Ajker Patrika

চবিতে সিন্ডিকেট মনোনীত সদস্য ছাড়াই বসল শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ২২: ৫১
Thumbnail image

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সিন্ডিকেট মনোনীত সদস্য ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড। শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের চার সদস্যের মধ্যে দুজনই উপস্থিত ছিলেন না। তবু নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করেন উপাচার্য।

আজ রোববার দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৬৮ জন নিয়োগপ্রার্থীর মধ্যে ৪০ জন অংশ নেন। বোর্ড শুরু হওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়ে বোর্ডে না বসার সিদ্ধান্ত জানান এক সদস্য। 

জানা গেছে, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড চার সদস্য নিয়ে গঠিত। এতে পদাধিকারবলে উপাচার্য সভাপতি ও বিভাগের সভাপতি সদস্য। এ নিয়োগ বোর্ডে সিন্ডিকেট মনোনীত দুজন সদস্য হলেন নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ। তবে এই সভায় এই দুই সদস্যই অনুপস্থিত ছিলেন। 

এদিকে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে রোববার সকালে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছেন নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক ও বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া। তিনি চিঠিতে লেখেন, ’নাট্যকলা বিভাগের তিনটি (৩) প্রভাষক (অস্থায়ী) পদের জন্য নির্বাচনী বোর্ডে নাট্যকলা বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ বা সিদ্ধান্তকে রেজিস্ট্রার অফিস কর্তৃক অগ্রাহ্য করার কারণে, নাট্যকলা বিভাগের সিনিয়র মোস্ট শিক্ষক হিসেবে আমি সংক্ষুব্ধ। তা ছাড়া বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে আমি শঙ্কা অনুভব করছি। ফলে উক্ত দিনে নাট্যকলা বিভাগের নির্বাচনী বোর্ডের বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকতে অপারগতা প্রকাশ করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে শিক্ষক সমিতির চলমান আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে ইউজিসির প্রশ্ন তোলা ও নাট্যকলা বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশকে অগ্রাহ্য করার কারণে আমি নীরব প্রতিবাদ হিসেবে নিয়োগ বোর্ডে বসা থেকে বিরত থেকেছি।

তিনি আরও বলেন, ‘নাট্যকলা একটি প্রায়োগিক বিষয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ছাড়া কীভাবে নিয়োগ হবে, সেটা নিয়ে আমার প্রশ্ন হয়।’

অপর সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদের মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় তাঁর অনুপস্থিতির কারণ জানা যায়নি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে চলছে অস্থিরতা। নিয়োগ বোর্ডকে কেন্দ্র করে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে চালিয়ে যাচ্ছে চবি শিক্ষক সমিতি। 

এ বিষয়ে চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, ‘বোর্ডে উপাচার্য ও বিভাগের সভাপতি পদাধিকারবলে সদস্য। পদাধিকারবলে বিশেষজ্ঞের কাজ করা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এখানে বিশেষজ্ঞ সদস্য ও নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া। তিনিও যান নাই, আরেকজন সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার সাইদ, তিনিও যান নাই। অনেকগুলো বেআইনি ও প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ তিনি (উপাচার্য) দিয়ে আসছিলেন, এটি তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। তাঁরা এ ধরনের কার্যক্রম গণহারে চালিয়ে আসছিল বলেই আমরা উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগ চাচ্ছি।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়োগ বোর্ড সভার পর এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে যাবে। সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মতান্ত্রিক সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আমরা চেষ্টা করব’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়োগ বোর্ডে দুজন উপস্থিত ছিলেন না। এঁদের মধ্যে একজন বোর্ড শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা আগে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। অন্য সদস্যের মোবাইল বন্ধ ছিল। ওনাদের জন্য কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে বোর্ড শুরু করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত