Ajker Patrika

আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী শেষ জান্তা ঘাঁটি, জেনারেলসহ কয়েক শ সৈন্য আটক

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ৩৮
Thumbnail image
আরাকান আর্মির হাতে আটক জেনারেল থুরেইন তুন ও জান্তা সৈন্যরা। ছবি: আরাকান আর্মি

বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের ২৭০ কিলোমিটার এলাকা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত জান্তার সর্বশেষ সীমান্ত ঘাঁটিটিও নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি। জান্তার এক জেনারেলসহ কয়েক শ সৈন্য তাদের হাতে বন্দী হয়েছে। আটক জেনারেলসহ জান্তা সৈন্য, ঘাঁটি থেকে জব্দ করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের ছবি প্রকাশ করেছে এএ।

গতকাল বুধবার মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে জানা যায়, মংডুর সর্বশেষ জান্তা ঘাঁটিটি দখলের সময় ‘কুখ্যাত’ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরিন তুনসহ কয়েক শ সরকারি সেনাকে আটক করা হয়েছে। কঠোর দমন-পীড়নের জন্য কুখ্যাতি রয়েছে এই জেনারেলের। আরাকান আর্মিরা ঘাঁটি ঘিরে ফেললেও কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি।

এএ সেনাদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়া কয়েক ঘণ্টা আগে জান্তাপ্রধানের কাছে উদ্ধারের আবেদন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করে অবরুদ্ধ সৈন্যরা। ভিডিও থেকে জানা যায়, তাঁরা তিন মাস ধরে ঘাঁটিতে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তাঁদের উদ্ধারের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনও কোনো ব্যবস্থা নেননি।

উত্তর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের জান্তার পক্ষে লড়তে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহের দায়িত্বে ছিলেন জেনারেল থুরেইন তুনও। সাবেক সেনা ক্যাপ্টেন জিন ইয়াও ইরাবতীকে বলেন, জেনারেল তুন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন এবং অধীনস্থদের প্রতি নির্মম আচরণের জন্য পরিচিত ছিলেন।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মান্দালয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালে দমন অভিযান চালান জেনারেল তুন। তাঁর বিরুদ্ধে মান্দালয় প্যালেসে জান্তার সেন্ট্রাল মিলিটারি কমান্ড সদর দপ্তরের একটি জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্রে আটক বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।

জিন ইয়াও জানান, বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের লড়াই চলাকালে কোনো জান্তা সৈন্য যদি পালানোর চেষ্টা করে বা আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করতে চায় তাহলে তাদের ওপর গুলি চালাতে নিজের দেহরক্ষীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন তুন। আহত সৈন্যদের প্রকৃত পরিস্থিতি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাননি তিনি।

গত মে মাসের শেষ দিকে মংডু অভিযান শুরু করে আরাকান আর্মি। গত ১৪ অক্টোবর তারা মংডু শহরের বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর ৫ ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এটি শহরের বাইরে জান্তার শেষ ঘাঁটি। সুরক্ষিত এই ঘাঁটিতে ৭০০-এর বেশি জান্তা পুলিশ ও সৈন্য ছিল। তাঁদের মধ্যে আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) ও রোহিঙ্গা সংহতি সংগঠনের (আরএসও) সদস্যরা ছিলেন।

প্রায় দুই মাস লড়াইয়ের পর গত রোববার আরাকান আর্মি এই ঘাঁটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সংঘর্ষে ৪৫০-এর বেশি জান্তা সদস্য নিহত হয়। প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করে এএ সৈন্যরা।

আরাকান আর্মির মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি জান্তা সরকার।

এদিকে দক্ষিণ রাখাইনের গাওয়া, তাউনগুপ ও আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই করছে এএ। আন ও তাউনগুপ শহরের বেশির ভাগ অংশ ইতিমধ্যে তাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। জান্তা সরকারের পশ্চিমাঞ্চলীয় সামরিক সদর দপ্তর ছাড়া বাকি প্রায় ৩০টি ঘাঁটি এবং জায়গাও নিয়ন্ত্রণ করেছে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত