Ajker Patrika

পাওনাদারের ভয়ে লাশ ফেলে পালাল স্ত্রী–সন্তানেরা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দাফন

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
পাওনাদারের ভয়ে লাশ ফেলে পালাল স্ত্রী–সন্তানেরা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দাফন

পাওনাদারদের ভয়ে লাশ রেখে স্বজনেরা পালিয়ে যাওয়ার পাঁচ ঘণ্টা পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুলশিক্ষকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বুধবার সকালে শরণখোলায় আব্দুল আজিজ মৃধা (৭০) নামে ওই ব্যক্তির জানাজা নামাজ ও দাফন হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় তিনি মারা যান।

আজ সকাল ৯টার দিকে উপজেলা সদর রায়েন্দা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ চত্বরে আব্দুল আজিজের জানাজা নামাজের আয়োজন করা হয়। এ সময় কয়েকজন পাওনাদার এসে জানাজায় বাধা দিলে বিপত্তি ঘটে। একপর্যায়ে আব্দুল আজিজের দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানেরা লাশ ফেলে পালিয়ে যান। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা তাঁর লাশ পড়ে ছিল উপজেলা সদর রায়েন্দা কেন্দ্রীয় মসজিদের অজুখানার পাশে। পরে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিবারের লোকদের খুঁজে এনে দুপুর আড়াইটার দিকে জানাজা সম্পন্ন করে লাশ তাঁদের কাছে দেওয়া হয়।

শরণখোলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারের লোক ও পাওনাদারদের সঙ্গে আলোচনা করে লাশের জানাজা শেষে আজিজ মাষ্টারের প্রথম সংসারের বড় ছেলে মতিয়ার রহমানের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আসর নামাজের পর তাফালবাড়ি কলেজ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শরণখোলার ইউএনও মো. নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনাটির খবর পেয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সমাধান করে লাশের জানাজা ও দাফনের জন্য বলা হয়। পাওনাদারেরা যাতে তাঁদের টাকা ফেরত পেতে পারেন সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ 

উপজেলার দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের আব্দুল আজিজ মৃধা তাফালবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে অবসর নেন। তাঁর দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজার পাঁচরাস্তা এলাকায়। 

আব্দুর আজিজের প্রথম সংসারের বড় ছেলে মতিয়ার রহমান বলেন, ‘বাবা দ্বিতীয় স্ত্রী ও সে পক্ষের সন্তানদের চাপে আমাদের কোনো খোঁজ নিতেন না। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর কৌশলে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তাঁর সন্তানেরা। কিন্তু বাবার কোনো দেনা তারা শোধ করেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত