Ajker Patrika

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) অচলাবস্থা কাটেনি। শিক্ষক লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়া আলটিমেটাম আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় শেষ হচ্ছে। এ ছাড়া ৩৭ শিক্ষার্থীকে দেওয়া কারণ দর্শানো নোটিশেরও জবাব দেওয়ার শেষ সময় একই দিনে। কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ক্লাস বর্জনকে কেন্দ্র করে কুয়েট শিক্ষক সমিতিতেও মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাসান মোর্শেদ কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর খুদে বার্তা দিয়ে সমিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি এ মাস থেকে সমিতিতে আর্থিক অনুদান দেওয়া থেকেও বিরত থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।

তবে শিক্ষক সমিতি থেকে এভাবে পদত্যাগের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, যত দিন চাকরি আছে, তত দিন শিক্ষককে সমিতিতে থাকতেই হবে। পদত্যাগকারী শিক্ষক অধ্যাপক ড. হাসান মোর্শেদ বলেন, সমিতির কর্মকাণ্ড পছন্দ না হলে যে কেউ পদত্যাগ করতেই পারেন। তিনি সেটিই করেছেন।

শিক্ষক সমিতির আন্দোলন সম্পর্কে ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সমিতির আলটিমেটাম রয়েছে, সেহেতু ওই সময় পর্যন্ত দেখব। এরপর রোববার আবারও সাধারণ সভা ডেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শুক্র বা শনিবারের মধ্যে শিক্ষক লাঞ্ছনার সুষ্ঠু বিচার হলে শিক্ষকেরা ক্লাসে ফিরে যাবেন।

অপর একটি সূত্র জানায়, কুয়েটের অব্যাহতিপ্রাপ্ত উপাচার্যের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে তাঁদেরকে শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু ওই তদন্ত কমিটিও প্রশ্নবিদ্ধ। ওই কমিটি আগের উপাচার্য মনোনীত কমিটি বলে জানান একাধিক শিক্ষার্থী।

৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। দুই দিন ধরে তাঁরা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। এ ছাড়া আজ বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা করা হলেও পরে উপাচার্যের অনুরোধে তা করেননি শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করা হতে পারে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদলের ফরম বিতরণকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। বহিরাগত হামলার প্রতিবাদে তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনমুখী হন। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন, কুয়েটের দুই দফায় জরুরি সিন্ডিকেট মিটিং করে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ, এমনকি হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয় ছাত্র-ছাত্রীদের। সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে হল ত্যাগে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা। এরপর রমজান ও ঈদের ছুটি শেষে ১৫ এপ্রিল থেকে কুয়েটের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হলেও একাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ থাকে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আগে থেকে ঘোষণা দিয়েই ১৩ এপ্রিল জোর করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। দুই দিন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ার পর ১৫ এপ্রিল বিকেলে তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন।

এভাবেই আন্দোলন একপর্যায়ে আমরণ অনশন পর্যন্ত গড়ায় এবং শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হয় সরকার। তবে শিক্ষার্থীরা শুধু উপাচার্যের অপসারণ চাইলেও গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ১ মে রাতে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলে তিনি ২ মে খুলনায় আসেন এবং ৩ মে থেকে দায়িত্ব নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি নিয়ে ক্লাস বর্জন শুরু হয়। যে কারণে ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৫ মে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা থেকে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ক্লাস বর্জন শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত