আব্দুর রাজ্জাক
ট্রাম্প নিজে ঘোষণা করেছিলেন, রিপাবলিকান পার্টি, অর্থাৎ ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হতো না। যুদ্ধের প্রায় তিন বছর পরে ক্ষমতায় রিপাবলিকান পার্টি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই সারা বিশ্ব মনে করেছিল তিনি ক্ষমতা নেওয়ার পরপরই যুদ্ধের ইতি ঘটবে। সারা পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষের আশা ভঙ্গ হতে বেশি সময় লাগেনি। যুদ্ধ বন্ধের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আগের মতোই যুদ্ধ চলছে, তবে বর্তমানে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে এই যুদ্ধে রাশিয়া কিছুটা হলেও অগ্রগামী। আমেরিকায় কে ক্ষমতায় বা কে ক্ষমতায় না, তেমন কিছু মনেই করছে না রাশিয়া। তারা বীরদর্পে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, একের পর এক ইউক্রেনের কিছু কিছু অংশ প্রতি সপ্তাহেই দখল করে চলেছে।
বেশ কয়েক মাস আগে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা দখল করে নিয়েছিল ইউক্রেন। সবাই বলাবলি করছিল, রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়বে, রাশিয়া আলোচনায় বসবে, রাশিয়া ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চল—দনবাসের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া—এই অঞ্চলগুলোর ব্যাপারে আলোচনায় বসবে রাশিয়া, এটা অনেকেই মনে করেছিল। কিন্তু দেখা গেল, রাশিয়া তেমন কোনো আলোচনার উদ্যোগ নিল না, কুরস্ক অঞ্চলে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করল। রাশিয়া তাড়াহুড়ো না করে আস্তে-ধীরে ইউক্রেনকে প্রতিহত করতে লাগল। ইউক্রেন অধিক সৈন্যসামন্ত নিয়ে কুরস্ক অঞ্চলের ঘাঁটি মজবুত করতে আরম্ভ করল। রাশিয়া শেষ অবধি কুরস্ক অঞ্চল নিজেদের আয়ত্তে নিল সপ্তাহ দুই হবে। ইউক্রেন এখানে ৩৫ হাজার সেনা হারিয়েছে, প্রচুর সামরিক সরঞ্জামসহ অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। একেবারেই বিপর্যস্ত অবস্থায় এই অঞ্চল থেকে বিদায় নিয়েছে। ইউক্রেনকে এই বুদ্ধি কে দিয়েছিল? নিজের ভূখণ্ড অরক্ষিত রেখে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড আক্রমণ করে দখলে নেওয়া—এই বুদ্ধি ছিল বাইডেন প্রশাসনের। ইউক্রেন এখানে তাদের অনেক শক্তির ক্ষয় করেছে, যার মাশুল এখন দিচ্ছে।
ট্রাম্প সাহেব হঠাৎ করে গত সপ্তাহে বলে ফেললেন, ‘আমি আর এই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের জন্য মধ্যস্থতা করতে পারছি না। দুই পক্ষের সঙ্গে বারবার বসে এত পদক্ষেপ, এত সময় নষ্ট, এসবের ধৈর্য ও সময় আমার নেই।’ এই কথার অর্থ দাঁড়ায়, তিনি এখন আর সামরিক শক্তি ও অর্থ দিয়ে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে চাচ্ছেন না। যদি এ ধরনের কথা ট্রাম্প বলেন, তাহলে সেটা রাশিয়ার পক্ষেই যায়, এটা সবাই বোঝেন। ট্রাম্পের যে প্রস্তাব, যুদ্ধ বন্ধের জন্য সেই প্রস্তাব জেলেনস্কি বলতে গেলে না করে দিয়েছেন। ট্রাম্পের প্রস্তাবে ছিল, ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চলের নাম পূর্বে উল্লেখ করেছি, সেগুলো রাশিয়ার অধীনে থাকবে। কেননা এখানে রুশ বংশোদ্ভূত মানুষের সংখ্যাই বেশি এবং তারা রুশ ভাষায় কথা বলে, এই অঞ্চলগুলোর বেশির ভাগ মানুষই চায় রাশিয়ার সঙ্গে থাকতে। ট্রাম্প বুঝতে পেরেছেন জেলেনস্কি এই প্রস্তাব খুব সহজে মেনে নেবে না। তাই ট্রাম্প নিজেকে আস্তে করে মধ্যস্থতার স্থান থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
ট্রাম্প ব্যবসায়ী মানুষ। তিনি ইউক্রেনের মিনারেল রিসোর্স উত্তোলন করে ইউক্রেনকে দেওয়া সাহায্যের অর্থের সমপরিমাণ মিনারেল রিসোর্স নিয়ে যাবেন। এখানে বিরাট একটি শুভংকরের ফাঁকি রয়ে গেছে, এটা সবার বোঝা দরকার। প্রথমেই নির্ণয় করা দরকার ইউক্রেনে কী ধরনের খনিজ সম্পদ আছে, সেগুলো উত্তোলনের জন্য কত অঙ্কের অর্থ খরচ হবে, আমেরিকার পাওনা বুঝে নেওয়ার পরে বাকি অর্থ কোথায় থাকবে, কিসে খরচ হবে। এ ব্যাপারে যে হিসাবটি পাওয়া গেছে তা হলো, সম্পদ উত্তোলনের যে ব্যয়, সেটা আমেরিকা প্রথমে নিয়ে নেবে। তারপরের অর্থ জমা থাকবে ১০ বছরের জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে। এই অর্থ দিয়ে ইউক্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পুনর্নির্মাণ করা হবে।
যেখানে খনিজ সম্পদের ধরন নির্ণয় হয়নি, উত্তোলনের ব্যয়ভার ও সাহায্যের অর্থ আমেরিকা নেওয়ার পরে আদৌ কোনো অর্থ থাকবে কি না, সেই বাকি অর্থে ইউক্রেনের কোনো নির্মাণকাজ হবে কি না, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। সবকিছুই শূন্যের ওপরে চলছে। এ ব্যাপারে ইউক্রেনের জনগণ কিন্তু জেলেনস্কির ওপর খুব একটা আস্থা রাখতে পারছে না। ইউক্রেনের মানুষও বোঝে তারা একটি ফাটা বাঁশের চিপায় পড়ে গেছে! প্রথমে তারা মনে করেছিল, আমেরিকা নিঃস্বার্থভাবে তাদের সব সাহায্য-সহযোগিতা করছে, এখন ধীরে ধীরে টের পাচ্ছে। আমেরিকার সাহায্য তাদের গলার কাঁটা, শেষ পর্যন্ত না তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে আমেরিকার কাছে নতজানু হয়ে সারা জীবন চলতে হয়—এই রকমের পরিস্থিতির প্রায় উদ্ভব হয়েছে।
এখানে যে কথাটা সবার বোঝা উচিত, আমেরিকা যদি ইউক্রেন থেকে খনিজ সম্পদ আহরণ করে, তাহলে আমেরিকা চাইবে সবচেয়ে মূল্যবান খনিজ সম্পদ অল্প ব্যয়ে উত্তোলন করে নিয়ে যেতে। আমরা সবাই জানি, ইউক্রেনের সবচেয়ে মূল্যবান খনিজ সম্পদপূর্ণ এলাকা হলো দনবাস, যা রাশিয়ার দখলে রয়েছে। তাহলে মূল্যবান খনিজ সম্পদ অন্য কোন কোন স্থানে আছে এর জরিপ হবে কীভাবে? এই জরিপ কারা করবে, কীভাবে করবে, সেটা নিয়েও কিন্তু কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না।
রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি আমেরিকা তার নিজস্ব জনবল প্রযুক্তি দিয়ে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ উত্তোলন করবে। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। সেখানে তাদের অনেক অবকাঠামো ও সুরক্ষিত ব্যবস্থার দরকার হবে। সুরক্ষিত ব্যবস্থা বলতে বোঝাচ্ছি সেখানে আমেরিকার সামরিক কনটিনজেন্ট থাকতেই হবে। রাশিয়া তার ঘরের সীমানার কাছে এই রকম ব্যবস্থা করতে দেবে কি না, এ ব্যাপারে কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার কথা বলতে হবে। এখন পর্যন্ত সেই রকম কোনো আলাপ-আলোচনার লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে কোনো রকম বৈদেশিক হস্তক্ষেপ হতে পারে বা তাদের নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটতে পারে, এ রকম কিছু তারা সহ্য করে না। তারপর এখানে আবার সরাসরি জড়িত রাশিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকা। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে ইউক্রেন অচিরেই নন-ফাংশনাল দেশের একটিতে পরিণত হতে যাচ্ছে!
ইউক্রেনের উচিত ছিল প্রথমেই এই ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে একটি মীমাংসা করা। রাশিয়া চেয়েছিল ইউক্রেন যেন নিউ নাৎসিজমের উত্থানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং ন্যাটোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকে, রুশ ভাষাভাষীদের অত্যাচার ও হত্যা বন্ধ করাসহ তাদের সঙ্গে সদাচরণ করে। এই কাজগুলো কিন্তু ইউক্রেনের জন্য খুব একটা কঠিন কিছু ছিল না। আন্তরিক হলেই এই কাজগুলো করতে পারত। কিন্তু আমরা দেখেছি, দক্ষ রাজনীতিবিদদের পরিবর্তে সামাজিকভাবে পরিচিত বা সামাজিক কাজ করার জন্য জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ইউক্রেনের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বারবার। রাজনীতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ ক্ষমতায় না থাকার দরুন ইউক্রেনের এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে।
ট্রাম্প নিজে ঘোষণা করেছিলেন, রিপাবলিকান পার্টি, অর্থাৎ ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ হতো না। যুদ্ধের প্রায় তিন বছর পরে ক্ষমতায় রিপাবলিকান পার্টি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই সারা বিশ্ব মনে করেছিল তিনি ক্ষমতা নেওয়ার পরপরই যুদ্ধের ইতি ঘটবে। সারা পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষের আশা ভঙ্গ হতে বেশি সময় লাগেনি। যুদ্ধ বন্ধের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আগের মতোই যুদ্ধ চলছে, তবে বর্তমানে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে এই যুদ্ধে রাশিয়া কিছুটা হলেও অগ্রগামী। আমেরিকায় কে ক্ষমতায় বা কে ক্ষমতায় না, তেমন কিছু মনেই করছে না রাশিয়া। তারা বীরদর্পে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে, একের পর এক ইউক্রেনের কিছু কিছু অংশ প্রতি সপ্তাহেই দখল করে চলেছে।
বেশ কয়েক মাস আগে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা দখল করে নিয়েছিল ইউক্রেন। সবাই বলাবলি করছিল, রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়বে, রাশিয়া আলোচনায় বসবে, রাশিয়া ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চল—দনবাসের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া—এই অঞ্চলগুলোর ব্যাপারে আলোচনায় বসবে রাশিয়া, এটা অনেকেই মনে করেছিল। কিন্তু দেখা গেল, রাশিয়া তেমন কোনো আলোচনার উদ্যোগ নিল না, কুরস্ক অঞ্চলে ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করল। রাশিয়া তাড়াহুড়ো না করে আস্তে-ধীরে ইউক্রেনকে প্রতিহত করতে লাগল। ইউক্রেন অধিক সৈন্যসামন্ত নিয়ে কুরস্ক অঞ্চলের ঘাঁটি মজবুত করতে আরম্ভ করল। রাশিয়া শেষ অবধি কুরস্ক অঞ্চল নিজেদের আয়ত্তে নিল সপ্তাহ দুই হবে। ইউক্রেন এখানে ৩৫ হাজার সেনা হারিয়েছে, প্রচুর সামরিক সরঞ্জামসহ অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। একেবারেই বিপর্যস্ত অবস্থায় এই অঞ্চল থেকে বিদায় নিয়েছে। ইউক্রেনকে এই বুদ্ধি কে দিয়েছিল? নিজের ভূখণ্ড অরক্ষিত রেখে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড আক্রমণ করে দখলে নেওয়া—এই বুদ্ধি ছিল বাইডেন প্রশাসনের। ইউক্রেন এখানে তাদের অনেক শক্তির ক্ষয় করেছে, যার মাশুল এখন দিচ্ছে।
ট্রাম্প সাহেব হঠাৎ করে গত সপ্তাহে বলে ফেললেন, ‘আমি আর এই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের জন্য মধ্যস্থতা করতে পারছি না। দুই পক্ষের সঙ্গে বারবার বসে এত পদক্ষেপ, এত সময় নষ্ট, এসবের ধৈর্য ও সময় আমার নেই।’ এই কথার অর্থ দাঁড়ায়, তিনি এখন আর সামরিক শক্তি ও অর্থ দিয়ে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে চাচ্ছেন না। যদি এ ধরনের কথা ট্রাম্প বলেন, তাহলে সেটা রাশিয়ার পক্ষেই যায়, এটা সবাই বোঝেন। ট্রাম্পের যে প্রস্তাব, যুদ্ধ বন্ধের জন্য সেই প্রস্তাব জেলেনস্কি বলতে গেলে না করে দিয়েছেন। ট্রাম্পের প্রস্তাবে ছিল, ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চলের নাম পূর্বে উল্লেখ করেছি, সেগুলো রাশিয়ার অধীনে থাকবে। কেননা এখানে রুশ বংশোদ্ভূত মানুষের সংখ্যাই বেশি এবং তারা রুশ ভাষায় কথা বলে, এই অঞ্চলগুলোর বেশির ভাগ মানুষই চায় রাশিয়ার সঙ্গে থাকতে। ট্রাম্প বুঝতে পেরেছেন জেলেনস্কি এই প্রস্তাব খুব সহজে মেনে নেবে না। তাই ট্রাম্প নিজেকে আস্তে করে মধ্যস্থতার স্থান থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
ট্রাম্প ব্যবসায়ী মানুষ। তিনি ইউক্রেনের মিনারেল রিসোর্স উত্তোলন করে ইউক্রেনকে দেওয়া সাহায্যের অর্থের সমপরিমাণ মিনারেল রিসোর্স নিয়ে যাবেন। এখানে বিরাট একটি শুভংকরের ফাঁকি রয়ে গেছে, এটা সবার বোঝা দরকার। প্রথমেই নির্ণয় করা দরকার ইউক্রেনে কী ধরনের খনিজ সম্পদ আছে, সেগুলো উত্তোলনের জন্য কত অঙ্কের অর্থ খরচ হবে, আমেরিকার পাওনা বুঝে নেওয়ার পরে বাকি অর্থ কোথায় থাকবে, কিসে খরচ হবে। এ ব্যাপারে যে হিসাবটি পাওয়া গেছে তা হলো, সম্পদ উত্তোলনের যে ব্যয়, সেটা আমেরিকা প্রথমে নিয়ে নেবে। তারপরের অর্থ জমা থাকবে ১০ বছরের জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে। এই অর্থ দিয়ে ইউক্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পুনর্নির্মাণ করা হবে।
যেখানে খনিজ সম্পদের ধরন নির্ণয় হয়নি, উত্তোলনের ব্যয়ভার ও সাহায্যের অর্থ আমেরিকা নেওয়ার পরে আদৌ কোনো অর্থ থাকবে কি না, সেই বাকি অর্থে ইউক্রেনের কোনো নির্মাণকাজ হবে কি না, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। সবকিছুই শূন্যের ওপরে চলছে। এ ব্যাপারে ইউক্রেনের জনগণ কিন্তু জেলেনস্কির ওপর খুব একটা আস্থা রাখতে পারছে না। ইউক্রেনের মানুষও বোঝে তারা একটি ফাটা বাঁশের চিপায় পড়ে গেছে! প্রথমে তারা মনে করেছিল, আমেরিকা নিঃস্বার্থভাবে তাদের সব সাহায্য-সহযোগিতা করছে, এখন ধীরে ধীরে টের পাচ্ছে। আমেরিকার সাহায্য তাদের গলার কাঁটা, শেষ পর্যন্ত না তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে আমেরিকার কাছে নতজানু হয়ে সারা জীবন চলতে হয়—এই রকমের পরিস্থিতির প্রায় উদ্ভব হয়েছে।
এখানে যে কথাটা সবার বোঝা উচিত, আমেরিকা যদি ইউক্রেন থেকে খনিজ সম্পদ আহরণ করে, তাহলে আমেরিকা চাইবে সবচেয়ে মূল্যবান খনিজ সম্পদ অল্প ব্যয়ে উত্তোলন করে নিয়ে যেতে। আমরা সবাই জানি, ইউক্রেনের সবচেয়ে মূল্যবান খনিজ সম্পদপূর্ণ এলাকা হলো দনবাস, যা রাশিয়ার দখলে রয়েছে। তাহলে মূল্যবান খনিজ সম্পদ অন্য কোন কোন স্থানে আছে এর জরিপ হবে কীভাবে? এই জরিপ কারা করবে, কীভাবে করবে, সেটা নিয়েও কিন্তু কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না।
রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি আমেরিকা তার নিজস্ব জনবল প্রযুক্তি দিয়ে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ উত্তোলন করবে। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। সেখানে তাদের অনেক অবকাঠামো ও সুরক্ষিত ব্যবস্থার দরকার হবে। সুরক্ষিত ব্যবস্থা বলতে বোঝাচ্ছি সেখানে আমেরিকার সামরিক কনটিনজেন্ট থাকতেই হবে। রাশিয়া তার ঘরের সীমানার কাছে এই রকম ব্যবস্থা করতে দেবে কি না, এ ব্যাপারে কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে আমেরিকার কথা বলতে হবে। এখন পর্যন্ত সেই রকম কোনো আলাপ-আলোচনার লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে কোনো রকম বৈদেশিক হস্তক্ষেপ হতে পারে বা তাদের নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটতে পারে, এ রকম কিছু তারা সহ্য করে না। তারপর এখানে আবার সরাসরি জড়িত রাশিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকা। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে ইউক্রেন অচিরেই নন-ফাংশনাল দেশের একটিতে পরিণত হতে যাচ্ছে!
ইউক্রেনের উচিত ছিল প্রথমেই এই ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে একটি মীমাংসা করা। রাশিয়া চেয়েছিল ইউক্রেন যেন নিউ নাৎসিজমের উত্থানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় এবং ন্যাটোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকে, রুশ ভাষাভাষীদের অত্যাচার ও হত্যা বন্ধ করাসহ তাদের সঙ্গে সদাচরণ করে। এই কাজগুলো কিন্তু ইউক্রেনের জন্য খুব একটা কঠিন কিছু ছিল না। আন্তরিক হলেই এই কাজগুলো করতে পারত। কিন্তু আমরা দেখেছি, দক্ষ রাজনীতিবিদদের পরিবর্তে সামাজিকভাবে পরিচিত বা সামাজিক কাজ করার জন্য জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ইউক্রেনের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বারবার। রাজনীতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ ক্ষমতায় না থাকার দরুন ইউক্রেনের এই অবস্থা দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে এখন আমের মৌসুম। এ সময়টায় কৃষকের চোখে-মুখে থাকে আশার আলো। সারা বছরের পরিশ্রমে ফলানো ফসল বিক্রি করে একটু স্বস্তির নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কিছু ভুল ধারণা ও অজ্ঞতার কারণে ‘কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো’ অভিযোগে টন টন আম প্রশাসনের হাতে জব্দ ও ধ্বংস হচ্ছে। সম্প্রতি সাতক্ষীরায় প্রায়
২ ঘণ্টা আগেআপনি, রবীন্দ্রনাথ, রাষ্ট্রে বিশ্বাস করতেন না; বিশ্বাস করতেন সমাজে। ভারতবর্ষে সমাজই বড়, রাষ্ট্র এখানে একটি উৎপাতবিশেষ—এ আপনার ধারণার অন্তর্গত ছিল। রাষ্ট্র ছিল বাইরের। সমাজ আমাদের নিজস্ব। সমাজকে আমরা নিজের মতো গড়ে তুলব—এই আস্থা আপনার ছিল।
১৫ ঘণ্টা আগে১৯৪৭ সালের ভারত দেশ বিভাগের বিভীষিকা যাঁরা প্রত্যক্ষ করেছেন, সেই প্রজন্ম দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আজ ভারত ও পাকিস্তান দুপাশের সীমান্তে এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। এর মূল কারণই হলো, যাঁরা এই উন্মাদনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন কিংবা সরাসরি এতে জড়িত ছিলেন, তাঁরা পরে এ নিয়ে অনুশোচনা ও আফসোস করেছেন।
১৫ ঘণ্টা আগেঅপরাধ করেছে সন্তান। আর নাকে ‘খত’ দিয়েছেন মা। এ রকম ‘অভিনব’ বিচার হয়েছে ফেনীতে। বিচার করেছেন বিএনপির এক নেতা। অনেকে বলেন, সন্তানের অপরাধের সাজা নাকি মা-বাবা ভোগ করেন। সেই সাজা মূলত মানসিক পীড়া। সন্তানের অপরাধের শাস্তি হলে মা-বাবার মনোবেদনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটা সাজার চেয়ে তো কম কিছু না।
১৫ ঘণ্টা আগে