ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বন্ধুদের সঙ্গে সংযোগ, মতপ্রকাশ, ব্যবসা, এমনকি সচেতনতা তৈরির কাজেও এখন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তির আলোর নিচে গাঢ় হয়ে উঠেছে এক নতুন অন্ধকার, যাকে বলা হয় সাইবার হয়রানি। এই অন্ধকারের বড় শিকার হচ্ছে নারীরা। ২০২২ সালে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৬৩ দশমিক ৫১ শতাংশ নারী উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাঁরা অনলাইন সহিংসতার শিকার। ২০২১ সালে এই হার ছিল ৫০ দশমিক ১৯ শতাংশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দেখা যাচ্ছে, নারীদের বিরুদ্ধে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক,
এক্স এবং ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে নির্যাতন, কটূক্তি, ছবি বিকৃতি ও ব্ল্যাকমেলের মতো অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছে। সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন অ্যান্ড চাইল্ডের রেকর্ড অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ২৯টি অনলাইন ও প্রযুক্তিসংক্রান্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাগুলো গোপন ভিডিও, এআই-জেনারেটেড অশ্লীল ছবি এবং ব্যক্তিগত তথ্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো বিপজ্জনক কাজগুলোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সমাজের যেকোনো বিষয় উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট করা হলে সেখানে অবলীলায় যে কেউ পোস্টদাতা নারীকে আজেবাজে মন্তব্য থেকে শুরু করে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছে।
এবং ব্যক্তিগত তথ্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো বিপজ্জনক কাজগুলোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সমাজের যেকোনো বিষয় উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট করা হলে সেখানে অবলীলায় যে কেউ পোস্টদাতা নারীকে আজেবাজে মন্তব্য থেকে শুরু করে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে হয়রানির বিরুদ্ধে একজন নারী ধাপে ধাপে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। ধাপগুলো জেনে রাখা জরুরি।
হয়রানির ধরন চিহ্নিত করা
আপনি ঠিক কোন ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন, সেটি চিহ্নিত করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণত যেসব হয়রানি হয়—
এগুলো আইনের আওতায় পড়লে তা সাইবার ক্রাইম হিসেবে গণ্য হয়।
প্রমাণ সংরক্ষণ করা
সোশ্যাল মিডিয়ায় রিপোর্ট করা
যেকোনো প্ল্যাটফর্মেই থাকে রিপোর্টিং মেকানিজম। সেখানে রিপোর্ট করুন।
যদিও সব সময় এসব রিপোর্ট দ্রুততম সময়ে কাজ করে না। তবে এটি আপনার পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে। কারণ, আপনি প্রমাণ করতে পারবেন যে নিজেই আগে রিপোর্ট করেছেন।
স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নেওয়া
বাংলাদেশে সাইবার অপরাধের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন—
অনলাইন এফআইআর বা অভিযোগ দাখিল
দেশে এখন অনলাইনেও অভিযোগ করা যায়। এ জন্য cid.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে Complaint অপশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিন। তারপর স্ক্রিনশট ও ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
লিগ্যাল সাপোর্ট চাওয়া
ভুক্তভোগী চাইলে নারী সহায়তা সংস্থা বা নির্দিষ্ট এনজিও অথবা আইনজীবীর সহায়তা নিতে পারেন। এ জন্য যোগাযোগ করা যায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং ব্র্যাকের লিগ্যাল এইড বিভাগে।
মামলা করার পথ
পর্নোগ্রাফি আইন ভঙ্গ, হুমকি বা ব্ল্যাকমেল, সম্মানহানিকর ভিডিও বা ছবি ছড়ানোর মতো গুরুতর অপরাধ হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা করা যায়। এ ক্ষেত্রে মানহানিকর তথ্য প্রকাশের জন্য ২৪, অপপ্রচার, গুজবের জন্য ২৫, সম্মানহানিকর ডিজিটাল কনটেন্ট ছড়ানোর জন্য ২৯ এবং নৈতিক অবক্ষয় বা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য ৩১ ধারায় মামলা করা যাবে।
গোপনীয়তা রক্ষা ও সুরক্ষা চাওয়া
অনেক নারী আইনি ব্যবস্থা নিতে ভয় পান সমাজ, পরিবার বা পরিচিতদের কারণে। ভুক্তভোগী চাইলে, আদালতে বা পুলিশের কাছে নাম ও তথ্য গোপন রাখার আবেদন করতে পারেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নারীর গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবাদ মানেই লাইভে এসে কান্না করা নয়। প্রতিবাদ মানে আইনকে হাতিয়ার করে অপরাধীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। প্রযুক্তির অপব্যবহারে যারা নারীদের সম্মানহানি করে, তাদের রুখে দাঁড়াতে নারীদের আইনি অধিকার সম্পর্কে জানা থাকা চাই। আমরা সবাই মিলে যদি জানি, জানাই এবং পাশে দাঁড়াই; তবেই সম্ভব হবে একটি নিরাপদ অনলাইন সমাজ গড়ে তোলা।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বন্ধুদের সঙ্গে সংযোগ, মতপ্রকাশ, ব্যবসা, এমনকি সচেতনতা তৈরির কাজেও এখন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তির আলোর নিচে গাঢ় হয়ে উঠেছে এক নতুন অন্ধকার, যাকে বলা হয় সাইবার হয়রানি। এই অন্ধকারের বড় শিকার হচ্ছে নারীরা। ২০২২ সালে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের এক সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৬৩ দশমিক ৫১ শতাংশ নারী উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাঁরা অনলাইন সহিংসতার শিকার। ২০২১ সালে এই হার ছিল ৫০ দশমিক ১৯ শতাংশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দেখা যাচ্ছে, নারীদের বিরুদ্ধে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক,
এক্স এবং ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে নির্যাতন, কটূক্তি, ছবি বিকৃতি ও ব্ল্যাকমেলের মতো অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছে। সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন অ্যান্ড চাইল্ডের রেকর্ড অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ২৯টি অনলাইন ও প্রযুক্তিসংক্রান্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাগুলো গোপন ভিডিও, এআই-জেনারেটেড অশ্লীল ছবি এবং ব্যক্তিগত তথ্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো বিপজ্জনক কাজগুলোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সমাজের যেকোনো বিষয় উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট করা হলে সেখানে অবলীলায় যে কেউ পোস্টদাতা নারীকে আজেবাজে মন্তব্য থেকে শুরু করে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছে।
এবং ব্যক্তিগত তথ্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার মতো বিপজ্জনক কাজগুলোতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সমাজের যেকোনো বিষয় উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো পোস্ট করা হলে সেখানে অবলীলায় যে কেউ পোস্টদাতা নারীকে আজেবাজে মন্তব্য থেকে শুরু করে ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দিয়ে দিচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে হয়রানির বিরুদ্ধে একজন নারী ধাপে ধাপে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। ধাপগুলো জেনে রাখা জরুরি।
হয়রানির ধরন চিহ্নিত করা
আপনি ঠিক কোন ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন, সেটি চিহ্নিত করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণত যেসব হয়রানি হয়—
এগুলো আইনের আওতায় পড়লে তা সাইবার ক্রাইম হিসেবে গণ্য হয়।
প্রমাণ সংরক্ষণ করা
সোশ্যাল মিডিয়ায় রিপোর্ট করা
যেকোনো প্ল্যাটফর্মেই থাকে রিপোর্টিং মেকানিজম। সেখানে রিপোর্ট করুন।
যদিও সব সময় এসব রিপোর্ট দ্রুততম সময়ে কাজ করে না। তবে এটি আপনার পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে। কারণ, আপনি প্রমাণ করতে পারবেন যে নিজেই আগে রিপোর্ট করেছেন।
স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নেওয়া
বাংলাদেশে সাইবার অপরাধের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন—
অনলাইন এফআইআর বা অভিযোগ দাখিল
দেশে এখন অনলাইনেও অভিযোগ করা যায়। এ জন্য cid.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে Complaint অপশনে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিন। তারপর স্ক্রিনশট ও ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
লিগ্যাল সাপোর্ট চাওয়া
ভুক্তভোগী চাইলে নারী সহায়তা সংস্থা বা নির্দিষ্ট এনজিও অথবা আইনজীবীর সহায়তা নিতে পারেন। এ জন্য যোগাযোগ করা যায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং ব্র্যাকের লিগ্যাল এইড বিভাগে।
মামলা করার পথ
পর্নোগ্রাফি আইন ভঙ্গ, হুমকি বা ব্ল্যাকমেল, সম্মানহানিকর ভিডিও বা ছবি ছড়ানোর মতো গুরুতর অপরাধ হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা করা যায়। এ ক্ষেত্রে মানহানিকর তথ্য প্রকাশের জন্য ২৪, অপপ্রচার, গুজবের জন্য ২৫, সম্মানহানিকর ডিজিটাল কনটেন্ট ছড়ানোর জন্য ২৯ এবং নৈতিক অবক্ষয় বা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য ৩১ ধারায় মামলা করা যাবে।
গোপনীয়তা রক্ষা ও সুরক্ষা চাওয়া
অনেক নারী আইনি ব্যবস্থা নিতে ভয় পান সমাজ, পরিবার বা পরিচিতদের কারণে। ভুক্তভোগী চাইলে, আদালতে বা পুলিশের কাছে নাম ও তথ্য গোপন রাখার আবেদন করতে পারেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নারীর গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবাদ মানেই লাইভে এসে কান্না করা নয়। প্রতিবাদ মানে আইনকে হাতিয়ার করে অপরাধীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। প্রযুক্তির অপব্যবহারে যারা নারীদের সম্মানহানি করে, তাদের রুখে দাঁড়াতে নারীদের আইনি অধিকার সম্পর্কে জানা থাকা চাই। আমরা সবাই মিলে যদি জানি, জানাই এবং পাশে দাঁড়াই; তবেই সম্ভব হবে একটি নিরাপদ অনলাইন সমাজ গড়ে তোলা।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর চারদিক আগুন ও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সে সময় ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেন শিক্ষিকা মাসুকা বেগম।
৯ ঘণ্টা আগেকালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে কুটিরশিল্পের অন্যতম বাঁশের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র। একসময় বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সংসারের কাজের অন্যতম মাধ্যম হলেও আজ তা প্লাস্টিক জিনিসপত্রের ভিড়ে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। তবু এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে, আর পূর্বপুরুষের পেশা টিকিয়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন মাদারীপুরের রাজৈর
৯ ঘণ্টা আগেধরুন, আপনি শান্তভাবে শপিং করছেন। হঠাৎ পেছন থেকে কেউ এসে আপনাকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে বসল। কারণ জিজ্ঞেস করলে জানানো হলো, হিজাব পরেননি, তাই আপনার এই শাস্তি প্রাপ্য। অবিশ্বাস্য শোনালেও আফগানিস্তানের মতো দেশে এখন এটি নির্মম বাস্তবতা। দেশটিতে সম্প্রতি এমন শাস্তি দেওয়া হচ্ছে সেই সব নারীকে, যারা হিজাব না পরে
৯ ঘণ্টা আগেহ্যারিয়েট উইলিয়ামস রাসেল স্ট্রং ছিলেন একজন সমাজসেবী, উদ্ভাবক ও নারী অধিকারকর্মী। তিনি উনিশ শতকের শেষ ভাগ এবং বিশ শতকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে নারীর অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। হ্যারিয়েট নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী, পানি সংরক্ষণ ও সেচব্যবস্থায় উদ্ভাবনী চিন্তার জন্য পরিচিত।
১০ ঘণ্টা আগে