মাইলস্টোনের আঙিনা
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আঙিনার বাতাস গতকাল দুপুর থেকে ভারী হয়ে ওঠে কান্নায়। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি হায়দার আলী ভবনের প্রধান ফটকে পড়ে বিধ্বস্ত হতেই বেমালুম পাল্টে যায় শিক্ষাঙ্গনের প্রাণচঞ্চল পরিবেশ। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে বিমূঢ় হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীসহ সবাই। শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি, আর্তনাদ।
শত শত শিক্ষার্থী, অপেক্ষমাণ অভিভাবক এবং স্কুলের কর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় বিভ্রান্তি। অভিভাবকেরা আকুল হয়ে নিজ নিজ সন্তানকে খুঁজতে থাকেন। কেউ পাচ্ছিলেন, কেউ পাচ্ছিলেন না। শিক্ষার্থীসহ অনেকে রক্তাক্ত, পোড়া পোশাক ও শরীরে ছুটছে। কেউ বসে কাতরাচ্ছে। আবার কারও নিথর দেহ পড়ে আছে মাটিতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় এটাই ছিল ঘটনার ঠিক পরের মুহূর্তে স্কুল প্রাঙ্গণের চিত্র।
এই প্রতিবেদক বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কিছু সময় পরই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে পৌঁছে দেখতে পান মর্মস্পর্শী দৃশ্যগুলো। স্কুলের মাঠ ও মূল ফটক ছাড়িয়ে আশপাশের গলিগুলোর পরিবেশ অভিভাবক আর স্বজনদের কান্না আর হাহাকারে ভারী হয়ে উঠেছে। সবার চোখেমুখে একটাই প্রশ্ন—‘আমার সন্তান কোথায়?’
‘ছেলেটাকে দেখতে চাই’
চোখে পানি, মুখে অস্ফুট কথা—পাগলপ্রায় আয়েশা বেগম সন্তানের খোঁজ করছিলেন। তাঁর ছেলে সজীব হোসেন পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। স্কুলে ছুটে এসে ছেলের খোঁজ পাচ্ছিলেন না। মূল ফটকের সামনে বসে বারবার ছেলের নাম বলছিলেন তিনি। আয়েশা বেগম বলছিলেন, ‘ছেলেটাকে শুধু দেখতে চাই একবার, বাঁচল কি না জানি না, কিন্তু চোখের দেখা দেখতে চাই...।’
‘আইডি ৫১৭১’-এর মায়ের আর্তি
মিরপুর থেকে ছুটে এসেছেন শিরিন সুলতানা। তাঁর ছেলে সাজ্জাদ সাদি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। শিরিন চিৎকার করে বলছিলেন, ‘ওর আইডি নম্বর ৫১৭১। কোনো তালিকায় কি নাম আছে? কেউ কি দেখেছে আমার ছেলেকে?’ বলতে বলতে ওড়না দিয়ে চোখ মুছছিলেন উদ্বিগ্ন মা। স্কুল গেটের বাইরে তখন তাঁর মতো আরও শত শত অভিভাবক নিজ নিজ প্রিয়জনের খোঁজে দাঁড়িয়ে।
তিনজনের খোঁজে আহাজারি
মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন তাজ দীঘি হোসেন। কান্না থামছিল না তাঁর। কাতর কণ্ঠে বলছিলেন, ‘আমার দুই ভাই কামরুল আর আরিফ, সাথে ভাগনে—ওরা তিনজনেই স্কুলে ছিল। কোথাও পাচ্ছি না তাদের। কেউ বলে হাসপাতালে, কেউ বলে মর্গে। আমি কোথায় যাব?’ তাজের এই প্রশ্নের উত্তর ছিল না কারও কাছে।
ছোট ছেলেটা নেই
লাকি আক্তার এসে বড় ছেলেকে খুঁজে পেয়েছেন আহত অবস্থায়। কিন্তু ছোটটি তখনো নিখোঁজ ছিল। লাকির মুখে কথা নেই। চোখের দৃষ্টি স্থির। শুধু ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন।
‘চেনাই যাচ্ছে না কাউকে’
কাঁপা কাঁপা গলায় ফেরদৌসী বেগম বললেন, ‘আমার মেয়েটা এখনো নিখোঁজ। আহতদের কেউ কেউ বের হচ্ছে; কিন্তু অনেকের মুখসহ শরীরে পোড়া। এই অবস্থায় কাউকে তো চিনতে পারছি না। মেয়ের ছবি দেখাচ্ছি। কিন্তু ছোটাছুটির মধ্যে কেউ কিছু বলতে পারছে না।’
নিরলসভাবে উদ্ধারকাজ
সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, র্যাব, বিজিবি, রেড ক্রিসেন্ট এবং উত্তরার বিভিন্ন থানা-পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। স্বজনদের স্বস্তি দিতে জীবিত কিংবা মৃত—যেভাবেই হোক, নিখোঁজদের খুঁজে বের করাই ছিল তাঁদের প্রধান উদ্দেশ্য।
মাইলস্টোন স্কুলের প্রতিটি ইট যেন এক মর্মন্তুদ ঘটনার সাক্ষী হলো গতকাল। ২১ জুলাই দুর্ঘটনার আগপর্যন্ত হাসি-গল্পে প্রাঙ্গণ আলো করা কত শিক্ষার্থীর পা আর কখনোই পড়বে না এই প্রাঙ্গণে! এই করুণ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকবে বাকিরা। তাদেরও অনেকের হয়তো কাছ ঘেঁষে ফিরে গেছে মৃত্যু।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আঙিনার বাতাস গতকাল দুপুর থেকে ভারী হয়ে ওঠে কান্নায়। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি হায়দার আলী ভবনের প্রধান ফটকে পড়ে বিধ্বস্ত হতেই বেমালুম পাল্টে যায় শিক্ষাঙ্গনের প্রাণচঞ্চল পরিবেশ। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে বিমূঢ় হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীসহ সবাই। শুরু হয় দৌড়াদৌড়ি, আর্তনাদ।
শত শত শিক্ষার্থী, অপেক্ষমাণ অভিভাবক এবং স্কুলের কর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় বিভ্রান্তি। অভিভাবকেরা আকুল হয়ে নিজ নিজ সন্তানকে খুঁজতে থাকেন। কেউ পাচ্ছিলেন, কেউ পাচ্ছিলেন না। শিক্ষার্থীসহ অনেকে রক্তাক্ত, পোড়া পোশাক ও শরীরে ছুটছে। কেউ বসে কাতরাচ্ছে। আবার কারও নিথর দেহ পড়ে আছে মাটিতে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় এটাই ছিল ঘটনার ঠিক পরের মুহূর্তে স্কুল প্রাঙ্গণের চিত্র।
এই প্রতিবেদক বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কিছু সময় পরই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে পৌঁছে দেখতে পান মর্মস্পর্শী দৃশ্যগুলো। স্কুলের মাঠ ও মূল ফটক ছাড়িয়ে আশপাশের গলিগুলোর পরিবেশ অভিভাবক আর স্বজনদের কান্না আর হাহাকারে ভারী হয়ে উঠেছে। সবার চোখেমুখে একটাই প্রশ্ন—‘আমার সন্তান কোথায়?’
‘ছেলেটাকে দেখতে চাই’
চোখে পানি, মুখে অস্ফুট কথা—পাগলপ্রায় আয়েশা বেগম সন্তানের খোঁজ করছিলেন। তাঁর ছেলে সজীব হোসেন পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। স্কুলে ছুটে এসে ছেলের খোঁজ পাচ্ছিলেন না। মূল ফটকের সামনে বসে বারবার ছেলের নাম বলছিলেন তিনি। আয়েশা বেগম বলছিলেন, ‘ছেলেটাকে শুধু দেখতে চাই একবার, বাঁচল কি না জানি না, কিন্তু চোখের দেখা দেখতে চাই...।’
‘আইডি ৫১৭১’-এর মায়ের আর্তি
মিরপুর থেকে ছুটে এসেছেন শিরিন সুলতানা। তাঁর ছেলে সাজ্জাদ সাদি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। শিরিন চিৎকার করে বলছিলেন, ‘ওর আইডি নম্বর ৫১৭১। কোনো তালিকায় কি নাম আছে? কেউ কি দেখেছে আমার ছেলেকে?’ বলতে বলতে ওড়না দিয়ে চোখ মুছছিলেন উদ্বিগ্ন মা। স্কুল গেটের বাইরে তখন তাঁর মতো আরও শত শত অভিভাবক নিজ নিজ প্রিয়জনের খোঁজে দাঁড়িয়ে।
তিনজনের খোঁজে আহাজারি
মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন তাজ দীঘি হোসেন। কান্না থামছিল না তাঁর। কাতর কণ্ঠে বলছিলেন, ‘আমার দুই ভাই কামরুল আর আরিফ, সাথে ভাগনে—ওরা তিনজনেই স্কুলে ছিল। কোথাও পাচ্ছি না তাদের। কেউ বলে হাসপাতালে, কেউ বলে মর্গে। আমি কোথায় যাব?’ তাজের এই প্রশ্নের উত্তর ছিল না কারও কাছে।
ছোট ছেলেটা নেই
লাকি আক্তার এসে বড় ছেলেকে খুঁজে পেয়েছেন আহত অবস্থায়। কিন্তু ছোটটি তখনো নিখোঁজ ছিল। লাকির মুখে কথা নেই। চোখের দৃষ্টি স্থির। শুধু ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন।
‘চেনাই যাচ্ছে না কাউকে’
কাঁপা কাঁপা গলায় ফেরদৌসী বেগম বললেন, ‘আমার মেয়েটা এখনো নিখোঁজ। আহতদের কেউ কেউ বের হচ্ছে; কিন্তু অনেকের মুখসহ শরীরে পোড়া। এই অবস্থায় কাউকে তো চিনতে পারছি না। মেয়ের ছবি দেখাচ্ছি। কিন্তু ছোটাছুটির মধ্যে কেউ কিছু বলতে পারছে না।’
নিরলসভাবে উদ্ধারকাজ
সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, র্যাব, বিজিবি, রেড ক্রিসেন্ট এবং উত্তরার বিভিন্ন থানা-পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন। স্বজনদের স্বস্তি দিতে জীবিত কিংবা মৃত—যেভাবেই হোক, নিখোঁজদের খুঁজে বের করাই ছিল তাঁদের প্রধান উদ্দেশ্য।
মাইলস্টোন স্কুলের প্রতিটি ইট যেন এক মর্মন্তুদ ঘটনার সাক্ষী হলো গতকাল। ২১ জুলাই দুর্ঘটনার আগপর্যন্ত হাসি-গল্পে প্রাঙ্গণ আলো করা কত শিক্ষার্থীর পা আর কখনোই পড়বে না এই প্রাঙ্গণে! এই করুণ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকবে বাকিরা। তাদেরও অনেকের হয়তো কাছ ঘেঁষে ফিরে গেছে মৃত্যু।
ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে শনাক্ত ৮ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ ও আহত আরও দেড় শতাধিক চিকিৎসাধীন আছে।
২ ঘণ্টা আগেনিম্নচাপ কেটে গেছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকলেও থেমেছে ভারী বর্ষণ। তবে উজানে ভারতের ত্রিপুরায় ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এতে বাড়ছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি। উজানের সেই ঢলে আবার ডুবছে ফেনী। একাধিক ভাঙা বাঁধ দিয়ে গতকাল সোমবার সকাল থেকেই লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
৩ ঘণ্টা আগে‘মাদ্রাসা থেকে ফিরলেই বাবা কোলে তুলে নিত, আদর করত, টাকা দিত। রাতে বাবার গা ঘেঁষে ঘুমাতাম। এখন আর কেউ আমাকে বাবার মতো আদর করে না। বাবাকে অনেক মিস করি।’ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কথাগুলো বলছিল সাত বছরের তাইবা খাতুন। ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন তাঁর বাবা ইয়াহিয়া আলী।
৩ ঘণ্টা আগেভাগাড় উঁচু হয়ে গেছে পাহাড়ের সমান। সেখানে আর বর্জ্য ফেলার জায়গা নেই। ফলে রাজশাহী শহরের শত শত টন বর্জ্য প্রতিদিনই এলোমেলোভাবে ফেলা হচ্ছে সড়কের পাশে, কৃষিজমিতে এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনেও। এসব বর্জ্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে