Ajker Patrika

গত বছর যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের শীর্ষে পাকিস্তানিরা, বাংলাদেশিরা চতুর্থ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২২ জুলাই ২০২৫, ১৭: ০৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১ লাখ ৮ হাজারে, যাঁদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান। সরকার প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ বছর পাকিস্তানি আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৪২ জনে। উল্লেখযোগ্য হারে আবেদন বেড়েছে ভিয়েতনামিজ নাগরিকদেরও। ২০২৪ সালে ভিয়েতনামিজ নাগরিকদের আবেদন ১১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৫৯টিতে।

তবে যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত আশ্রয় চেয়ে সবচেয়ে বেশি আবেদন করেছেন পাকিস্তানিরা, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আফগানিস্তান, তৃতীয় ইরান ও চতুর্থ বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে পাকিস্তান থেকে ১০ হাজার ৫৪২টি রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে। আগের বছরের তুলনায় যা ৮০ শতাংশ বেশি।

সরকারি তথ্যে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে মোট আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ। বয়স ও লিঙ্গভিত্তিক বিভাজনে দেখা যায়, ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষ আবেদনকারীর সংখ্যা ৬৩ হাজার ৮৩৫ জন, যা মোট আবেদনের ৫৯ শতাংশ। একই বয়সের নারী আবেদনকারীর সংখ্যা ২৩ হাজার ৩৫১ জন, যা মোট আবেদনের ২২ শতাংশ। শিশুদের মধ্যে ১৭ বছর বা তার কম বয়সী ১২ হাজার ৬২২ জন পুরুষ (১২ শতাংশ) ও ৮ হাজার ২৬৫ জন নারী (৮ শতাংশ) আশ্রয়ের আবেদন করেছে।

এ ছাড়া ২০২৪ সালে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও একক আশ্রয়প্রার্থীদের (আনঅ্যাকম্প্যানিড অ্যাসাইলাম সিকিং চিলড্রেন) পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যে ৪ হাজার ১০৪টি, যা মোট আবেদনকারীর ৪ শতাংশ। এসব শিশুর মধ্যে ৭৬ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। ২০২৩ সালের তুলনায় এ ধরনের আবেদন ১৬ শতাংশ কমেছে, যার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে আফগান শিশু আবেদনকারীর সংখ্যা হ্রাসকে। ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় আফগান শিশুদের আবেদন কমেছে ৪৭ শতাংশ। অথচ ২০২৩ সালে আফগানিস্তান ছিল এই শ্রেণির শীর্ষ আবেদনকারী দেশ।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই ছিল একক আবেদনকারী শিশুরা, যেখানে ১৫ বছর বা তার কম বয়সীদের মধ্যে এই হার মাত্র ৬ শতাংশ। এ ছাড়া যারা বাবা-মা বা অন্য প্রাপ্তবয়স্ক আত্মীয়ের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে, তারা ‘ডিপেনডেন্ট’ বা ‘সঙ্গী শিশু আবেদনকারী’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র অংশ নিজেদের যৌন পরিচয়ের কারণেও আবেদন করেছে। ২০২৩ সালে এ ধরনের আবেদন ছিল মোট আবেদনের মাত্র ২ শতাংশ।

২০০৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ছিল গড়ে ২২ হাজার থেকে ৪৬ হাজারের মধ্যে। কিন্তু ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে এই প্রবণতায় বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দেয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর—এই তিন মাসেই রেকর্ডসংখ্যক ৩১ হাজার ২৭৬ জন আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। এর আগে ২০২২ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ৮৬৯ জন আবেদন করেছিলেন। গত বছরেই টানা দুটি প্রান্তিকে ৩০ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়ে।

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কেউ কেউ যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন। তবে অনেকেই এখানে অবস্থান করার কিছু সময় পর, এমনকি বৈধ ভিসা থাকা অবস্থাতেও, নিজ দেশে ফেরার অনিচ্ছা বা অক্ষমতার কারণ দেখিয়ে আশ্রয়ের আবেদন করেন। অভ্যন্তরীণ তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালে যারা যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ ব্যক্তি আশ্রয়ের আবেদন করার এক সপ্তাহ আগেও বৈধ ভিসায় যুক্তরাজ্যে ছিলেন।

অর্থাৎ তাঁরা ভিসা নিয়ে নিয়মমতো যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন—যেমন শিক্ষার্থী ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসা বা অন্য কোনো ধরনের ভিসা। পরে কোনো কারণে তাঁরা মনে করেছেন, নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিরাপদ নয়, তাই যুক্তরাজ্যে থেকেই আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না, সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়ার সুযোগ

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

মেয়ের কফিনে বাবার চুমু

মেয়েকে আনতে স্কুলে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন গাংনীর রজনী

ফেনীর বন্যায় তোলা টাকার হিসাব ত্রাণ উপদেষ্টার কাছে চাইবেন: সারজিস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত