Ajker Patrika

এআইয়ের প্রভাবে চাকরি ছাঁটাই, যে সমাধান দিলেন জিওফ্রে হিন্টন

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন কাজের জন্য মানুষের পরিবর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ফলে অনেক কর্মী চাকরি হারাচ্ছেন এবং আয় বৈষম্যও তীব্র হচ্ছে। মানুষের উপার্জনের উপর এইআইয়ের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে বিশ্বজুড়েই উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এআই ‘গডফাদার’ হিসেবে খ্যাত জিওফ্রে হিন্টন এই সংকটের সমাধান দিয়েছেন। 

তিনি বলছেন, এআই উৎপাদনশীলতা ও সম্পদ বাড়াবে। কিন্তু সেসব সম্পদ ধনীদের কাছেই যাবে। অন্যদিকে বিপুলসংখ্যক মানুষ চাকরি হারাবেন। এর ফলে   সমাজে ব্যাপক আয় বৈষম্য তৈরি হবে, যার পরিণতি হবে খুব খারাপ। 

এজন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে ‘সর্বজনীন মৌলিক আয়’ নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছেন জানিয়ে হিন্টন বলেন, এআই অনেকের চাকরি কেড়ে নিচ্ছে বলে তিনি খুবই চিন্তিত। এজন্য প্রত্যেক নাগরিককে নির্দিষ্ট পরিমাণ নগদ অর্থ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

নিউরাল নেটওয়ার্কের পথপ্রদর্শক হলেন প্রফেসর হিন্টন। এর ওপর ভিত্তি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বর্তমান প্রযুক্তির তাত্ত্বিক ভিত্তি তৈরি করা হয়। গত বছর পর্যন্ত তিনি গুগলে কাজ করেন। এআইয়ের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করে তিনি সেখানকার চাকরি ছেড়ে দেন।

সর্বজনীন মৌলিক আয়ের ধারণায় সরকারকে চাকরির সকল ক্ষেত্র নির্বিশেষে একটি নির্দিষ্ট বেতন প্রদান করবে। এই বিষয়ে সমালোচকেরা বলেন, প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হবে ও সরকারি সেবার বিভিন্ন তহবিল কমে যাবে। আর এটি দারিদ্র্য দূর করতে সাহায্য করবে না। 

যুক্তরাজ্যের সরকারের মুখপাত্র বলেন, ‘সর্বজনীন মৌলিক আয় চালু করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।’ 

মানব সভ্যতা বিলুপ্তির মুখোমুখি হচ্ছে বলে আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রফেসর হিন্টন। তিনি বলেন, গত বছরের কার্যক্রমের মাধ্যমে বোঝা যায় যে, সরকার এআইয়ের সামরিক ব্যবহারে লাগাম টেনে ধরতে ইচ্ছুক নয়। এআই পণ্যগুলো দ্রুত বিকাশের অর্থ হলো—প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট প্রচেষ্টা করবে না।’ 

এআই আরও ‘বিকশিত’ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এআই নিজের সংখ্যা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করতে পারে ও স্বায়ত্তশাসিতভাবে নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার চেষ্টা করতে পারে।’ 

তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেলে এই ধরনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যেমন—এআই অ্যালগরিদম যা টেক্সট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় তা মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়। 

এআইগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্তও নিতে পারে বলে তিনি বেশ উদ্বিগ্ন। 

প্রফেসর হিন্টন বলেন, জেনেভা কনভেনশনের মতো আন্তর্জাতিক চুক্তি করা উচিত যা যুদ্ধে মানবিক চিকিৎসার জন্য সামরিক ক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে এআইয়ের মাধ্যমে খুব খারাপ কিছু না হওয়া পর্যন্ত এটি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি। 

সামরিক ক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়ার সরকারের এআই ব্যবহার নিয়ে জিওফ্রে হিন্টনকে প্রশ্ন করে বিবিসি। তিনি বলেন, ‘পুতিন কয়েক বছর আগে বলেন, ‘‘যে এআই নিয়ন্ত্রণ করে সে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করে।’ ’ তারা এআই নিয়ে খুব কঠোর পরিশ্রম করছে বলে আমি মনে করি।’ 

হিন্টন বলেন, সামরিক ক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একটি ভালো সমাধান হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত