Ajker Patrika

‘আমার মতো কালো’

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২২, ১১: ২২
‘আমার মতো কালো’

আমেরিকান সাংবাদিক-লেখক জন হাওয়ার্ড গ্রিফিন ১৯৬১ সালে যখন ‘আমার মতো কালো’ বইটি প্রকাশ করলেন, তখন পাঠকমহলে হইচই পড়ে গেল। আমেরিকার দক্ষিণ অংশের রাজ্যগুলোয় ছদ্মবেশে গিয়ে যা দেখেছেন, তারই বর্ণনা এই বই।

কেউ ভাবতে পারে, এ আর নতুন কী? যে কেউ তো যেকোনো দেশে ছদ্মবেশে গিয়ে সেখানকার নাড়ি-নক্ষত্র জেনে এসে বই লিখতে পারে। জি না, ব্যাপারটা এত সহজ নয়। দুই মাস লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, জর্জিয়া, আলাবামায় তিনি গিয়েছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ ছদ্মবেশে। কৃষ্ণাঙ্গরা এই রাজ্যগুলোয় কেমনভাবে কাটাচ্ছে জীবন, সেটা জানাই ছিল তাঁর আরাধ্য। ফল হিসেবে আমরা পেয়ে গেলাম ১৮৮ পৃষ্ঠার এক ডায়েরি, এই ভ্রমণকালেই যা দামি সম্বল হয়ে উঠেছিল গ্রিফিনের।

সে সময় যুক্তরাষ্ট্রে তুমুল শক্তি নিয়ে বর্ণবাদ টিকে ছিল, বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলোয়। গ্রিফিনকে যেন শ্বেতাঙ্গ বলে চেনা না যায়, তা নিশ্চিত করতে তিনি গায়ের চামড়ার রং বদলে ফেলেন। পরিচিত এক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্যে গ্রিফিন দীর্ঘ সময়ের জন্য নিলেন মেথোক্সালেন, অক্সোরালেনের ডোজ, অতিবেগুনি বাতির নিচে বসে থাকলেন দিনে ১৫ ঘণ্টা। আর তাতে তাঁর চামড়ার রং কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের মতো হয়ে গেল। এমনকি তাঁর কাছের বন্ধুরাও তাঁকে আর চিনতে পারলেন না।

দক্ষিণের রাজ্যগুলোয় পৌঁছে গ্রিফিন দেখলেন সাদারা কীভাবে অত্যাচার করছে কালোদের। লুইজিয়ানায় কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের কেউ কেউ চুপিচুপি বললেন, গোটা লুইজিয়ানায় কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য গোসল করার মতো একটু জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন।

একবার কোথাও যাওয়ার সময় তিনি বাসের সিটে বসে ছিলেন। একজন শ্বেতাঙ্গিনীকে বাসে উঠতে দেখে আসন ছেড়ে দিতেই সেই নারী তাকে গালাগাল করতে শুরু করে দিলেন, যেন আসন ছেড়ে দেওয়ার স্পর্ধাও কৃষ্ণাঙ্গদের দেখাতে নেই।

বইটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রিফিন চলে আসেন আলোচনায়। তবে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের ওপর মৃত্যুর হুমকি নেমে আসায় নিজের রাজ্য টেক্সাসে আর থাকতে পারেননি গ্রিফিন, তাঁকে চলে যেতে হয় মেক্সিকোয়। 

সূত্র: ই-ফাক্ত ডট রু

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত