Ajker Patrika

জরুরি বিভাগে মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিলেন দায়িত্বরত চিকিৎসক

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
জরুরি বিভাগে মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিলেন দায়িত্বরত চিকিৎসক

সকাল থেকে জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন ডা. বিমান চন্দ্র আচার্য। হঠাৎ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর রক্তের প্রয়োজন হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত দেওয়ার জন্য লোকও ঠিক করা হয়। কিন্তু সেই লোক না আসাতে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে রোগীকে বাঁচাতে নিজেই রক্ত দান করেন ডা. বিমান চন্দ্র আচার্য। 

জরুরি বিভাগে নিজের চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় রোগীকে রক্ত দান করেন তিনি। এই সময় পাশে বসে থাকা কয়েকজন তাঁর ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে। এরপর মুহূর্তেই সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই ওই ডাক্তারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পোস্টও দেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নোয়াখালী হাতিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। 

ডা. বিমান চন্দ্র আচার্য হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী মেডিকেল অফিসার। হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী নান্টু সাহার স্ত্রী মিতা সাহাকে (৪৫) রক্ত দিয়ে সাহায্য করেন তিনি। 

এ বিষয়ে ডা. বিমান চন্দ্র আচার্য জানান, রোগীটি তাঁদের প্রতিবেশী। দীর্ঘদিন থেকে তিনি লিভার সমস্যা ও রক্ত শূন্যতায় ভুগছিলেন। জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় হাসপাতালে আসেন ওই রোগী। কাগজপত্র ও শরীরের বিভিন্ন অংশ দেখে দ্রুত তাঁকে রক্ত দিতে বলা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও রোগীর জন্য রক্তের ব্যবস্থা করতে পারেননি স্বজনেরা। এরই মধ্যে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। রক্তের গ্রুপ দেখে নিজের রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় নিজেই রোগীকে রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। 

বিমান চন্দ্র আচার্য আরও জানান, এর আগে তিনি আরও ১৪ বার বিভিন্ন সময় মুমূর্ষু রোগীদের রক্ত দান করেছেন। করোনাকালীন সময়ে তিনি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিজেই করোনা আক্রান্ত হন। 

রোগী মিতা সাহার মেয়ের জামাই বিলাস জানান, তার শাশুড়ি দীর্ঘদিন লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। অনেক দিন ঢাকায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। এলাকায় আসার পর হঠাৎ তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। তাৎক্ষণিক কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডাক্তার তাঁকে জরুরি রক্ত দিতে বলেন। কিন্তু দ্রুত সময়ের মধ্যে রক্তের ব্যবস্থা করতে না পারায় ডাক্তার বিমান চন্দ্র আচার্য রক্ত দিয়ে তাঁর শাশুড়ির প্রাণ বাঁচান। 

এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বিমান জরুরি বিভাগে ডিউটি করা অবস্থায় এক রোগীকে রক্ত দিয়েছেন। বিষয়টি আমি শোনার পরপরই তাঁকে ছুটি দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত