Ajker Patrika

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১৫: ৩২
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) অচলাবস্থা কাটেনি। শিক্ষক লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়া আলটিমেটাম আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় শেষ হচ্ছে। এ ছাড়া ৩৭ শিক্ষার্থীকে দেওয়া কারণ দর্শানো নোটিশেরও জবাব দেওয়ার শেষ সময় একই দিনে। কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ক্লাস বর্জনকে কেন্দ্র করে কুয়েট শিক্ষক সমিতিতেও মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাসান মোর্শেদ কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর খুদে বার্তা দিয়ে সমিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি এ মাস থেকে সমিতিতে আর্থিক অনুদান দেওয়া থেকেও বিরত থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।

তবে শিক্ষক সমিতি থেকে এভাবে পদত্যাগের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, যত দিন চাকরি আছে, তত দিন শিক্ষককে সমিতিতে থাকতেই হবে। পদত্যাগকারী শিক্ষক অধ্যাপক ড. হাসান মোর্শেদ বলেন, সমিতির কর্মকাণ্ড পছন্দ না হলে যে কেউ পদত্যাগ করতেই পারেন। তিনি সেটিই করেছেন।

শিক্ষক সমিতির আন্দোলন সম্পর্কে ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সমিতির আলটিমেটাম রয়েছে, সেহেতু ওই সময় পর্যন্ত দেখব। এরপর রোববার আবারও সাধারণ সভা ডেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শুক্র বা শনিবারের মধ্যে শিক্ষক লাঞ্ছনার সুষ্ঠু বিচার হলে শিক্ষকেরা ক্লাসে ফিরে যাবেন।

অপর একটি সূত্র জানায়, কুয়েটের অব্যাহতিপ্রাপ্ত উপাচার্যের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে তাঁদেরকে শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু ওই তদন্ত কমিটিও প্রশ্নবিদ্ধ। ওই কমিটি আগের উপাচার্য মনোনীত কমিটি বলে জানান একাধিক শিক্ষার্থী।

৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। দুই দিন ধরে তাঁরা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। এ ছাড়া আজ বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা করা হলেও পরে উপাচার্যের অনুরোধে তা করেননি শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করা হতে পারে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। বহিরাগত হামলার প্রতিবাদে তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনমুখী হন। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন, কুয়েটের দুই দফায় জরুরি সিন্ডিকেট মিটিং করে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ, এমনকি হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের। সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে হল ত্যাগে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা। এরপর রমজান ও ঈদের ছুটি শেষে ১৫ এপ্রিল থেকে কুয়েটের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হলেও একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ থাকে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আগে থেকে ঘোষণা দিয়েই ১৩ এপ্রিল জোর করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। দুই দিন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ার পর ১৫ এপ্রিল বিকেলে তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন।

এভাবেই আন্দোলন একপর্যায়ে আমরণ অনশন পর্যন্ত গড়ায় এবং শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হয় সরকার। তবে শিক্ষার্থীরা শুধু উপাচার্যের অপসারণ চাইলেও গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ১ মে রাতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলে তিনি ২ মে খুলনায় আসেন এবং ৩ মে থেকে দায়িত্ব নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি নিয়ে ক্লাস বর্জন শুরু হয়। যে কারণে ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৫ মে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা থেকে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ক্লাস বর্জন শুরু হয়।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৪
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত