Ajker Patrika

ছোট মিথ্যা বড় মিথ্যা

বিরস
Thumbnail image

একজন সংসদ সদস্য কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে একটি দামি রেস্টুরেন্টে খেতে ঢুকেছেন। খাওয়া শেষে রেস্টুরেন্টের শেফ এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘আমাদের আলু-মাংসের ডিশটা কেমন লেগেছে জনাব?’ একটু ঢেকুর তুলে মাননীয় সংসদ সদস্য বললেন, আপনাদের ডিশের সঙ্গে আমাদের রাজনীতির বহু মিল আছে।

শেফ আগ্রহ নিয়ে জানতে চান,সেটা কেমন? 

সংসদ সদস্য জবাব দেন, ডিশে আলুর উপস্থিতি ছিল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আর মাংস ছিল দুর্বল বিরোধী দলের মতো।

শেফ আর কিচ্ছু জানতে চাননি।

খ. একদিন ক্লাসে শিক্ষক জানতে চাইলেন, ছোট মিথ্যা আর বড় মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য কী?

পেছনের বেঞ্চ থেকে একজন হাবাগোবাটাইপের ছাত্র দাঁড়িয়ে বলল, ছোট মিথ্যা হলো সত্যি সত্যি মিথ্যা। আর বড় মিথ্যা হলো রাজনীতি।

গ. এই কৌতুকটা গত শতকের কোনো এক সময়ের।  

এক বন্ধু আরেক বন্ধুর কাছে জানতে চাইল, আচ্ছা, মঙ্গল গ্রহে কি মানুষ আছে?

বন্ধুর তাৎক্ষণিক জবাব, নেই।

-কী করে বুঝলি?

-থাকলে আমেরিকা এত দিন সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সৈন্য না পাঠিয়ে থাকতে পারত না।  

ঘ. খুব ভোরেই পাশের বাড়ির নাহার ভাবির চড়া আওয়াজ শোনা গেল। তিনি বলছেন, সারাটা জীবন তো আমার ঘাড়ে চড়ে চালিয়ে গেলে, একদিন একটা কুটোও নেড়ে দেখলে না। বিয়ে করে বউ তো ঘরে আনোনি, এনেছ একটা বাহন। বছরের পর বছর তোমাকে বয়ে নিয়ে বেড়ালাম। তোমার মোটরবাইক আর আমার মধ্যে পার্থক্য কী, বলতে পারো? তোমার সঙ্গে বিয়ে হয়ে জীবনটা আমার ছারখার হয়ে গেল। কী পেলাম এই কুড়ি বছরে?

যাকে উদ্দেশ করে বলা, তার কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না। সোহানার কৌতূহল বেড়ে গেল। ব্যাপারটি কী? ভাইয়ের সঙ্গে কি ভাবির বড় কোনো সমস্যা তৈরি হয়েছে? সংসারটা টিকবে তো? যা দিনকাল পড়েছে! কথায় কথায় ছাড়াছাড়ি।

ব্যাপারটা বোঝার জন্য বিকেলে সোহানা পাশের বাড়িতে সরেজমিন তদন্তে গেল। গিয়ে দেখে সোহেল ভাই সেজেগুজে কোথাও বেরোনোর জন্য প্রস্তুত। সোহানাই জিজ্ঞেস করল, ভাই কি কোথাও যাচ্ছেন?

-হ্যাঁ। একটি বিয়ের দাওয়াত সন্ধ্যায়। রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, তাই একটু আগেই বেরোচ্ছি। জবাব দিলেন সোহেল।

ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন নাহার ভাবি। তিনি রাগত স্বরেই বললেন, সে কী, তুমি কি একাই চললে নাকি? আমাকে তো কিছুই বললে না!

সোহেল ভাই গম্ভীর মুখে বললেন, সরকার নতুন আইন করেছে, ১৫ বছরের বেশি পুরোনো বাহন নিয়ে আর রাস্তায় বেরোনো যাবে না।

. সেকান্দর বক্স অনেক ভেবেচিন্তে ঠিক করলেন, তিনি একটি হোটেল করবেন। খাবার ব্যবসায় নাকি লাভ ছাড়া লস নেই। তাঁর পরিচিত দু-একজন হোটেল ব্যবসায় নেমে ভাগ্য বদলে ফেলেছেন। স্ত্রী, বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি কেউ সেকান্দর বক্সের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা না করে বরং খুশিই হলেন। কারণ সেকান্দর একটু অলস প্রকৃতির কিছুটা শৌখিন মানুষ। নিজে থেকে 
একটি ব্যবসার কথা ভাবায় সবাই স্বস্তিবোধ করেছেন।

সমস্যা হলো হোটেলের নাম কী রাখবেন সেকান্দর। এ নিয়ে আত্মীয়দের মধ্যে বেশ জল্পনাকল্পনা। কিছু নামের পরামর্শ কেউ কেউ দিলেনও। তবে সেকান্দর ঘোষণা করলেন তাঁর হোটেলের নাম হবে ‘মা হোটেল’। এই নামের পক্ষে যুক্তি হিসেবে নিজের মাকে বললেন, মা, তোমার কথা মনে রেখেই হোটেলের এই নাম ঠিক করছি। তারপর শাশুড়ির কাছে গিয়ে বললেন, আপনার মেয়ের পরামর্শেই আপনার কথা মনে রেখেই এই নাম। সবশেষে স্ত্রীর কাছে গিয়ে বলেন, আমাদের ছেলেমেয়ে খুব করে চাইল, তাই ওদের মন রেখে তোমার কথা মনে রেখেই এই নাম।

যাদের মাথায় কিছু নেই বলে মনে করা হয়, প্রয়োজনের সময় তাদের মাথাও যে কেমন কাজ করে, তা আর ব্যাখ্যার দরকার নেই। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত