Ajker Patrika

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ১২০ দিন, হতাহত ৯৪ হাজার ফিলিস্তিনি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮: ৪৮
Thumbnail image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন গড়িয়েছে ১২০ দিনে। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে অঞ্চলটিতে অন্তত ৯৪ হাজার মানুষ হতাহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে নিহত ২৭ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি। গাজা প্রশাসনের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

গাজা প্রশাসন স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৩৬৫ জনে। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি শিশু ও নারী। এই সময়ে ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে আরও ৬৬ হাজার ৬৩০ জন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৯৩ হাজার ৯৯৫ জন হতাহত হয়েছে। 

এদিকে, টানা প্রায় চার মাসের ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। এসব হামলায় ২৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে অন্তত ১৭ হাজার শিশু অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।

গাজার দেইর এল-বালাহে ইসরায়েলি হামলার পর শোকে স্তব্ধ এক শিশু। বাকিরা ধ্বংসস্তূপের নিচে কেউ আটকে পড়েছেন কি না তা জানার জন্য সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। ছবি: আল-জাজিরা অবরুদ্ধ গাজার প্রায় সব শিশুরই মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তার দরকার বলে ইউনিসেফের ফিলিস্তিন বিষয়ক মুখপাত্র জনাথান ক্রিক্স জানান। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক শিশুরই স্বজন হারানোর ও ভোগান্তির হৃদয়বিদারক গল্প আছে।’ 

জেরুজালেম থেকে ভিডিও বার্তায় ক্রিক্স বলেন, ‘এই (১৭ হাজার) সংখ্যাটি সামগ্রিক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনির, যা প্রায় ১৭ লাখ বা এক শতাংশের সমান।’ তবে এ সংখ্যাকে ‘কেবল অনুমান’ বলছেন তিনি। কারণ বিরাজমান পরিস্থিতিতে প্রকৃত সংখ্যা যাচাই করা প্রায় অসম্ভব। 

ক্রিক্সকে উদ্ধৃত করে আল জাজিরার বলছে, প্রতিটি শিশুই ভয়াবহ এক নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছে। অভিভাবকহীন শিশু শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ হাসপাতালে আনা আহত শিশুরা নিজের নামটিও বলতে পারে না। 

সংঘাতের সময় মা–বাবা হারা শিশুদের পরিবারের অন্য সদস্যরা দেখাশোনা করে থাকেন। ক্রিক্স বলেন, ‘গাজায় খাবার, পানি ও আশ্রয়ের অভাবে স্বজনেরা নিজেই দুর্দশার মধ্যে দিন পার করছেন। যেখানে তারা নিজের সন্তানের দেখাশোনা করতে হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে অন্য শিশুর দায়িত্ব নেওয়া তাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং।’ মা–বাবা হারা শিশুদের ইউনিসেফ বিচ্ছিন্ন শিশু বলে উল্লেখ করেছে এবং যে শিশুদের মা–বাবাও নেই ও কোনো স্বজনও নেই তাদের অভিভাবকহীন শিশু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

ক্রিক্স আরও বলেন, সংঘাতের কারণে গাজার শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং দশ লাখেরও বেশি শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়তা প্রয়োজন। গাজার শিশুদের মধ্যে বেশ কয়েকটি উপসর্গ দেখা দিয়েছে—উচ্চমাত্রায় উদ্বেগ, ক্ষুধামন্দা, অনিদ্রা, বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শুনলেই তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে এবং হঠাৎই তারা কান্নায় ভেঙে পড়ে। 

ইউনিসেফ বলছে, সংঘাতের মাত্রা বাড়ার আগে গাজায় প্রায় পাঁচ লাখ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ও মনো–সামাজিক সহায়তা প্রয়োজন ছিল। তবে, এখন ইউনিসেফের অনুমান প্রায় সব শিশুরই এ ধরনের সহায়তা প্রয়োজন। ক্রিক্স বলছেন, এমন প্রায় দশ লাখেরও বেশি শিশু রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত