Ajker Patrika

‘কিছু লিখিয়েন না, পরে ওরা আমাদের মেরে ফেলবে’

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৫, ২৩: ৪৭
রাউজানে ডাকাত দলের কবলে পড়া বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
রাউজানে ডাকাত দলের কবলে পড়া বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

‘আপনারা কিছু লিখিয়েন না, পরে ওরা আমাদের মেরে ফেলবে। আমাদের নিরাপত্তা দেবে কে? যা হওয়ার হয়েছে, আমরা পুলিশকে জানাব না।’ ভয়-আতঙ্কে এসব কথা বলেন চট্টগ্রামের রাউজানে ডাকাতির শিকার পরিবারের ষাটোর্ধ্ব গৃহকর্ত্রী মিতা বড়ুয়া।

আজ মঙ্গলবার এই প্রতিবেদক সংবাদ সংগ্রহে গেলে তিনি বিষয়টি প্রচার না করার অনুরোধ জানিয়ে এসব কথা বলেন।

এর আগে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহামুনি গ্রামের যোগেন্দ্র আরাম বিহারসংলগ্ন মৃত সুদর্শন বড়ুয়ার বাড়িতে এই দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

চারদিকে সীমানাপ্রাচীরে ঘেরা পাকা বাড়িতে থাকেন গৃহকর্ত্রী মিতা বড়ুয়া, পুত্রবধূ ও দুই নাতি। বড় ছেলে সপরিবার ফ্রান্সে এবং ছোট ছেলে চাকরির সুবাদে চট্টগ্রামে থাকেন। অতীতে কোনো চুরির ঘটনা না ঘটলেও এবার ডাকাতির শিকার হয় পরিবারটি।

গৃহকর্ত্রী মিতা বড়ুয়া বলেন, ‘গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আমার কক্ষে আটজনের একটি দল ঢুকে হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলে। আমাকে তারা বলে, ওয়ান ব্যাংক থেকে যে ১ লাখ টাকা তুলে এনেছ, ওগুলো দাও। আমাদের কাছে তথ্য আছে। আমাকে কিছু বলতেও দিচ্ছে না। তাদের প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র ছিল।

‘আমার ছেলের বউয়ের কক্ষেও আটজন ঢোকে। তারা আমার নাতিকে তুলে আছাড় দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি তাদের বললাম, যা যা লাগে নিয়ে যাও, আমার নাতিকে মারবে না। তারা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঘরে অবস্থান করে। পরে আমাকে ঘর থেকে টেনে বের করে। মনে করেছিলাম মেরে ফেলবে। পরে আমার ছেলের বউয়ের কক্ষে নিয়ে দরজা বন্ধ করে মোবাইলগুলো নিয়ে চলে যায়।

‘যাওয়ার সময় বলে, পুলিশকে জানালে পরে এসে মেরে ফেলব। আমার ছেলে ঘরে থাকলে তাকে মেরে ফেলত তারা। পরে ভোররাত ৪টার দিকে জানালা দিয়ে বিহারের ভান্তেকে ডেকে বলি, আমার ঘরে ডাকাত পড়েছে। আমার ভাই, মেয়ের জামাইকে একটু খবর দিন।’

ডাকাত দল কী নিয়েছে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘরে ডাকাত ঢুকলে কি খালি হাতে যায়? কী নিয়েছে, তা আমি বলব না। পুলিশকেও জানাব না।’

গৃহকর্ত্রীর ভাই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জন বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বোনের ঘরে কোনো পুরুষ নেই। আগে কখনো চুরি-ডাকাতি হয়নি। এবার ডাকাতেরা টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইলসহ নানা জিনিস নিয়ে গেছে।’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসা পাহাড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অর্পিতা মুৎসুদ্দি বলেন, একলা ঘরে ডাকাত ঢুকে নানা জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কী কী নিয়েছে, তা গৃহকর্ত্রী প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করছেন। পরবর্তী ডাকাতি ও জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে তাঁরা পুলিশ কেস করবেন না।

জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের কাছে কেউ মৌখিক কিংবা লিখিতভাবে অভিযোগ করেননি। এইমাত্র আপনার কাছ থেকে সংবাদ পেয়েছি। আমাদের পুলিশের একটি দলকে ঘটনা পরিদর্শন এবং তদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না, সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়ার সুযোগ

পাচার করা ৭৮১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েও জামিন পেলেন না নাসার চেয়ারম্যান নজরুল

পাইলটের শেষ বার্তা: বিমান ভাসছে না, নিচে পড়ছে

মেয়ের কফিনে বাবার চুমু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত