সাদিয়া সুলতানা
ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে কয়েক দশক ধরে চলমান দমন-পীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সামরিক আগ্রাসনের ইতিহাস নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলা, বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, শিশু হত্যা, হাসপাতাল ধ্বংস এবং খাদ্য ও জ্বালানি অবরোধের মতো কর্মকাণ্ডগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেমন তীব্র নিন্দা পেয়েছে, তেমনি তা অনেক আরব দেশের সরকারের পক্ষ থেকে এসেছে নীরবতা ও অস্পষ্ট অবস্থান। এ নীরবতা শুধু রাজনৈতিক নয়, একধরনের নৈতিক ব্যর্থতাও বটে, যা মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের জনমানসের কাছে প্রশ্ন আকারে হাজির হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন রিপোর্টে গাজা অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালের শেষ ভাগ থেকে ২০২৪ সালের প্রথম ভাগ পর্যন্ত পরিচালিত সামরিক অভিযানে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েলি বোমা হামলায় বহু হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে আহত মানুষের সেবা পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পানি, খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বিঘ্নিত করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শিশুদের পুষ্টিহীনতা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
আরব বিশ্বের নীরবতা: সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, বাহরাইন, মরক্কোসহ বেশ কয়েকটি আরব রাষ্ট্র দৃশ্যত ফিলিস্তিন ইস্যুতে একধরনের কৌশলগত নীরবতা বজায় রাখছে। একসময় যেসব দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে ছিল, আজ তাদের অনেকে ইসরায়েলের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী।
সৌদি আরবের দ্বৈত ভূমিকা: সৌদি আরব একদিকে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের দাবিদার, অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় সৌদি আরব বিবৃতি দিলেও তা ছিল কূটনৈতিক ভাষায় জড়ানো—কোনো কঠোর নিন্দা নয়, কার্যকর কোনো পদক্ষেপও নয়।
মিসরের সীমিত প্রতিক্রিয়া: মিসর, যেটি গাজার একমাত্র চতুর্থ দিকের সীমান্ত রাফাহ ক্রসিং নিয়ন্ত্রণ করে, তারাও ইসরায়েলি চাপে এই সীমান্ত প্রায়ই বন্ধ রেখেছে। ফলে খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী গাজায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো: এই দেশগুলো ২০২০ সালে আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে (আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে)। এর পর থেকে তারা সরাসরি ফিলিস্তিন ইস্যুতে নীরব থেকেছে বা খুব সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
নীরবতার কারণগুলো: আরব রাষ্ট্রগুলোর এ ধরনের নীরবতার পেছনে রয়েছে একাধিক কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ।
অনেক আরব রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখন শুধু একটি আঞ্চলিক শক্তি নয়, বরং প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য অংশীদার হিসেবে দেখছে। ইরানকে হুমকি মনে করে অনেক উপসাগরীয় রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে নিরাপত্তা কৌশলের অংশ হিসেবেও বিবেচনা করছে।
অধিকাংশ আরব দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় চলে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে কথা বললে আমেরিকা তাদের বিরুদ্ধে নাখোশ হতে পারে। সে জন্য তারা নীরবতার ভূমিকা পালন করছে।
তবে আরব নেতারা নীরব থাকলেও এসব দেশের জনগণ প্রতিবাদ জারি রেখেছে। জর্ডান, মিসর, মরক্কো, ইয়েমেন, লেবাননসহ বহু দেশে হাজার হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
উল্টো দিকে তুরস্ক, ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া—এই দেশগুলো তুলনামূলকভাবে সরব থেকেছে। তুরস্ক কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় থেকেছে, ইরান রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন দিয়েছে, মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। বাংলাদেশও জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।
ফিলিস্তিন ইস্যু শুধু একটি ভৌগোলিক-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, এটি একটি ন্যায়-অন্যায়, মানবতা ও নিপীড়নের লড়াই। আরব নেতাদের নীরবতা এ নিপীড়নকে বৈধতা দিচ্ছে, যা শুধু ফিলিস্তিনিদের জন্য নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের জন্যই হুমকি। এই অবস্থান পরিবর্তনের জন্য দরকার আরব দেশগুলোর জনগণের শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাপ। তারা নৈতিক অবস্থান স্পষ্ট না করলে আজ যারা নীরব, কাল তারা নিজেরাই নিপীড়নের শিকার হতে পারে।
ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে কয়েক দশক ধরে চলমান দমন-পীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সামরিক আগ্রাসনের ইতিহাস নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলা, বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা, শিশু হত্যা, হাসপাতাল ধ্বংস এবং খাদ্য ও জ্বালানি অবরোধের মতো কর্মকাণ্ডগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যেমন তীব্র নিন্দা পেয়েছে, তেমনি তা অনেক আরব দেশের সরকারের পক্ষ থেকে এসেছে নীরবতা ও অস্পষ্ট অবস্থান। এ নীরবতা শুধু রাজনৈতিক নয়, একধরনের নৈতিক ব্যর্থতাও বটে, যা মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বের জনমানসের কাছে প্রশ্ন আকারে হাজির হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন রিপোর্টে গাজা অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালের শেষ ভাগ থেকে ২০২৪ সালের প্রথম ভাগ পর্যন্ত পরিচালিত সামরিক অভিযানে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েলি বোমা হামলায় বহু হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে আহত মানুষের সেবা পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পানি, খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বিঘ্নিত করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। শিশুদের পুষ্টিহীনতা আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
আরব বিশ্বের নীরবতা: সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, বাহরাইন, মরক্কোসহ বেশ কয়েকটি আরব রাষ্ট্র দৃশ্যত ফিলিস্তিন ইস্যুতে একধরনের কৌশলগত নীরবতা বজায় রাখছে। একসময় যেসব দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে ছিল, আজ তাদের অনেকে ইসরায়েলের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী।
সৌদি আরবের দ্বৈত ভূমিকা: সৌদি আরব একদিকে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের দাবিদার, অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় সৌদি আরব বিবৃতি দিলেও তা ছিল কূটনৈতিক ভাষায় জড়ানো—কোনো কঠোর নিন্দা নয়, কার্যকর কোনো পদক্ষেপও নয়।
মিসরের সীমিত প্রতিক্রিয়া: মিসর, যেটি গাজার একমাত্র চতুর্থ দিকের সীমান্ত রাফাহ ক্রসিং নিয়ন্ত্রণ করে, তারাও ইসরায়েলি চাপে এই সীমান্ত প্রায়ই বন্ধ রেখেছে। ফলে খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী গাজায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো: এই দেশগুলো ২০২০ সালে আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে (আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে)। এর পর থেকে তারা সরাসরি ফিলিস্তিন ইস্যুতে নীরব থেকেছে বা খুব সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
নীরবতার কারণগুলো: আরব রাষ্ট্রগুলোর এ ধরনের নীরবতার পেছনে রয়েছে একাধিক কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ।
অনেক আরব রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখন শুধু একটি আঞ্চলিক শক্তি নয়, বরং প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য অংশীদার হিসেবে দেখছে। ইরানকে হুমকি মনে করে অনেক উপসাগরীয় রাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে নিরাপত্তা কৌশলের অংশ হিসেবেও বিবেচনা করছে।
অধিকাংশ আরব দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় চলে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে কথা বললে আমেরিকা তাদের বিরুদ্ধে নাখোশ হতে পারে। সে জন্য তারা নীরবতার ভূমিকা পালন করছে।
তবে আরব নেতারা নীরব থাকলেও এসব দেশের জনগণ প্রতিবাদ জারি রেখেছে। জর্ডান, মিসর, মরক্কো, ইয়েমেন, লেবাননসহ বহু দেশে হাজার হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
উল্টো দিকে তুরস্ক, ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া—এই দেশগুলো তুলনামূলকভাবে সরব থেকেছে। তুরস্ক কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় থেকেছে, ইরান রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন দিয়েছে, মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া কঠোর নিন্দা জানিয়েছে। বাংলাদেশও জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।
ফিলিস্তিন ইস্যু শুধু একটি ভৌগোলিক-রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, এটি একটি ন্যায়-অন্যায়, মানবতা ও নিপীড়নের লড়াই। আরব নেতাদের নীরবতা এ নিপীড়নকে বৈধতা দিচ্ছে, যা শুধু ফিলিস্তিনিদের জন্য নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের জন্যই হুমকি। এই অবস্থান পরিবর্তনের জন্য দরকার আরব দেশগুলোর জনগণের শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাপ। তারা নৈতিক অবস্থান স্পষ্ট না করলে আজ যারা নীরব, কাল তারা নিজেরাই নিপীড়নের শিকার হতে পারে।
আবদুল হাই তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে তুলে ধরেছেন ঈদের উৎসব কীভাবে সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে। আগে ঈদ ছিল আন্তরিকতা, ভাগাভাগি ও আত্মত্যাগের প্রতীক; আজ তা হয়ে উঠেছে প্রদর্শন, প্রতিযোগিতা ও বাহ্যিক আয়োজনের উৎসব। লেখক আক্ষেপ করেন, এখন ঈদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ‘কন্টেন্ট’, গরুর নাম, ব্যানার আর মোবাইল ক্যাম
১৬ ঘণ্টা আগে২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে একটি অভ্যুত্থানোত্তর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র একধরনের অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও বৈষম্যের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা হয়েছিল, অরাজনৈতিক সরকারের বাজেটে
২ দিন আগেসংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত কোনো কোনো শিরোনাম ও সংবাদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে চান পাঠক। আজকের পত্রিকায় ৩১ মে প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম, ‘৬ মাসের টানাটানিতে ভোট’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পর্কে আমাকে একজন সম্পাদক ফোন করে প্রশংসা করলেন। আমি বুঝতে পারলাম শিরোনামটি যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোট নিয়ে জনগণের আগ
৩ দিন আগেঈদ—এই শব্দটির সঙ্গে অগণিত মানুষের হৃদয়ে যে অনুভব জাগে, তা আনন্দ, উৎসব আর মিলনের। ঘরে ঘরে নতুন জামা, সুস্বাদু খাবার, কোলাকুলি আর রঙিন খুশির চিত্র যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে সেই পরিচিত দৃশ্যের বাইরে যে একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায়, তা হলো—ঈদ কি সবার জন্য একরকম? ঈদের দিন কি সকলের মুখেই সমান হাসি? ঈদের আনন
৩ দিন আগে