Ajker Patrika

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে ১৭ দিনের শিশুকে নিয়ে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮: ৪৩
বাবার লাশ বাড়িতে রেখে ১৭ দিনের শিশুকে নিয়ে কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী

জানাজার জন্য নিয়ে যাওয়া হল বাবার মরদেহ। আর এদিকে জানাজার আগেই ১৭ দিনের শিশুকে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে রওনা হলেন পরীক্ষার্থী। কেন্দ্রের বাইরে আত্মীয়ের কাছে শিশুটিকে রেখে বাবা হারা নাজমা বুক ভরা বেদনা ও কান্না নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়।

আজ শনিবার নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় গুজিরকোনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা দেন নাজমা বেগম। তিনি উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের নাগেরগাতী গ্রামের নবারুন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

পরীক্ষা কেন্দ্রে সহপাঠীদের নাজমা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, তার বাবা আর নেই। বাবা আর কখনোই তাকে মা বলে ডাকবে না। বাবার এভাবে চলে যাওয়া তাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে।

চন্দ্রিগড় ইউনিয়নে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ফরিদ মিয়া জানান, গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নাজমার বাবা ও বনগাঁও গ্রামের নিবাসী নুরুল হক মীর (৫৬) স্ট্রোক করে মারা যান। সকাল ১০টার দিকে মরদেহ জানাজার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এর আগেই মেয়েটি ১৭ দিনের শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে যায়। জানাজা শেষে বেলা ১১টার দিকে মৃতের দাফন সম্পন্ন হয়।

মো. ফরিদ মিয়া আরও জানান, গত এক বছর আগে পার্শ্ববর্তী উপজেলা কলমাকান্দার নাজিরপুর ইউনিয়নে বড়ইউন্দে এলাকায় বিয়ে হয় নাজমার। তার স্বামীর বড়ইউন্দ বাজারে চা-স্টলের দোকান রয়েছে।

নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অশোক কুমার ভাদুড়ি বলেন, ‘আমার স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল নাজমা। মেধাবী এই ছাত্রী বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে হারানো কষ্ট বুকে চেপে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।’

গুজিরকোনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুধন কুমার জানান, দুর্গাপুরের মূল পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব পালনে আসার আগের মেয়েটিকে কান্না জড়িত চোখে পরীক্ষার কেন্দ্রে দেখে এসেছি। বাবার জানাজার আগেই মেয়েটি পরীক্ষা দিতে এসেছে। ১৭ দিনের শিশুকে কোলে নিয়ে তার এক আত্মীয় কেন্দ্রের বাইরে ছিল।

অন্যান্য খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত