Ajker Patrika

নিয়ম ছাড়াই মিলছে ছাড়পত্র

অরূপ রায়, সাভার
নিয়ম ছাড়াই মিলছে ছাড়পত্র

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া বাজারের অদূরে নদের দুই তীরে বৈধ কোনো কাগজপত্র ছাড়া গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা।বছরের পর বছর এসব ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। এতে এক দিকে যেমন নদের পানি দূষিত হচ্ছে, অন্যদিকে নদের বিভিন্ন স্থান দখল হয়ে যাচ্ছে। এরপরও নদের দখল ও দূষণ রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) তথ্যানুযায়ী, আশুলিয়া বাজারের পাশ দিয়ে প্রবহমান নদটি তুরাগের শাখা। দখল ও দূষণ রোধে এই নদকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।

শুধু তুরাগের তীরেই নয়, সাভারের অধিকাংশ এলাকায় অবৈধ ইটভাটা চলছে। এসব ভাটা বন্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে তথ্য গোপন করে নিষিদ্ধ এলাকায় গড়ে ওঠা ইটভাটাকে ছাড়পত্র দিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশদূষণে পরোক্ষ ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

তুরাগের ৫০ গজের মধ্যে আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের পাশে রয়েছে রাজু ও আশুলিয়া ব্রিকস। অনুমতি ছাড়াই এই দুই ভাটায় বছরের পর বছর ইট পোড়ানো হচ্ছে। অনুমতি না থাকায় আইনি ঝামেলা এড়িয়ে নির্বিঘ্নে ভাটা চালু রাখার জন্য রাজু ব্রিকসের মালিক রাজু আহমেদ গত মৌসুমে ভাটা স্থানান্তরের সুযোগ চেয়ে হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা স্থানান্তর না করে এবারও তিনি ভাটা চালু রেখেছেন।

সম্প্রতি রাজু ব্রিকসে গিয়ে মালিক রাজু আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে অপারগতা জানান। পরে ইটভাটার ব্যবস্থাপক মতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের সময় নিলেও ইট প্রস্তুতের জন্য সংগ্রহ করা প্রচুর মাটি অবশিষ্ট থাকায় ভাটা স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। তাই এবারও ভাটা চালাচ্ছি।’

ইট পোড়ানোর অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে নদের তীরের মেঘনা ব্রিকসের মালিক জমির আলী বলেন, ‘অনুমতি নেই, তাই সব পক্ষকে ম্যানেজ করেই ভাটা চালাচ্ছি। অন্যদের যে দশা হয়, আমাদেরও তা–ই হবে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আর জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে সাভারের বনগ্রাম ইউনিয়নের ডিবিএস ব্রিকসে।এই ভাটা থেকে ৪৩৫ মিটার দূরেই নিকরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আর আধা কিলোমিটার দূরেই কয়েক শ বাড়িঘর। অথচ আইন অনুযায়ী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা আবাসিক এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটার ছাড়পত্র পাওয়ার কথা নয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা ও ইটভাটার কয়েকজন মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইটভাটার অবস্থান সম্পর্কে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেন। আর ওই ভুল তথ্যের ভিত্তিতে নিষিদ্ধ এলাকার অনেক ইটভাটা ছাড়পত্র পেয়ে যায়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক জিয়াউল হক বলেন, অভিযোগের সত্যতা থাকতে পারে। তবে নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে জিয়াউল হক বলেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান অব্যাহত আছে। পর্যায়ক্রমে সব অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত