
কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তার হিসাব মেলাতে গিয়ে ছুটির দিনটাই বরবাদ হয়ে যায় অনেকের। সে জন্য কোথায় কী আছে জেনে আগেই পরিকল্পনা করে ঘুরে আসতে সুবিধা হয়। আজ তাই ঢাকার ১০ জাদুঘরের খোঁজ-খবর দেওয়া হলো।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অবস্থান ঢাকার শাহবাগে। ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরটিতে বিভিন্ন বিভাগ ও গ্যালারির মাধ্যমে নানা ধরনের নিদর্শন দেখানো হয় মানুষকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, নৃতত্ত্ব, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি, আধুনিক ও বিশ্বসভ্যতাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে গ্যালারিগুলোর মাধ্যমে। সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার বাদে যেতে পারবেন বাকি ছয় দিন।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর
ঢাকার ধানমন্ডির পুরোনো ৩২ নম্বর সড়কে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর বা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর অবস্থিত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাড়িটিতে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দুর্লভ ছবি এবং শেষ দিনগুলোর অনেক স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। ১৯৯৭ সালে বাড়িটি জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। বৃহস্পতি থেকে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকে। বুধবার এটি বন্ধ থাকে।
স্বাধীনতা জাদুঘর
স্বাধীনতা জাদুঘরে স্বাভাবিকভাবেই স্থান পেয়েছে দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস। অবস্থান ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। জাদুঘরটিতে বিভিন্ন ঐতিহাসিক আলোকচিত্র, যুদ্ধের ঘটনা সংবলিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদনও প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিভিন্ন বিদেশি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিলিপি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিদেশে প্রচারণা সৃষ্টির জন্য তৈরি করা পোস্টার জাদুঘরটিতে পাবেন। স্বাধীনতা জাদুঘরে প্রবেশের আগে টেরাকোটা ম্যুরালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্লাজা চত্বরে বসানো হয়েছে ১৫০ ফুট উচ্চতার স্বাধীনতা স্তম্ভ।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত এই জাদুঘর আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত নানা উপকরণ স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন গ্যালারির মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত সামগ্রী, অস্ত্র, দলিল, চিঠিপত্র, মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মারকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম তলায় রয়েছে শিখা অম্লান। এর পাশেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার বাদে বাকি ছয় দিন ঘুরে আসতে পারবেন এখান থেকে।
আহসান মঞ্জিল জাদুঘর
আহসান মঞ্জিল ঢাকা শহরের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি ঢাকার নবাবদের প্রাসাদ ছিল। ১৮৭২ সালে নওয়াব আবদুল গনি তাঁর ছেলে খাজা আহসানউল্লাহর নামে ‘আহসান মঞ্জিল’ নামকরণ করেন। ১৯৯২ সালে পুনঃসংস্কারের মাধ্যমে জাদুঘরে (আহসান মঞ্জিল জাদুঘর) রূপান্তর করে উন্মুক্ত করা হয় দর্শকদের জন্য। সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার। ছাদের ওপরের গম্বুজ ও বিশাল সিঁড়ি এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এখানে পাবেন নবাব আমলে ব্যবহৃত আলমারি, আয়না, সিন্দুক, কাচ ও চীনামাটির থালাবাসন, তলোয়ার, বর্শা তেলচিত্র ইত্যাদি। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন বৃহস্পতিবার।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। ১৯৮৭ সালে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘরের গোড়াপত্তন হয়। ২০১৪ সালে বেগম রোকেয়া সরণিসংলগ্ন তেজগাঁও বিমানবন্দরের রানওয়ের পশ্চিম পাশে সুবিন্যস্ত ও বিস্তৃতভাবে স্থাপন করা হয় এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। খোলা জায়গায় বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার করা হেলিকপ্টার ও বিমান দিয়ে জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম যাত্রীবাহী বিমান বলাকা। রাশিয়ার তৈরি বিমানটি বাংলাদেশে আসে ১৯৫৮ সালে। আছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার একটি বোমারু বিমানসহ আরও বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার। প্রতি রোববার বন্ধ থাকে জাদুঘরটি।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর
১৯৬৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ঢাকা পাবলিক লাইব্রেরি ভবনে কাজ শুরু করে। পরে আগারগাঁওয়ে পাঁচ একর জমি বরাদ্দ পাওয়ার পর ১৯৮১ সালে এর নিজস্ব ভবন তৈরি হয়। টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহ, নক্ষত্র, চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ ও সৌরজগৎ দেখার নিয়মিত কর্মসূচি রয়েছে। সাতটি গ্যালারিতে নানা ধরনের নিদর্শন আছে। এই জাদুঘর বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞান মেলা, বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসামগ্রী প্রদর্শনের আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে।
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে অবস্থিত। এখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় পুলিশ সদস্যদের ব্যবহার করা রাইফেল, বন্দুক, মর্টারশেল, হাতব্যাগ, টুপি, চশমা, মানিব্যাগ, ইউনিফর্ম, ডায়েরি, রেডিও, শার্ট, প্যান্ট, র্যাংক ব্যাজসহ টিউনিক সেট, এমএম রাইফেল, মর্টার, মর্টার শেল, সার্চলাইট, রিভলবার, এলএমজি, মেশিনগানসহ বিভিন্ন স্মারক আছে। বুধবার সাপ্তাহিক বন্ধ।
টাকা জাদুঘর
টাকা জাদুঘর বা মুদ্রা জাদুঘর ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত। প্রাচীন বাংলা থেকে শুরু করে আধুনিক কাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের ধাতব মুদ্রা ও কাগজের নোট সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা আছে এখানে। জাদুঘরে স্থান পেয়েছে মুদ্রা সংরক্ষণের প্রাচীন কাঠের বাক্স ও লোহার সিন্দুক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রাও এখানে পাবেন। ছাপাঙ্কিত রৌপ্য ও সুলতানি আমলের স্বর্ণমুদ্রা টাকা জাদুঘরের বড় আকর্ষণ। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন বৃহস্পতিবার।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর
ঢাকার বিজয় সরণিতে অবস্থিত এই জাদুঘর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর বিভিন্ন অর্জন ও গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী। ১০ একর জমির ওপর নির্মিত জাদুঘরটিতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর জন্য আলাদা গ্যালারি আছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা ব্যাজ, পোশাক, অস্ত্র, গোলাবারুদ, কামান, অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা বিভিন্ন যানবাহন প্রদর্শিত হয়েছে এখানে। জাদুঘরে আছে থ্রিডি সিনেমা হল, লাইব্রেরি, আর্কাইভ, ভাস্কর্য, ঝরনা। সাপ্তাহিক বন্ধ বুধবার।
সূত্র: বাংলাপিডিয়া, সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া

কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তার হিসাব মেলাতে গিয়ে ছুটির দিনটাই বরবাদ হয়ে যায় অনেকের। সে জন্য কোথায় কী আছে জেনে আগেই পরিকল্পনা করে ঘুরে আসতে সুবিধা হয়। আজ তাই ঢাকার ১০ জাদুঘরের খোঁজ-খবর দেওয়া হলো।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের অবস্থান ঢাকার শাহবাগে। ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরটিতে বিভিন্ন বিভাগ ও গ্যালারির মাধ্যমে নানা ধরনের নিদর্শন দেখানো হয় মানুষকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, নৃতত্ত্ব, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি, আধুনিক ও বিশ্বসভ্যতাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে গ্যালারিগুলোর মাধ্যমে। সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার বাদে যেতে পারবেন বাকি ছয় দিন।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর
ঢাকার ধানমন্ডির পুরোনো ৩২ নম্বর সড়কে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর বা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর অবস্থিত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাড়িটিতে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দুর্লভ ছবি এবং শেষ দিনগুলোর অনেক স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। ১৯৯৭ সালে বাড়িটি জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়। বৃহস্পতি থেকে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এটি খোলা থাকে। বুধবার এটি বন্ধ থাকে।
স্বাধীনতা জাদুঘর
স্বাধীনতা জাদুঘরে স্বাভাবিকভাবেই স্থান পেয়েছে দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস। অবস্থান ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। জাদুঘরটিতে বিভিন্ন ঐতিহাসিক আলোকচিত্র, যুদ্ধের ঘটনা সংবলিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদনও প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিভিন্ন বিদেশি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিলিপি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিদেশে প্রচারণা সৃষ্টির জন্য তৈরি করা পোস্টার জাদুঘরটিতে পাবেন। স্বাধীনতা জাদুঘরে প্রবেশের আগে টেরাকোটা ম্যুরালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্লাজা চত্বরে বসানো হয়েছে ১৫০ ফুট উচ্চতার স্বাধীনতা স্তম্ভ।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত এই জাদুঘর আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত নানা উপকরণ স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন গ্যালারির মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত সামগ্রী, অস্ত্র, দলিল, চিঠিপত্র, মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মারকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রথম তলায় রয়েছে শিখা অম্লান। এর পাশেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার বাদে বাকি ছয় দিন ঘুরে আসতে পারবেন এখান থেকে।
আহসান মঞ্জিল জাদুঘর
আহসান মঞ্জিল ঢাকা শহরের দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এটি ঢাকার নবাবদের প্রাসাদ ছিল। ১৮৭২ সালে নওয়াব আবদুল গনি তাঁর ছেলে খাজা আহসানউল্লাহর নামে ‘আহসান মঞ্জিল’ নামকরণ করেন। ১৯৯২ সালে পুনঃসংস্কারের মাধ্যমে জাদুঘরে (আহসান মঞ্জিল জাদুঘর) রূপান্তর করে উন্মুক্ত করা হয় দর্শকদের জন্য। সাপ্তাহিক বন্ধ বৃহস্পতিবার। ছাদের ওপরের গম্বুজ ও বিশাল সিঁড়ি এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এখানে পাবেন নবাব আমলে ব্যবহৃত আলমারি, আয়না, সিন্দুক, কাচ ও চীনামাটির থালাবাসন, তলোয়ার, বর্শা তেলচিত্র ইত্যাদি। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন বৃহস্পতিবার।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। ১৯৮৭ সালে প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘরের গোড়াপত্তন হয়। ২০১৪ সালে বেগম রোকেয়া সরণিসংলগ্ন তেজগাঁও বিমানবন্দরের রানওয়ের পশ্চিম পাশে সুবিন্যস্ত ও বিস্তৃতভাবে স্থাপন করা হয় এবং জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। খোলা জায়গায় বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার করা হেলিকপ্টার ও বিমান দিয়ে জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম যাত্রীবাহী বিমান বলাকা। রাশিয়ার তৈরি বিমানটি বাংলাদেশে আসে ১৯৫৮ সালে। আছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার একটি বোমারু বিমানসহ আরও বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার। প্রতি রোববার বন্ধ থাকে জাদুঘরটি।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর
১৯৬৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ঢাকা পাবলিক লাইব্রেরি ভবনে কাজ শুরু করে। পরে আগারগাঁওয়ে পাঁচ একর জমি বরাদ্দ পাওয়ার পর ১৯৮১ সালে এর নিজস্ব ভবন তৈরি হয়। টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহ, নক্ষত্র, চন্দ্রগ্রহণ, সূর্যগ্রহণ ও সৌরজগৎ দেখার নিয়মিত কর্মসূচি রয়েছে। সাতটি গ্যালারিতে নানা ধরনের নিদর্শন আছে। এই জাদুঘর বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞান মেলা, বিজ্ঞান প্রতিযোগিতা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসামগ্রী প্রদর্শনের আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে।
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে অবস্থিত। এখানে মুক্তিযুদ্ধের সময় পুলিশ সদস্যদের ব্যবহার করা রাইফেল, বন্দুক, মর্টারশেল, হাতব্যাগ, টুপি, চশমা, মানিব্যাগ, ইউনিফর্ম, ডায়েরি, রেডিও, শার্ট, প্যান্ট, র্যাংক ব্যাজসহ টিউনিক সেট, এমএম রাইফেল, মর্টার, মর্টার শেল, সার্চলাইট, রিভলবার, এলএমজি, মেশিনগানসহ বিভিন্ন স্মারক আছে। বুধবার সাপ্তাহিক বন্ধ।
টাকা জাদুঘর
টাকা জাদুঘর বা মুদ্রা জাদুঘর ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত। প্রাচীন বাংলা থেকে শুরু করে আধুনিক কাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের ধাতব মুদ্রা ও কাগজের নোট সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা আছে এখানে। জাদুঘরে স্থান পেয়েছে মুদ্রা সংরক্ষণের প্রাচীন কাঠের বাক্স ও লোহার সিন্দুক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রাও এখানে পাবেন। ছাপাঙ্কিত রৌপ্য ও সুলতানি আমলের স্বর্ণমুদ্রা টাকা জাদুঘরের বড় আকর্ষণ। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন বৃহস্পতিবার।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর
ঢাকার বিজয় সরণিতে অবস্থিত এই জাদুঘর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর বিভিন্ন অর্জন ও গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী। ১০ একর জমির ওপর নির্মিত জাদুঘরটিতে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর জন্য আলাদা গ্যালারি আছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহার করা ব্যাজ, পোশাক, অস্ত্র, গোলাবারুদ, কামান, অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা বিভিন্ন যানবাহন প্রদর্শিত হয়েছে এখানে। জাদুঘরে আছে থ্রিডি সিনেমা হল, লাইব্রেরি, আর্কাইভ, ভাস্কর্য, ঝরনা। সাপ্তাহিক বন্ধ বুধবার।
সূত্র: বাংলাপিডিয়া, সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট, উইকিপিডিয়া

আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছি, তাদের কাছে ফনিক্স সাইকেল এক নস্টালজিয়ার নাম। তখন ভারতের হিরো সাইকেলও ছিল বাজারে। তার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন হার্টথ্রব নায়ক সঞ্জয় দত্ত, টেলিভিশনে দেখানো হতো। তারও ক্রেজ ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু ফনিক্স সাইকেল? কোনো রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই তখন রাজা। তো, সেই ফনিক্স সাইকেল ছিল
৩৩ মিনিট আগে
আজ আপনার রাগের তেজ এতটা বাড়বে যে আপনি ভুল করে নিজের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটাই ডিলিট করে দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে পড়লে মনে হবে যেন পৃথিবীর সব গাড়ি একজোট হয়ে শুধু আপনার কাজেই বাগড়া দিতে এসেছে। আবেগের বশে আজ ভুলেও অনলাইনে কিছু অর্ডার করবেন না, কারণ আপনি এমন কিছু কিনে ফেলবেন, যা আসলে
২ ঘণ্টা আগে
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১ দিন আগে
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১ দিন আগেরজত কান্তি রায়, ঢাকা

আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছি, তাদের কাছে ফনিক্স সাইকেল এক নস্টালজিয়ার নাম। তখন ভারতের হিরো সাইকেলও ছিল বাজারে। তার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন হার্টথ্রব নায়ক সঞ্জয় দত্ত, টেলিভিশনে দেখানো হতো। তারও ক্রেজ ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু ফনিক্স সাইকেল? কোনো রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই তখন রাজা। তো, সেই ফনিক্স সাইকেল ছিল সে সময়ের কিশোর ও তরুণদের কাছে স্বপ্নের বিষয়—এখন যেমন তরুণদের আরাধ্য রেসিং বাইকের রেপ্লিকা।
ফনিক্স নামের সে বাইসাইকেল মানুষের কাছে পরিচিত ছিল চায়না ফনিক্স নামে। এক রড ও দুই রড, এ রকমভাবে ভাগ করা হতো সে সাইকেলকে। মানে কোনো সাইকেলের ওপরের সংযোগকারী রড থাকত একটি, কোনোটির দুটি। তখনো ২৬ বা ৩২ ইঞ্চির মাপের বিষয়টা আমাদের মাথায় ঢুকত না। আমাদের চাহিদা ছিল এক রডের সাইকেল। তাতে ‘হাফ প্যাডেল’-এ চালানোর সুবিধা ছিল।
আমরা যখন সাইকেলে হাফ প্যাডেলের দুনিয়ায় মশগুল, তখন দেখতাম বিয়ের কথা উঠলেই ছেলের বাড়ির লোকদের কাছে জানতে চাওয়া হতো, হিরো না ফনিক্স সাইকেল? কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই ফনিক্স সাইকেল জয়ী হতো। তারপর বিয়ের সপ্তাহখানেক আগে খয়েরি কাগজ আর পলিথিনে মুড়ে চায়না ফনিক্স আসত মেয়ের বাড়িতে। কালো রং, চকচকে রুপালি রঙের ক্যারিয়ার, কালো সিট। সামনে হ্যান্ডেলের নিচে সোনালি রঙের ছোট্ট ধাতব পাতে লাল রঙের লোগো ছিল। তাতে খোদাই করা ছিল এক অদ্ভুত জীব। অনেক পরে জেনেছি, সেটা ছিল ড্রাগন। সেই লোগো ছিল আমাদের কিশোর মনের ভীষণ আগ্রহের জায়গা। হাত বোলাতাম তাতে। মনে মনে ভাবতাম, দেখিস, একদিন আমারও একখানা ফনিক্স সাইকেল থাকবে, বাবা কিনে দেবে! কোনো দিন অবশ্য তার মালিক হওয়া হয়নি, বলাবাহুল্য।
খানিক বড় হলে, মানে যখন আমরা সিটে বসে সাইকেল চালানো শিখলাম, দুনিয়াটা গেল বদলে। বুঝতে পারলাম, আমাদের বাবারা ফনিক্স সাইকেল কিনে দিতে পারবেন না। আশা দূরে যেতে লাগল। ধীরে ধীরে সাইকেলের প্রচলন কমতে থাকল। যারা একসময় ফনিক্স সাইকেল কিনত, তারা মোটরসাইকেল কিনতে শুরু করল। গতি বাড়ল, ভালোবাসা থেকে গেল মনে। জীবনও বদলে গেল।

অনেক পরে, যখন আমাদের অবসর বিনোদনে যোগ হলো উইকিপিডিয়া, রাজ্যের তথ্য আসল আমাদের হাতে, জানলাম, ফনিক্স সাইকেলের নাম আসলে ফিনিক্স সাইকেল। ফিনিক্স পাখির নাম জানলেও ফিনিক্স সাইকেলকে কেন ফনিক্স নামে ডাকা হতো, তা এখনো বোধগম্য নয়। অবশ্য যে দেশে আনানাস হয়ে যায় আনারস আর হসপিটাল হয়ে যায় হাসপাতাল, সে দেশে ফিনিক্স বাইসাইকেলের নাম ফনিক্স হয়ে যাওয়াটা খুব উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা নয়। যা হোক, এই ফিনিক্স বা ফনিক্স বাইসাইকেল ছিল মেড ইন চায়না। চীনের সাংহাই ফিনিক্স বাইসাইকেল কোম্পানি এটি তৈরি করত। এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৮ সালে, সাংহাই থার্ড বাইসাইকেল ফ্যাক্টরি হিসেবে। এর পরে প্রতিষ্ঠাটি আরও বড় হয়ে ওঠে। তার ইতিহাস উইকিপিডিয়ার এই যুগে দুর্লভ নয়। ফিনিক্স ব্র্যান্ডের এই বাইসাইকেল ৫০টিরও বেশি দেশে সাইকেল রপ্তানি হয় বলে জানা যায়। তবে ফিনিক্স ট্রেডমার্কটি নাকি চীন দেশের প্রথম দশটি সুপরিচিত ট্রেডমার্কের মধ্যে একটি। আর এটি নিবন্ধিত হয়েছে ১০৪টি দেশে!
শোনা যায়, ফিনিক্স বাইসাইকেল চীনা জাতির বিশেষ গর্বের জিনিস। এক সময় বিদেশি নেতারা চীন সফরে গেলে তাঁদের উপহার হিসেবে একটি করে ফিনিক্স বাইসাইকেল দেওয়া হতো।
এই সাংহাই ফিনিক্স বাইসাইকেল কোম্পানির ফিনিক্স সাইকেলের জন্যই কি না, তা জানা না গেলেও, চীন নামের দেশটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাইসাইকেল ব্যবহারকারী মানুষের দেশ হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, চীনে একসময় বাইসাইকেল ছিল পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। ১৯৮০-৯০-এর দশকে চীনের শহরগুলোতে লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন বাইসাইকেল ব্যবহার করত। বেইজিংয়ের মতো শহরে সকালবেলা নামত সাইকেলের ঢল! সে জন্যই হয়তো চীন দেশেই শুরু হয়েছিল সাইকেল নিয়ে যাবতীয় ভবিষ্যৎমুখী কাজ।
সেই নব্বইয়ের দশকে বেইজিং শহরে সাইকেলের জ্যাম নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা তৈরি করা হয়। আর একুশ শতকের প্রথম দশকের মাঝামাঝিতে সে দেশেই তৈরি হয় সাইকেল শেয়ারিং বিপ্লব। ২০১৬-২০১৭ সালে মোবাইক বা ওফো-এর মতো প্রতিষ্ঠান তৈরি হয় সেখানে, সাইকেল শেয়ারিংয়ের ব্যবসা করার জন্য। ২০১৭ সালের মধ্যে চীনে ১৬০টিরও বেশি শেয়ার্ড বাইসাইকেল কোম্পানি চালু হয়েছিল। সেসব প্রতিষ্ঠানের মোট বাইসাইকেলের সংখ্যা ছিল ২ কোটিরও বেশি! ইউরোপের দেশগুলোতে এখন এ ব্যবসা বেশ জমজমাট বলে জানা যায়।

বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা থেকেই চীনে শুরু হয়েছিল ইলেকট্রিক বাইকের ধারণা। খেয়াল করলে দেখবেন, সেগুলো সাইকেলের চেয়ে খানিক বেশি গতির। কিন্তু মোটরবাইকের মতো নয়। চায়না অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের একটি গবেষণা অনুসারে, ২০২৩ সালে চীনে ই-বাইকের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৫ কোটি!
এবার বাইসাইকেল নিয়ে চীনদেশের কিছু চিত্তাকর্ষক তথ্য দেওয়া যাক।
চীনের জিয়াংসু প্রদেশের কুনশান শহরে আছে একটি বিশালাকার বাইসাইকেলের ভাস্কর্য। স্থানীয় মানুষ এ ভাস্কর্যে এসে সাইকেলশিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। কারণ, ষাটের দশক থেকে চীনের জাতীয় জীবনে বাইসাইকেল এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে ছিল। সে সময় দেশটিতে তৈরি হয়েছে বাইসাইকেল সংস্কৃতি। সে সংস্কৃতি শুধু চীনকেই নয়, প্রভাবিত করেছিল প্রায় পুরো বিশ্বকে।
বেইজিং থেকে গুয়াংঝো, চীনের বাইসাইকেল সংস্কৃতির রূপান্তরের গল্পটা বেশ চিত্তাকর্ষক। চীনের রাস্তায় বাইসাইকেলের যে অগণিত চাকা ঘুরছে, তা কেবল একটি বাহন নয়, বরং দেশটির সামাজিক-অর্থনৈতিক বিবর্তনের জীবন্ত দলিল। একসময়ের ‘সাইকেল রাজ্য’ থেকে আজকের ‘ই-বাইক সাম্রাজ্যে’ রূপান্তরের এই গল্পে মিশে আছে নস্টালজিয়া আর উদ্ভাবনের মেলবন্ধন।
১৯৯৫ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুসারে, শুধু বেইজিং শহরে ছিল ৮৩ লাখেরও বেশি রেজিস্টার্ড বাইসাইকেল। সকাল-সন্ধ্যা রাস্তায় আক্ষরিক অর্থে নামত বাইসাইকেলের স্রোত! সেই সময় ফোরএভার ও ফ্লাইং পিজিয়ন নামের আরও দুটি ব্র্যান্ডের বাইসাইকেল ছিল সামাজিক মর্যাদার প্রতীক। অনেক পরিবারে বিয়ের সময় সে দুই ব্র্যান্ডের বাইসাইকেল অপরিহার্য যৌতুক হিসেবে বিবেচিত হতো। কী, আমাদের দেশের যৌতুকের কথা মনে পড়ে? একসময় বিয়েতে দেওয়া হতো বাইসাইকেল ও টেলিভিশন! একই গল্প ছিল চীনেও।
মজার বিষয় হলো, ১৯৯০-এর দশকে বেইজিং ও শেনইয়াং-এর মতো শহরগুলোতে শুধু গাড়ি জ্যামই নয়, নিত্যনৈমিত্তিকভাবে হতো সাইকেল জ্যাম। শহরগুলোতে নির্মিত হয়েছিল বিশাল সাইকেল লেন নেটওয়ার্ক, কিছু শহরে বাইসাইকেলের জন্য আলাদা ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছিল। সেগুলো অবশ্য কমতে শুরু করে ২০০০ সালের পর, নগরায়ণ ও মোটরগাড়ির বিস্তারের কারণে।
চীনের বাইসাইকেল সংস্কৃতির এই বিবর্তন শুধু পরিবহন পদ্ধতির পরিবর্তন নয়, বরং এটি দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের জীবন্ত প্রতিফলন। এটি শুধু যে চীনকে প্রভাবিত করেছিল তা নয়। প্রভাবিত করেছিল বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আরও বহু দেশকে, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে।
তথ্যসূত্র
উইকিপিডিয়া
‘বাৎসরিক বাইসাইকেল পরিসংখ্যান রিপোর্ট’ (১৯৯৫), চায়না বাইসাইকেল অ্যাসোসিয়েশন
‘দ্য সোশ্যাল হিস্টরি অব বাইসাইকেল ইন চায়না’ (২০১৮), ওয়েই ঝাং, পিকিং ইউনিভার্সিটি
‘বাইসাইকেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইন আরবান চায়না’, পিপলস ডেইলি (১৯৯৮)

আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছি, তাদের কাছে ফনিক্স সাইকেল এক নস্টালজিয়ার নাম। তখন ভারতের হিরো সাইকেলও ছিল বাজারে। তার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন হার্টথ্রব নায়ক সঞ্জয় দত্ত, টেলিভিশনে দেখানো হতো। তারও ক্রেজ ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু ফনিক্স সাইকেল? কোনো রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই তখন রাজা। তো, সেই ফনিক্স সাইকেল ছিল সে সময়ের কিশোর ও তরুণদের কাছে স্বপ্নের বিষয়—এখন যেমন তরুণদের আরাধ্য রেসিং বাইকের রেপ্লিকা।
ফনিক্স নামের সে বাইসাইকেল মানুষের কাছে পরিচিত ছিল চায়না ফনিক্স নামে। এক রড ও দুই রড, এ রকমভাবে ভাগ করা হতো সে সাইকেলকে। মানে কোনো সাইকেলের ওপরের সংযোগকারী রড থাকত একটি, কোনোটির দুটি। তখনো ২৬ বা ৩২ ইঞ্চির মাপের বিষয়টা আমাদের মাথায় ঢুকত না। আমাদের চাহিদা ছিল এক রডের সাইকেল। তাতে ‘হাফ প্যাডেল’-এ চালানোর সুবিধা ছিল।
আমরা যখন সাইকেলে হাফ প্যাডেলের দুনিয়ায় মশগুল, তখন দেখতাম বিয়ের কথা উঠলেই ছেলের বাড়ির লোকদের কাছে জানতে চাওয়া হতো, হিরো না ফনিক্স সাইকেল? কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই ফনিক্স সাইকেল জয়ী হতো। তারপর বিয়ের সপ্তাহখানেক আগে খয়েরি কাগজ আর পলিথিনে মুড়ে চায়না ফনিক্স আসত মেয়ের বাড়িতে। কালো রং, চকচকে রুপালি রঙের ক্যারিয়ার, কালো সিট। সামনে হ্যান্ডেলের নিচে সোনালি রঙের ছোট্ট ধাতব পাতে লাল রঙের লোগো ছিল। তাতে খোদাই করা ছিল এক অদ্ভুত জীব। অনেক পরে জেনেছি, সেটা ছিল ড্রাগন। সেই লোগো ছিল আমাদের কিশোর মনের ভীষণ আগ্রহের জায়গা। হাত বোলাতাম তাতে। মনে মনে ভাবতাম, দেখিস, একদিন আমারও একখানা ফনিক্স সাইকেল থাকবে, বাবা কিনে দেবে! কোনো দিন অবশ্য তার মালিক হওয়া হয়নি, বলাবাহুল্য।
খানিক বড় হলে, মানে যখন আমরা সিটে বসে সাইকেল চালানো শিখলাম, দুনিয়াটা গেল বদলে। বুঝতে পারলাম, আমাদের বাবারা ফনিক্স সাইকেল কিনে দিতে পারবেন না। আশা দূরে যেতে লাগল। ধীরে ধীরে সাইকেলের প্রচলন কমতে থাকল। যারা একসময় ফনিক্স সাইকেল কিনত, তারা মোটরসাইকেল কিনতে শুরু করল। গতি বাড়ল, ভালোবাসা থেকে গেল মনে। জীবনও বদলে গেল।

অনেক পরে, যখন আমাদের অবসর বিনোদনে যোগ হলো উইকিপিডিয়া, রাজ্যের তথ্য আসল আমাদের হাতে, জানলাম, ফনিক্স সাইকেলের নাম আসলে ফিনিক্স সাইকেল। ফিনিক্স পাখির নাম জানলেও ফিনিক্স সাইকেলকে কেন ফনিক্স নামে ডাকা হতো, তা এখনো বোধগম্য নয়। অবশ্য যে দেশে আনানাস হয়ে যায় আনারস আর হসপিটাল হয়ে যায় হাসপাতাল, সে দেশে ফিনিক্স বাইসাইকেলের নাম ফনিক্স হয়ে যাওয়াটা খুব উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা নয়। যা হোক, এই ফিনিক্স বা ফনিক্স বাইসাইকেল ছিল মেড ইন চায়না। চীনের সাংহাই ফিনিক্স বাইসাইকেল কোম্পানি এটি তৈরি করত। এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৮ সালে, সাংহাই থার্ড বাইসাইকেল ফ্যাক্টরি হিসেবে। এর পরে প্রতিষ্ঠাটি আরও বড় হয়ে ওঠে। তার ইতিহাস উইকিপিডিয়ার এই যুগে দুর্লভ নয়। ফিনিক্স ব্র্যান্ডের এই বাইসাইকেল ৫০টিরও বেশি দেশে সাইকেল রপ্তানি হয় বলে জানা যায়। তবে ফিনিক্স ট্রেডমার্কটি নাকি চীন দেশের প্রথম দশটি সুপরিচিত ট্রেডমার্কের মধ্যে একটি। আর এটি নিবন্ধিত হয়েছে ১০৪টি দেশে!
শোনা যায়, ফিনিক্স বাইসাইকেল চীনা জাতির বিশেষ গর্বের জিনিস। এক সময় বিদেশি নেতারা চীন সফরে গেলে তাঁদের উপহার হিসেবে একটি করে ফিনিক্স বাইসাইকেল দেওয়া হতো।
এই সাংহাই ফিনিক্স বাইসাইকেল কোম্পানির ফিনিক্স সাইকেলের জন্যই কি না, তা জানা না গেলেও, চীন নামের দেশটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাইসাইকেল ব্যবহারকারী মানুষের দেশ হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, চীনে একসময় বাইসাইকেল ছিল পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। ১৯৮০-৯০-এর দশকে চীনের শহরগুলোতে লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন বাইসাইকেল ব্যবহার করত। বেইজিংয়ের মতো শহরে সকালবেলা নামত সাইকেলের ঢল! সে জন্যই হয়তো চীন দেশেই শুরু হয়েছিল সাইকেল নিয়ে যাবতীয় ভবিষ্যৎমুখী কাজ।
সেই নব্বইয়ের দশকে বেইজিং শহরে সাইকেলের জ্যাম নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা তৈরি করা হয়। আর একুশ শতকের প্রথম দশকের মাঝামাঝিতে সে দেশেই তৈরি হয় সাইকেল শেয়ারিং বিপ্লব। ২০১৬-২০১৭ সালে মোবাইক বা ওফো-এর মতো প্রতিষ্ঠান তৈরি হয় সেখানে, সাইকেল শেয়ারিংয়ের ব্যবসা করার জন্য। ২০১৭ সালের মধ্যে চীনে ১৬০টিরও বেশি শেয়ার্ড বাইসাইকেল কোম্পানি চালু হয়েছিল। সেসব প্রতিষ্ঠানের মোট বাইসাইকেলের সংখ্যা ছিল ২ কোটিরও বেশি! ইউরোপের দেশগুলোতে এখন এ ব্যবসা বেশ জমজমাট বলে জানা যায়।

বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা থেকেই চীনে শুরু হয়েছিল ইলেকট্রিক বাইকের ধারণা। খেয়াল করলে দেখবেন, সেগুলো সাইকেলের চেয়ে খানিক বেশি গতির। কিন্তু মোটরবাইকের মতো নয়। চায়না অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের একটি গবেষণা অনুসারে, ২০২৩ সালে চীনে ই-বাইকের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৫ কোটি!
এবার বাইসাইকেল নিয়ে চীনদেশের কিছু চিত্তাকর্ষক তথ্য দেওয়া যাক।
চীনের জিয়াংসু প্রদেশের কুনশান শহরে আছে একটি বিশালাকার বাইসাইকেলের ভাস্কর্য। স্থানীয় মানুষ এ ভাস্কর্যে এসে সাইকেলশিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। কারণ, ষাটের দশক থেকে চীনের জাতীয় জীবনে বাইসাইকেল এক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে ছিল। সে সময় দেশটিতে তৈরি হয়েছে বাইসাইকেল সংস্কৃতি। সে সংস্কৃতি শুধু চীনকেই নয়, প্রভাবিত করেছিল প্রায় পুরো বিশ্বকে।
বেইজিং থেকে গুয়াংঝো, চীনের বাইসাইকেল সংস্কৃতির রূপান্তরের গল্পটা বেশ চিত্তাকর্ষক। চীনের রাস্তায় বাইসাইকেলের যে অগণিত চাকা ঘুরছে, তা কেবল একটি বাহন নয়, বরং দেশটির সামাজিক-অর্থনৈতিক বিবর্তনের জীবন্ত দলিল। একসময়ের ‘সাইকেল রাজ্য’ থেকে আজকের ‘ই-বাইক সাম্রাজ্যে’ রূপান্তরের এই গল্পে মিশে আছে নস্টালজিয়া আর উদ্ভাবনের মেলবন্ধন।
১৯৯৫ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুসারে, শুধু বেইজিং শহরে ছিল ৮৩ লাখেরও বেশি রেজিস্টার্ড বাইসাইকেল। সকাল-সন্ধ্যা রাস্তায় আক্ষরিক অর্থে নামত বাইসাইকেলের স্রোত! সেই সময় ফোরএভার ও ফ্লাইং পিজিয়ন নামের আরও দুটি ব্র্যান্ডের বাইসাইকেল ছিল সামাজিক মর্যাদার প্রতীক। অনেক পরিবারে বিয়ের সময় সে দুই ব্র্যান্ডের বাইসাইকেল অপরিহার্য যৌতুক হিসেবে বিবেচিত হতো। কী, আমাদের দেশের যৌতুকের কথা মনে পড়ে? একসময় বিয়েতে দেওয়া হতো বাইসাইকেল ও টেলিভিশন! একই গল্প ছিল চীনেও।
মজার বিষয় হলো, ১৯৯০-এর দশকে বেইজিং ও শেনইয়াং-এর মতো শহরগুলোতে শুধু গাড়ি জ্যামই নয়, নিত্যনৈমিত্তিকভাবে হতো সাইকেল জ্যাম। শহরগুলোতে নির্মিত হয়েছিল বিশাল সাইকেল লেন নেটওয়ার্ক, কিছু শহরে বাইসাইকেলের জন্য আলাদা ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছিল। সেগুলো অবশ্য কমতে শুরু করে ২০০০ সালের পর, নগরায়ণ ও মোটরগাড়ির বিস্তারের কারণে।
চীনের বাইসাইকেল সংস্কৃতির এই বিবর্তন শুধু পরিবহন পদ্ধতির পরিবর্তন নয়, বরং এটি দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের জীবন্ত প্রতিফলন। এটি শুধু যে চীনকে প্রভাবিত করেছিল তা নয়। প্রভাবিত করেছিল বাংলাদেশের মতো বিশ্বের আরও বহু দেশকে, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে।
তথ্যসূত্র
উইকিপিডিয়া
‘বাৎসরিক বাইসাইকেল পরিসংখ্যান রিপোর্ট’ (১৯৯৫), চায়না বাইসাইকেল অ্যাসোসিয়েশন
‘দ্য সোশ্যাল হিস্টরি অব বাইসাইকেল ইন চায়না’ (২০১৮), ওয়েই ঝাং, পিকিং ইউনিভার্সিটি
‘বাইসাইকেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইন আরবান চায়না’, পিপলস ডেইলি (১৯৯৮)

কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তার হিসাব মেলাতে গিয়ে ছুটির দিনটাই বরবাদ হয়ে যায় অনেকের। সে জন্য কোথায় কী আছে জেনে আগেই পরিকল্পনা করে ঘুরে আসতে সুবিধা হয়। আজ তাই ঢাকার ১০ জাদুঘরের খোঁজ-খবর দেওয়া হলো।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আজ আপনার রাগের তেজ এতটা বাড়বে যে আপনি ভুল করে নিজের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটাই ডিলিট করে দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে পড়লে মনে হবে যেন পৃথিবীর সব গাড়ি একজোট হয়ে শুধু আপনার কাজেই বাগড়া দিতে এসেছে। আবেগের বশে আজ ভুলেও অনলাইনে কিছু অর্ডার করবেন না, কারণ আপনি এমন কিছু কিনে ফেলবেন, যা আসলে
২ ঘণ্টা আগে
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১ দিন আগে
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ আপনার রাগের তেজ এতটা বাড়বে যে আপনি ভুল করে নিজের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটাই ডিলিট করে দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে পড়লে মনে হবে যেন পৃথিবীর সব গাড়ি একজোট হয়ে শুধু আপনার কাজেই বাগড়া দিতে এসেছে। আবেগের বশে আজ ভুলেও অনলাইনে কিছু অর্ডার করবেন না। কারণ, আপনি এমন কিছু কিনে ফেলবেন, যা আসলে আপনার দরকার নেই। প্রেমের ক্ষেত্রেও ‘আমিই ঠিক’ এই মনোভাব ত্যাগ করুন, নইলে আজকের সন্ধ্যাটা সাইলেন্ট ট্রিটমেন্টে কাটবে। আজ আপনার রাগ নয়, আপনার মাউস এবং গাড়ির হর্ন কন্ট্রোল করুন।
বৃষ
আজ সারা দিন আপনার ডায়েট প্ল্যান আপনাকে ৫০ বার ফোন করবে, কিন্তু আপনি প্রতিবারই ফোন কেটে দিয়ে ফ্রিজের দিকে দৌড়াবেন। কাজকর্মে গতি খুবই কম থাকবে। ছুটির দিনেও আজ অফিস থাকলে আপনার বস মনে করবেন আপনি বুঝি ধ্যানে বসেছেন, কিন্তু আসলে আপনি ভাবছেন লাঞ্চে কী খাবেন। বিকেলে টাকাপয়সার একটা ভালো সুযোগ আসতে পারে, তবে সেটা এত ধীরে আসবে যে আপনি সেটাকে উপেক্ষা করে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। শুভ রং: আলুর চিপসের প্যাকেটের রং! আর হ্যাঁ, আজ কারও ধার শোধ করবেন না। কারণ, টাকাটা পকেটে কিছুক্ষণ রেখে নির্ভার অনুভব করাও জরুরি!
মিথুন
আপনার মস্তিষ্ক আজ দুটো চরম বুদ্ধি দেবে: এক, একটি পডকাস্ট শুরু করা; আর দুই, পুরো দিনটি ঘুমিয়ে কাটানো। দুঃখের খবর হলো, দুটোই আপনি করতে পারবেন না। সারা দিন শুধু ‘কী করব, কী করব না’ করে কাটিয়ে দেবেন। কোনো একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনি কমপক্ষে তিনজন বন্ধুকে ফোন করে বিভ্রান্ত হবেন এবং শেষে গিয়ে প্রথম যে আইডিয়া এসেছিল, সেটাই করবেন। সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমার সম্ভাবনা আছে, কিন্তু কোন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতেই রাত কাবার হয়ে যাবে।
কর্কট
আজ আপনার ওভার থিংকিং ক্ষমতা তুঙ্গে! আপনি এক ঘণ্টা ধরে চিন্তা করবেন যে আপনার ঘরের মানিপ্ল্যান্টটা কেন বিষণ্ন দেখাচ্ছে, কিংবা পাঁচ বছর আগে বলা একটা কথার আসল মানে কী ছিল। কর্মক্ষেত্রে কেউ একটু কড়া কথা বললেই আপনি মনে করবেন, পৃথিবীর সবথেকে খারাপ লোক আপনিই! আবেগের এমন বাড়াবাড়ি হবে যে, আপনি হয়তো দুপুরের খাবারে সামান্য লবণ কম থাকার কারণে কেঁদেও ফেলতে পারেন। সমাধান একটাই: বালিশ জড়িয়ে ধরুন অথবা পছন্দের খাবার খান। পৃথিবীর সব দুঃখ আপনার একার নয়, আর রান্নাতেও সামান্য ভুল হতেই পারে।
সিংহ
আজকে স্পটলাইট আপনার দিকেই। যদি কেউ আপনার নতুন পোশাকটা লক্ষ না করে, তাহলে নাটকীয় ভঙ্গিতে একবার হোঁচট খান বা টেবিলের ওপর উঠে নাচতে শুরু করুন। নিশ্চিত থাকুন, মনোযোগ আপনার দিকে আসবেই! কর্মক্ষেত্রে আপনার ধারণাগুলো খুবই ভালো, কিন্তু সেগুলোকে এমন ভাবে পরিবেশন করবেন যেন আপনি কোনো হলিউড ব্লকবাস্টারের স্ক্রিপ্ট বলছেন। প্রেমের ক্ষেত্রেও আজ সামান্য সমস্যাকে ‘টাইটানিক ডুবছে’ এমন রূপ দেবেন। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত আলো মাঝে মাঝে চোখ ধাঁধিয়ে দেয়!
কন্যা
আপনি আজ রাস্তায় একটি টাইপো খুঁজে পাবেন এবং স্থানীয় পৌরসভার সঙ্গে সারা দিন সেটার বানান সংশোধন নিয়ে ঝগড়া করবেন। শান্ত হোন, মহাবিশ্বও আপনার ওয়ারড্রবের মতোই অগোছালো। আজকের দিনে আপনার স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত উদ্বেগ একটু বাড়বে। সামান্য কাশি হলেই গুগল করে ক্যানসারর বা দুর্লভ রোগের লক্ষণ খুঁজবেন। আর্থিক দিক দিয়ে আপনি খুব হিসাবি, কিন্তু সেই হিসাবের খাতা মেলাতে গিয়ে এত মানসিক চাপ হবে যে, এক প্যাকেট রসগোল্লা কিনে সেই স্ট্রেস কমাতে হবে।
তুলা
চা না কফি, এ নিয়েই ৪৫ মিনিট ধরে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবেন। এই তীব্র দ্বিধার ফলস্বরূপ যে তৃষ্ণা পাবে, সেটাই হবে আপনার আজকের দিনের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা। কেউ ঝগড়া করলে মধ্যস্থতা করতে যাবেন, কিন্তু এমন নিরপেক্ষ হতে চাইবেন যে দুই পক্ষই আপনাকে ভুল বুঝবে। তাই অন্যের সমস্যা সমাধান নয়, বরং নিজের জীবনে সৌন্দর্য খুঁজুন। ধরুন, একটা নতুন পর্দা কিনবেন। ব্যস, নীল না সবুজ, এই ভাবতে ভাবতেই আপনার দিন শেষ! ভারসাম্য খুঁজুন, পানীয় বা রং নয়!
বৃশ্চিক
কেউ আপনার নামে আজ বাজে কথা বলার চেষ্টা করবে। কিন্তু তারা জানে না, আপনার প্রতিশোধ নেওয়ার দরকার নেই। গ্রহ-নক্ষত্ররাই সেই কাজটা আপনার হয়ে গুছিয়ে দেবে। আপনি সারা দিন এমন এক গভীর চাহনি নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন যে সবাই আপনাকে দেখে ভাববে, আপনি হয় কোনো গুপ্তচর বা কোনো গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। বসের ওপর রাগ হলে মুখে কিছু বলবেন না, শুধু ডায়েরিতে তার নামটা লিখে লাল কালিতে ক্রস চিহ্ন দিয়ে রাখুন। রহস্যময় থাকুন, চুপ থাকুন, আর মজা দেখুন। প্রেমিকার প্রশ্নের উত্তর দেবেন একটি রহস্যময় হাসি দিয়ে, তাহলেই কেল্লা ফতে!
ধনু
আজ আপনার মধ্যে উগান্ডাতে ফ্লাইট বুক করার এক নিয়ন্ত্রণহীন তাগিদ জন্মাবে! মানিব্যাগ হাতে নিয়ে একবার আকাশের দিকে তাকান—সে আপনাকে থামতে বলছে। আজ আপনার মন থাকবে চরম বোহেমিয়ান। হয় আপনি বিশ্বের সবথেকে অনুপ্রেরণামূলক দার্শনিক হয়ে উঠবেন, নয়তো গভীর রাতে পাড়ার মোড়ে ফুচকা খেতে যাবেন। সাবধান: বসের কাছে একদম সত্যি কথা বলতে যাবেন না। আপনার ‘সৎ’ মন্তব্য আজ বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
মকর
আরে বাবা, কাজপাগল মানুষ! একটা দিন বিশ্রাম নিন। আপনার বস আপনাকে আজ এই ছুটির দিনেও ই-মেইল করবে। আপনি রোববার উত্তর দিন। আজকের দিনটির একমাত্র চ্যালেঞ্জ—কাজ না করে বসে থাকা। যদি আপনি আজ কোনো পার্টির আমন্ত্রণ পান, আপনি সেখানেও নেটওয়ার্কিংয়ের চেষ্টা করবেন। আপনার মস্তিষ্ক ছুটি চায় না, সে শুধু প্রমোশনের কথা ভাবে। প্রেমিকার দেওয়া উপহারের দাম হিসাব করা বন্ধ করুন। মনে রাখবেন, শুধু টাকা দিয়ে নয়, জীবনটা মাঝেমধ্যে একটু ‘ফালতু’ কাজ করেও উপভোগ করা যায়।
কুম্ভ
আপনার আজকের বিপ্লবী আইডিয়া হলো, পুরোনো মোজাগুলোকে থালা ধোয়ার কাজে লাগানো! এই ধরনের উদ্ভাবন আপাতত স্থগিত রাখুন। দয়া করে পরিষ্কার করার জন্য প্রচলিত জিনিস ব্যবহার করুন। আজ আপনার বন্ধুরা আপনাকে ‘এলিয়েন’ বলে ডাকলে অবাক হবেন না। কারণ, আপনার আইডিয়াগুলো আজকের দিনের তুলনায় ১০০ বছর এগিয়ে থাকবে! কারও সঙ্গে তর্ক হলে যুক্তি দিয়ে নয়, বরং আপনার উদ্ভট তত্ত্ব দিয়ে তাকে চুপ করিয়ে দেবেন। এটাই আপনার স্পেশালিটি!
মীন
আজ আপনি স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তব গুলিয়ে ফেলবেন। স্বপ্নে পাওয়া জাদুর আলু-পটোল দিয়ে মুদি দোকানের বিল মেটানোর চেষ্টা করবেন না। দিনের বেলায় দিবাস্বপ্ন দেখার জন্য আপনি নোবেল পুরস্কার পেলে পেতেও পারেন! আপনার মন আজ কল্পনার জগতে এমনভাবে ডুবে থাকবে যে আপনি গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের সময়ও হয়তো রংধনু দেখতে পাবেন। জরুরি ফোনকলের উত্তর দিন, কিন্তু ‘এই মুহূর্তে উড়ন্ত গালিচায় করে যাচ্ছিলাম’—দয়া করে এমন উদ্ভট কথা বলবেন না। বাস্তব জগতে ফিরে আসুন—আজকে কিছু বিল মেটাতে হবে।

মেষ
আজ আপনার রাগের তেজ এতটা বাড়বে যে আপনি ভুল করে নিজের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটাই ডিলিট করে দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে পড়লে মনে হবে যেন পৃথিবীর সব গাড়ি একজোট হয়ে শুধু আপনার কাজেই বাগড়া দিতে এসেছে। আবেগের বশে আজ ভুলেও অনলাইনে কিছু অর্ডার করবেন না। কারণ, আপনি এমন কিছু কিনে ফেলবেন, যা আসলে আপনার দরকার নেই। প্রেমের ক্ষেত্রেও ‘আমিই ঠিক’ এই মনোভাব ত্যাগ করুন, নইলে আজকের সন্ধ্যাটা সাইলেন্ট ট্রিটমেন্টে কাটবে। আজ আপনার রাগ নয়, আপনার মাউস এবং গাড়ির হর্ন কন্ট্রোল করুন।
বৃষ
আজ সারা দিন আপনার ডায়েট প্ল্যান আপনাকে ৫০ বার ফোন করবে, কিন্তু আপনি প্রতিবারই ফোন কেটে দিয়ে ফ্রিজের দিকে দৌড়াবেন। কাজকর্মে গতি খুবই কম থাকবে। ছুটির দিনেও আজ অফিস থাকলে আপনার বস মনে করবেন আপনি বুঝি ধ্যানে বসেছেন, কিন্তু আসলে আপনি ভাবছেন লাঞ্চে কী খাবেন। বিকেলে টাকাপয়সার একটা ভালো সুযোগ আসতে পারে, তবে সেটা এত ধীরে আসবে যে আপনি সেটাকে উপেক্ষা করে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। শুভ রং: আলুর চিপসের প্যাকেটের রং! আর হ্যাঁ, আজ কারও ধার শোধ করবেন না। কারণ, টাকাটা পকেটে কিছুক্ষণ রেখে নির্ভার অনুভব করাও জরুরি!
মিথুন
আপনার মস্তিষ্ক আজ দুটো চরম বুদ্ধি দেবে: এক, একটি পডকাস্ট শুরু করা; আর দুই, পুরো দিনটি ঘুমিয়ে কাটানো। দুঃখের খবর হলো, দুটোই আপনি করতে পারবেন না। সারা দিন শুধু ‘কী করব, কী করব না’ করে কাটিয়ে দেবেন। কোনো একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনি কমপক্ষে তিনজন বন্ধুকে ফোন করে বিভ্রান্ত হবেন এবং শেষে গিয়ে প্রথম যে আইডিয়া এসেছিল, সেটাই করবেন। সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমার সম্ভাবনা আছে, কিন্তু কোন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতেই রাত কাবার হয়ে যাবে।
কর্কট
আজ আপনার ওভার থিংকিং ক্ষমতা তুঙ্গে! আপনি এক ঘণ্টা ধরে চিন্তা করবেন যে আপনার ঘরের মানিপ্ল্যান্টটা কেন বিষণ্ন দেখাচ্ছে, কিংবা পাঁচ বছর আগে বলা একটা কথার আসল মানে কী ছিল। কর্মক্ষেত্রে কেউ একটু কড়া কথা বললেই আপনি মনে করবেন, পৃথিবীর সবথেকে খারাপ লোক আপনিই! আবেগের এমন বাড়াবাড়ি হবে যে, আপনি হয়তো দুপুরের খাবারে সামান্য লবণ কম থাকার কারণে কেঁদেও ফেলতে পারেন। সমাধান একটাই: বালিশ জড়িয়ে ধরুন অথবা পছন্দের খাবার খান। পৃথিবীর সব দুঃখ আপনার একার নয়, আর রান্নাতেও সামান্য ভুল হতেই পারে।
সিংহ
আজকে স্পটলাইট আপনার দিকেই। যদি কেউ আপনার নতুন পোশাকটা লক্ষ না করে, তাহলে নাটকীয় ভঙ্গিতে একবার হোঁচট খান বা টেবিলের ওপর উঠে নাচতে শুরু করুন। নিশ্চিত থাকুন, মনোযোগ আপনার দিকে আসবেই! কর্মক্ষেত্রে আপনার ধারণাগুলো খুবই ভালো, কিন্তু সেগুলোকে এমন ভাবে পরিবেশন করবেন যেন আপনি কোনো হলিউড ব্লকবাস্টারের স্ক্রিপ্ট বলছেন। প্রেমের ক্ষেত্রেও আজ সামান্য সমস্যাকে ‘টাইটানিক ডুবছে’ এমন রূপ দেবেন। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত আলো মাঝে মাঝে চোখ ধাঁধিয়ে দেয়!
কন্যা
আপনি আজ রাস্তায় একটি টাইপো খুঁজে পাবেন এবং স্থানীয় পৌরসভার সঙ্গে সারা দিন সেটার বানান সংশোধন নিয়ে ঝগড়া করবেন। শান্ত হোন, মহাবিশ্বও আপনার ওয়ারড্রবের মতোই অগোছালো। আজকের দিনে আপনার স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত উদ্বেগ একটু বাড়বে। সামান্য কাশি হলেই গুগল করে ক্যানসারর বা দুর্লভ রোগের লক্ষণ খুঁজবেন। আর্থিক দিক দিয়ে আপনি খুব হিসাবি, কিন্তু সেই হিসাবের খাতা মেলাতে গিয়ে এত মানসিক চাপ হবে যে, এক প্যাকেট রসগোল্লা কিনে সেই স্ট্রেস কমাতে হবে।
তুলা
চা না কফি, এ নিয়েই ৪৫ মিনিট ধরে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবেন। এই তীব্র দ্বিধার ফলস্বরূপ যে তৃষ্ণা পাবে, সেটাই হবে আপনার আজকের দিনের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা। কেউ ঝগড়া করলে মধ্যস্থতা করতে যাবেন, কিন্তু এমন নিরপেক্ষ হতে চাইবেন যে দুই পক্ষই আপনাকে ভুল বুঝবে। তাই অন্যের সমস্যা সমাধান নয়, বরং নিজের জীবনে সৌন্দর্য খুঁজুন। ধরুন, একটা নতুন পর্দা কিনবেন। ব্যস, নীল না সবুজ, এই ভাবতে ভাবতেই আপনার দিন শেষ! ভারসাম্য খুঁজুন, পানীয় বা রং নয়!
বৃশ্চিক
কেউ আপনার নামে আজ বাজে কথা বলার চেষ্টা করবে। কিন্তু তারা জানে না, আপনার প্রতিশোধ নেওয়ার দরকার নেই। গ্রহ-নক্ষত্ররাই সেই কাজটা আপনার হয়ে গুছিয়ে দেবে। আপনি সারা দিন এমন এক গভীর চাহনি নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন যে সবাই আপনাকে দেখে ভাববে, আপনি হয় কোনো গুপ্তচর বা কোনো গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। বসের ওপর রাগ হলে মুখে কিছু বলবেন না, শুধু ডায়েরিতে তার নামটা লিখে লাল কালিতে ক্রস চিহ্ন দিয়ে রাখুন। রহস্যময় থাকুন, চুপ থাকুন, আর মজা দেখুন। প্রেমিকার প্রশ্নের উত্তর দেবেন একটি রহস্যময় হাসি দিয়ে, তাহলেই কেল্লা ফতে!
ধনু
আজ আপনার মধ্যে উগান্ডাতে ফ্লাইট বুক করার এক নিয়ন্ত্রণহীন তাগিদ জন্মাবে! মানিব্যাগ হাতে নিয়ে একবার আকাশের দিকে তাকান—সে আপনাকে থামতে বলছে। আজ আপনার মন থাকবে চরম বোহেমিয়ান। হয় আপনি বিশ্বের সবথেকে অনুপ্রেরণামূলক দার্শনিক হয়ে উঠবেন, নয়তো গভীর রাতে পাড়ার মোড়ে ফুচকা খেতে যাবেন। সাবধান: বসের কাছে একদম সত্যি কথা বলতে যাবেন না। আপনার ‘সৎ’ মন্তব্য আজ বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
মকর
আরে বাবা, কাজপাগল মানুষ! একটা দিন বিশ্রাম নিন। আপনার বস আপনাকে আজ এই ছুটির দিনেও ই-মেইল করবে। আপনি রোববার উত্তর দিন। আজকের দিনটির একমাত্র চ্যালেঞ্জ—কাজ না করে বসে থাকা। যদি আপনি আজ কোনো পার্টির আমন্ত্রণ পান, আপনি সেখানেও নেটওয়ার্কিংয়ের চেষ্টা করবেন। আপনার মস্তিষ্ক ছুটি চায় না, সে শুধু প্রমোশনের কথা ভাবে। প্রেমিকার দেওয়া উপহারের দাম হিসাব করা বন্ধ করুন। মনে রাখবেন, শুধু টাকা দিয়ে নয়, জীবনটা মাঝেমধ্যে একটু ‘ফালতু’ কাজ করেও উপভোগ করা যায়।
কুম্ভ
আপনার আজকের বিপ্লবী আইডিয়া হলো, পুরোনো মোজাগুলোকে থালা ধোয়ার কাজে লাগানো! এই ধরনের উদ্ভাবন আপাতত স্থগিত রাখুন। দয়া করে পরিষ্কার করার জন্য প্রচলিত জিনিস ব্যবহার করুন। আজ আপনার বন্ধুরা আপনাকে ‘এলিয়েন’ বলে ডাকলে অবাক হবেন না। কারণ, আপনার আইডিয়াগুলো আজকের দিনের তুলনায় ১০০ বছর এগিয়ে থাকবে! কারও সঙ্গে তর্ক হলে যুক্তি দিয়ে নয়, বরং আপনার উদ্ভট তত্ত্ব দিয়ে তাকে চুপ করিয়ে দেবেন। এটাই আপনার স্পেশালিটি!
মীন
আজ আপনি স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তব গুলিয়ে ফেলবেন। স্বপ্নে পাওয়া জাদুর আলু-পটোল দিয়ে মুদি দোকানের বিল মেটানোর চেষ্টা করবেন না। দিনের বেলায় দিবাস্বপ্ন দেখার জন্য আপনি নোবেল পুরস্কার পেলে পেতেও পারেন! আপনার মন আজ কল্পনার জগতে এমনভাবে ডুবে থাকবে যে আপনি গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের সময়ও হয়তো রংধনু দেখতে পাবেন। জরুরি ফোনকলের উত্তর দিন, কিন্তু ‘এই মুহূর্তে উড়ন্ত গালিচায় করে যাচ্ছিলাম’—দয়া করে এমন উদ্ভট কথা বলবেন না। বাস্তব জগতে ফিরে আসুন—আজকে কিছু বিল মেটাতে হবে।

কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তার হিসাব মেলাতে গিয়ে ছুটির দিনটাই বরবাদ হয়ে যায় অনেকের। সে জন্য কোথায় কী আছে জেনে আগেই পরিকল্পনা করে ঘুরে আসতে সুবিধা হয়। আজ তাই ঢাকার ১০ জাদুঘরের খোঁজ-খবর দেওয়া হলো।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছি, তাদের কাছে ফনিক্স সাইকেল এক নস্টালজিয়ার নাম। তখন ভারতের হিরো সাইকেলও ছিল বাজারে। তার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন হার্টথ্রব নায়ক সঞ্জয় দত্ত, টেলিভিশনে দেখানো হতো। তারও ক্রেজ ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু ফনিক্স সাইকেল? কোনো রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই তখন রাজা। তো, সেই ফনিক্স সাইকেল ছিল
৩৩ মিনিট আগে
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১ দিন আগে
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১ দিন আগেমুহাম্মদ জাভেদ হাকিম

তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
বান্দরবানের গহিনে থাকা তুক-অ-দামতুয়া ইদানীং সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় উঠে এসেছে। সে কারণেই একদিন বন্ধুরা মিলে হাঁড়ি-পাতিল আর বোঁচকা নিয়ে রাতের গাড়িতে উঠে খুব ভোরে গিয়ে নামলাম চকরিয়া। তারপর চান্দের গাড়িতে আলীকদম উপজেলার সতেরো কিলো নামক জায়গায়। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে নাজেম নামের চালকটি হেলিকপ্টারের গতিতেই নিয়ে গেলেন আমাদের! আড়াই ঘণ্টার পথ চলতে কখনো কখনো মনে হয়েছে, এই বুঝি চান্দের গাড়ি উড়াল দিল আকাশে।
দশ কিলো থ্যিঙ্কু পাড়া এসে কষে ব্রেক করে দাঁড়াল আমাদের গাড়ি। আর্মি চেকপোস্ট। নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করে অনুমতি নেওয়া হলো। তারপর আবার ছুট। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সতেরো কিলো। গাইড আগেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে। পরিচয় পর্ব শেষে তাঁর পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলাম আমরা। যাচ্ছি আদু পাড়ার দিকে। পাড়ায় গিয়ে তাঁর ঘরে বাড়তি মালপত্র রেখে, পাহাড়ের পরম বন্ধু নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ নিয়ে সবাই ছুটলাম দামতুয়ার দিকে।
কথা সেই একটিই, দেখতে হলে হাঁটতে হবে। রীতিমতো মন ও দেহের সঙ্গে লড়াই করে হাঁটতে হচ্ছে। মাথার ওপর প্রখর রোদ। চোখের সামনে শুধুই উঁচু উঁচু পাহাড়। হাঁটছি, উঠছি, নামছি! মাঝেমধ্যে ঝিরির পানি চোখে-মুখে ছিটিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছি।
দূর পাহাড়ের নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য মনের শক্তি বাড়িয়েছিল বহুগুণ। প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেকিং করার পর কানে ভেসে এল ঝরনার পানির শব্দ! কিন্তু চোখের সামনে বাঁশবন আর নানান গাছে ঘেরা খাড়া পিচ্ছিল পথ। নামতে হবে নিচের দিকে। একটু এদিক-সেদিক হলেই সুচালো বাঁশ দেহের কোথায় গিয়ে গেঁথে যাবে, কেউ জানে না। তবু পেতে হবে দামতুয়ার কোমল পরশ।
বহু কষ্টে নিচে নেমে চক্ষু একেবারে ছানাবড়া! বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম বিশালা ঝরনার দিকে, একেবারে হাঁ করে। দুপাশ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। একেবারে বুনো পরিবেশে দামতুয়া চোখের সামনে! নির্বাক হয়ে যাওয়ার আগে এর উচ্চতা মাপি মনে মনে।
নব্বই থেকে এক শ ফুট উঁচু না হয়েই যায় না দামতুয়া।
বর্ষা শেষে শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত।
তুক-অ-দামতুয়ার উচ্ছলতা এখনো কমেনি। গাইড জানালেন, সারা বছর এ ঝরনায় পানির প্রবাহ থাকে। বেশ উচ্চতা আর অনেকখানি জায়গাজুড়ে প্রচণ্ড বেগে পানি নেমে আসে এখানে।
এই কারণে ঝরনার সামনে বিশাল জলাশয় তৈরি হয়েছে। সেই প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে সাঁতার না কাটলে চলে! বান্দরবানের অন্যান্য ঝরনার চেয়ে দামতুয়ার ভৌগোলিক আকৃতি ভিন্ন রকম। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। মুরং ভাষা থেকে আসা ‘তুক-অ-দামতুয়া’ শব্দের অর্থটাও বেশ চমৎকার। তুক অর্থ ব্যাঙ, অ অর্থ ঝিরি আর দামতুয়া মানে খাড়া। অর্থাৎ এই খাড়া ঝিরির উজান ঠেলে ব্যাঙ বা মাছ ওপরের দিকে উঠতে পারে না বলে এই ঝরনার এমন নাম। আমাদের গাইড ছিলের মুরং সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনিই জানালেন এসব।
ঝরনার উৎস দেখার পালা এবার। চরাই-উতরাই পেরিয়ে দেখা গেল এক সবুজে ঘেরা ঝিরি। বড় বড় কিছু পাথর পেরিয়ে একেবারে তার কাছে চলে গেলাম। বেশ চমৎকার একটা জায়গা। এই ঝিরির পানি দামতুয়া হয়ে ঝরে পড়ে নিচের প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে।
এই ঝিরির নাম ব্যাঙ ঝিরি। সাধারণত ঝিরির নাম অনুসারে ঝরনাগুলোর নামকরণ হয়।
ব্যাঙ ঝিরির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সময়জ্ঞান প্রায় ভুলতে বসেছিলাম সবাই। গাইডের ডাকে আবার শুরু হলো ট্রেকিং। এই পাহাড়-জঙ্গলের গহিনে গাইডই তখন ক্যাপ্টেন। তাঁর নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। আমরা আদুপাড়ার পথ ধরি। গাইড জানালেন, আবারও প্রায় নয় মাইল চড়াই-উতরাই পেরোতে হবে!
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমনিতেই পাহাড়ে সন্ধ্যা আসে ঝুপ করে। দুপুরে শুকনো দুই-চার পিস বিস্কুট ছাড়া তেমন কিছুই পড়েনি পেটে। তাই খিচুড়ির এন্তেজাম হবে রাতে। হাঁটছি ধীরে ধীরে, একেবারে উদ্দেশ্যপূর্ণ কারণে। আজ পূর্ণিমা। পাহাড়ের নির্জনতায় ভরা জোছনার আলো সঙ্গী করে হাঁটব। পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আমি মনে মনে কিছুটা উদ্দীপিত। এ রকম সুযোগ সব সময় মেলে না।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। আকাশছোঁয়া পাহাড় টপকে গোলাকার চাঁদ উঁকি দিল আকাশে। নিঝুম অন্ধকার পাহাড়ের চারপাশ আলোকিত হয়ে পড়ল। গাছের পাতাগুলো সবুজের মাঝে সোনালি বর্ণ ধারণ করল। অসাধারণ এক অনুভূতি। সবার মনে বিস্ময়ের দোলা। এখন আর কারও ফেরার তাড়া নেই। তবু ফিরতে হচ্ছে এই অলৌকিক রাতে।
যাবেন যেভাবে
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবানের আলীকদমে বাস যায়। সেখান থেকে মোটরবাইক কিংবা চান্দের গাড়িতে যেতে হবে সতেরো কিলো এলাকায়। সেখানকার চা-দোকানিদের সহায়তা নিয়ে পেয়ে যাবেন গাইড। তাঁকে ছাড়া পাহাড়ে যাওয়া ঠিক হবে না।

তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
বান্দরবানের গহিনে থাকা তুক-অ-দামতুয়া ইদানীং সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ তালিকায় উঠে এসেছে। সে কারণেই একদিন বন্ধুরা মিলে হাঁড়ি-পাতিল আর বোঁচকা নিয়ে রাতের গাড়িতে উঠে খুব ভোরে গিয়ে নামলাম চকরিয়া। তারপর চান্দের গাড়িতে আলীকদম উপজেলার সতেরো কিলো নামক জায়গায়। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে নাজেম নামের চালকটি হেলিকপ্টারের গতিতেই নিয়ে গেলেন আমাদের! আড়াই ঘণ্টার পথ চলতে কখনো কখনো মনে হয়েছে, এই বুঝি চান্দের গাড়ি উড়াল দিল আকাশে।
দশ কিলো থ্যিঙ্কু পাড়া এসে কষে ব্রেক করে দাঁড়াল আমাদের গাড়ি। আর্মি চেকপোস্ট। নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করে অনুমতি নেওয়া হলো। তারপর আবার ছুট। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম সতেরো কিলো। গাইড আগেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে। পরিচয় পর্ব শেষে তাঁর পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করলাম আমরা। যাচ্ছি আদু পাড়ার দিকে। পাড়ায় গিয়ে তাঁর ঘরে বাড়তি মালপত্র রেখে, পাহাড়ের পরম বন্ধু নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের বাঁশ নিয়ে সবাই ছুটলাম দামতুয়ার দিকে।
কথা সেই একটিই, দেখতে হলে হাঁটতে হবে। রীতিমতো মন ও দেহের সঙ্গে লড়াই করে হাঁটতে হচ্ছে। মাথার ওপর প্রখর রোদ। চোখের সামনে শুধুই উঁচু উঁচু পাহাড়। হাঁটছি, উঠছি, নামছি! মাঝেমধ্যে ঝিরির পানি চোখে-মুখে ছিটিয়ে জিরিয়ে নিচ্ছি।
দূর পাহাড়ের নয়ন জুড়ানো সৌন্দর্য মনের শক্তি বাড়িয়েছিল বহুগুণ। প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেকিং করার পর কানে ভেসে এল ঝরনার পানির শব্দ! কিন্তু চোখের সামনে বাঁশবন আর নানান গাছে ঘেরা খাড়া পিচ্ছিল পথ। নামতে হবে নিচের দিকে। একটু এদিক-সেদিক হলেই সুচালো বাঁশ দেহের কোথায় গিয়ে গেঁথে যাবে, কেউ জানে না। তবু পেতে হবে দামতুয়ার কোমল পরশ।
বহু কষ্টে নিচে নেমে চক্ষু একেবারে ছানাবড়া! বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম বিশালা ঝরনার দিকে, একেবারে হাঁ করে। দুপাশ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। একেবারে বুনো পরিবেশে দামতুয়া চোখের সামনে! নির্বাক হয়ে যাওয়ার আগে এর উচ্চতা মাপি মনে মনে।
নব্বই থেকে এক শ ফুট উঁচু না হয়েই যায় না দামতুয়া।
বর্ষা শেষে শরৎ পেরিয়ে হেমন্ত।
তুক-অ-দামতুয়ার উচ্ছলতা এখনো কমেনি। গাইড জানালেন, সারা বছর এ ঝরনায় পানির প্রবাহ থাকে। বেশ উচ্চতা আর অনেকখানি জায়গাজুড়ে প্রচণ্ড বেগে পানি নেমে আসে এখানে।
এই কারণে ঝরনার সামনে বিশাল জলাশয় তৈরি হয়েছে। সেই প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে সাঁতার না কাটলে চলে! বান্দরবানের অন্যান্য ঝরনার চেয়ে দামতুয়ার ভৌগোলিক আকৃতি ভিন্ন রকম। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। মুরং ভাষা থেকে আসা ‘তুক-অ-দামতুয়া’ শব্দের অর্থটাও বেশ চমৎকার। তুক অর্থ ব্যাঙ, অ অর্থ ঝিরি আর দামতুয়া মানে খাড়া। অর্থাৎ এই খাড়া ঝিরির উজান ঠেলে ব্যাঙ বা মাছ ওপরের দিকে উঠতে পারে না বলে এই ঝরনার এমন নাম। আমাদের গাইড ছিলের মুরং সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনিই জানালেন এসব।
ঝরনার উৎস দেখার পালা এবার। চরাই-উতরাই পেরিয়ে দেখা গেল এক সবুজে ঘেরা ঝিরি। বড় বড় কিছু পাথর পেরিয়ে একেবারে তার কাছে চলে গেলাম। বেশ চমৎকার একটা জায়গা। এই ঝিরির পানি দামতুয়া হয়ে ঝরে পড়ে নিচের প্রাকৃতিক সুইমিংপুলে।
এই ঝিরির নাম ব্যাঙ ঝিরি। সাধারণত ঝিরির নাম অনুসারে ঝরনাগুলোর নামকরণ হয়।
ব্যাঙ ঝিরির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সময়জ্ঞান প্রায় ভুলতে বসেছিলাম সবাই। গাইডের ডাকে আবার শুরু হলো ট্রেকিং। এই পাহাড়-জঙ্গলের গহিনে গাইডই তখন ক্যাপ্টেন। তাঁর নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। আমরা আদুপাড়ার পথ ধরি। গাইড জানালেন, আবারও প্রায় নয় মাইল চড়াই-উতরাই পেরোতে হবে!
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। এমনিতেই পাহাড়ে সন্ধ্যা আসে ঝুপ করে। দুপুরে শুকনো দুই-চার পিস বিস্কুট ছাড়া তেমন কিছুই পড়েনি পেটে। তাই খিচুড়ির এন্তেজাম হবে রাতে। হাঁটছি ধীরে ধীরে, একেবারে উদ্দেশ্যপূর্ণ কারণে। আজ পূর্ণিমা। পাহাড়ের নির্জনতায় ভরা জোছনার আলো সঙ্গী করে হাঁটব। পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আমি মনে মনে কিছুটা উদ্দীপিত। এ রকম সুযোগ সব সময় মেলে না।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত। আকাশছোঁয়া পাহাড় টপকে গোলাকার চাঁদ উঁকি দিল আকাশে। নিঝুম অন্ধকার পাহাড়ের চারপাশ আলোকিত হয়ে পড়ল। গাছের পাতাগুলো সবুজের মাঝে সোনালি বর্ণ ধারণ করল। অসাধারণ এক অনুভূতি। সবার মনে বিস্ময়ের দোলা। এখন আর কারও ফেরার তাড়া নেই। তবু ফিরতে হচ্ছে এই অলৌকিক রাতে।
যাবেন যেভাবে
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবানের আলীকদমে বাস যায়। সেখান থেকে মোটরবাইক কিংবা চান্দের গাড়িতে যেতে হবে সতেরো কিলো এলাকায়। সেখানকার চা-দোকানিদের সহায়তা নিয়ে পেয়ে যাবেন গাইড। তাঁকে ছাড়া পাহাড়ে যাওয়া ঠিক হবে না।

কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তার হিসাব মেলাতে গিয়ে ছুটির দিনটাই বরবাদ হয়ে যায় অনেকের। সে জন্য কোথায় কী আছে জেনে আগেই পরিকল্পনা করে ঘুরে আসতে সুবিধা হয়। আজ তাই ঢাকার ১০ জাদুঘরের খোঁজ-খবর দেওয়া হলো।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছি, তাদের কাছে ফনিক্স সাইকেল এক নস্টালজিয়ার নাম। তখন ভারতের হিরো সাইকেলও ছিল বাজারে। তার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন হার্টথ্রব নায়ক সঞ্জয় দত্ত, টেলিভিশনে দেখানো হতো। তারও ক্রেজ ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু ফনিক্স সাইকেল? কোনো রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই তখন রাজা। তো, সেই ফনিক্স সাইকেল ছিল
৩৩ মিনিট আগে
আজ আপনার রাগের তেজ এতটা বাড়বে যে আপনি ভুল করে নিজের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটাই ডিলিট করে দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে পড়লে মনে হবে যেন পৃথিবীর সব গাড়ি একজোট হয়ে শুধু আপনার কাজেই বাগড়া দিতে এসেছে। আবেগের বশে আজ ভুলেও অনলাইনে কিছু অর্ডার করবেন না, কারণ আপনি এমন কিছু কিনে ফেলবেন, যা আসলে
২ ঘণ্টা আগে
গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র। তার মধ্যেই চুরি হয়ে গেল বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের লুভর। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে চুরি...
১ দিন আগেমইনুল হাসান, ফ্রান্স

গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অফিস পাড়ায় ভিড় নেই। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সকালের ঠান্ডা এ সময়ে তীব্র নয়। পুব আকাশে তখনো সূর্য অনেকটাই রক্তিম। নগরজীবনের প্রাণচাঞ্চল্য প্রকৃতির উষ্ণতায় আচ্ছাদিত। চারদিকে সুনসান। সবেমাত্র ঐতিহাসিক লুভর জাদুঘরের প্রধান ফটক দর্শনার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে কৌতূহলী দর্শনার্থীরা অতীত ইতিহাসের বর্ণাঢ্য জগতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নানান ভাষাভাষী দর্শনার্থীর ভিড় জমতে শুরু করেছে কাচ আর ইস্পাতে ঘেরা অনুপম পিরামিডের চৌদিকে, নেপোলিয়ন চত্বরে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার চোখ সর্বত্র। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র।
বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের এই লুভর। বলা যায় জাদুঘরের এক উজ্জ্বল আইকন। অনেক কিংবদন্তি আছে এই বিস্ময়কর রহস্যময় স্থাপত্য সৌকর্যের অনুপম দৃষ্টান্ত এই রাজপ্রাসাদ নিয়ে। ১৫৪৬ সালে ফরাসি রাজা প্রথম ফ্রঁসোয়া এই ভবন ফরাসি রাজাদের মূল বাসভবনে রূপান্তর করেন। এরপর বহুবার ভবনটি সম্প্রসারণ করা হলে বর্তমান রূপ পায়। ১৬৮২ সালে ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই তাঁর বাসভবন ভার্সাই প্রাসাদে স্থানান্তর করেন। তখন এই প্রাসাদ রাজকীয় সংগ্রহশালার চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

ফরাসি বিপ্লবের চার বছর পর, ১৭৯৩ সালে ৫৩৭টি শিল্পকর্ম নিয়ে লুভর প্রাসাদটি ‘কেন্দ্রীয় শিল্পকলা জাদুঘর’ নামে উদ্বোধন করা হয়। সেই থেকে বর্তমান জাদুঘরের যাত্রা শুরু। এখানে রক্ষিত আছে মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার বস্তু-প্রদর্শনী। এর মধ্যে হাজার পঁয়ত্রিশেক বস্তু দর্শনার্থীর প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে। একনাগাড়ে এর প্রতিটি বস্তু দেখতে ১০ সেকেন্ড করে ব্যয় করলেও শেষ করতে সময় লাগবে তিন থেকে চার দিন। লুভর প্রাসাদে কক্ষ আছে ৪০৩টি, মেঝের আয়তন ২৬ লাখ বর্গফুটের বেশি। সব কটি করিডর ঘুরে এলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ হাঁটা হবে। সিঁড়িতে আছে ১০ হাজার ধাপ এবং ৭০টির মতো লিফট। এই জাদুঘর পরিচালনায় আছেন প্রায় ২ হাজার কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে শুধু নিরাপত্তাপ্রহরীর সংখ্যাই হচ্ছে ১ হাজার ৩৬৬ জন। এটি বর্তমান সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হিসেবে বিখ্যাত। গত বছর প্রায় ৯০ লাখ দর্শনার্থী প্রবেশ করেছিল এই জাদুর জাদুঘরে।
তবে ১৯ অক্টোবর এই জাদুঘরে ঢুকেছিলেন দুজন বিশেষ ব্যক্তি। তাঁরা দর্শনার্থী ছিলেন না, ছিলেন না কোনো সাধারণ চোর। অনেকে বলেন, রাজরত্ন চুরি করতে সবার চোখে ধুলো দিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করেছিলেন ‘চোরের রাজা’ কিংবা ‘জাদুকর চোর’। ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ৯টার ঘরে, তখন সেন নদীর ডান তীরের রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে বিশ্বের সেরা জাদুঘর লুভর প্রাসাদের দিকে এগিয়েছেন দুটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকে করে দুজন চালক। আর তাঁদের পেছনে ধাতব মইবাহী একটি লরি। তাতে সাধারণ শ্রমিকের পোশাকে আরও দুজন ব্যক্তি। মই বহনকারী লরিটি রাস্তার পাশে, লুভর জাদুঘরের এক কোণ ঘেঁষে থামল। লরি থেকে মুখ ঢাকা দুজন ব্যক্তি নেমে এলেন। একজনের পরনে উজ্জ্বল হলুদ এবং অন্যজন গায়ে চড়িয়েছেন উজ্জ্বল কমলা রঙের পোশাক। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমন পোশাক পরা, কাজে ব্যস্ত শ্রমিকদের দেখতে সবাই অভ্যস্ত। তাই তাঁদের দেখে কেউ তেমন সন্দেহ করেনি। তখন ঠিক ৯টা ৩০ মিনিট।

দুজন তস্কর কাচ ও ইস্পাত কাটার যন্ত্র হাতে, মই দিয়ে তরতর করে উঠে গেলেন প্রথম তলায়। একটি জানালার কাচ আর গ্রিল কেটে ঢুকে গেলেন অ্যাপোলো গ্যালারিতে। সে সময়ে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন জনা দশেক দর্শনার্থী। তখন ৯টা ৩৪ মিনিট। প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতায় দুটি কাচের প্রদর্শনী বাক্স কেটে হাতিয়ে নেওয়া হলো ফরাসি রাজপরিবারের বহু পুরোনো বহুরত্নখচিত ৮টি অমূল্য অলংকার—নীলকান্তমণি, পান্না আর হীরার বহুপ্রাচীন সব গয়না। মোট ৮ হাজার হীরা ছিল তাতে! রানি মেরি-অ্যামেলির নেকলেসে ছিল ৮টি নীলকান্তমণি আর ৬৩১টি হীরা। তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটে খচিত ছিল ২ হাজার হীরা। এর মধ্যে সব থেকে বড় হীরা ১৪০ ক্যারেটের।
ইতিমধ্যে, জাদুঘরের বাইরে অপেক্ষমাণ ডিউটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকের দুই স্মার্ট চালক অস্থির হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, রাজরত্ন চুরি করে অতি নিপুণ, দুর্ধর্ষ চারজন তস্কর মোটরবাইকে করে লাপাত্তা হয়ে গেলেন। তীব্র শব্দে বেজে উঠল সতর্কসংকেত। সেই সংকেত সরাসরি পৌঁছে গেল ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নগরীর শান্ত প্রভাতের নীরবতায় ছেদ ঘটিয়ে চারদিকে পুলিশের সাইরেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে ঘটল শতাব্দীর সেরা চুরি!

ফরাসি জাতির ইতিহাসের অংশ অমূল্য ধন, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির এমন চুরির খবর আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীর সব প্রান্তে। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো সংবাদমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিরমি খেলেন। রোববারে একটু আলস্য করবেন বলে ঠিক করেছিলেন সদা ব্যস্ত সংস্কৃতিমন্ত্রী। তা না করে ছুটে গেলেন ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে দেখতে। বাঘা বাঘা বিশেষজ্ঞ চুরি যাওয়া রত্ন ও অলংকারের অর্থমূল্য নির্ধারণ না করতে পেরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘অমূল্য’—অর্থ দিয়ে কেনা যায় না ইতিহাস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিষমাখা তির বিদ্ধ হয়ে কাতরাতে কাতরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশেষে স্বীকার করলেন, ‘সুবিশাল এই প্রাসাদের ৮ হাজার দরজা, জানালা পাহারা দেওয়া সত্যিই কঠিন কাজ’। তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে যে চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল, তা সেই ১৯৯৮ সালে, আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্যামিল কোরোতের একটি তেলচিত্র চুরি হয়েছিল। আজও তা উদ্ধার হয়নি।
দুর্ধর্ষ এই চুরির ঘটনা দেশটির রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বিরোধীরা এই ঘটনাকে ‘জাতির মুখে কালিমা লেপন’ বলে অভিহিত করে বর্তমান সরকারের পরনের কাপড় নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অচিরেই তাঁর দক্ষ গোয়েন্দারা তস্করদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে এবং জড়িত সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছাড়বেন। সরকার মোট ৬০ জন বাছাই করা তদন্তকারী গোয়েন্দাকে দায়িত্ব দিল চোরাই মালপত্রসহ চোরদের পাকড়াও করার। এসব গোয়েন্দার আছে সারমেয় নাসিকা আর তাঁদের হাতে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ইতিমধ্যে তাঁদের হাতে অনেক আলামত জমা হয়েছে।

যাঁরা অপরাধজগতের খবর রাখেন, তাঁরা এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উচ্চারণে আস্থা রাখতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যাঁরা চুরি করেছেন, তাঁরা কোনো সাধারণ চোর বা ডাকাত নন। অত্যন্ত ঝানু এবং বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তস্কর। অঢেল সম্পদশালী কোনো সংগ্রাহক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাঁদের ঐতিহাসিক অলংকার চুরি করার কাজে লাগিয়েছে। কিংবা বিদেশি কোনো রাষ্ট্র তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। হতে পারে, অলংকার থেকে হীরা, জহরত আলাদা করে, খুচরা বিক্রির জন্য চুরি করা হয়েছে। তাই যতই সময় গড়াবে, ততই এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে।
এদিকে এমন দুর্ধর্ষ চুরির কাহিনি নিয়ে বলিউড চলচিত্র নির্মাণ শুরু করলে, তাতে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। সে ছায়াছবির শিরোনাম হতে পারে, ‘সাত মিনিটে চুরি হলো সাত রাজার ধন’।

গত রোববার ১৯ অক্টোবর, সকাল ৯টা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। অফিস পাড়ায় ভিড় নেই। রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। সকালের ঠান্ডা এ সময়ে তীব্র নয়। পুব আকাশে তখনো সূর্য অনেকটাই রক্তিম। নগরজীবনের প্রাণচাঞ্চল্য প্রকৃতির উষ্ণতায় আচ্ছাদিত। চারদিকে সুনসান। সবেমাত্র ঐতিহাসিক লুভর জাদুঘরের প্রধান ফটক দর্শনার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে কৌতূহলী দর্শনার্থীরা অতীত ইতিহাসের বর্ণাঢ্য জগতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে নানান ভাষাভাষী দর্শনার্থীর ভিড় জমতে শুরু করেছে কাচ আর ইস্পাতে ঘেরা অনুপম পিরামিডের চৌদিকে, নেপোলিয়ন চত্বরে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরার চোখ সর্বত্র। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ইগল দৃষ্টিতে চারদিকে খেয়াল রাখছেন, পাহারা দিচ্ছেন। বহু স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা সর্বত্র।
বিশ্বের এক নম্বর জাদুঘর প্যারিসের এই লুভর। বলা যায় জাদুঘরের এক উজ্জ্বল আইকন। অনেক কিংবদন্তি আছে এই বিস্ময়কর রহস্যময় স্থাপত্য সৌকর্যের অনুপম দৃষ্টান্ত এই রাজপ্রাসাদ নিয়ে। ১৫৪৬ সালে ফরাসি রাজা প্রথম ফ্রঁসোয়া এই ভবন ফরাসি রাজাদের মূল বাসভবনে রূপান্তর করেন। এরপর বহুবার ভবনটি সম্প্রসারণ করা হলে বর্তমান রূপ পায়। ১৬৮২ সালে ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুই তাঁর বাসভবন ভার্সাই প্রাসাদে স্থানান্তর করেন। তখন এই প্রাসাদ রাজকীয় সংগ্রহশালার চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

ফরাসি বিপ্লবের চার বছর পর, ১৭৯৩ সালে ৫৩৭টি শিল্পকর্ম নিয়ে লুভর প্রাসাদটি ‘কেন্দ্রীয় শিল্পকলা জাদুঘর’ নামে উদ্বোধন করা হয়। সেই থেকে বর্তমান জাদুঘরের যাত্রা শুরু। এখানে রক্ষিত আছে মোট ৪ লাখ ৬০ হাজার বস্তু-প্রদর্শনী। এর মধ্যে হাজার পঁয়ত্রিশেক বস্তু দর্শনার্থীর প্রদর্শনের জন্য রাখা আছে। একনাগাড়ে এর প্রতিটি বস্তু দেখতে ১০ সেকেন্ড করে ব্যয় করলেও শেষ করতে সময় লাগবে তিন থেকে চার দিন। লুভর প্রাসাদে কক্ষ আছে ৪০৩টি, মেঝের আয়তন ২৬ লাখ বর্গফুটের বেশি। সব কটি করিডর ঘুরে এলে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ হাঁটা হবে। সিঁড়িতে আছে ১০ হাজার ধাপ এবং ৭০টির মতো লিফট। এই জাদুঘর পরিচালনায় আছেন প্রায় ২ হাজার কর্মচারী। তাঁদের মধ্যে শুধু নিরাপত্তাপ্রহরীর সংখ্যাই হচ্ছে ১ হাজার ৩৬৬ জন। এটি বর্তমান সময়ে বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘর হিসেবে বিখ্যাত। গত বছর প্রায় ৯০ লাখ দর্শনার্থী প্রবেশ করেছিল এই জাদুর জাদুঘরে।
তবে ১৯ অক্টোবর এই জাদুঘরে ঢুকেছিলেন দুজন বিশেষ ব্যক্তি। তাঁরা দর্শনার্থী ছিলেন না, ছিলেন না কোনো সাধারণ চোর। অনেকে বলেন, রাজরত্ন চুরি করতে সবার চোখে ধুলো দিয়ে প্রাসাদে প্রবেশ করেছিলেন ‘চোরের রাজা’ কিংবা ‘জাদুকর চোর’। ঘড়ির কাঁটা যখন সকাল ৯টার ঘরে, তখন সেন নদীর ডান তীরের রাস্তা ধরে ধীরে ধীরে বিশ্বের সেরা জাদুঘর লুভর প্রাসাদের দিকে এগিয়েছেন দুটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকে করে দুজন চালক। আর তাঁদের পেছনে ধাতব মইবাহী একটি লরি। তাতে সাধারণ শ্রমিকের পোশাকে আরও দুজন ব্যক্তি। মই বহনকারী লরিটি রাস্তার পাশে, লুভর জাদুঘরের এক কোণ ঘেঁষে থামল। লরি থেকে মুখ ঢাকা দুজন ব্যক্তি নেমে এলেন। একজনের পরনে উজ্জ্বল হলুদ এবং অন্যজন গায়ে চড়িয়েছেন উজ্জ্বল কমলা রঙের পোশাক। নগরীর বিভিন্ন স্থানে এমন পোশাক পরা, কাজে ব্যস্ত শ্রমিকদের দেখতে সবাই অভ্যস্ত। তাই তাঁদের দেখে কেউ তেমন সন্দেহ করেনি। তখন ঠিক ৯টা ৩০ মিনিট।

দুজন তস্কর কাচ ও ইস্পাত কাটার যন্ত্র হাতে, মই দিয়ে তরতর করে উঠে গেলেন প্রথম তলায়। একটি জানালার কাচ আর গ্রিল কেটে ঢুকে গেলেন অ্যাপোলো গ্যালারিতে। সে সময়ে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন জনা দশেক দর্শনার্থী। তখন ৯টা ৩৪ মিনিট। প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতায় দুটি কাচের প্রদর্শনী বাক্স কেটে হাতিয়ে নেওয়া হলো ফরাসি রাজপরিবারের বহু পুরোনো বহুরত্নখচিত ৮টি অমূল্য অলংকার—নীলকান্তমণি, পান্না আর হীরার বহুপ্রাচীন সব গয়না। মোট ৮ হাজার হীরা ছিল তাতে! রানি মেরি-অ্যামেলির নেকলেসে ছিল ৮টি নীলকান্তমণি আর ৬৩১টি হীরা। তৃতীয় নেপোলিয়নের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির মুকুটে খচিত ছিল ২ হাজার হীরা। এর মধ্যে সব থেকে বড় হীরা ১৪০ ক্যারেটের।
ইতিমধ্যে, জাদুঘরের বাইরে অপেক্ষমাণ ডিউটি টিম্যাক্স ইয়ামাহা মোটরবাইকের দুই স্মার্ট চালক অস্থির হয়ে উঠলেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, রাজরত্ন চুরি করে অতি নিপুণ, দুর্ধর্ষ চারজন তস্কর মোটরবাইকে করে লাপাত্তা হয়ে গেলেন। তীব্র শব্দে বেজে উঠল সতর্কসংকেত। সেই সংকেত সরাসরি পৌঁছে গেল ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। নগরীর শান্ত প্রভাতের নীরবতায় ছেদ ঘটিয়ে চারদিকে পুলিশের সাইরেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তখন সকাল ৯টা ৩৭ মিনিট। মাত্র সাত মিনিটে ঘটল শতাব্দীর সেরা চুরি!

ফরাসি জাতির ইতিহাসের অংশ অমূল্য ধন, রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির এমন চুরির খবর আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ল পৃথিবীর সব প্রান্তে। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো সংবাদমাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হলো। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভিরমি খেলেন। রোববারে একটু আলস্য করবেন বলে ঠিক করেছিলেন সদা ব্যস্ত সংস্কৃতিমন্ত্রী। তা না করে ছুটে গেলেন ক্ষয়ক্ষতি সরেজমিনে দেখতে। বাঘা বাঘা বিশেষজ্ঞ চুরি যাওয়া রত্ন ও অলংকারের অর্থমূল্য নির্ধারণ না করতে পেরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘অমূল্য’—অর্থ দিয়ে কেনা যায় না ইতিহাস। সাংবাদিকদের প্রশ্নের বিষমাখা তির বিদ্ধ হয়ে কাতরাতে কাতরাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশেষে স্বীকার করলেন, ‘সুবিশাল এই প্রাসাদের ৮ হাজার দরজা, জানালা পাহারা দেওয়া সত্যিই কঠিন কাজ’। তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে যে চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল, তা সেই ১৯৯৮ সালে, আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্যামিল কোরোতের একটি তেলচিত্র চুরি হয়েছিল। আজও তা উদ্ধার হয়নি।
দুর্ধর্ষ এই চুরির ঘটনা দেশটির রাজনীতির মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বিরোধীরা এই ঘটনাকে ‘জাতির মুখে কালিমা লেপন’ বলে অভিহিত করে বর্তমান সরকারের পরনের কাপড় নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, অচিরেই তাঁর দক্ষ গোয়েন্দারা তস্করদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে এবং জড়িত সবাইকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছাড়বেন। সরকার মোট ৬০ জন বাছাই করা তদন্তকারী গোয়েন্দাকে দায়িত্ব দিল চোরাই মালপত্রসহ চোরদের পাকড়াও করার। এসব গোয়েন্দার আছে সারমেয় নাসিকা আর তাঁদের হাতে আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ইতিমধ্যে তাঁদের হাতে অনেক আলামত জমা হয়েছে।

যাঁরা অপরাধজগতের খবর রাখেন, তাঁরা এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ উচ্চারণে আস্থা রাখতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যাঁরা চুরি করেছেন, তাঁরা কোনো সাধারণ চোর বা ডাকাত নন। অত্যন্ত ঝানু এবং বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তস্কর। অঢেল সম্পদশালী কোনো সংগ্রাহক মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাঁদের ঐতিহাসিক অলংকার চুরি করার কাজে লাগিয়েছে। কিংবা বিদেশি কোনো রাষ্ট্র তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। হতে পারে, অলংকার থেকে হীরা, জহরত আলাদা করে, খুচরা বিক্রির জন্য চুরি করা হয়েছে। তাই যতই সময় গড়াবে, ততই এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসবে।
এদিকে এমন দুর্ধর্ষ চুরির কাহিনি নিয়ে বলিউড চলচিত্র নির্মাণ শুরু করলে, তাতে বিস্মিত হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না। সে ছায়াছবির শিরোনাম হতে পারে, ‘সাত মিনিটে চুরি হলো সাত রাজার ধন’।

কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তার হিসাব মেলাতে গিয়ে ছুটির দিনটাই বরবাদ হয়ে যায় অনেকের। সে জন্য কোথায় কী আছে জেনে আগেই পরিকল্পনা করে ঘুরে আসতে সুবিধা হয়। আজ তাই ঢাকার ১০ জাদুঘরের খোঁজ-খবর দেওয়া হলো।
০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আমরা যারা নব্বইয়ের দশকে বড় হয়েছি, তাদের কাছে ফনিক্স সাইকেল এক নস্টালজিয়ার নাম। তখন ভারতের হিরো সাইকেলও ছিল বাজারে। তার বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেছিলেন হার্টথ্রব নায়ক সঞ্জয় দত্ত, টেলিভিশনে দেখানো হতো। তারও ক্রেজ ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু ফনিক্স সাইকেল? কোনো রকম বিজ্ঞাপন ছাড়াই তখন রাজা। তো, সেই ফনিক্স সাইকেল ছিল
৩৩ মিনিট আগে
আজ আপনার রাগের তেজ এতটা বাড়বে যে আপনি ভুল করে নিজের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলটাই ডিলিট করে দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে পড়লে মনে হবে যেন পৃথিবীর সব গাড়ি একজোট হয়ে শুধু আপনার কাজেই বাগড়া দিতে এসেছে। আবেগের বশে আজ ভুলেও অনলাইনে কিছু অর্ডার করবেন না, কারণ আপনি এমন কিছু কিনে ফেলবেন, যা আসলে
২ ঘণ্টা আগে
তুক-অ-দামতুয়া নামটির মাঝেই রয়েছে অদ্ভুত এক রহস্য। তার ওপর এটি একটি ঝরনার নাম। এমনিতেই পাহাড়প্রেমীদের ছোট-বড় যেকোনো ঝরনার প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সেটা যদি হয় দৈত্যাকার, তাহলে তো কথাই নেই।
১ দিন আগে