Ajker Patrika

রেল বন্ধে বাসে বাড়তি ভাড়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
Thumbnail image
প্রতীকী ছবি

রেলওয়ে কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বাসভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকেরা। ময়মনসিংহ, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে যাত্রীরা ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে এসে ট্রেন না পেয়ে ভিড় জমান শহরের বাসস্ট্যান্ডগুলোতে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাসভাড়া বাড়িয়ে দেন চালকেরা।

বিকেলে নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়, মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড ও বাইপাস মোড়ে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। ঢাকাগামী যাত্রী সাদেক হোসেন বলেন, ব্রিজ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো সাধারণত ১৫০-২০০ টাকা ভাড়া নিয়ে থাকে; আজকে তারা ২৫০-৩০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। বাধ্য হয়ে প্রয়োজনের তাগিদে যেতে হচ্ছে।

বাইপাস মোড়ে বাসের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে থাকা আফসার উদ্দিন বলেন, ‘ট্রেনের টিকিট কেটেও ঢাকা যেতে পারিনি। তিন ঘণ্টা স্টেশনে অপেক্ষা করে টিকিটের টাকা নিয়ে ঢাকা যাওয়ার জন্য বাইপাস এসেছি। এখানে চরম অরাজকতা।’

ঢাকাগামী ইমাম পরিবহনের চালকের সহকারী আবুল কালাম বলেন, ‘ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সত্য নয়। যাত্রীরা তা এমনি এমনি বলছে। সাধারণ দিনের তুলনায় আমরা ভাড়া কম নিচ্ছি।’

আরেক চালক হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘মানুষ বিপদে পড়ে আমাদের গাড়িতে ওঠে, আমরা সেটা বুঝে সামান্য ভাড়া বাড়াই। এতে তাঁদের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার আখতার উল আলম বলেন, ‘ট্রেন বন্ধের কারণে বাসে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে খুলনা থেকে ট্রেন বন্ধ থাকায় চাপ পড়ে বাসের ওপর। এতে বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে বসে থাকা এক যাত্রী জানান, প্রায় দেড় মাস আগে বাড়ি থেকে খুলনায় এসেছেন। বাগেরহাটে কৃষিকাজ করতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে ফেরার উদ্দেশে খুলনায় এসে দেখেন ট্রেন বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে চলে যান। সেখানে ৫০০ টাকার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে দেড় হাজার টাকা, তা-ও টিকিট নেই। এরপর সবাই মিলে ট্রাক ভাড়া করতে গিয়েছিলেন। প্রতি ট্রাকের ভাড়া চাওয়া হয় ২৫ হাজার টাকা। এত টাকা তাঁদের কাছে নেই।

বাসভাড়া বাড়ানোর এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে অনেক স্থান থেকে। যাত্রীদের দাবি, প্রশাসনের কোনো তৎপরতা ছিল না।

ট্রেনের যাত্রীরা বাসে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, গতকাল নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে পৌঁছে ট্রেনে করে নিজ গন্তব্যে যেতে পারেননি কোনো যাত্রী। তবে ভোগান্তি কিছুটা লাঘবে বিকল্প হিসেবে নামানো হয় বিআরটিসির বাস। ট্রেনের টিকিটধারী যাত্রীদের তুলে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে বাসের সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে কথা হয় লাকসামের যাত্রী রিফাতের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মা বাসে চড়তে পারেন না। তিনি বাসে উঠলে বমি করেন। তাই ট্রেনের টিকিট নিয়েছিলাম। এখন তো বাস ছাড়া বিকল্প নেই। তাই বাসেই যেতে হচ্ছে।’

ইসরাত জাহান নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘অগ্রিম টিকিট কেনার পর আমাদের এ বিষয়ে কোনো এসএমএসও দেওয়া হয়নি রেলওয়ে থেকে। ট্রেন চলাচল না করলে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে জানাতে পারত। এখন বিপদে পড়লাম।’

বিআরটিসি বাসে করে রওনা হওয়া শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কিনে রেখেছিলাম। এখন যেতে হচ্ছে বাসে। এটা আমাদের জন্য কষ্টদায়ক।’

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনে মিজানুর রহমান নামে এক যাত্রী বলেন, ‘আমি সিলেটের যাত্রী। স্টেশনে এসে ট্রেন বন্ধ দেখে স্টেশনমাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের ট্রেনের টিকিট দিয়ে বিআরটিসি বাসে যাওয়ার কথা জানান। আমরা অনেকেই ট্রেনের টিকিট দিয়ে বাসে যাচ্ছি।’

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার শেখ আনোয়ার হোসেন জানান, যাঁরা স্টেশনের টিকিট রিফান্ড করতে আসছেন, তাঁরাই বিষয়টি জানতে পারছেন। যাঁদের কাছে টিকিট আছে, তাঁরা চাইলে বিআরটিসি বাসের সেবাটি নিতে পারবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত