Ajker Patrika

ভবিষ্যৎ রাজনীতি কোন দিকে যাবে

আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ০৮: ২০
ভবিষ্যৎ রাজনীতি কোন দিকে যাবে

দেশে কী ঘটছে, রাজনীতির গতিমুখ কোন দিকে—এসব নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল ও আগ্রহের শেষ নেই। অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন, জবাব নেই প্রায় কোনো প্রশ্নেরই। রাজনীতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করার মতো জ্যোতিষীরও দেখা পাওয়া ভার। তবে গুজব, রটনা, কানকথার কোনো অভাব নেই। আমরা যাঁরা গণমাধ্যমে কাজ করি, আমাদের সঙ্গে পরিচিতজনদের দেখা হলেই তাঁরা খবর জানতে চান। খবর মানে ‘আসল’ খবর। আর আজকাল ‘আসল’ খবর মানেই ঘটনা নয়, রটনা। কারও কাছে প্রকৃত পরিস্থিতি বলার মতো কোনো খবর বা তথ্য সত্যি আছে কি? আমার কাছে অন্তত হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেওয়ার মতো তেমন কোনো গোপন খবর নেই। তাই এই লেখা পড়ে পাঠক হতাশ হতে পারেন, আমাকে গালমন্দও করতে পারেন। এখন যেটা সবচেয়ে সহজ ‘ট্যাগ’ লাগানো, সেটাও লাগাতে পারেন। তারপরও লিখতে হচ্ছে। কারণ এটাই আমার কাজ, পেশা, রুটিরুজির উপায়।

গত বছর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনার স্বেচ্ছাচারী শাসনের অবসানের পর আশা করা হয়েছিল, এবার দেশটা সত্যি নতুন পথে চলবে। রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে। রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বে পরিবর্তন আসবে। ব্যক্তি, দল ও নেতা নয়, গুরুত্ব পাবে জনস্বার্থ, সমষ্টির স্বার্থ। রাজনৈতিক নেতৃত্ব আত্মসমালোচনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির সুযোগ গ্রহণ করবে। যাদের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সফল হলো, তারা জাতির বিবেকের ভূমিকা পালন করবে। তারা ক্ষমতার বাইরে থেকে জনতার হয়ে প্রেসার গ্রুপের ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু আজ ৯ মাস পর কী দেখা যাচ্ছে? নতুন মুখ, পুরোনো পথ। পাওয়া ও খাওয়ার ধারা অব্যাহত।

স্বীকার করতেই হবে যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক অদ্ভুত দ্বন্দ্বময় সময় চলছে। দৃশ্যমান বাস্তবতা এক রকম আর জনমানসে কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাওয়া ব্যাখ্যা অন্য রকম। একদিকে একটি রাজনৈতিক দল—আওয়ামী লীগ—যাদের একসময় ‘অপরিহার্য’ বলেই গণ্য করা হতো, তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে, এ নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে নানা প্রতিক্রিয়া, হিসাব-নিকাশ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাবার্তা উঠে আসছে, যার সিংহভাগই রটনার পরিসরে পড়ে যায়। তবে রটনার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে বাস্তবতার আভাস। বাংলাদেশে রাজনীতি কখনোই সরলরেখায় চলে না; বরং ছায়া ও প্রতিচ্ছবির মধ্য দিয়ে এগোয়। এ মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক ভাষ্য, প্রতিক্রিয়া ও আশঙ্কা—সবকিছুই যেন এক জটিল ধাঁধায় পরিণত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা নিয়ে যাঁরা এত দিন বলতেন, ‘সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর’, তাঁরাই এখন প্রকাশ্যে এই নিষেধাজ্ঞায় সন্তোষ প্রকাশ করছেন। তাঁদের বক্তব্যে নতুন ভাষা—এমনটাই নাকি তাঁদের চাওয়া ছিল। চাওয়া পূরণ হওয়ায় এখন নিশ্চয়ই তাঁরা আনন্দচিত্তে রাজনীতির মাঠ চষে বেড়াবেন।

আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে কার লাভ হলো আর কার ক্ষতি হলো, সেটি এখনই স্পষ্ট নয়। সময়ই এর উত্তর দেবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতা ও দেশ ছাড়ার পরই এটা বোঝা গিয়েছিল যে আওয়ামী লীগ আর সহজে দল হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না এবং শেখ হাসিনার ‘টুক’ করে দেশে ফেরার স্বপ্নও পূরণ হবে না।

কল্পনাবিলাসীরা কয়েক মাস ধরে অনেক কল্পগল্প ছড়িয়েছে। তাতে আওয়ামী লীগের বা শেখ হাসিনার কোনো লাভ হয়নি। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ এখন বিচারের মুখোমুখি, শাস্তি পাওয়ার অপেক্ষায়।

তবে বিএনপির হিসাব-নিকাশ যে এমন বরবাদ হবে, এটা সম্ভবত এই দলের কেউ ভাবেননি, বোঝেননি। আওয়ামী লীগের পতন মানেই বিএনপির উত্থান—এই সরল হিসাব যাঁরা কষেছিলেন, তাঁরা এখন বেদনার সঙ্গে লক্ষ করছেন, শুধু যোগ-বিয়োগই অঙ্ক নয়, অঙ্কে গুণ-ভাগও আছে। অঙ্কের ফলাফল সব সময় মেলে না, বিএনপির ক্ষেত্রেও কি তাই ঘটছে?

বিএনপি যেভাবে হাসিনা-পরবর্তী পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার বা রাজনৈতিকভাবে পুনর্জাগরণের সুযোগ হিসেবে দেখেছে, তা তেমনভাবে কাজ করছে কি? চিকিৎসার জন্য দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া, কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরা, তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া—এসব ঘটনায় বিএনপির থলেতে কী রত্ন সঞ্চিত হলো? কর্মী-সমর্থকেরা খুশিতে উদ্বাহু নৃত্য করলেও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও বয়স তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রেখেছে। আবার তাঁর পুত্র তারেক রহমান, যিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন, তিনি লন্ডনে দীর্ঘ নির্বাসন জীবন পার করছেন। তাঁর দেশে ফেরার বিষয়ে দলটির অভ্যন্তরেও কোনো স্পষ্টতা নেই। বরং, তারেক রহমানের স্ত্রীর দেশে ফেরা, আদালতের রায়ের পর পুনরায় চিকিৎসক হিসেবে চাকরি ফিরে পাওয়া—এসব ঘটনাও জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বিএনপির নেতারা কেউই এখন খোলামেলাভাবে বলতে পারছেন না যে কে হচ্ছেন ভবিষ্যতের কান্ডারি, কে দলীয় রাজনীতির হাল ধরবেন।

শূন্যতা পূরণের জন্য নতুন কিছু দল ও মুখ সামনে আসছে। কিন্তু এগুলোর গ্রহণযোগ্যতা, জনসমর্থন ও রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। কিছু সামাজিক আন্দোলনভিত্তিক সংগঠন রাজনৈতিক পরিসরে ঢোকার চেষ্টা করছে, আবার কিছু পুরোনো ইসলামপন্থী শক্তি নতুন মোড়কে আত্মপ্রকাশ করতে চাইছে। যারা এত দিন জামায়াতকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে, এখন তারাই ‘ইসলামী মূল্যবোধ’ প্রতিষ্ঠার নামে কিছু কিছু জামায়াতসংশ্লিষ্ট বা জামায়াত-বান্ধব চিন্তাকে জায়গা দিচ্ছে। একশ্রেণির রাজনীতিভিত্তিক বুদ্ধিজীবী আজ জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে ঘৃণার সম্পর্ক বাদ দিয়ে ‘সামাজিক বাস্তবতা’র কথা বলছেন। এদিকে রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গেও নতুন করে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সেই তৎপরতা আদৌ নৈতিক প্রেরণায়, নাকি রাজনৈতিক কৌশলের অংশ, তা নিয়েও জনমনে সংশয় রয়েছে।

এই অস্থির প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে আশঙ্কার জায়গা হলো তথ্য ও অপতথ্যের বন্যা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনী নিয়ে গুজব, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পদত্যাগ বা বরখাস্তের গুজব, জরুরি অবস্থা জারির বিভ্রান্তিকর তথ্য—এসব যেন একধরনের পরিকল্পিত নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চায়। দেশের সর্বোচ্চ পেশাদার বাহিনী—সেনাবাহিনীকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়ানো মানেই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আস্থার কাঠামোতে আঘাত হানা। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান স্পষ্টভাবে বলেছেন, এই ধরনের গুজব ছড়ানো পরিকল্পিত। তথ্য অধিদপ্তরও বলছে, কিছু মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপতথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। সম্প্রতি ‘রিউমর স্ক্যানার’ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দেখিয়েছে, সেনাবাহিনী ও সরকারের উচ্চমহলকে ঘিরে ছড়ানো বেশির ভাগ খবরই ভুয়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এই অপতথ্য আর গুজবের মূল ভিত্তি হলো অনিশ্চয়তা। কেউ জানে না আগামী সপ্তাহে বা মাসে রাজনৈতিক অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে। নির্বাচন ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কি না, হলে কারা অংশ নেবে—এসব প্রশ্নের জবাব নেই। এই অনিশ্চয়তার সুযোগেই রাজনৈতিক শক্তিগুলো নিজেদের পরিকল্পনায় কাজ করছে। কেউ সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে সামনে রেখে একটি নতুন ‘জাতীয় বিকল্প’ তৈরি করতে চাইছে, কেউ পুরোনো শত্রুমিত্র ভুলে নিজেদের পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে, কেউ আবার রাষ্ট্রযন্ত্রের ‘নতুন ভারসাম্য’ গঠনের দিকেই মনোযোগী।

তবে এই পরিস্থিতির মধ্যেই একধরনের সতর্ক আশাবাদও কাজ করছে। জনগণের মধ্যে এখন আগের চেয়ে বেশি রাজনৈতিক সচেতনতা দেখা যাচ্ছে। কেউ আর অন্ধভাবে মেনে নিচ্ছে না কোনো কিছু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব যেমন আছে, তেমনই বিশ্লেষণ, তথ্য ও সচেতন কথাবার্তাও বেড়েছে। তরুণ প্রজন্ম কেবল আবেগে নয়, যুক্তিতে অংশ নিচ্ছে আলোচনায়। এর মানে হলো, যদিও রাজনৈতিক দলগুলো আজ প্রশ্নবিদ্ধ, তবে রাজনীতি নিজে এখনো জীবন্ত, আলোচনাযোগ্য ও পরিবর্তনশীল।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি পুরোনো বিতর্ক আবার নতুন করে ফিরে এসেছে—‘পাকিস্তানপন্থা’ বনাম ‘বাংলাদেশপন্থা’। যদিও এই দ্বন্দ্ব ১৯৭১ সালে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। বাস্তবতা বলছে, এর ছায়া আজও আমাদের রাজনীতির শরীরে বিদ্যমান। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক আসিফ মাহমুদ যখন বলেন, ‘দিল্লির গোলামি ছিন্ন করেছি, পিন্ডির দাসত্ব করব না’, তখন সেটি কেবল কূটনৈতিক নিরপেক্ষতার আহ্বান নয়, বরং এটি একটি রাষ্ট্রীয় চেতনার ঘোষণাও বটে। তাঁর এই বক্তব্য মওলানা ভাসানীর অতীত উচ্চারণের প্রতিধ্বনি, কিন্তু একুশ শতকের ভিন্ন রাজনৈতিক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে।

এই বক্তব্য যে সময়ে এসেছে, সেই সময়টাও তাৎপর্যপূর্ণ। ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান ছিল এক প্রজন্মের ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিরোধ, যেখানে রাজনৈতিক মতাদর্শের ব্যবধান ভুলে ছাত্ররা একত্র হয়েছিল। তারা কেবল বিদ্যমান নিপীড়ন ও দমননীতির বিরুদ্ধে নয়, বরং একটি নতুন রাষ্ট্রিক দর্শনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল—যার ভিত্তি ছিল গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ন্যায়বিচার।

তথ্য উপদেষ্টা ও জুলাই অভ্যুত্থানের নেতা মাহফুজ আলম যখন বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিস্তানপন্থা বাদ দিতে হবে’, তখন তা শুধুই প্রতিপক্ষবিরোধী বক্তব্য থাকে না, তা হয়ে দাঁড়ায় এক নৈতিক উচ্চারণ। যারা ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে অস্বীকার করেছে, যারা পাকিস্তানি সামরিক জান্তার দোসর হয়ে বাঙালি হত্যার সহযোগী ছিল, যারা

এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা বরং তারা নানা কৌশলে রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে উঠেপড়ে লেগেছে এবং সুযোগ পেলেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছে, তাদের প্রতি ঔদার্য দেখানো সঠিক নয়।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি কোন দিকে যাবে, তা এখনো অনিশ্চিত। কিন্তু এটা পরিষ্কার যে কোনো একক দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একচেটিয়া আধিপত্যের দিন শেষ। এখন দরকার একটি অন্তর্মুখী মূল্যায়ন, রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের ইতিহাস ও ভুলের মুখোমুখি হওয়া এবং একটি কার্যকর, অংশগ্রহণমূলক ও দায়বদ্ধ ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাওয়া। সেনাবাহিনী বা রাষ্ট্রযন্ত্রকে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ থেকে দূরে রাখাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। আর সবচেয়ে জরুরি হলো—গুজব নয়, বাস্তবতা নিয়ে কথা বলা। রাজনীতি যতটা সত্যনিষ্ঠ হবে, ততটাই গণতন্ত্র দৃঢ় হবে।

লেখক: বিভুরঞ্জন সরকার

জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

পুলিশ হত্যাকারী ফোর্স হতে পারে না: আইজিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত