Ajker Patrika

নীরেনের বন্ধুরা

সম্পাদকীয়
নীরেনের বন্ধুরা

কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী যখন কলকাতার মিত্র স্কুলে পড়তেন, তখন যে সহপাঠীদের সঙ্গে তাঁর ভাব হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুজিত পাল। সুজিতকে নীরেন বেশ সমীহ করে চলতেন। সেটা তাঁর কবিপ্রতিভার কারণে। নীরেন নিজেই কবিতার লোক, কিন্তু তাঁর চেয়ে বড় কবি তাঁদের ক্লাস এইটেই রয়ে গেছেন, এটা তিনি জানতেন না। মিত্র স্কুল থেকে সে সময় ছাত্রদের লেখা নিয়ে একটা ম্যাগাজিন বের হয়েছিল।

সেখানে সুজিত পালের কবিতাটা ছাপা হয়। পড়েই উদ্বেলিত হয়েছিলেন নীরেন। কবিতার পঙ্‌ক্তিগুলো ছিল এ রকম, ‘উচ্ছল জল কল্লোলময়ী চঞ্চল গিরিনন্দিনী/অলকানন্দা রম্যা রূপসী মর্মর-কারাবন্দিনী...’। আগাগোড়া নির্ভুল ছন্দে লেখা! কবিতাটির তারিফ করতেই সুজিত বললেন, কবিতাটি তাঁরই নামে বের হয়েছে বটে, কিন্তু সেটি তাঁর লেখা নয়।  

‘ওটা তাহলে কার লেখা?’ নীরেনের প্রশ্ন।

‘কোনো বিখ্যাত লোকের নিশ্চয়ই। আমার নামে কেউ দুষ্টুমি করে ছাপিয়ে দিয়েছে।’ হেসে বললেন সুজিত। নীরেন প্রথমে শক্তিধর কবি হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন সুজিতকে, এরপর শক্তিধর সত্যবাদী হিসেবে তাঁকে সমীহ করতে শুরু করেছেন।

মিত্র স্কুলটি ছিল ভাড়া করা। বিখ্যাত বাঙালি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন শচীনের বাবা। হ্যারিসন রোড আর সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের মোড়ের যে বাড়িটায় মিত্র স্কুলের ক্লাস হতো, তারও মালিক ছিলেন শচীনের বাবা। ক্লাসসুদ্ধ ছাত্রদের সামনে একবার ক্লাসটিচার শচীনকে বললেন, ‘শচীন, তোমার তিন মাসের মাইনে বাকি পড়েছে। বাবার কাছ থেকে টাকাটা এনে কালই তোমার মাইনে মিটিয়ে দিও।’

ক্লাসের সবার সামনে এ কথা বলায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন শচীন। তিনি তখন অবলীলায় উত্তর দিয়েছেন, ‘বাবাকে বলেছিলাম। তিনি বললেন, স্কুলেরও ছয় মাসের বাড়িভাড়া বাকি পড়েছে। আপনারা সেটা মিটিয়ে দিলেই বাবা আমার মাইনে মিটিয়ে দেবেন।’

এ ঘটনাগুলো নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে সত্যবাদী হওয়ার শিক্ষা দিয়েছে।

সূত্র: নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, নীড়বিন্দু, পৃষ্ঠা ২২৭-২২৮ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩ আগস্ট বিমানবন্দরে বাধা পান তাপস, হাসিনাকে অনুরোধ করেন অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে- অডিও ফাঁস

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করল প্রথম ফ্লাইট

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত