকর্মী বললেন, ‘এই ভাই এই, এটা তো ফুটপাত, হাঁটার রাস্তা। আপনি বাইক উঠিয়েছেন কেন?’
চালক উত্তর দিলেন, ‘জি ভাই
জি। নামছি।’
আমি নামার জায়গা দিয়ে বললাম, ‘জি ভাই জি ভাই না করে নামেন।’
চোখ গোল গোল করে রাঙিয়ে চালকের জবাব এল, ‘নামমু না!’
এ কথা বলে আমাদের পাশ কাটিয়ে ফুটপাতের ওপর দিয়েই চলে গেল সেই মোটরবাইক। আমার অন্য সহকর্মী রেগে গিয়ে শুধু বললেন, ‘অসভ্য।’ তারা শুনতে পেয়েছে কি না, জানি না।
এরপর আরও কয়েকটি সাইকেল ও মোটরবাইক আমাদের পাশ কাটিয়ে ফুটপাতের ওপর দিয়ে সাঁই সাঁই করে চলে গেল। আমরা কাউকে আর কিছু বলতে পারলাম না। ব্যর্থ হয়ে নিজেদের বোঝালাম, এদের কিছু বলে লাভ নেই। ওহ, সেই যানবাহনের চালকদের অসংখ্য ধন্যবাদ। তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করেনি। আমরা প্রাণে বেঁচে গেছি! আহত হওয়া তো
দূরের কথা।
কিন্তু নাঈমের মতো ছেলেরা ময়লার গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মরে যায়। সে এক বিরাট ব্যাপার। সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মরলে শহীদ হওয়া যায়। কেন যে ঠুনকো মোটরবাইক আর সাইকেলচালকদের চাকার সঙ্গে ধাক্কা খাই আমরা!
বেশ কয়েকবার চোখে পড়েছে, ফুটপাতে মোটরবাইক উঠিয়ে দিলে পথচারীরা বাইকারদের সঙ্গে ঝগড়া বাধিয়ে দেয়। ঘটনা শেষে হাতাহাতিতে গিয়ে গড়ায়। আর মোড়ে মোড়ে ‘অসহায়’ ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত থাকে। রাস্তার মাঝ বরাবর ফুটপাতে কী হয়, কী না হয়, তা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা থাকে না। থাকার কথাও না। যেকোনো যানচালকের ন্যূনতম আইনের ধারণা থাকার কথা, বিবেক থাকার কথা। তবে কেউ আইন অমান্য করলে যে পুলিশের একটা দায়িত্ব থাকে, সেটা আশা করি বারবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মনে করিয়ে দিতে হবে না।
‘ফুট’ মানে পা আর ‘পাথ’ মানে পথ—শব্দ ধরে অর্থ না জানলেও একজন পড়ালেখা না জানা মানুষও বলতে পারবেন ফুটপাত হচ্ছে পায়ে হাঁটার পথ। হেঁটেই মানুষ ফুটপাতের ওপর দিয়ে চলাচল করে, দ্বিচক্রযান নিয়ে নয়। এ কথা বলে প্রতিবাদ করতে গেলে অন্যায়কারী ‘চোরের মায়ের বড় গলা’ প্রবাদটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রয়োগ করেন। ব্যাপারটা হয়ে যায় এ রকম, দুই পক্ষ একে অপরকে ‘বেয়াদপ’, ‘অসভ্য’ আখ্যা দিয়ে তর্কযুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। দুই পক্ষই যার যার কারণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যস্ত থাকে। চলে একে অপরকে অসম্মান করার প্রতিযোগিতা। দেখুন তো, ঘটনা কোথা থেকে কোথায় গিয়ে গড়ায়!
এ প্রসঙ্গে আরেকটা ঘটনা মনে পড়ল। একবার গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠেছি। ট্রাফিক জ্যাম ঠেলে ঠেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে অটোরিকশা। এর মধ্যে বাঁ পাশ থেকে একটা ব্যক্তিগত গাড়ি বরাবর এসে গতি ধীর করে। গাড়ি আর অটোরিকশাচালকেরা জড়িয়ে যান তর্কে। কেন গাড়িটিকে অটোরিকশা জায়গা দিল না ডান পাশে যাওয়ার জন্য, তা নিয়ে ঝগড়া। তর্কে তর্কে অটোরিকশাচালক জানালেন, তাঁর বয়স ৫০ আর গাড়িচালক বললেন, তাঁর বয়স ৩০। যান চালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে চলল আরেক দফা বাগ্বিতণ্ডা। জায়গা পেলে গাড়িচালক বিড়বিড় করতে করতে সামনে এগিয়ে যান। আমার বেশি বয়সী অটোরিকশাচালক বললেন, ‘দুনিয়াডা বেদ্দপের, বুঝলেন?’
সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন
সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকায় ১৩ আগস্ট একটি সংবাদ পড়ে এবং এ বিষয়ে টিভি চ্যানেলের সংবাদ দেখে মর্মাহত হয়েছিলাম। এভাবে কেউ কোনো দেশের একটি প্রাকৃতিক সম্পদের বিনাশ ঘটাতে পারে? আজকের পত্রিকায় ‘সাদাপাথরের সৌন্দর্য হারানোর কান্না’ শিরোনামের সে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই শুরু হয় পাথর
৭ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা এখন শতাধিক। প্রতিবছর এখানে হাজারো গবেষণা হয়, যার বড় অংশের উদ্দেশ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ। নিঃসন্দেহে বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষকের মর্যাদা এবং বৈশ্বিক পরিচিতি বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম।
৭ ঘণ্টা আগেখবরটি খুবই লজ্জার। বাংলাদেশ বিমানের একজন কেবিন ক্রু সোনা পাচারের দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৪ আগস্ট বিকেলে সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে বিজি-৩৪০ ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণ করার পর গ্রিন চ্যানেল অতিক্রমের সময় এই কেবিন ক্রুর গতিবিধিতে সন্দেহ জাগে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। স্ক্যানিং মেশিনের নিচে তিনি পা দিয়ে কিছু লুকানোর
৭ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি ঢাকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সম্মেলনে জাপানি বিনিয়োগ পরামর্শক তাকাও হিরোসে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত দিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট ভাষ্য, তাঁরা দ্রুত মুনাফার খোঁজে থাকা আগ্রাসী বিনিয়োগকারী, খামখেয়ালিও।
১৯ ঘণ্টা আগে