Ajker Patrika

নারী ভক্তের সঙ্গে পিরের আপত্তিকর ভিডিওর অভিযোগ, বিক্ষোভের মুখে ওরস বন্ধ

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
নারী ভক্তের সঙ্গে পিরের আপত্তিকর ভিডিওর অভিযোগ, বিক্ষোভের মুখে ওরস বন্ধ

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া গ্রামে আব্দুছ ছমেদ ফকিরের মাজারে বাৎসরিক ওরস ছিল আজ শুক্রবার। এর মধ্যে একটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেটিতে পুরুষটি মাজারের খাদেম ও পির আব্দুছ ছমেদ ফকিরের (মৃত) ছেলে মাইজ উদ্দিন শাহ চিশতি ওয়াইছি বলে দাবি করা হচ্ছে। এর জেরে জনরোষ থেকে বাঁচতে ওরস স্থগিত করেছে মাজার কর্তৃপক্ষ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে দুটি অডিও ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে—   স্থানীয়রা দাবি করছেন সেটি, আশেক-মাশুকের নামে নারী ভক্তদের সঙ্গে মাইজ উদ্দিনের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রমাণ।

আজ জুমার নামাজের পর স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মাজারের ওরস বন্ধের দাবি জানায়। এ সংবাদ পেয়ে জনরোষ থেকে রেহাই পেতে মাইজ উদ্দিন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারকে (এসপি) জানান। এরপর নিজেই ওরস বন্ধের ঘোষণা দেন। দুপুরে কিশোরগঞ্জের এসপি মো. রাসেল শেখের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোসেনপুর সার্কেল) মো. আল আমিন ও কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শাহাদাত হোসেন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এলাকাবাসী ও মাজারের ভক্তদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সভায় মাইজ উদ্দিন ওরস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।

মসুয়া গ্রামের মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘কথিত পির মাইজ উদ্দিন একজন নারী লোভী। তিনি তাঁর নারী ভক্তদের সঙ্গে আশেক-মাশুকের নামে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এ বিষয়ে অনেক নারী প্রকাশ্যে বলেছেন এবং ধর্ষণের শিকার নারীদের অডিও ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। আমরা ভণ্ড পিরের মাজার উচ্ছেদ ও মাইজ উদ্দিনের শাস্তি চাই।’

আব্দুছ ছমেদ ফকিরের মাজার।অভিযোগের ব্যাপারে মাজারের খাদেম ও পির মাইজ উদ্দিন শাহ বলেন, ‘আমার মৃত বাবার মাজারে শুক্রবার ছিল বাৎসরিক ওরস মাহফিল। ওরসের তারিখ ঘনিয়ে আসলে এলাকার কিছু লোক ওরস বন্ধের জন্য মসজিদের সামনে ওয়াজ মাহফিলের ঘোষণা করেন। আমার নামে অপবাদ ছড়ানো ও জনরোষ তৈরির জন্য কিছু নারীকে দিয়ে আমার নামে মিথ্যা কথা রেকর্ড করে এলাকায় ছড়িয়ে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এসব ঘটনা। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বাৎসরিক ওরস বাতিল করেছি।’

কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মাইজ উদ্দিন সাহেব তাঁর পূর্ব ঘোষিত বাৎসরিক ওরস বাতিল করেছেন। এলাকার শান্তি ফিরিয়ে আনতে তাঁর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হোসেনপুর সার্কেল) মো. আল আমিন বলেন, ‘পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে মাইজ উদ্দিন পির সাহেব তাঁর ওরস বাতিল করেছেন। এ বিষয়ে এলাকায় কোনো পক্ষ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে আমরা কাউকে ছাড় দেব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত