Ajker Patrika

‘আড়াই হাজার কর্মী দিয়ে ১৭ কোটির দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়’

‘আড়াই হাজার কর্মী দিয়ে ১৭ কোটির দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়’

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমন দুদকের একার কাজ নয়। আড়াই হাজার কর্মী দিয়ে ১৭ কোটি মানুষের দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়। আমাদের মোট জনবল এক হাজার ২০০। আরও এক হাজার ২০০ নেওয়ার সুযোগ আছে। তাই দুর্নীতি দমনে সবার সহযোগিতা দরকার।’ 

আজ সোমবার চট্টগ্রামের বন্দরের শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুনশি অডিটোরিয়ামে দুদক আয়োজিত সততা সংঘের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

দুদক কমিশনার বলেন, ‘টেকনাফের সাবেক (বরখাস্ত) ওসি প্রদীপের মামলা চলমান। মামলার রায়ও হয়েছে। তাঁর সম্পদের নিশানা খোঁজার জন্য বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা দরকার। সাতটি দেশে আমরা পত্রালাপ করেছি। কিন্তু সেটা বেশি দিন হয়নি, মাত্র এক মাস হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই জবাব পাব আমরা। যদি বিলম্ব হয় তাহলে আমরা আবার তাগাদা দেব।’ 

মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশে মানি লন্ডারিং করে থাকে, সেটির তদন্ত করা আমাদের নিয়মিত দায়িত্ব। কেউ অবৈধ উপার্জন করে দেশে রাখুক অথবা বিদেশে রাখুক, সেটা আমরা বের করে আনব। দুদক নির্দিষ্ট কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষকে টার্গেট করে না অথবা ছাড়ও দেয় না। দুদক সব ধরনের এমনকি সাধারণ মানুষের অবৈধ উপার্জনের বিষয়ে তদন্ত করে থাকে।’ 

দুদক কমিশনার বলেন, ‘দুর্নীতি দমন দুদকের একার কাজ নয়। আড়াই হাজার কর্মী দিয়ে ১৭ কোটি মানুষের দুর্নীতি রোধ সম্ভব নয়। আমাদের জনবল আছে এক হাজার ২০০। আরও এক হাজার ২০০ নেওয়ার সুযোগ আছে। তাই দুর্নীতি দমনে সবার সহযোগিতা দরকার।’ 

দুদকের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘দুর্নীতি দমন না করলে স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার সুযোগ নেই। বঙ্গবন্ধু কুমিল্লায় ক্যাডেটদের বলেছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে। তিনি জীবিত থাকলে বহু আগেই মধ্যম আয়ের দেশ হতাম আমরা। বঙ্গবন্ধু পিরোজপুরে বলেছিলেন, কেউ দুর্নীতি করলে পোস্ট কার্ডে জানাবে আমি বিচার করব।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সততা সংঘের এ কাজটি দুদক কেন করছে? শিশুমনে চিন্তার খোরাক দিতে চাই। সততা কঠিন কাজ হলে সেই কঠিনকে ভালোবাসতে হবে। কথায় আছে ত্রিশে বিদ্যা, চল্লিশে ধন। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে হবে। বাচ্চারা জাগতে হবে। ছোট বয়সে ভালো কাজে অভ্যস্ত করাতে হবে। বাচ্চা ঘুষ খায় না, অন্যায় করে না। সন্তানেরা বাবা-মাকে সৎ আদর্শবান দেখতে চায়।’ 

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায়, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম সফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) মো. শহীদুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ফয়সাল মাহমুদ, দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, মহানগর দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন দুদকের পরিচালক মো. মাহমুদ হাসান। 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে সততা সংঘের কমিটি ও পাঁচ শিক্ষকের সমন্বয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। রয়েছেন একজন পরামর্শক। স্কুলে রয়েছে বিক্রেতাবিহীন সততা স্টোর। সেখানে নিজেরা পণ্য বাছাই করে কিনে থাকে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব ও নৈতিকতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুদকের এই সততা সংঘ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত