Ajker Patrika

কখন বদলি হজ করানো যাবে

মুফতি ইশমাম আহমেদ
আপডেট : ১০ মে ২০২৪, ০৮: ০৫
কখন বদলি হজ করানো যাবে

প্রশ্ন: কেউ যদি ব্যস্ততার কারণে হজে যেতে না পারেন, তিনি কি অন্য কাউকে দিয়ে হজ করিয়ে নিতে পারবেন? নাকি তাঁকেই সশরীরে উপস্থিত হয়ে হজ করতে হবে? বদলি হজের ইসলামি বিধান কী—বিস্তারিত জানাবেন। মুহিববুল্লাহ, চট্টগ্রাম

উত্তর: ব্যস্ততার কারণে হজে যেতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো যাবে না। কারণ এটি শরিয়ত নির্দেশিত অপারগতা নয়। বদলি হজ কেবল শরিয়তের দৃষ্টিতে মক্কায় যেতে অপারগদের জন্য প্রযোজ্য। এখানে বদলি হজের বিধান সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—

  • হজ ফরজ হওয়ার পর হজ করা হয়নি, এখন শারীরিকভাবে মক্কায় যেতে অক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য অন্য কাউকে পাঠিয়ে হজ করা ফরজ। (বুখারি ও মুসলিম) 
  • বার্ধক্য বা অসুস্থতা থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম হতে হবে। (মানাসিক লি-মোল্লা আলি কারি) 
  • অসিয়ত না করলেও মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ চাইলে তাঁর জন্য বদলি হজ করাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো—ওয়ারিশদের সবার স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদন লাগবে এবং ওয়ারিশদের মধ্যে কেউ অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকলে তার ভাগের সম্পদ থেকে কিছুই নেওয়া যাবে না। (আদ্দুররুল মুখতার)
  • যাঁর পক্ষ থেকে হজ করা হবে, তাঁকেই খরচ বহন করতে হবে। অসিয়ত করে গেলে প্রথমে তাঁর রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ আদায় করতে হবে। এরপর অসিয়তের বিধান অনুযায়ী বাকি সম্পদ তিন ভাগ করতে হবে। এর মধ্যে এক ভাগ থেকে অসিয়তের অংশ নিতে হবে। হজের অসিয়ত করে গেলে সেই খরচও এই অংশ থেকে নিতে হবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা) 
  • বদলি হজের বিনিময়ে মজুরি নেওয়া নাজায়েজ। কারণ ইবাদতের বিনিময়ে কোনো মজুরি নেওয়া যায় না। কেউ দিলে এবং নিলে দুজনেই গুনাহগার হবেন। হজের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের বাইরে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। (আল-বাহরুল আমিক) 
  • টাকাপয়সার হিসাবের ঝামেলা এড়ানোর জন্য হজে পাঠানো ব্যক্তি যদি বদলি হজকারীকে বলেন, আপনাকে পুরো টাকা হাদিয়া হিসেবে দিলাম, তাহলে এই টাকা দিয়ে বদলি হজ আদায় হবে না। কারণ হাদিয়া দেওয়ার কারণে বদলি হজকারী ওই টাকার মালিক হয়ে যান। (যুবদাতুল মানাসিক) 
  • হজ করেছেন এমন নেককার ব্যক্তিকেই বদলি হজের জন্য পাঠানো উত্তম। হজ করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানোও বৈধ। তবে হজ ফরজই হয়নি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহে তানজিহি। আর হজ ফরজ হলেও আদায় করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহ তাহরিমি তথা নাজায়েজ। (আবু দাউদ) 

উত্তর দিয়েছেন: মুফতি ইশমাম আহমেদ, শিক্ষক ও ফতোয়া গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত