Ajker Patrika

উৎপাদন খরচও উঠছে না, সড়কে আলু ঢেলে চাষিদের বিক্ষোভ

রংপুর প্রতিনিধি
উৎপাদন খরচও উঠছে না, সড়কে আলু ঢেলে চাষিদের বিক্ষোভ

আলু উৎপাদনে প্রতি কেজিতে খরচ পড়েছে ১৩ টাকা। বর্তমান বাজার দর ৯ টাকা। বড় লোকসানের মুখে রংপুরের আলু চাষিরা। এমন অবস্থায় আলুর ন্যায্য দাম নিশ্চিত করাসহ রপ্তানির ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন চাষিরা। আজ সোমবার রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের ওপর আলু ঢেলে বিক্ষোভ করেন চাষিরা। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। 

চাষিদের বলেন, কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় এবারে আলু উৎপাদনে প্রতি কেজিতে খরচ পড়েছে ১২-১৩ টাকা। হিমাগার পর্যন্ত সংরক্ষণে খরচ পড়েছে প্রতি কেজিতে ৪ টাকা, হিমাগার ভাড়া প্রতিকেজি আরও ৪ টাকা। হিমাগার পর্যায়ে আলু সংরক্ষণ করতে মোট খরচ পড়েছে ২০-২১ টাকা। বর্তমান বাজারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৯-১০ টাকা কেজিতে। আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় ক্রেতাও নেই বাজারে। অনেকে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে বাড়িতে সংরক্ষণ করছেন। বাজারে দাম না থাকায় সেসব আলুতে পচন দেখা দিয়েছে। 

রংপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৫২ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯৫ টন। জেলায় আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার রয়েছে ৪১ টি। এর মধ্যে একটি বিকল। এসব হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৪ লাখ ২৯ হাজার ৯৩৫ টন। সে হিসাবে, এবারে উৎপাদনের চার ভাগের একভাগ আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পেরেছেন চাষিরা। 

চাষিরা বলছেন, এ বছর হিমাগারে সংরক্ষণ খরচও বেড়েছে। আগে ৯০ কেজির একটি পাটের বস্তার দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা। এখন ৫০ কেজির বস্তা কিনতে হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। 

বিক্ষোভে মাহীগঞ্জ এলাকার আলু চাষি জামাল উদ্দিন বলেন, দেশে সবকিছুর দাম যখন ঊর্ধ্বমুখী ঠিক তখনই কৃষকের উৎপাদিত আলুর দাম নেই। আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। জায়গা সংকটের কারণে হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারিনি। এখন লোকসানের ভয়ে আলু বিক্রি করতে পারছি না। ঘরে রাখা আলুতে পচন ধরেছে। আমরা আলুর ন্যায্য দাম ও রপ্তানির দাবিতে বিক্ষোভ করছি। 

আমতলী এলাকার আলুচাষি মাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমান বাজারে আলু ৯ টাকা কেজি। জমিতে আলু উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৩ টাকা। দাম কম থাকায় ব্যবসায়ীরাও ধরা দিচ্ছেন না। অন্তত আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচটা উঠলেও হতো। নিরুপায় হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।’ 

দাম না পাওয়ায় রাস্তায় আলু ঢেলে চাষিদের বিক্ষোভএ ব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আকমল হোসেন বলেন, ‘রংপুরে যে আলু চাষ হয় তার আকার ছোট। তাই বিদেশে এ আলুর চাহিদা কম। কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করে এবার রংপুরের আলু বিদেশে রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছি। আগামীতে এর পরিধি আরও বাড়বে।’ 

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে রংপুরে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হয়েছে। দিনাজপুরে চাষিরা সড়কে আলু ফেলে বিক্ষোভের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে তাঁরা চাইলেই আলু রপ্তানি সম্ভব না। এখানে যে আলু চাষ হয় বিদেশে সেগুলোর চাহিদা খুবই কম। আমরা এ বছর ৪৫০ জন কৃষককে রপ্তানিযোগ্য আলু চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আলু চাষিদের বেশি করে রপ্তানিযোগ্য আলু চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণ ও উৎসাহিত করা হচ্ছে। তখন চাষিরা ন্যায্য দাম পাবেন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্বে ১৮৬ দেশের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ মাত্র একটি: গবেষণা

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধান বিচারপতি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগের নাটক সাজানো হয়: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

শুধু নোটিশে চাকরি হারাবেন সরকারি কর্মচারীরা, আপিলের সুযোগ নেই

সদরপুরে অসহায় পরিবারের ভিটেমাটি দখলের চেষ্টা, যুবক গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত