Ajker Patrika

‘গাজীপুরে বেইমানদের কারণে নৌকা হেরেছে’

গাজীপুর প্রতিনিধি
‘গাজীপুরে বেইমানদের কারণে নৌকা হেরেছে’

সদ্য শেষ হওয়া গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা-কর্মীর বেইমানির কারণে দলীয় প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির তৃণমূল নেতারা। আজ শুক্রবার বিকেলে নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতারা এমন অভিযোগ করেন।

গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বাসন থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজন করা হয় নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভা। বেলা ৩টায় শুরু হওয়া সভায় বাসন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারি সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত পরাজিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘যারা যারা এই নির্বাচনে দ্বিমুখী আচরণ করেছে, তাঁদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের দুভাবে বিচার করতে হবে। যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে আর যারা বলেছে একটা করেছে অন্যটা। আমরা যেহেতু দল করি তাই দলের একটা বিধিবিধান আছে, গঠনতন্ত্র আছে। যারা অপরাধ করেছে ও আর যারা বেইমানি করেছে দুটি অপরাধই এক না। তাই অপরাধের মাত্রা অনুসারে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকারের একটা বিধান আছে, সব সিটি করপোরেশনে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থাকে। সেই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোথাও জনপ্রতিনিধি আছেন, কোথাও সরকারি কর্মচারী আছেন। আজমত উল্লা খানের স্থানীয় সরকার পরিচালনায় ব্যাপক অভিজ্ঞতা আছে। যার এত দক্ষতা, যার এত সততা আছে তাঁকে যদি গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে নগরীতে উন্নয়ন করতে পারবেন। এবার যিনি মেয়র হয়েছেন তিনি কেমন করবেন জানি না, মানুষের ধারণা তাঁর যে যোগ্যতা তাঁর যে অভিজ্ঞতা তাতে মানুষের যে প্রত্যাশা পূরণ নাও হতে পারে।’

নির্বাচনের আগে গাজীপুরে সবস্থানে আওয়ামী লীগের অবস্থান ইতিবাচক ছিল বলে জানান আজমত উল্লা খান। তিনি বলেন, ‘যেখানে গিয়েছি, সেখানেই আওয়ামী লীগ। কিন্তু নির্বাচনের দিন দেখা গেল অন্য চেহারা। তাই আমাদের এখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। দলের কতিপয় লোকের কারণে আমাদের হার মানতে হয়েছে।’

সভায় অংশ নিয়ে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা হাজী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক দলের বিরুদ্ধে বেইমানি করেছেন। তাঁরা দলের পরিচয়ে গোপনে ঘড়ির নির্বাচন করেছেন। আমি তাঁদের ধিক্কার জানাই, তাঁরা নর্দমার কিট। দলের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন। সামনে জাতীয় নির্বাচন তাই দলের বেইমানদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে।’

বাসন থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি দবির উদ্দিন বলেন, ‘১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিগত সময়ের থেকেই প্রকৃত নেতাদেরকে কেন্দ্র কমিটিতে রাখা হয়নি। আমাকে নির্বাচনের আগের দিন সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অথচ সমন্বয় করে নির্বাচনের আরও আগে থেকে এখানে কাজ করলে আমাদের ফল আরও ভালো হতে পারত। দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ নেতারা কাজে গাফিলতি করেছেন।’

বাসন থানা এলাকার কৃষক লীগ নেতা জহির উদ্দিন বলেন, ‘সিটি করপোরেশনে মাস্টার রোলে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা সরকারের বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেছে। সিটি করপোরেশনের ৭৬ জন সচিব বিগত সময়ে জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে নানা ধরনের সহযোগিতা নিয়েছেন, তাঁরা এই নির্বাচনে ঘড়ির পক্ষে কাজ করেছেন। আমরা এসব বিষয়ে নজরদারি করতে পারিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত