Ajker Patrika

আউটার স্টেডিয়ামে বিজয়মেলা আর নয়: ডিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আউটার স্টেডিয়ামে বিজয়মেলা আর নয়: ডিসি

দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি আউটার স্টেডিয়ামে বিজয়মেলা ও রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে হয় বাণিজ্যমেলা। এ ছাড়া বিভিন্ন খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় ছোট-বড় আরও অনেক আয়োজন। তবে, এসব মাঠে আর মেলার আয়োজন করতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। আজ বৃহস্পতিবার নগরীর আউটার স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে সিজেকেএস সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘আউটার স্টেডিয়ামের যে মাঠ রয়েছে সেটি আমরা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করেছি। মাঠের যে অংশটুকু রয়েছে সেটি লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেখানে লাল খুঁটি দিয়ে দেব। মাঠের ভেতরে যদি কোনো স্থাপনা থাকে সেসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এই জন্য দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে। 

লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া জায়গা ধরে দেখা যায়, সিটি করপোরেশন থেকে যারা ইজারা পেয়েছেন তারা সবাই বাড়তি জায়গা দখল করে রেখেছেন। সেই বাড়তি জায়গাগুলো ভেঙে দেওয়া হবে।’ 

ডিসি বলেন, ‘কারা দখলে রেখেছে তাদের নাম এখনই বলছি না। তবে অনেকেই বাড়তি জায়গা দখলে রেখেছে। এ ছাড়া ইজারা ছাড়া ফুটপাত দখল করে চায়ের দোকানগুলোও উচ্ছেদ করা হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মাঠের মধ্যে যেসব স্থাপনা থাকবে সবগুলোই অপসারণ করা হবে। চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ১৯১টি ইউনিয়ন রয়েছে। এক বছরের মধ্যে ১৯১টি খেলার মাঠ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ 

সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘শুধু ক্রিকেট নয়, সব খেলায় গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় তৈরি করতে চট্টগ্রামের খেলার মাঠ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পলোগ্রাউন্ড মাঠ নিয়ে কাজ করছি, সারা বছর যাতে খেলোয়াড়রা প্রশিক্ষণ নিতে পারে। আউটার স্টেডিয়ামের সীমানা নির্ধারণ করে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে। এরপর সীমানা প্রাচীর দেওয়া হবে। ওয়াকওয়ের সিস্টেম থাকবে, যাতে বয়স্ক মা-বাবারা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে জাতীয় মানের খেলোয়াড় তৈরি করতে হলে ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ আলাদা আলাদা পাঁচটি অনুশীলন মাঠ প্রয়োজন। বিশেষায়িত মাঠ না হলে ক্রীড়াঙ্গনে প্রকৃত সুফল প্রাপ্তি দুরূহ হয়ে উঠবে। জেলা প্রশাসক এই বিশেষায়িত মাঠের গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন। আশা করছি, খুব দ্রুতই চট্টগ্রাম ফুটবল-হকি ও নারীদের জন্য পৃথক মাঠ পাবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর দিয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।’ 

এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের স্মরণে ১৯৮৯ সালে বন্দর নগরীতে প্রথম এ মেলার সূচনা হয়। এই উদ্যোগের পর এখন সারা দেশে মর্যাদাপূর্ণভাবে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ডিসি সাহেবের বক্তব্য আমরা জেনেছি। এই বিষয়ে কী করা যায়, আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব।’ 

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সাল থেকে চট্টগ্রাম আউটার স্টেডিয়ামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এ বছর ৩৪ বছরে পা রাখে। প্রতি বছর একই সময়ে একই স্থানে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের এই বিজয় মেলা ঘিরে আলাদা উচ্ছ্বাস থাকে নগরবাসীর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত