Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ায় বাসস্থানে আক্রান্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, সহপাঠী ও স্থানীয়দের বিক্ষোভ

অস্ট্রেলিয়ায় বাসস্থানে আক্রান্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, সহপাঠী ও স্থানীয়দের বিক্ষোভ

অস্ট্রেলিয়ায় দুর্বৃত্তের হামলায় আহত এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। দেশটির সরকারি চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটিতে (সিডিইউ) পড়তেন ওই শিক্ষার্থী। ডারউইনের উত্তর শহরতলিতে একটি বাড়িতে থাকতেন। 

এবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বুধবার (৩ মে) ভোরে বাড়িতে আক্রান্ত হওয়ার পর মো. ইশাকুর রহমান সিফাত (২৩) নামে ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় রয়্যাল ডারউইন হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। 

সিফাত চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটিতে ইনফরমেশন সায়েন্সে স্নাতকোত্তরে পড়ছিলেন। কয়েক মাস আগে অস্ট্রেলিয়া যান তিনি। 

বৃহস্পতিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নর্দার্ন টেরিটরি পুলিশ জানিয়েছে, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ওই শিক্ষার্থী মারা গেছেন। মেজর ক্রাইমস ইউনিটের গোয়েন্দারা এই ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বিবেচনা করে তদন্ত করছেন। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২৯ বছর বয়সী এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। এ নিয়ে শুক্রবার (৫ মে) সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে নর্দার্ন টেরিটরি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সিনিয়র সার্জেন্ট পল মরিসি সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভুক্তভোগীকে বিছানায় শোয়া অবস্থায় মাথায় আঘাত করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করার কিছুক্ষণ আগে বাড়ির উঠান থেকে একজন কথিত অনুপ্রবেশকারীকে তাড়া করেছিল পুলিশ। 

সিনিয়র সার্জেন্ট মরিসি বলেন, দ্রুতই ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলে পুলিশ। ওই বাড়ির বাসিন্দারা বলেছেন, তাঁরা কেউ ওই ব্যক্তিকে চেনেন না। 

বুধবার বিকেলে চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর স্কট বোম্যান বলেন, সিফাতের পরিবারকে আনতে সহায়তা করা হচ্ছে। 

এদিকে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিডিইউ-এর বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিবৃতি পোস্ট করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই মর্মান্তিক ক্ষতিতে আমাদের পুরো কমিউনিটি বড় ধাক্কা খেয়েছে। তাঁর আত্মা আল্লাহর দরবারে চিরশান্তি লাভ করুক। আসুন আমরা এই শোকের সময়ে তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের জন্য ভালোবাসা এবং সমর্থন নিয়ে পাশে দাঁড়াই।’ 

উত্তর টেরিটরির রাজনৈতিক নেতারাও শোক জানিয়েছেন। স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটি শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। শোক জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নাতাশা ফাইলস। স্থানীয় বিরোধী দলীয় নেতাও শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। 

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলে সম্প্রতি একাধিক খুনের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। গত মার্চে ডেক্লান ল্যাভার্টি (২০) নামে এক তরুণ ডারউইনের উত্তর শহরতলিতে একটি দোকানে কাজ করার সময় খুন হন। ওই ঘটনা স্থানীয় কমিউনিটির মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। ওই ঘটনার পর স্থানীয় সরকার জামিন সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে। 

অ্যালিস স্প্রিংস শহরে অ্যালকোহল-সম্পর্কিত সহিংসতা বৃদ্ধিও গত জানুয়ারিতে একটি জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। স্থানীয় ও ফেডারেল সরকার এই অঞ্চলের জন্য সমর্থন বৃদ্ধি এবং কঠোর অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। 

বৃহস্পতিবার চার্লস ডারউইন ইউনিভার্সিটির (সিডিইউ) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা সিফাত হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। গণপরিবহন এবং বাড়িতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের পোস্টে কমেন্ট করে বরখাস্ত মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী

‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত

চিরকুটে শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’

ভারত কি রাখাইন হয়ে সেভেন সিস্টারসে পণ্য পরিবহন করতে পারবে

চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে সেনা সদরের প্রতিনিধিদল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত