Ajker Patrika

মেয়রের সামনেই প্রধান শিক্ষককে মারধর

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
মেয়রের সামনেই প্রধান শিক্ষককে মারধর

চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে পৌর মেয়রের লোকজনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষায় নকল করা দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করায় পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমানের উপস্থিতিতে তাঁকে মারধর করা হয়। গত শনিবার রাত ১১টার দিকে শহরের ঢাকা বাস টার্মিনাল এলাকায় আরাফাত বোর্ডিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হয় গত রোববার সন্ধ্যায়। তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র মোখলেসুর রহমান।

ওই শিক্ষক জেলা শহরের রাজারামপুর হামিদুল্লাহ উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং পৌর আওয়ামী লীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দপ্তর সম্পাদক সামিউল ইসলাম।

জানা গেছে, ১৩ অক্টোবর এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নকল করার অপরাধে দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

প্রধান শিক্ষক সামিউল ইসলাম বলেন, বহিষ্কৃত ওই দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা মেয়রের কাছে তাঁদের সন্তানদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেন। পৌর মেয়রের নির্দেশে কাউন্সিলর তোহিদুল ইসলাম ও কাউন্সিলর শামশুল হক মোবাইল ফোনে আমাকে ওই দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগ করেন।’

শিক্ষক সামিউল ইসলাম আরও বলেন, গত শনিবার মেয়র মোখলেসুর রহমান তাঁকে ফোন করে ওই দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। বিষয়টি নিয়ে অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার বিষয়ে বলা হলে মেয়র উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। সে সময় তিনি (প্রধান শিক্ষক) কোথায় আছেন জানতে চান। এর কিছুক্ষণ পর মেয়র আরাফাত বোর্ডিংয়ে দলবল নিয়ে আসেন। মেয়রের সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁকে মারধর শুরু করেন। মেয়রও উত্তেজিত হয়ে তাঁকে আঘাত করেন। মেয়রের নির্দেশেই তাঁর পিএস আব্দুল জলিল, ছাত্রলীগ নেতা ফয়সালসহ তাঁর লোকজন মারধর করেন। সে সময় তিনি দুই ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের কথা বলেন। এরপর তাঁকে বিদ্যালয়ে না যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

প্রধান শিক্ষক আরও জানান, এ ঘটনায় তিনি এখন পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এ বিষয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপ-আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমন্বয়কারী শামসুজ্জামান বাবু বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক মারধরের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। দাপ্তরিক কাজে ঢাকায় থাকার কারণে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। এলাকায় গিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

পৌর আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল জলিল জানান, মারধরের পর তিনি সেখানে যান। সেখানে উত্তেজিত অবস্থা বিরাজ করায় সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রধান শিক্ষক যাতে আবারও লাঞ্ছিত না হন, সে জন্য তাঁকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। এ সময় পৌর মেয়রসহ তাঁর লোকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, শিক্ষককে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পৌরসভার মেয়র মোখলেসুর রহমান। তিনি জানান, শিক্ষক লাঞ্ছিত এবং মারধরের বিষয়টি সত্য নয়।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আমাকে কিছুই জানায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষককে মারধরের বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। যদিও এখন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

সৈয়দ জামিলের অভিযোগের জবাবে যা লিখলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত