Ajker Patrika

ভারত পানি বন্ধ করায় শুকিয়ে গেছে চেনাবের পাকিস্তান অংশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ মে ২০২৫, ১৭: ৪০
ভারত পানি বন্ধ করায় চেনাব নদীর পাকিস্তান অংশ শুকিয়ে গেছে। ছবি: দ্য ডন
ভারত পানি বন্ধ করায় চেনাব নদীর পাকিস্তান অংশ শুকিয়ে গেছে। ছবি: দ্য ডন

ভারত প্রায় এক সপ্তাহ আগে একতরফাভাবে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। এরপর দেশটি একতরফাভাবে চেনাব নদী থেকে পানি প্রত্যাহার শুরু করে। এর ফলে, নদীটির পাকিস্তান অংশ শুকিয়ে গেছে। ভারত গতকাল সোমবার পূর্বঘোষণা ছাড়াই পানি প্রত্যাহার শুরু করায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পাকিস্তানের শিয়ালকোট জেলার মারালা হেডওয়ার্কসে রেকর্ড করা তথ্য অনুসারে রোববার চেনাবের পানিপ্রবাহ ছিল ৩৫ হাজার কিউসেক। কিন্তু গতকাল সোমবার সকালে তা কমে মাত্র ৩ হাজার ১০০ কিউসেক হয়েছে। পাঞ্জাব সেচ বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, রোববার ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তারা প্রায় পুরো চেনাব নদীর প্রবাহ ভাটির দিকে (পাকিস্তান অংশ) বন্ধ করে দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘বর্তমানে ভারত আমাদের জল ব্যবহার করছে। তারা তাদের বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো ভরাট করছে, যা চেনাব অববাহিকায় অবস্থিত।’ তিনি বলেন, ‘সিন্ধু পানি চুক্তির এটি একটি গুরুতর লঙ্ঘন। তারা এমন কাজ করতে পারে না।’

দ্য ডনের কাছে আসা একটি নথি থেকে দেখা গেছে, চেনাব অববাহিকায় ভারতের তিনটি বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প আছে। প্রথমটি হলো ১০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাকাল ডুল বাঁধ। এর জলাধারের ধারণক্ষমতা ৮৮ হাজার একর ফুট। দক্ষিণ দিকে পানি সরানোর জন্য এর ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ‘হেড রেস টানেল’ আছে।

দ্বিতীয়টি হলো বাগলিহার বাঁধ। এটি পাকাল ডুলের ৮৮ কিলোমিটার উজানে অবস্থিত। এটি ৯০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। এর জলাধারের ধারণক্ষমতা ৩ লাখ ২১ হাজার ২ একর ফুট। এর স্পিলওয়ের ধারণক্ষমতা ৫ লাখ ৮২ হাজা ৬৯২ কিউসেক। তৃতীয়টি হলো সালাল বাঁধ। এটি বাগলিহার থেকে ৭৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬৯০ মেগাওয়াট। এর জলাধারের ধারণক্ষমতা ২ লাখ ২৮ হাজার একর ফুট। এর স্পিলওয়ের ধারণক্ষমতা ৭ লাখ ৯২ হাজার ১২ কিউসেক।

পাকিস্তান সরকারের ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, সালাল বাঁধ থেকে মারালা ব্যারেজ (পাকিস্তানে) ৭৬ কিলোমিটার ভাটিতে অবস্থিত। প্রবাহ এত কমার কারণ হলো ভারতের এই বাঁধগুলো পানি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। এসব বাঁধের মোট ধারণক্ষমতা ১২ লাখ একর ফুটের বেশি। যদি তারা বাঁধগুলো ভরাট করতেই থাকে এবং পানি ছাড়া বন্ধ রাখে, তাহলে ভারত হয়তো আমাদের আরও চার থেকে পাঁচ দিন পানি ছাড়াই রাখবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ভারত যদি হঠাৎ করে ভাটির দিকে জল ছাড়তে শুরু করে, তাহলে চেনাবে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। এতে স্থানীয় জনগণ ঝুঁকিতে পড়বে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মারালার ধারণক্ষমতা ১১ লাখ কিউসেক। অন্যদিকে, চেনাব অববাহিকায় ভারতের বাঁধগুলোর মোট ধারণক্ষমতা ১৩ লাখ একর ফুটের বেশি। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তবে জম্মু-তাভি ও মুনাওয়ার-তাভি বিতরণ শাখা নদী থেকে নদীতে যে পানি পাকিস্তানে প্রবেশ করে, তার ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ নেই।

এদিকে, সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সিন্ধু নদী ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষের (ইসা) পরামর্শক কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে খরিফ ফসলের জন্য অতিরিক্ত ঘাটতি তৈরি হবে। খরিফ মৌসুমে ইতিমধ্যে ২১ শতাংশ ঘাটতি অনুমান করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‎জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তাঁর ছাত্রী সপরিবারে পুলিশ হেফাজতে

৪৯তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২১৯

ফরিদপুরে এ কে আজাদের গণসংযোগে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

ভিডিও কলে ‘বিয়ে’: দেশে ফিরে দেখেন আরেকজনের স্ত্রী, অতঃপর কারাগারে

বিরল খনিজ ও তোষামোদের কূটনীতি: পাকিস্তান দেখাল কীভাবে ট্রাম্পের সঙ্গে ‘ডিল’ করতে হয়

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত