Ajker Patrika

বিতর্কের মুখে হৃদয়ের শাস্তি বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ১৬
এক ম্যাচের সেই নিষেধাজ্ঞা আবার পাচ্ছেন তাওহিদ হৃদয়। ছবি: ফেসবুক
এক ম্যাচের সেই নিষেধাজ্ঞা আবার পাচ্ছেন তাওহিদ হৃদয়। ছবি: ফেসবুক

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আম্পায়ারের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়। পরে লিগ কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণভাবে বাইলজ পরিবর্তন করে তার শাস্তি এক ম্যাচে কমিয়ে আনলেও, ব্যাপক সমালোচনার মুখে সেই সিদ্ধান্ত এখন বাতিল করেছে লিগের টেকনিক্যাল কমিটি। গতকালই টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে দায়িত্ব নেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম। ফলে বহাল থাকছে হৃদয়ের দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা। আগামী ২৬ এপ্রিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে মোহামেডানের ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না।

লিগের টেকনিক্যাল কমিটির নতুন আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নাজমুল আবেদীন ফাহিম তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্তটি পর্যালোচনা করেন এবং বিকেলে বিসিবি কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্তটি বাতিল করে আগের মতো দুই ম্যাচ নিষেধাজ্ঞাই বহাল থাকছে। আমরা মনে করি, তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্তে আমরা প্রক্রিয়ার বাইরে চলে গিয়েছিলাম। সেটি অভ্যন্তরীণভাবে খেলার বাইলজ পরিবর্তনের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছিল, অথচ সে এখতিয়ার টেকনিক্যাল কমিটির ছিল না। আমাদের উচিত ছিল পূর্ববর্তী বাইলজ ও নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা।’

ফাহিম আরও বলেন, ‘পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হৃদয়কে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরে এক ম্যাচ শেষে তাকে ফের মাঠে নামার অনুমতি দেওয়া হয়, যা আমরা এখন আর ফিরিয়ে আনতে পারি না। সেটিকে আমরা বৈধ হিসেবেই বিবেচনা করছি। তবে সাম্প্রতিক পরিবর্তিত বাইলজটি অকার্যকর ঘোষণা করা হবে এবং আগের নিয়ম বলবৎ থাকবে। সেই ধারাবাহিকতায় হৃদয় পরবর্তী ম্যাচে খেলার সুযোগ পাবেন না।’

এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে প্রকাশ্যে এসেছে বিসিবির অভ্যন্তরীণ নীতিমালার অসংগতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন। মূলত, বাইলজের ৭.৫ ধারায় বলা ছিল, ৪-৭ ডিমেরিট পয়েন্টের ক্ষেত্রে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য। কিন্তু সিসিডিএম ও টেকনিক্যাল কমিটির একটি নতুন স্মারকলিপিতে সেই শাস্তি এক ম্যাচে নামিয়ে আনা হয়, যা আম্পায়ার্স ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দেয়।

বিশেষ করে ওই ম্যাচে দায়িত্বে থাকা অভিজ্ঞ অনফিল্ড আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত এ সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে বিসিবির ম্যাচে আর দায়িত্ব না নেওয়ার কথা ভাবছেন বলেও গুঞ্জন ছড়ায়। তাছাড়া সিসিডিএম, আম্পায়ার্স বিভাগ এবং প্রভাবশালী ক্লাব মোহামেডানের মধ্যে সম্পর্কেও দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

ফাহিম বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তে আমাদের দায় রয়েছে। কেউ হয়তো আমাদের অনুরোধ করেছে, কেউ চাপও সৃষ্টি করেছে। কিন্তু আমাদের কাজ সেই চাপ সামাল দিয়ে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করা। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, ক্লাব সব পর্যায়ে বাইলজ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে। ক্রিকেটে নিয়ম মানা গুরুত্বপূর্ণ, এবং তা যেন সর্বত্র কঠোরভাবে পালিত হয়।’

উল্লখ্য হৃদয়ের শাস্তি মওকুফের ঘটনার পর থেকে বিসিবির আম্পায়ারিং ও ম্যাচ অফিসিয়াল বিভাগে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এ ধরনের অনিয়ম ও পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত বিসিবির অভ্যন্তরীণ স্বচ্ছতা ও কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত