নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুকসানা আক্তার রুবির দ্বিতীয় সন্তান রুমা আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।
ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন রুকসানা আক্তার রুবি, তাঁর ছোট সন্তান জোনাকি আক্তার ও বড় ছেলে রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুবির স্বামী সৌদিপ্রবাসী খলিলুর রহমান, সন্তান রুমা আক্তার, রিক্তা আক্তার ও নিহত রাসেলের স্ত্রী মিম আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
রুমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা থানাধীন কড়ইবাড়ী গ্রামে কিছু আওয়ামীপন্থী দোসর এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারী তাঁর পরিবারের তিনজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
তিনি দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে গেলে উল্টো তাঁদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। কারণ, এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এক ‘প্রভাবশালী’ উপদেষ্টার বাবা মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর প্রভাব ও সাহসেই শিমুল চেয়ারম্যান ও তাঁর দোসরেরা এমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন বলে রুমা অভিযোগ করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুমা আক্তার বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন তিনি নিরুপায় ছিলেন এবং তাঁর মা ও পরিবারকে বাঁচাতে পারেননি। এই ঘটনায় তিনি নিজেও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন; তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই পড়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে তাঁর মাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরে ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবে ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রুমা শিমুল চেয়ারম্যান, কাশিমপুর গ্রামের আনু মেম্বার, বাছির, শরীফ, রানা, আবু বকর, রবিউল, জহর আমিন, বাচ্চু মেম্বার, রফিক, বিল্লাল বাবুর্চি, ভাড়াটে খুনি গোলাপ মিয়া, সাদ্দামসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার বিচার দাবি করেন।
রুমা আক্তার উপদেষ্টার বাবাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনাসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিমুল চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিরা, যাঁরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। মামলার অভিযোগ পুনর্বিন্যাস করতে হবে, কারণ, হত্যাকাণ্ডের সময় পরিবারের সদস্যরা আহত থাকায় তাঁর বোন রিক্তা আক্তার আসামিদের নাম সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেননি এবং পুলিশ কর্তৃক আসামি নির্ধারণ হওয়ায় অনেক অপরাধীর নাম বাদ পড়েছে। এগুলো নতুন করে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
রুমা আক্তার আরও বলেন, আজকের পর তাঁদের কারও কোনো ভিন্ন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম বা অন্য কোথাও দেখলে ধরে নিতে হবে যে, ওই উপদেষ্টার লোকজন জোরপূর্বক তাঁদের দিয়ে সেগুলো বলিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কয়েক দিন আগে তাঁদের বাবা জুয়েলকে উপদেষ্টার লোকজন তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ভিন্ন বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছেন।
যেভাবে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন (ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য)
রুমা আক্তারের বক্তব্য অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা ছিল তাঁর মাকে মেরে ফেলা। পরে তাঁর ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবেন ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁদের মা একটি বিল্ডিং নির্মাণ করার কারণেই মূলত স্থানীয় লোকদের প্রতিহিংসার শিকার হন।
শিমুল বিল্লাহ (চেয়ারম্যান) চেয়েছিলেন তাঁদের ভবন নির্মাণকাজ তাঁর লোকজনের মাধ্যমে করাতে। তাঁর মা এতে রাজি না হওয়ায় শিমুল বিল্লাহ আনু মেম্বারের মাধ্যমে কয়েকবার চাঁদার জন্য লোক পাঠান। চাঁদা না দিলে তাঁর মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় এবং তাঁদের বাড়ির গ্লাস ও বিদ্যুতে মিটার ভেঙে ফেলা হয়। এ নিয়ে সে সময় ডিবিতে একটি অভিযোগও দাখিল করা হয়েছিল।
শরীফ চেয়েছিলেন তাঁর সংগঠনের লোকের কাছ থেকে ইট নিতে। রাজি না হলে প্রতি গাড়ি ইট থেকে তাঁর সংগঠনকে ৫০০ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করা হয়। তাঁর মা এতেও রাজি হননি।
এ ছাড়া স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে তাঁর মা দুবার নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন এবং তিনি এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। বিএনপি-সমর্থিত হওয়ায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সন্ত্রাসীরা তাঁকে বিজয়ী হতে দেয়নি। উল্টো জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করত এবং মানহানি করার জন্য মাদকের মতো মামলাতেও তাঁর মায়ের নাম দিয়ে বদনাম করার চেষ্টা করত।
হত্যাকাণ্ডের দিন যা ঘটেছিল
হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। রবিউলের ঘরে মোবাইল চুরির কারণে একটি ছেলেকে তাঁদের বাড়ির পাশের একটি দোকানে বেদম মারধর করা হলে, ছেলেটির বাবা তাঁদের থেকে তাঁকে বাঁচাতে না পেরে রুমা আক্তারের মায়ের কাছে সাহায্য চান।
রুমা আক্তার জানান, তাঁর মা সেখানে গিয়ে বলেন, ‘চোরটা যদি মরে যায়, তাহলে তো আমরা আশপাশের সবাই ফেঁসে যাব। হয় তাকে ছেড়ে দাও, না হয় পুলিশে দিয়ে দাও।’ এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে থাকা বাচ্চু মেম্বার, শরীফ, বাছির, মোস্তফা, রফিক, আবু বকর, হারুন ডাক্তার, সজল, রুস্তুম, শাহ আলম, রবিউল, রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা একযোগে বলে ওঠেন, ‘এই তুই চোরের পক্ষ ধরে আসছিস কেন? তুই নিজেও চোর!’ এই বলে তাঁর মায়ের ওপর চড়াও হন। রুমা আক্তারের ভাই দৌড়ে গিয়ে তাঁর মাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এরপর সেই কথিত চোরকে সেখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেন শরীফের লোকজন। ছেলের খোঁজ না পেয়ে বাবা বাঙ্গরা বাজার থানায় অভিযোগ করেন। তখন বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের লোকজন রুমা আক্তারের মাকে সন্দেহ করেন যে, তিনি তাঁকে সহায়তা করেছেন। এই অভিযোগে ২ জুলাই রাতে কড়ইবাড়ী গ্রামের তারু মিয়ার বাড়িতে শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান, আনু মেম্বার, মধুমতিনের উপস্থিতিতে বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের আহ্বানে এক গোপন বৈঠক হয়। সেখানে প্রথমে তাঁর মাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পরে সন্তানেরা বিচারপ্রার্থী হবেন—এই ভয়ে তাঁদেরও শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে বেশ কিছু টাকা লেনদেন হয় এবং কিছু খুনি ভাড়া করা হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর দায়িত্ব নেন আনু মেম্বার, শরীফ, বাছির, রফিক, বাচ্চু মেম্বার, বাবু, মধু, রবিউল এবং রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা।
রুমা আক্তারের দাবি, উপদেষ্টার বাবার কথা উল্লেখ করে মামলার দায়িত্ব নেন শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান। উপদেষ্টার বাবার ‘পারমিশন আছে’ জানিয়ে শিমুল চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশটা মামলা হলেও আমি দেখব।’ আর মিডিয়া সামলানোর দায়িত্ব নেন শরীফ, বাছির, রফিক, আবু বক্কর, মোস্তফা, বিল্লাল, জহির মেম্বার। সারা রাত তাঁরা প্রস্তুতি নিয়ে সব অস্ত্র শরীফের ফুফাতো বোন, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী নাজমা বেগমের বাসায় রাখা হয়। পরদিন ৩ জুলাই সকাল ৬টায় সন্ত্রাসী কায়দায়, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ও এলাকার চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের অংশগ্রহণে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। রুমা আক্তার বলেন, ‘কী যে নির্মমভাবে ওরা আমার চোখের সামনেই প্রথমে আমার মাকে, এরপর আমার ভাই ও বোনকে মেরে ফেলে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না!’
রুমা আক্তার জানান, তাঁকেও ব্যাপকভাবে কোপানো হয়, তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই রয়েছে। শরীরের এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে আঘাত করেননি তাঁরা। তাঁরা ভেবেছিলেন, তিনি মারা গেছেন। ঘটনার সময় বারবার পুলিশকে ও ৯৯৯-এ ফোন দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ঘটনাস্থল থেকে বাঙ্গরা বাজার থানার দূরত্ব সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের পথ হলেও পুলিশ আসে পরিবারের সবার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর, অর্থাৎ প্রায় ৩ ঘণ্টা পর। এমনকি পুলিশের সামনেই তাঁকে ও তাঁর বোনের ওপর তাঁরা আঘাত করতে থাকেন।
রুমা আক্তার বলেন, তিনি ও তাঁর বোন, ভাইয়ের স্ত্রী এবং ১০ মাস বয়সী ভাইয়ের মেয়ে ও তাঁর নিহত ছোট বোনের তিনটি সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন।

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুকসানা আক্তার রুবির দ্বিতীয় সন্তান রুমা আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।
ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন রুকসানা আক্তার রুবি, তাঁর ছোট সন্তান জোনাকি আক্তার ও বড় ছেলে রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুবির স্বামী সৌদিপ্রবাসী খলিলুর রহমান, সন্তান রুমা আক্তার, রিক্তা আক্তার ও নিহত রাসেলের স্ত্রী মিম আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
রুমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা থানাধীন কড়ইবাড়ী গ্রামে কিছু আওয়ামীপন্থী দোসর এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারী তাঁর পরিবারের তিনজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
তিনি দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে গেলে উল্টো তাঁদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। কারণ, এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এক ‘প্রভাবশালী’ উপদেষ্টার বাবা মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর প্রভাব ও সাহসেই শিমুল চেয়ারম্যান ও তাঁর দোসরেরা এমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন বলে রুমা অভিযোগ করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুমা আক্তার বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন তিনি নিরুপায় ছিলেন এবং তাঁর মা ও পরিবারকে বাঁচাতে পারেননি। এই ঘটনায় তিনি নিজেও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন; তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই পড়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে তাঁর মাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরে ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবে ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রুমা শিমুল চেয়ারম্যান, কাশিমপুর গ্রামের আনু মেম্বার, বাছির, শরীফ, রানা, আবু বকর, রবিউল, জহর আমিন, বাচ্চু মেম্বার, রফিক, বিল্লাল বাবুর্চি, ভাড়াটে খুনি গোলাপ মিয়া, সাদ্দামসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার বিচার দাবি করেন।
রুমা আক্তার উপদেষ্টার বাবাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনাসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিমুল চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিরা, যাঁরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। মামলার অভিযোগ পুনর্বিন্যাস করতে হবে, কারণ, হত্যাকাণ্ডের সময় পরিবারের সদস্যরা আহত থাকায় তাঁর বোন রিক্তা আক্তার আসামিদের নাম সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেননি এবং পুলিশ কর্তৃক আসামি নির্ধারণ হওয়ায় অনেক অপরাধীর নাম বাদ পড়েছে। এগুলো নতুন করে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
রুমা আক্তার আরও বলেন, আজকের পর তাঁদের কারও কোনো ভিন্ন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম বা অন্য কোথাও দেখলে ধরে নিতে হবে যে, ওই উপদেষ্টার লোকজন জোরপূর্বক তাঁদের দিয়ে সেগুলো বলিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কয়েক দিন আগে তাঁদের বাবা জুয়েলকে উপদেষ্টার লোকজন তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ভিন্ন বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছেন।
যেভাবে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন (ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য)
রুমা আক্তারের বক্তব্য অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা ছিল তাঁর মাকে মেরে ফেলা। পরে তাঁর ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবেন ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁদের মা একটি বিল্ডিং নির্মাণ করার কারণেই মূলত স্থানীয় লোকদের প্রতিহিংসার শিকার হন।
শিমুল বিল্লাহ (চেয়ারম্যান) চেয়েছিলেন তাঁদের ভবন নির্মাণকাজ তাঁর লোকজনের মাধ্যমে করাতে। তাঁর মা এতে রাজি না হওয়ায় শিমুল বিল্লাহ আনু মেম্বারের মাধ্যমে কয়েকবার চাঁদার জন্য লোক পাঠান। চাঁদা না দিলে তাঁর মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় এবং তাঁদের বাড়ির গ্লাস ও বিদ্যুতে মিটার ভেঙে ফেলা হয়। এ নিয়ে সে সময় ডিবিতে একটি অভিযোগও দাখিল করা হয়েছিল।
শরীফ চেয়েছিলেন তাঁর সংগঠনের লোকের কাছ থেকে ইট নিতে। রাজি না হলে প্রতি গাড়ি ইট থেকে তাঁর সংগঠনকে ৫০০ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করা হয়। তাঁর মা এতেও রাজি হননি।
এ ছাড়া স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে তাঁর মা দুবার নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন এবং তিনি এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। বিএনপি-সমর্থিত হওয়ায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সন্ত্রাসীরা তাঁকে বিজয়ী হতে দেয়নি। উল্টো জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করত এবং মানহানি করার জন্য মাদকের মতো মামলাতেও তাঁর মায়ের নাম দিয়ে বদনাম করার চেষ্টা করত।
হত্যাকাণ্ডের দিন যা ঘটেছিল
হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। রবিউলের ঘরে মোবাইল চুরির কারণে একটি ছেলেকে তাঁদের বাড়ির পাশের একটি দোকানে বেদম মারধর করা হলে, ছেলেটির বাবা তাঁদের থেকে তাঁকে বাঁচাতে না পেরে রুমা আক্তারের মায়ের কাছে সাহায্য চান।
রুমা আক্তার জানান, তাঁর মা সেখানে গিয়ে বলেন, ‘চোরটা যদি মরে যায়, তাহলে তো আমরা আশপাশের সবাই ফেঁসে যাব। হয় তাকে ছেড়ে দাও, না হয় পুলিশে দিয়ে দাও।’ এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে থাকা বাচ্চু মেম্বার, শরীফ, বাছির, মোস্তফা, রফিক, আবু বকর, হারুন ডাক্তার, সজল, রুস্তুম, শাহ আলম, রবিউল, রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা একযোগে বলে ওঠেন, ‘এই তুই চোরের পক্ষ ধরে আসছিস কেন? তুই নিজেও চোর!’ এই বলে তাঁর মায়ের ওপর চড়াও হন। রুমা আক্তারের ভাই দৌড়ে গিয়ে তাঁর মাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এরপর সেই কথিত চোরকে সেখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেন শরীফের লোকজন। ছেলের খোঁজ না পেয়ে বাবা বাঙ্গরা বাজার থানায় অভিযোগ করেন। তখন বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের লোকজন রুমা আক্তারের মাকে সন্দেহ করেন যে, তিনি তাঁকে সহায়তা করেছেন। এই অভিযোগে ২ জুলাই রাতে কড়ইবাড়ী গ্রামের তারু মিয়ার বাড়িতে শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান, আনু মেম্বার, মধুমতিনের উপস্থিতিতে বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের আহ্বানে এক গোপন বৈঠক হয়। সেখানে প্রথমে তাঁর মাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পরে সন্তানেরা বিচারপ্রার্থী হবেন—এই ভয়ে তাঁদেরও শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে বেশ কিছু টাকা লেনদেন হয় এবং কিছু খুনি ভাড়া করা হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর দায়িত্ব নেন আনু মেম্বার, শরীফ, বাছির, রফিক, বাচ্চু মেম্বার, বাবু, মধু, রবিউল এবং রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা।
রুমা আক্তারের দাবি, উপদেষ্টার বাবার কথা উল্লেখ করে মামলার দায়িত্ব নেন শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান। উপদেষ্টার বাবার ‘পারমিশন আছে’ জানিয়ে শিমুল চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশটা মামলা হলেও আমি দেখব।’ আর মিডিয়া সামলানোর দায়িত্ব নেন শরীফ, বাছির, রফিক, আবু বক্কর, মোস্তফা, বিল্লাল, জহির মেম্বার। সারা রাত তাঁরা প্রস্তুতি নিয়ে সব অস্ত্র শরীফের ফুফাতো বোন, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী নাজমা বেগমের বাসায় রাখা হয়। পরদিন ৩ জুলাই সকাল ৬টায় সন্ত্রাসী কায়দায়, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ও এলাকার চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের অংশগ্রহণে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। রুমা আক্তার বলেন, ‘কী যে নির্মমভাবে ওরা আমার চোখের সামনেই প্রথমে আমার মাকে, এরপর আমার ভাই ও বোনকে মেরে ফেলে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না!’
রুমা আক্তার জানান, তাঁকেও ব্যাপকভাবে কোপানো হয়, তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই রয়েছে। শরীরের এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে আঘাত করেননি তাঁরা। তাঁরা ভেবেছিলেন, তিনি মারা গেছেন। ঘটনার সময় বারবার পুলিশকে ও ৯৯৯-এ ফোন দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ঘটনাস্থল থেকে বাঙ্গরা বাজার থানার দূরত্ব সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের পথ হলেও পুলিশ আসে পরিবারের সবার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর, অর্থাৎ প্রায় ৩ ঘণ্টা পর। এমনকি পুলিশের সামনেই তাঁকে ও তাঁর বোনের ওপর তাঁরা আঘাত করতে থাকেন।
রুমা আক্তার বলেন, তিনি ও তাঁর বোন, ভাইয়ের স্ত্রী এবং ১০ মাস বয়সী ভাইয়ের মেয়ে ও তাঁর নিহত ছোট বোনের তিনটি সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুকসানা আক্তার রুবির দ্বিতীয় সন্তান রুমা আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।
ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন রুকসানা আক্তার রুবি, তাঁর ছোট সন্তান জোনাকি আক্তার ও বড় ছেলে রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুবির স্বামী সৌদিপ্রবাসী খলিলুর রহমান, সন্তান রুমা আক্তার, রিক্তা আক্তার ও নিহত রাসেলের স্ত্রী মিম আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
রুমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা থানাধীন কড়ইবাড়ী গ্রামে কিছু আওয়ামীপন্থী দোসর এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারী তাঁর পরিবারের তিনজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
তিনি দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে গেলে উল্টো তাঁদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। কারণ, এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এক ‘প্রভাবশালী’ উপদেষ্টার বাবা মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর প্রভাব ও সাহসেই শিমুল চেয়ারম্যান ও তাঁর দোসরেরা এমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন বলে রুমা অভিযোগ করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুমা আক্তার বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন তিনি নিরুপায় ছিলেন এবং তাঁর মা ও পরিবারকে বাঁচাতে পারেননি। এই ঘটনায় তিনি নিজেও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন; তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই পড়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে তাঁর মাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরে ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবে ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রুমা শিমুল চেয়ারম্যান, কাশিমপুর গ্রামের আনু মেম্বার, বাছির, শরীফ, রানা, আবু বকর, রবিউল, জহর আমিন, বাচ্চু মেম্বার, রফিক, বিল্লাল বাবুর্চি, ভাড়াটে খুনি গোলাপ মিয়া, সাদ্দামসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার বিচার দাবি করেন।
রুমা আক্তার উপদেষ্টার বাবাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনাসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিমুল চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিরা, যাঁরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। মামলার অভিযোগ পুনর্বিন্যাস করতে হবে, কারণ, হত্যাকাণ্ডের সময় পরিবারের সদস্যরা আহত থাকায় তাঁর বোন রিক্তা আক্তার আসামিদের নাম সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেননি এবং পুলিশ কর্তৃক আসামি নির্ধারণ হওয়ায় অনেক অপরাধীর নাম বাদ পড়েছে। এগুলো নতুন করে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
রুমা আক্তার আরও বলেন, আজকের পর তাঁদের কারও কোনো ভিন্ন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম বা অন্য কোথাও দেখলে ধরে নিতে হবে যে, ওই উপদেষ্টার লোকজন জোরপূর্বক তাঁদের দিয়ে সেগুলো বলিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কয়েক দিন আগে তাঁদের বাবা জুয়েলকে উপদেষ্টার লোকজন তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ভিন্ন বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছেন।
যেভাবে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন (ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য)
রুমা আক্তারের বক্তব্য অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা ছিল তাঁর মাকে মেরে ফেলা। পরে তাঁর ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবেন ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁদের মা একটি বিল্ডিং নির্মাণ করার কারণেই মূলত স্থানীয় লোকদের প্রতিহিংসার শিকার হন।
শিমুল বিল্লাহ (চেয়ারম্যান) চেয়েছিলেন তাঁদের ভবন নির্মাণকাজ তাঁর লোকজনের মাধ্যমে করাতে। তাঁর মা এতে রাজি না হওয়ায় শিমুল বিল্লাহ আনু মেম্বারের মাধ্যমে কয়েকবার চাঁদার জন্য লোক পাঠান। চাঁদা না দিলে তাঁর মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় এবং তাঁদের বাড়ির গ্লাস ও বিদ্যুতে মিটার ভেঙে ফেলা হয়। এ নিয়ে সে সময় ডিবিতে একটি অভিযোগও দাখিল করা হয়েছিল।
শরীফ চেয়েছিলেন তাঁর সংগঠনের লোকের কাছ থেকে ইট নিতে। রাজি না হলে প্রতি গাড়ি ইট থেকে তাঁর সংগঠনকে ৫০০ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করা হয়। তাঁর মা এতেও রাজি হননি।
এ ছাড়া স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে তাঁর মা দুবার নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন এবং তিনি এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। বিএনপি-সমর্থিত হওয়ায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সন্ত্রাসীরা তাঁকে বিজয়ী হতে দেয়নি। উল্টো জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করত এবং মানহানি করার জন্য মাদকের মতো মামলাতেও তাঁর মায়ের নাম দিয়ে বদনাম করার চেষ্টা করত।
হত্যাকাণ্ডের দিন যা ঘটেছিল
হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। রবিউলের ঘরে মোবাইল চুরির কারণে একটি ছেলেকে তাঁদের বাড়ির পাশের একটি দোকানে বেদম মারধর করা হলে, ছেলেটির বাবা তাঁদের থেকে তাঁকে বাঁচাতে না পেরে রুমা আক্তারের মায়ের কাছে সাহায্য চান।
রুমা আক্তার জানান, তাঁর মা সেখানে গিয়ে বলেন, ‘চোরটা যদি মরে যায়, তাহলে তো আমরা আশপাশের সবাই ফেঁসে যাব। হয় তাকে ছেড়ে দাও, না হয় পুলিশে দিয়ে দাও।’ এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে থাকা বাচ্চু মেম্বার, শরীফ, বাছির, মোস্তফা, রফিক, আবু বকর, হারুন ডাক্তার, সজল, রুস্তুম, শাহ আলম, রবিউল, রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা একযোগে বলে ওঠেন, ‘এই তুই চোরের পক্ষ ধরে আসছিস কেন? তুই নিজেও চোর!’ এই বলে তাঁর মায়ের ওপর চড়াও হন। রুমা আক্তারের ভাই দৌড়ে গিয়ে তাঁর মাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এরপর সেই কথিত চোরকে সেখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেন শরীফের লোকজন। ছেলের খোঁজ না পেয়ে বাবা বাঙ্গরা বাজার থানায় অভিযোগ করেন। তখন বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের লোকজন রুমা আক্তারের মাকে সন্দেহ করেন যে, তিনি তাঁকে সহায়তা করেছেন। এই অভিযোগে ২ জুলাই রাতে কড়ইবাড়ী গ্রামের তারু মিয়ার বাড়িতে শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান, আনু মেম্বার, মধুমতিনের উপস্থিতিতে বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের আহ্বানে এক গোপন বৈঠক হয়। সেখানে প্রথমে তাঁর মাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পরে সন্তানেরা বিচারপ্রার্থী হবেন—এই ভয়ে তাঁদেরও শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে বেশ কিছু টাকা লেনদেন হয় এবং কিছু খুনি ভাড়া করা হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর দায়িত্ব নেন আনু মেম্বার, শরীফ, বাছির, রফিক, বাচ্চু মেম্বার, বাবু, মধু, রবিউল এবং রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা।
রুমা আক্তারের দাবি, উপদেষ্টার বাবার কথা উল্লেখ করে মামলার দায়িত্ব নেন শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান। উপদেষ্টার বাবার ‘পারমিশন আছে’ জানিয়ে শিমুল চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশটা মামলা হলেও আমি দেখব।’ আর মিডিয়া সামলানোর দায়িত্ব নেন শরীফ, বাছির, রফিক, আবু বক্কর, মোস্তফা, বিল্লাল, জহির মেম্বার। সারা রাত তাঁরা প্রস্তুতি নিয়ে সব অস্ত্র শরীফের ফুফাতো বোন, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী নাজমা বেগমের বাসায় রাখা হয়। পরদিন ৩ জুলাই সকাল ৬টায় সন্ত্রাসী কায়দায়, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ও এলাকার চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের অংশগ্রহণে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। রুমা আক্তার বলেন, ‘কী যে নির্মমভাবে ওরা আমার চোখের সামনেই প্রথমে আমার মাকে, এরপর আমার ভাই ও বোনকে মেরে ফেলে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না!’
রুমা আক্তার জানান, তাঁকেও ব্যাপকভাবে কোপানো হয়, তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই রয়েছে। শরীরের এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে আঘাত করেননি তাঁরা। তাঁরা ভেবেছিলেন, তিনি মারা গেছেন। ঘটনার সময় বারবার পুলিশকে ও ৯৯৯-এ ফোন দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ঘটনাস্থল থেকে বাঙ্গরা বাজার থানার দূরত্ব সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের পথ হলেও পুলিশ আসে পরিবারের সবার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর, অর্থাৎ প্রায় ৩ ঘণ্টা পর। এমনকি পুলিশের সামনেই তাঁকে ও তাঁর বোনের ওপর তাঁরা আঘাত করতে থাকেন।
রুমা আক্তার বলেন, তিনি ও তাঁর বোন, ভাইয়ের স্ত্রী এবং ১০ মাস বয়সী ভাইয়ের মেয়ে ও তাঁর নিহত ছোট বোনের তিনটি সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন।

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুকসানা আক্তার রুবির দ্বিতীয় সন্তান রুমা আক্তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।
ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন রুকসানা আক্তার রুবি, তাঁর ছোট সন্তান জোনাকি আক্তার ও বড় ছেলে রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে নিহত রুবির স্বামী সৌদিপ্রবাসী খলিলুর রহমান, সন্তান রুমা আক্তার, রিক্তা আক্তার ও নিহত রাসেলের স্ত্রী মিম আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
রুমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ জুলাই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা থানাধীন কড়ইবাড়ী গ্রামে কিছু আওয়ামীপন্থী দোসর এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারী তাঁর পরিবারের তিনজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
তিনি দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে গেলে উল্টো তাঁদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। কারণ, এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকেই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের এক ‘প্রভাবশালী’ উপদেষ্টার বাবা মদদ দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর প্রভাব ও সাহসেই শিমুল চেয়ারম্যান ও তাঁর দোসরেরা এমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন বলে রুমা অভিযোগ করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রুমা আক্তার বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন তিনি নিরুপায় ছিলেন এবং তাঁর মা ও পরিবারকে বাঁচাতে পারেননি। এই ঘটনায় তিনি নিজেও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন; তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই পড়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে তাঁর মাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরে ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবে ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রুমা শিমুল চেয়ারম্যান, কাশিমপুর গ্রামের আনু মেম্বার, বাছির, শরীফ, রানা, আবু বকর, রবিউল, জহর আমিন, বাচ্চু মেম্বার, রফিক, বিল্লাল বাবুর্চি, ভাড়াটে খুনি গোলাপ মিয়া, সাদ্দামসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবার বিচার দাবি করেন।
রুমা আক্তার উপদেষ্টার বাবাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনাসহ বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শিমুল চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিরা, যাঁরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। মামলার অভিযোগ পুনর্বিন্যাস করতে হবে, কারণ, হত্যাকাণ্ডের সময় পরিবারের সদস্যরা আহত থাকায় তাঁর বোন রিক্তা আক্তার আসামিদের নাম সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেননি এবং পুলিশ কর্তৃক আসামি নির্ধারণ হওয়ায় অনেক অপরাধীর নাম বাদ পড়েছে। এগুলো নতুন করে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
রুমা আক্তার আরও বলেন, আজকের পর তাঁদের কারও কোনো ভিন্ন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যম বা অন্য কোথাও দেখলে ধরে নিতে হবে যে, ওই উপদেষ্টার লোকজন জোরপূর্বক তাঁদের দিয়ে সেগুলো বলিয়ে মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কয়েক দিন আগে তাঁদের বাবা জুয়েলকে উপদেষ্টার লোকজন তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ভিন্ন বক্তব্য দিতে বাধ্য করেছেন।
যেভাবে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন (ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য)
রুমা আক্তারের বক্তব্য অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনা ছিল তাঁর মাকে মেরে ফেলা। পরে তাঁর ছেলেমেয়েরা বিচারপ্রার্থী হবেন ভেবে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁদের মা একটি বিল্ডিং নির্মাণ করার কারণেই মূলত স্থানীয় লোকদের প্রতিহিংসার শিকার হন।
শিমুল বিল্লাহ (চেয়ারম্যান) চেয়েছিলেন তাঁদের ভবন নির্মাণকাজ তাঁর লোকজনের মাধ্যমে করাতে। তাঁর মা এতে রাজি না হওয়ায় শিমুল বিল্লাহ আনু মেম্বারের মাধ্যমে কয়েকবার চাঁদার জন্য লোক পাঠান। চাঁদা না দিলে তাঁর মাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় এবং তাঁদের বাড়ির গ্লাস ও বিদ্যুতে মিটার ভেঙে ফেলা হয়। এ নিয়ে সে সময় ডিবিতে একটি অভিযোগও দাখিল করা হয়েছিল।
শরীফ চেয়েছিলেন তাঁর সংগঠনের লোকের কাছ থেকে ইট নিতে। রাজি না হলে প্রতি গাড়ি ইট থেকে তাঁর সংগঠনকে ৫০০ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করা হয়। তাঁর মা এতেও রাজি হননি।
এ ছাড়া স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে তাঁর মা দুবার নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন এবং তিনি এলাকায় জনপ্রিয় ছিলেন। বিএনপি-সমর্থিত হওয়ায় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সন্ত্রাসীরা তাঁকে বিজয়ী হতে দেয়নি। উল্টো জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করত এবং মানহানি করার জন্য মাদকের মতো মামলাতেও তাঁর মায়ের নাম দিয়ে বদনাম করার চেষ্টা করত।
হত্যাকাণ্ডের দিন যা ঘটেছিল
হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। রবিউলের ঘরে মোবাইল চুরির কারণে একটি ছেলেকে তাঁদের বাড়ির পাশের একটি দোকানে বেদম মারধর করা হলে, ছেলেটির বাবা তাঁদের থেকে তাঁকে বাঁচাতে না পেরে রুমা আক্তারের মায়ের কাছে সাহায্য চান।
রুমা আক্তার জানান, তাঁর মা সেখানে গিয়ে বলেন, ‘চোরটা যদি মরে যায়, তাহলে তো আমরা আশপাশের সবাই ফেঁসে যাব। হয় তাকে ছেড়ে দাও, না হয় পুলিশে দিয়ে দাও।’ এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে থাকা বাচ্চু মেম্বার, শরীফ, বাছির, মোস্তফা, রফিক, আবু বকর, হারুন ডাক্তার, সজল, রুস্তুম, শাহ আলম, রবিউল, রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা একযোগে বলে ওঠেন, ‘এই তুই চোরের পক্ষ ধরে আসছিস কেন? তুই নিজেও চোর!’ এই বলে তাঁর মায়ের ওপর চড়াও হন। রুমা আক্তারের ভাই দৌড়ে গিয়ে তাঁর মাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
এরপর সেই কথিত চোরকে সেখান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেন শরীফের লোকজন। ছেলের খোঁজ না পেয়ে বাবা বাঙ্গরা বাজার থানায় অভিযোগ করেন। তখন বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের লোকজন রুমা আক্তারের মাকে সন্দেহ করেন যে, তিনি তাঁকে সহায়তা করেছেন। এই অভিযোগে ২ জুলাই রাতে কড়ইবাড়ী গ্রামের তারু মিয়ার বাড়িতে শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান, আনু মেম্বার, মধুমতিনের উপস্থিতিতে বাচ্চু মেম্বার, রবিউল ও শরীফের আহ্বানে এক গোপন বৈঠক হয়। সেখানে প্রথমে তাঁর মাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পরে সন্তানেরা বিচারপ্রার্থী হবেন—এই ভয়ে তাঁদেরও শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এখানে বেশ কিছু টাকা লেনদেন হয় এবং কিছু খুনি ভাড়া করা হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর দায়িত্ব নেন আনু মেম্বার, শরীফ, বাছির, রফিক, বাচ্চু মেম্বার, বাবু, মধু, রবিউল এবং রবিউলের ছেলে ও ভাতিজারা।
রুমা আক্তারের দাবি, উপদেষ্টার বাবার কথা উল্লেখ করে মামলার দায়িত্ব নেন শিমুল বিল্লাহ চেয়ারম্যান। উপদেষ্টার বাবার ‘পারমিশন আছে’ জানিয়ে শিমুল চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশটা মামলা হলেও আমি দেখব।’ আর মিডিয়া সামলানোর দায়িত্ব নেন শরীফ, বাছির, রফিক, আবু বক্কর, মোস্তফা, বিল্লাল, জহির মেম্বার। সারা রাত তাঁরা প্রস্তুতি নিয়ে সব অস্ত্র শরীফের ফুফাতো বোন, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী নাজমা বেগমের বাসায় রাখা হয়। পরদিন ৩ জুলাই সকাল ৬টায় সন্ত্রাসী কায়দায়, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী ও এলাকার চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের অংশগ্রহণে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। রুমা আক্তার বলেন, ‘কী যে নির্মমভাবে ওরা আমার চোখের সামনেই প্রথমে আমার মাকে, এরপর আমার ভাই ও বোনকে মেরে ফেলে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না!’
রুমা আক্তার জানান, তাঁকেও ব্যাপকভাবে কোপানো হয়, তাঁর মাথায় ৭২টি সেলাই রয়েছে। শরীরের এমন কোনো স্থান নেই, যেখানে আঘাত করেননি তাঁরা। তাঁরা ভেবেছিলেন, তিনি মারা গেছেন। ঘটনার সময় বারবার পুলিশকে ও ৯৯৯-এ ফোন দিলেও কোনো সাড়া মেলেনি। ঘটনাস্থল থেকে বাঙ্গরা বাজার থানার দূরত্ব সর্বোচ্চ ১০ মিনিটের পথ হলেও পুলিশ আসে পরিবারের সবার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর, অর্থাৎ প্রায় ৩ ঘণ্টা পর। এমনকি পুলিশের সামনেই তাঁকে ও তাঁর বোনের ওপর তাঁরা আঘাত করতে থাকেন।
রুমা আক্তার বলেন, তিনি ও তাঁর বোন, ভাইয়ের স্ত্রী এবং ১০ মাস বয়সী ভাইয়ের মেয়ে ও তাঁর নিহত ছোট বোনের তিনটি সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন।

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
১ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
২ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।
পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
রৌমারী থানার উপপরিদর্শক শাহনেওয়াজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।
পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পাশে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থেকে দুই শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
রৌমারী থানার উপপরিদর্শক শাহনেওয়াজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে
০৪ আগস্ট ২০২৫
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
১ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
২ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে
০৪ আগস্ট ২০২৫
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
২ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেগাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।
দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’
মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’
গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’
মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।
দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’
মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’
গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’
মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে
০৪ আগস্ট ২০২৫
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
১ ঘণ্টা আগে
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে
৩ ঘণ্টা আগেশ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’
মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’
কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।
কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’
মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’
কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

কুমিল্লার মুরাদনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে (মা, ছেলে ও মেয়ে) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার বাবার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এই অভিযোগ করে
০৪ আগস্ট ২০২৫
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগে
ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।
১ ঘণ্টা আগে
জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর
২ ঘণ্টা আগে