Ajker Patrika

সিসার ‘ভয়ে’ ধান কাটা বন্ধ

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ০০
সিসার ‘ভয়ে’ ধান কাটা বন্ধ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সিসার বিষক্রিয়ায় গরু মৃত্যুর ঘটনার পর ব্যাটারি কারখানার আশপাশের মাটি, ঘাস ও খড়ের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে পাঠানো হয়। ফলাফলে মাত্রাতিরিক্ত সিসার কারণে গরু মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া যায়। এর পর থেকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গবাদিপশুকে খড়, ঘাস খাওয়াতেও ভয় পাচ্ছেন কৃষকেরা। পাশাপাশি কারখানার আশপাশে থাকা জমিতে ধান পেকে গেলেও ভয়ে কাটতে যাচ্ছেন না চাষিরা। খেতেই ঝরে পড়ছে ধান।

ঢাকার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার কার্যালয়ের টেকনোলজি অ্যান্ড জুরিসপ্রুডেন্স অনুবিভাগের ডা. রামমোহন অধিকারীর স্বাক্ষরিত একটি রিপোর্ট ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে পৌঁছালে বিষক্রিয়ার ব্যাপকতার বিষয়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এলাকার ঘাসে ৩০ হাজার পিপিএম, খড়ে ৩০ হাজার পিপিএম ও মাটিতে পাওয়া গেছে ৫ হাজার পিপিএম মাত্রার সিসার উপস্থিতি।

গতকাল পাকড়ডাঙ্গার ব্যাটারি কারখানা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কারখানার তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে খেতে পাকা ধান। কৃষক ভয়ে বাড়িতে ধান কেটে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন না। কেউবা মাঠে ধান কেটে ফেলে রেখেছেন। কেউ কেউ বাড়িতে খড় নিয়ে গেলেও আতঙ্কে গবাদিপশুর নাগালের বাইরে রাখছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিরা বলছেন, আমন ধানের খড় দিয়ে তাঁদের এক বছরের গবাদিপশুর খাবার প্রস্তুত হয়ে থাকে। এখন খড়ে বিষক্রিয়া হওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কারখানার সঙ্গে লাগোয়া জমির মধ্যে উত্তরের দিকে আমজাদ হোসেনের দুই একর, মুকুলের এক বিঘা, ডা. আনোয়ারের দুই একর, পশ্চিমে আমজাদের পাঁচ বিঘা, তোফাজ্জলের তিন বিঘা, মমিনুলের এক বিঘা, মাহাবুরের দশ কাঠা, মুকুলের এক বিঘা, মকবুলের দেড় বিঘা, বাদশার এক বিঘা, জহুরুলের এক একর, দক্ষিণে সুলতান হোসেনের তিন একর, মতিবুল, মঞ্জুরুল ও মতিয়ারের দশ কাঠা করে জমি রয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, ‘কারখানা এলাকার খড়, ঘাস এমনকি ধান পর্যন্ত খাওয়ানো যাবে না। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কত দূর পর্যন্ত সীমানার মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, যত দূর পর্যন্ত সিসার ডাস্ট ছড়িয়েছে, তত দূর পর্যন্ত। ইউএনও মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, এলাকার সিসাযুক্ত খড়গুলো পুড়িয়ে ফেলা হবে, বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, উপজেলার ফুলবাড়ী-মাদিলা সড়কের পাশে পাকড়ডাঙ্গা নামক স্থানে আবাদি জমিতে একটি ব্যাটারি রিসাইকেল কারখানা ছিল। ওই কারখানার বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ার কারণে এলাকার ঘাস এবং খড়ে বিষক্রিয়ায় আলাদিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর ও বেতদিঘী ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামে ৩৫টি গরুর মৃত্যু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত