তাহমিনা কোরেশী
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনটি সমাজে নারী-পুরুষ সমতার বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে বিবেচিত হচ্ছে। কমিশন যে সুপারিশগুলো দিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কিছু সুস্পষ্টভাবে নারীর অধিকারে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম, আবার কিছু সুপারিশ কাঠামোগত ও প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের দাবি তোলে।
কমিশনের সবচেয়ে আলোচিত প্রস্তাবগুলোর একটি হলো—উত্তরাধিকার ও সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমান অধিকার। এটি ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে জটিল ও সংবেদনশীল হলেও নাগরিক অধিকারের দিক থেকে একটি জরুরি প্রশ্ন।
এই বৈষম্য দীর্ঘ মেয়াদে নারীর আর্থিক নিরাপত্তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং আত্মসম্মান ক্ষুণ্ন করে। কমিশনের প্রস্তাব এ বৈষম্য দূর করে সমতাভিত্তিক উত্তরাধিকারের ভিত্তি রাখতে চায়।
কমিশন প্রস্তাব করেছে—বিবাহবিচ্ছেদে নারী-পুরুষ উভয় পক্ষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং সন্তানের অভিভাবকত্বে ‘পিতা-প্রধান’ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
এই প্রস্তাব নারীর আত্ম নির্ভরশীলতা এবং সন্তানের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সহায়ক। অভিভাবকত্বে যৌথ সিদ্ধান্তের ধারা আরও মানবিক ও আধুনিক পরিবার কাঠামো গড়তে সহায়তা করবে।
কমিশন সুপারিশ করেছে—যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং প্রত্যেক কর্মস্থলে অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি বাধ্যতামূলক করা।
একটি স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল কর্মক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে, ভয়ের সংস্কৃতি দূর করতে এবং যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।
প্রতিবেদনটি মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস এবং পিতৃত্বকালীন ছুটি কমপক্ষে ২১ দিন করার প্রস্তাব করেছে।
পিতৃত্বকালীন ছুটি পুরুষদের মধ্যে পরিবারকেন্দ্রিক দায়িত্ববোধ তৈরি করতে সাহায্য করবে এবং নারীর প্রতি প্রচলিত একপক্ষীয় দায়িত্ববোধের চাপ কমাবে।
এই সংস্কার-সুপারিশগুলো শুধু আইনগতই নয়, সামাজিকভাবে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গঠনের ইঙ্গিত দেয়। তবে এগুলোর সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করছে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সমাজের প্রস্তুতি এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বোধের সঙ্গে সংলাপ করার সক্ষমতার ওপর।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বিতর্ক
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা প্রকাশের পরপরই যে ব্যাপক বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তা মূলত বাংলাদেশের সামাজিক-ধর্মীয় বাস্তবতা, রাজনৈতিক অবস্থান ও নারীর অধিকারের বিষয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। সংস্কার-প্রচেষ্টার স্বরূপ যতটা আইনগত, তার চেয়ে অনেক বেশি সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক।
সবচেয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠী ও আলেম সমাজ থেকে।
তাঁদের ভাষায়, উত্তরাধিকার ও বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে সমতার দাবি সরাসরি ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এখানে যে দ্বন্দ্বটি প্রকট হয়েছে, তা হলো—একদিকে ধর্মীয় বিধান সংরক্ষণ বনাম অপরদিকে নাগরিক অধিকার ও লিঙ্গসমতার দাবি।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮ (১)-এ রাষ্ট্র সব নাগরিকের প্রতি সমান আচরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও, ৪১ অনুচ্ছেদে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এই দ্বৈততা আইন ও ধর্মের বিভাজনকে অস্পষ্ট করে তোলে।
সরকারের ভেতরেও এই প্রস্তাব নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মত উঠে এসেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ কেউ এই ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক।
এই বিতর্ক রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে, কারণ এটি কেবল নীতিগত নয়—ভোটব্যাংক, ধর্মীয় মতাবলম্বী জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রত্যাশা, সবকিছুকে ছুঁয়ে গেছে।
সংস্কারের বিরোধিতার একটি বড় অংশ এসেছে সাধারণ জনগণের ভেতরকার সংস্কার-ভীতি থেকেও।
একটি বেসরকারি জরিপ অনুযায়ী (সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র, ২০২৫)—
এখানে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি দ্বৈত মানসিকতা:
নারীদের ক্ষমতায়ন চাই, কিন্তু সাংস্কৃতিক রীতিনীতির বাইরে নয়। সমতা চাই, কিন্তু ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে বিরোধিতা না করে।
কমিশনের সুপারিশ প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে—
এসব তথ্য বিভ্রান্তিকর হলেও জনমনে প্রভাব ফেলে।
একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মিডিয়া উইং এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ‘ধর্মীয় বিষণ্নতা’র প্রচার শুরু করে। সঠিক ও স্বচ্ছভাবে জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা না থাকলে যেকোনো সংস্কারপ্রচেষ্টা বিভ্রান্তির সুযোগ তৈরি করে।
এই বিতর্কের ভেতর দিয়ে আমরা একটি বড় সত্যের মুখোমুখি হই: আইনগত সমতা ও ধর্মীয় অনুশাসনের দ্বন্দ্বে সমাজ দ্বিধান্বিত। এই দ্বিধা দূর করতে হলে প্রয়োজন—
এই বিতর্ক থেকে আমরা বুঝতে পারি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লিঙ্গ সমতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক রীতির মধ্যে একটি সংবেদনশীল ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।
এ ক্ষেত্রে করণীয় হতে পারে:
১. ধর্মীয় স্কলার, মানবাধিকার কর্মী এবং আইনবিদদের মধ্যে সংলাপের আয়োজন,
২. সংসদীয় গণশুনানি ও নীতিমালাভিত্তিক বিতর্কের পথ উন্মুক্ত রাখা,
৩. সঠিক তথ্য প্রচার ও জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান,
৪. সংবিধানের আলোকে নাগরিক অধিকার ও ধর্মীয় বিশ্বাসের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন,
৫. একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপরেখা, যাতে নারীর অধিকার ক্ষুণ্ন না হয় এবং একইসঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাসেও আঘাত না লাগে।
৬. সর্বোপরি একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান, যা একই সঙ্গে জনগণের বিশ্বাস রক্ষা করে এবং নারীর অধিকার নিশ্চিত করে।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী চিন্তার সূচনা। কিন্তু এই চিন্তাকে বাস্তবায়নে অধিকার, ধর্ম, সংস্কৃতি ও রাজনীতির পরস্পর বিরোধী চাহিদাগুলোকে বুঝে এগোতে হবে। এ এক সূক্ষ্ম ভারসাম্যের খেলা—যেখানে নারীর সমতা শুধু কাগজে নয়, বাস্তবেও প্রতিষ্ঠিত হবে যদি সমাজ সেই পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকে। আর সেই প্রস্তুতি গড়ে তোলার দায় আমাদের সবার।
লেখক: নারী অধিকার কর্মী
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালার ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনটি সমাজে নারী-পুরুষ সমতার বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে বিবেচিত হচ্ছে। কমিশন যে সুপারিশগুলো দিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কিছু সুস্পষ্টভাবে নারীর অধিকারে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম, আবার কিছু সুপারিশ কাঠামোগত ও প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের দাবি তোলে।
কমিশনের সবচেয়ে আলোচিত প্রস্তাবগুলোর একটি হলো—উত্তরাধিকার ও সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমান অধিকার। এটি ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে জটিল ও সংবেদনশীল হলেও নাগরিক অধিকারের দিক থেকে একটি জরুরি প্রশ্ন।
এই বৈষম্য দীর্ঘ মেয়াদে নারীর আর্থিক নিরাপত্তা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং আত্মসম্মান ক্ষুণ্ন করে। কমিশনের প্রস্তাব এ বৈষম্য দূর করে সমতাভিত্তিক উত্তরাধিকারের ভিত্তি রাখতে চায়।
কমিশন প্রস্তাব করেছে—বিবাহবিচ্ছেদে নারী-পুরুষ উভয় পক্ষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং সন্তানের অভিভাবকত্বে ‘পিতা-প্রধান’ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
এই প্রস্তাব নারীর আত্ম নির্ভরশীলতা এবং সন্তানের কল্যাণ নিশ্চিত করতে সহায়ক। অভিভাবকত্বে যৌথ সিদ্ধান্তের ধারা আরও মানবিক ও আধুনিক পরিবার কাঠামো গড়তে সহায়তা করবে।
কমিশন সুপারিশ করেছে—যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং প্রত্যেক কর্মস্থলে অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি বাধ্যতামূলক করা।
একটি স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল কর্মক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে, ভয়ের সংস্কৃতি দূর করতে এবং যোগ্যতাভিত্তিক পেশাগত উন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।
প্রতিবেদনটি মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস এবং পিতৃত্বকালীন ছুটি কমপক্ষে ২১ দিন করার প্রস্তাব করেছে।
পিতৃত্বকালীন ছুটি পুরুষদের মধ্যে পরিবারকেন্দ্রিক দায়িত্ববোধ তৈরি করতে সাহায্য করবে এবং নারীর প্রতি প্রচলিত একপক্ষীয় দায়িত্ববোধের চাপ কমাবে।
এই সংস্কার-সুপারিশগুলো শুধু আইনগতই নয়, সামাজিকভাবে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গঠনের ইঙ্গিত দেয়। তবে এগুলোর সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করছে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সমাজের প্রস্তুতি এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বোধের সঙ্গে সংলাপ করার সক্ষমতার ওপর।
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বিতর্ক
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা প্রকাশের পরপরই যে ব্যাপক বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তা মূলত বাংলাদেশের সামাজিক-ধর্মীয় বাস্তবতা, রাজনৈতিক অবস্থান ও নারীর অধিকারের বিষয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। সংস্কার-প্রচেষ্টার স্বরূপ যতটা আইনগত, তার চেয়ে অনেক বেশি সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক।
সবচেয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে বিভিন্ন ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠী ও আলেম সমাজ থেকে।
তাঁদের ভাষায়, উত্তরাধিকার ও বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে সমতার দাবি সরাসরি ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এখানে যে দ্বন্দ্বটি প্রকট হয়েছে, তা হলো—একদিকে ধর্মীয় বিধান সংরক্ষণ বনাম অপরদিকে নাগরিক অধিকার ও লিঙ্গসমতার দাবি।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮ (১)-এ রাষ্ট্র সব নাগরিকের প্রতি সমান আচরণের প্রতিশ্রুতি দিলেও, ৪১ অনুচ্ছেদে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এই দ্বৈততা আইন ও ধর্মের বিভাজনকে অস্পষ্ট করে তোলে।
সরকারের ভেতরেও এই প্রস্তাব নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মত উঠে এসেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ কেউ এই ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইবে, সেটাই স্বাভাবিক।
এই বিতর্ক রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে, কারণ এটি কেবল নীতিগত নয়—ভোটব্যাংক, ধর্মীয় মতাবলম্বী জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রত্যাশা, সবকিছুকে ছুঁয়ে গেছে।
সংস্কারের বিরোধিতার একটি বড় অংশ এসেছে সাধারণ জনগণের ভেতরকার সংস্কার-ভীতি থেকেও।
একটি বেসরকারি জরিপ অনুযায়ী (সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র, ২০২৫)—
এখানে মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি দ্বৈত মানসিকতা:
নারীদের ক্ষমতায়ন চাই, কিন্তু সাংস্কৃতিক রীতিনীতির বাইরে নয়। সমতা চাই, কিন্তু ধর্মীয় বিধানের সঙ্গে বিরোধিতা না করে।
কমিশনের সুপারিশ প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে—
এসব তথ্য বিভ্রান্তিকর হলেও জনমনে প্রভাব ফেলে।
একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মিডিয়া উইং এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে ‘ধর্মীয় বিষণ্নতা’র প্রচার শুরু করে। সঠিক ও স্বচ্ছভাবে জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা না থাকলে যেকোনো সংস্কারপ্রচেষ্টা বিভ্রান্তির সুযোগ তৈরি করে।
এই বিতর্কের ভেতর দিয়ে আমরা একটি বড় সত্যের মুখোমুখি হই: আইনগত সমতা ও ধর্মীয় অনুশাসনের দ্বন্দ্বে সমাজ দ্বিধান্বিত। এই দ্বিধা দূর করতে হলে প্রয়োজন—
এই বিতর্ক থেকে আমরা বুঝতে পারি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লিঙ্গ সমতা, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সাংস্কৃতিক রীতির মধ্যে একটি সংবেদনশীল ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।
এ ক্ষেত্রে করণীয় হতে পারে:
১. ধর্মীয় স্কলার, মানবাধিকার কর্মী এবং আইনবিদদের মধ্যে সংলাপের আয়োজন,
২. সংসদীয় গণশুনানি ও নীতিমালাভিত্তিক বিতর্কের পথ উন্মুক্ত রাখা,
৩. সঠিক তথ্য প্রচার ও জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান,
৪. সংবিধানের আলোকে নাগরিক অধিকার ও ধর্মীয় বিশ্বাসের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন,
৫. একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রূপরেখা, যাতে নারীর অধিকার ক্ষুণ্ন না হয় এবং একইসঙ্গে ধর্মীয় বিশ্বাসেও আঘাত না লাগে।
৬. সর্বোপরি একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান, যা একই সঙ্গে জনগণের বিশ্বাস রক্ষা করে এবং নারীর অধিকার নিশ্চিত করে।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী চিন্তার সূচনা। কিন্তু এই চিন্তাকে বাস্তবায়নে অধিকার, ধর্ম, সংস্কৃতি ও রাজনীতির পরস্পর বিরোধী চাহিদাগুলোকে বুঝে এগোতে হবে। এ এক সূক্ষ্ম ভারসাম্যের খেলা—যেখানে নারীর সমতা শুধু কাগজে নয়, বাস্তবেও প্রতিষ্ঠিত হবে যদি সমাজ সেই পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকে। আর সেই প্রস্তুতি গড়ে তোলার দায় আমাদের সবার।
লেখক: নারী অধিকার কর্মী
দীর্ঘ সাড়ে পনেরো বছর পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের সমীকরণ বদলে দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের হাল ধরেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মূলত এর পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে একধরনের শীতলতা সৃষ্টি হয়েছে। একসময়ের
১৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রচারণার মাধ্যমে বাস্তবতাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে একধরনের ‘গণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী’ শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে, যেখানে বিরোধীদের দুর্বল করা এবং আন্দোলন দমনের জন্য নানামুখী কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছিল।
১৩ ঘণ্টা আগেগত বছরই এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে একটা রেজিমের পতন ঘটিয়েছিল। এ জন্য অসংখ্য তাজা প্রাণ বলি দিতে হয়েছে। কিন্তু আমলাতন্ত্রে যে কোনো পরিবর্তন হয়নি, সেটা বুঝতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। আমলারা নিজের গামলা ভরার বিষয়টি ভালো বোঝেন। এ নিয়েই ২০ এপ্রিল আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত
১৩ ঘণ্টা আগেদেশের সংবিধান, পুলিশ, স্থানীয় সরকার, নির্বাচন, বিচারব্যবস্থাসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের নানা আলাপ হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু এই সময়ে অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে খুব বেশি কিছু করা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারেরই গঠন করা শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
২ দিন আগে