Ajker Patrika

আন্তজেলা পকেটমার চক্র

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ৪১
আন্তজেলা পকেটমার চক্র

খবরটা শুনে হাসব না কাঁদব, বুঝতে পারছি না। বসুন্ধরা শপিং মলে যুথী নামে যে চোর ধরা পড়েছেন, তিনি নাকি আন্তজেলা পকেটমার চক্রের নেতৃত্বে আছেন! তার মানে পকেটমারদেরও সংগঠন রয়েছে এবং তাতে নেতা ও কর্মীও রয়েছেন। কী করে এরা তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, তা জানার আগ্রহ হচ্ছে আমাদের।

চমকপ্রদ পদ্ধতিতে এই আন্তজেলা পকেটমার চক্রের নেত্রী চুরি করেছেন গত শুক্রবার। যাঁকে শিকার বানাবেন, তাঁকে ধাক্কা দেন তিনি। সঙ্গে থাকেন চক্রের আরও কয়েকজন সদস্য। ধাক্কা দিয়ে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিকারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে লোপাট করে নেন টাকা। তাঁর দল সেদিন আরও কয়েকজন নারীর কাছ থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার চুরি করেছে।

ধরা যখন পড়েছে তখন তার বিচারও নিশ্চয়ই হবে। খোয়ানো টাকাপয়সাও নিশ্চয়ই ফিরে পাবেন ভুক্তভোগীরা। সেটা আমাদের আলাপের বিষয় নয়। আমরা বিস্মিত হয়েছি, পকেটমারদের একটা আন্তজেলা চক্র আছে জানতে পেরে। যদি কেউ কৌতুক করে নামটি না দিয়ে থাকে, সত্যিই যদি এ রকম একটি চক্রের অস্তিত্ব থেকে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে, পকেটমার বা চোরেরাও এখন সংগঠিত একটি শ্রেণি। চুরিকে তারা পেশা হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই প্রসঙ্গেই আরও কিছু কথা বলা দরকার।

কেউ কি খেয়াল করেছেন, যেকোনো বাজারে কেনাকাটা করতে গেলেই একদল নারী-পুরুষ দাঁড়িয়ে যাবে আপনার আশপাশে। ভিক্ষার জন্য পেতে দেবে হাত। স্বীকার করছি, কর্মসংস্থানের উপায় সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে বলে অনেকেই কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না। কিন্তু বাজারে এসে হাত পাতার বিষয়টি কর্মসংস্থানের অভাবের সঙ্গে কমই সামঞ্জস্যপূর্ণ। একটা শ্রেণি দাঁড়িয়ে গেছে, যাদের কাজই হচ্ছে ঘুম থেকে উঠে বাজারে এসে জনে জনে হাত পাতা। আপনি যদি তাদের বাড়িতে কাজ করার প্রস্তাব দেন, তারা সে প্রস্তাব গ্রহণ করবে না, কারণ

ভিক্ষা করলে মাসিক আয় বাসাবাড়িতে কাজ করার চেয়ে বেশি। এদেরও আন্তজেলা ভিক্ষুক সমিতি আছে কি না, সেটা জানতে ইচ্ছে করে।

পকেটমার, চোর, ভিক্ষুকেরা যদি সমিতি করে, তাহলে তাতে আপত্তি থাকা উচিত নয়। আমরা তো দেখতেই পাচ্ছি, বিভিন্ন উপদেষ্টার এপিএসরা বিনা পুঁজিতে নাকি বেশ কামিয়ে নিচ্ছেন। নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলি-বাণিজ্য ইত্যাদির মাধ্যমে কোটি টাকার সংস্থান করে ফেলেছেন, এ রকম তরুণদের কথা হরহামেশাই শোনা যায়। এদের নিয়ে ‘তরুণ এপিএস বদলি-বাণিজ্য সমিতি’ নামে কোনো সংগঠন করার সুপারিশ করাই যেতে পারে। সেই সঙ্গে ‘ব্যাংক লুটেরা সমিতি’, ‘একাত্তরের চেতনা সমিতি’, ‘জুলাই চেতনা সমিতি’ নামেও বিনা পুঁজির ব্যবসা হাতিয়ে নেওয়া যেতে পারে। আহা! বিনা পুঁজির ব্যবসা যে কত মধুর, যারা করে, তারাই তা বুঝতে পারে। পরিশ্রম নেই, মেধা নেই, কোটা নেই, শুধু আন্তজেলা বা আন্তর্জাতিক একটা সংগঠন খুলে ফেলতে পারলেই কেল্লা ফতে!

তবে ওই চোর সমিতি একটি কারণেই সেরা সংগঠন। ভ্যানিটি ব্যাগ হাতিয়ে নিতে হলে ধাক্কা মারতে হয়। তাতে কি পরিশ্রম হয় না?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ল ১৫ শতাংশ, সঙ্গে শর্ত

ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস ৩৩০, এয়ারক্র্যাফট দাঁড়াল ২৫টিতে

‘জনতার জন্য হিজাব আইন, খামেনির উপদেষ্টার মেয়ের জন্য ডানাকাটা জামা’

ত্রিভুজ প্রেম থেকে মুক্তি পেতেই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করে ছাত্রী: পুলিশ

যুগান্তকারী উদ্ভাবন: চোখে চিপ বসিয়ে দেখতে পাচ্ছেন দৃষ্টিহীনেরা

এলাকার খবর
Loading...